নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।
১। থার্টি ফার্স্ট নাইট। তিনদিন আগের কথা।
এলাকার বড় ভাই। বেশ বড় পাতিনেতা। অল্প সময়ে কিভাবে যেন অনেক টাকার মালিক হয়ে গেছেন। রাতে এলাকার ছেলেরা আনন্দ করছে। ফটকা-আতশবাজি ফুটাচ্ছে। বড় ভাই এলাকার ছেলেদের ডেকে নিয়ে বাড়ির ছাদে গেলেন। বললেন, আমি এখন একটা কাজ করবো। কেউ ছবি তুলবে না। কেউ ভিডিও করবে না। তারপর বড় ভাই পিস্তল বের করলেন। পিস্তলে ভরা গুলি। বড় ভাই বললেন, পিস্তলটা নতুন কিনেছি। লাইসেন্সও আছে। ফটকা ফুটিয়ে মজা নেই। বড় ভাই আকাশের দিকে পিস্তল উঁচু করে পরপর ছয়বার ফায়ার করলেন। ধূম ধূম শব্দ হলো। এলাকার ছেলেপেলে অবাক! তারা ভয়ে সবাই চুপ। বড় ভাই বললেন, মজা পেয়ছো? দেখলা নতুন বছরকে কিভাবে স্বাগত জানালাম। এখন তোমরা যাও। আমাদের এই আনন্দের কথা কাউকে জানিও না।
২। একজন দাড়োয়ানের গল্প।
তার নাম জামাল। বয়স ছাপান্ন-সাতান্ন হবে। গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহ। খিলগা যে চায়ের দোকানে আমি যাই তার পাশের বিল্ডিং এ তিনি কাজ করেন। আমার সাথে বেশ ভালো খাতির। দুই একদিন আমি চায়ের দোকানে না গেলেই আমার খোঁজ করেন। জামাল ভাই সারাদিন একটা টুল নিয়ে বাড়ির সামনে বসে থাকেন। আমি আমার একটা শীতের জামা তাকে দিয়েছি। খিলগা গেলেই আমি তাকে চা-সিগারেট খাওয়াই। খুবই অল্প টাকা বেতন পান জামাল ভাই। মাত্র নয় হাজার টাকা তার বেতন। উপরি ইনকাম কিছুই নাই। বোকা মানুষ। গ্রামে বউ আছে, দুই সন্তান আছে তার। কোনো জমিজমা নেই।
তিন বছর টাকা জমিয়ে একটা বাছুর কিনেন জামাল ভাই।
উদ্দেশ্য বাছুরটা বড় করে বিক্রি করা। সেই টাকা দিয়ে মেয়ের বিয়ে দিবেন। বাছুরের দেখভাল করে তার স্ত্রী। এইভাবেই চলছে জামাল ভাইয়ের জীবন। তিনমাস পরপর গ্রামে যান জামাল ভাই। বউ বাচ্চার সাথে দেখা হয়। একদিন থেকে চলে আসেন ঢাকায়। বাড়ির মালিক তাকে একদিনের বেশি ছুটি দেন না। যাই হোক, দেখতে দেখতে আদর যত্ন পেয়ে বাছুরটা অনেক বড় হয়। একদম মোটাতাজা গরু। দামও বেশ ভালো উঠেছে। ষাট হাজার টাকা। এবার ছুটিতে গিয়ে জামাল গরুটা বিক্রি করবে। তারপর মেয়ের বিয়ে দিবে। বিয়েতে আমাকে অবশ্যই যেতে হবে। গ্রামে যাওয়ার আগের দিন জামালের গরুটা কে বা কারা চুরী করে নিয়ে যায়। জামাল কাঁদে। তার বউও কাঁদে। আসলে গরীব মানুষদের সারা জীবন কাঁদতে হয়। কাঁদতে কাঁদতেই তাদের জীবন যায়। কেউ জানে না। কেউ দেখে না। তাতে কারো কিচ্ছু যায় আসে না।
৩। চায়ের দোকানের গল্প।
মৌচাক আনারকলি মার্কেটের পেছনের দিকে একটা চায়ের দোকান আছে। বেশ জমজমাট দোকান। দোকানও ঠিক না। দুই সিড়ির ফাঁকে একটুখানি দোকান। বহুকাল ধরেই দেখছি দোকানটা। একসময় আমি এখানে নিয়মিত আড্ডা দিতাম। প্রথম প্রথম এই চায়ে দোকানে এক কাপ চায়ের দাম ছিলো চার টাকা। এখন এক কাপ চায়ের দাম পনের টাকা। ছোট্র কাপে পনের টাকায় যে চা দেয় তার দাম হওয়া উচিত পাঁচ টাকা। অথচ নিচ্ছে পনের টাকা। তবু মানুষ পাগলের মতো চা-টা খাচ্ছে। শুধু চা-না এই দোকানে আরো অনেক কিছু পাওয়া যায়। সিঙরা, সমুচা, ডিম চপ, আলুর চপ ইত্যাদি। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত এই দোকানে ভিড় লেগেই থাকে। পুরী, সিংগারা, সমুচা, চা যে খুব স্বাদ তা-ও না। এই দোকানের দেখাদেখি আশেপাশে আরো কিছু দোকান দিয়েছে। কিন্তু তাদের দোকান চলেই না।
এই চায়ের দোকানের মালিক আজ পাঁচটা বাড়ির মালিক।
বর্তমানে গুলশানে তার আরেকটা বাড়ির কাজ চলছে। ভাবা যায় চায়ের দোকান দিয়ে ঢাকা শহরে বাড়ি করছে! আমি কি করলাম? আমার কিছুই নেই। আমি শূন্য। অবশ্য এজন্য আমার কোনো আফসোস নেই। আখিরাতে আমার কোনো হিসাব দিতে হবে না। যার সম্পদ বেশি তার হিসাব বেশি। হে হে।
৪। আমাদের এলাকায় একটা মাংসের দোকান আছে।
চার হাত সমান মাংসের দোকান। সেই মাংসের দোকানের মালিক আজ কোটি কোটি টাকার মালিক। মাংসের দোকানে পেছনে একটা বাড়ি ছিলো। সেই বাড়ি কিনে ফেলেছে মাংসের দোকানের মালিক। সেখানে ছয় তলা একটা বাড়ি করেছে। তিনতলা পর্যন্ত ফার্নিচারের দোকান দিয়েছে। ফার্নিচার বেশ ভালোই বিক্রি হয়।
প্রতিদিন কমপক্ষে দশটা গরু জবাই করে।
বিশেষ বিশেষ দিনে বিশ-ত্রিশটা গরু জবাই হয়। ভাববেন না আমি বাড়িয়ে বলছি। একটুও বাড়িয়ে বলছি না। লোকজন এই দোকান থেকে পাগলের মতোন মাংস কিনে। সকাল থেকে রাত এগারোটা পর্যন্ত মানুষ মাংস কিনতেই থাকে। এই মাংসের দোকান কিভাবে মানুষকে ঠকায় তা আমি জানি। আমি প্রায়ই দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে লোক ঠকানো দেখি। যাই হোক, এই মাংসের দোকানের দেখাদেখি আমাদের এলাকায় আরো দুইজন মাংসের দোকান খুলে। অথচ তারা সারাদিনে একটা গরুও বিক্রি করতে পারে না।
০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২০ রাত ৮:৫৭
রাজীব নুর বলেছেন: পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
০৫ ই জানুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৫:২৬
রাজীব নুর বলেছেন: নির্বাক হওয়ার কিছু নাই।
সব মানূষের'ই গল্প আছে।
২| ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:২০
শোভিত বলেছেন: আমার তো ইচ্ছা করছে এখনি একটা চায়ের দোকান দিয়ে বসি , লিখা পড়া শেষ করে বেকার বসে থাকতে হবে ।
০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২০ রাত ৮:৫৭
রাজীব নুর বলেছেন: চায়ের দোকান দেওয়ার ইচ্ছা আমারও আছে।
০৫ ই জানুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৫:২৬
রাজীব নুর বলেছেন: খুব চেষ্টা করুন চাকরী হয়ে যাবে।
৩| ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৩৬
জাহিদুল ইসলাম ২৭ বলেছেন: মনে হচ্ছে ছেলেরা বড় ভাইয়ের আনন্দ উদযাপনের কথা সবাইকে বলে বেড়িয়েছে।না হলে আপনি জানলেন কি করে?
০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২০ রাত ৮:৫৯
রাজীব নুর বলেছেন: হে হে
০৫ ই জানুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৫:২৭
রাজীব নুর বলেছেন: সবাই বলে বেরায় নি। কেউ কেউ বলেছে।
৪| ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৪২
মাহের ইসলাম বলেছেন: পাশের দোকান থেকে আপনি মাংস কিনেননি?
০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২০ রাত ৯:০০
রাজীব নুর বলেছেন: ওদেরকে ফোণ দিলে মাংস বাসায় এসে আমাকে দিয়ে যায়।
৫| ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৫৭
ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন:
রাজীব নুর ভাই,
১। গরীব মানুষদের সারা জীবন কাঁদতে হয়। কাঁদতে কাঁদতেই তাদের জীবন যায়: কান্নাই এদের জীবন সঙ্গি তবে আখেরাতে তারা হাসবে, আর বিলাস বহুল হু লু লু লু পার্টি সেদিন কাঁদবে।
২। লোকজন এই দোকান থেকে পাগলের মতোন মাংস কিনে: আমি বাজারে লক্ষ্য করেছি মানুষ আসলেই পাগলের মতো মাংস কেনে, পাগলের মতো মাছ কেনে, পাগলের মতো পেঁয়াজ কেনে। মনে হবে পাগলা গরাদের দেয়াল ভেঙ্গে গেছে সেদিক দিয়ে সব পাগল বেড়িয়ে এসেছে বাজারে।
০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২০ রাত ৯:০১
রাজীব নুর বলেছেন: এক শ্রেনী মানুষের হাতে প্রচুর টাকা। তারাই পাগলের মতোণ কিনে।
০৫ ই জানুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৫:৩০
রাজীব নুর বলেছেন: আমার মতো বহু লোক আছে, বাজারে যায়। পুরো বাজার ঘুরে। জিনিসপত্রের দাম দেখে বাজার না করে বাসায় চলে আসে।
৬| ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৫৭
জুল ভার্ন বলেছেন: আপনার ভিন্নধর্মী লেখা/ উপস্থাপন ভালো লাগছে।
০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২০ রাত ৯:০২
রাজীব নুর বলেছেন: যা দেখি, যেভাবে দেখি তাই লেখার চেষ্টা করি। ভনিতা করি না।
ধন্যবাদ। ভালো থাকুন।
৭| ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:০২
ইসিয়াক বলেছেন: চলেন একটা চায়ের দোকান দেই । আমি ভালো চা বানাতে পারি।
০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২০ রাত ৯:০৮
রাজীব নুর বলেছেন: চালান নাই। হাত খালি।
৮| ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:২৮
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
আপনি বলেছেন লোক জন পাগলের মতো মাংস কিনে।
পাগলরা কি মাংস কিনতে পারে ?
০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২০ রাত ৯:১১
রাজীব নুর বলেছেন: শুভ জন্মদিন
বাংলাদেশ ছাত্রলীগ।
৯| ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৩৮
হাবিব বলেছেন: লো ঠকিয়ে বড় লোক হলে বেশি দিন ধন-সম্পদ টিকবে না
০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২০ রাত ৯:১২
রাজীব নুর বলেছেন: মিছা কথা।
তাহলে এত এত ধনীর সম্পদ টিকে আছে কি ভাবে?
১০| ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৪৬
সাইয়িদ রফিকুল হক বলেছেন: না, কিছু বলার নাই।
০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২০ রাত ৯:১৩
রাজীব নুর বলেছেন: এটাই ভালো। বোবার শত্রু নাই।
১১| ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৫০
নেওয়াজ আলি বলেছেন: এক কথায় অসাধারণ
০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২০ রাত ৯:০৯
রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ জনাব।
১২| ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২০ রাত ১০:৫৮
ঊণকৌটী বলেছেন: আমি জানি আপনি অনেক বড়লোক,কেনো না,সাধারণ মানুষের পক্ষে নিজের কাজ ফেলে এই ভাবে ব্লগে সময় দেওয়া সম্ভব না।হয়তো আপনাদের পরিবারের স্ট্যাবল ইনকাম আছে,আমি শিউর থাকবে,তাই তো আমরা আপনার দারুন লেখাগুলি পাই,খারাপ নিয় নাগো দাদা,তোমার লেখা ভাল লাগে ।
০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২০ রাত ১১:৫২
রাজীব নুর বলেছেন: বোকা মন্তব্য করেছেন।
১৩| ০৫ ই জানুয়ারি, ২০২০ রাত ২:১১
জগতারন বলেছেন:
আমার কাছে মনে হইয়াছে এ যেন এই ব্লগারের আশপাশের (সমাজের আয়না বা) চিত্রপট।
পোষ্টটি আমার ভালো লাগিয়াছে।
০৫ ই জানুয়ারি, ২০২০ সকাল ৯:২৬
রাজীব নুর বলেছেন: বাস্তব চিত্র তুলে ধরেছি।
১৪| ০৫ ই জানুয়ারি, ২০২০ সকাল ১০:৫০
নভো নীল দীপ্তি বলেছেন: Good Writing...
০৫ ই জানুয়ারি, ২০২০ দুপুর ১:০৯
রাজীব নুর বলেছেন: শুকরিয়া।
১৫| ০৫ ই জানুয়ারি, ২০২০ সকাল ১১:০৪
অধীতি বলেছেন: সাবলীল বর্ণনা ,খুব ভাল লেগেছে।
০৫ ই জানুয়ারি, ২০২০ দুপুর ১:১০
রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ।
১৬| ০৬ ই জানুয়ারি, ২০২০ দুপুর ২:২২
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
কথা ছিল দেশের সব চেয়ে ভালো মানুষগুলো রাজনীতি করবে । কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে যারা রাজনীতি করেন তাদের মধ্যে ভাল লোকের সংখ্যা খুবই কম।
০৬ ই জানুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৫:০২
রাজীব নুর বলেছেন: এই দেশ নষ্ট হয়ে গেছে। পচে গলে গেছে।
©somewhere in net ltd.
১| ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:১১
ইউসুফ হাওলাদার শাওন বলেছেন: সম্পূর্ণ পড়েছি, পড়ার পরে আমি নির্বাক