নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।
ও যে মানে না মানা।
আঁখি ফিরাইলে বলে, 'না, না, না।'
যত বলি 'নাই রাতি-- মলিন হয়েছে বাতি'
মুখপানে চেয়ে বলে, 'না, না, না।'
প্রেম আর ভালোবাসার শক্তি অসীম।
শাহেদ জামাল লাবন্যর দিকে মুগ্ধ চোখে তাকিয়ে আছে। আজ লাবন্যকে এত সুন্দর লাগছে কেন! মেয়েটা খুব বেশি সাজেও নি। শুধু চোখে মোটা করে কাজল দিয়েছে, কপালে একটা ছোট্র টিপ আর দুই হাত ভরতি কাঁচের চুড়ি। খুব সুন্দর একটা সুতি শাড়ি পরেছে। মোটা পাড়। পুরো শাড়ি জুড়ে স্বচ্ছ নীল আকাশ। কোথাও কোথাও আকাশ ভরা সাদাকালো মেঘ। লাবন্যও মুগ্ধ চোখে তাকিয়ে আছে শাহেদ জামালের দিকে। আজ পাঁচ বছর পর তাদের দেখা। হঠাৎ দেখা। লাবন্য শাহেদ একই সাথে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে মাস্টার্স করেছিলো। শাহেদের সব সময়ই লাবন্যকে ভালো লাগতো। কিন্তু কোনো দিন বলা হয় নি। চমৎকার হাসি খুশি প্রানবন্ত মেয়ে লাবন্য। চারুকলার বকুলতলায় তাদের দেখা।
তখনও সন্ধ্যা হয় নি।
তবে যে কোনো সময় সন্ধ্যা নেমে যাবে। শীতের সময় সন্ধ্যা দ্রুত আসে। শাহেদ জামাল আর লাবন্য বসলো বকুলতলায়। শাহেদ এতটুকু জানে লাবন্যর বিয়ে হয়েছে মাস্টার্স শেষ করার পরেই। শাহেদও বিয়ে করেছে। তবে তার বউ তার সাথে থাকে না। দুই বছর হলো। শাহেদকে তালাক দিতে চায়।
লাবন্য বলল, কেমন আছো?
শাহেদ বলল, ভালো আছি। তুমি কেমন আছো?
আমিও ভালো আছি। বলেই, দুইজনই উচ্চ স্বরে হেসে উঠলো। স্বচ্ছ প্রানবন্ত হাসি।
তাদের হাসিতে গাছের পাখিরা বিরক্ত হলো। সারাদিন পর তারা ঘরে ফিরেছে। এখন বিশ্রাম নেবে। বাচ্চাদের খাওয়াবে। শীতের রাত। তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়বে। তা-না ভর সন্ধ্যায় দুইজন মানব মানবী ভালোবাসায় মজেছে।
অনেক আগেই সন্ধ্যা নেমেছে।
শাহেদ জামাল আর লাবন্য সেদিকে খেয়াল নেই। তারা নানান রকম গল্পে ভীষন ব্যস্ত। দীর্ঘদিনের সব জমানো কথা তারা একে অন্যকে বলছে। শাহেদ কোনো রকম ভনিতা না করেই বলল, লাবন্য তোমাকে দেখে আজ আমি অনেক খুশি। ভীষন খুশি। তোমাকে আমার খুব ভালো লাগতো। কিন্তু কখনও সাহস করে বলতে পারি নি।
লাবন্যও কোনো ভনিতা না করেই বলল, নির্বোধ কোথাকার। তোমার আগেই বলা উচিত ছিল। তাহলে আমাদের জীবনটা দারুন আনন্দময় হতো। শাহেদ জামাল বলল, লাবন্য তোমাকে খুব সুন্দর লাগছে। আমি কি তোমাকে একটা চুমু খেতে পারি? অন্ধকার হয়ে গেছে। কেউ দেখতে পাবে না। কেউ জানবে না।
লাবন্য বলল, দাও।
এক আকাশ ভালোবাসা নিয়ে শাহদ জামাল লাবন্যর ঠোটে আর গলায় চুমু খেল। চুমু দিয়ে শাহেদ জামালের মন ভরলো না। কমপক্ষে এক লাখ চুমু দিতে পারলে শাহেদ জামালের ভালো লাগতো। একটা দুইটা চুমুতে কি মন ভরে! প্রান ভরে! চুমু দিতে দিতে রাত পার হয়ে যাবে, তবেই না মজা। তবেই না আনন্দ।
রাত আট টা বেজে গেছে।
শাহেদ লাবন্য হাঁটতে হাঁটতে বাংলা একাডেমির সামনে চলে এসেছে। তারা হাত ধরাধরি করে হাঁটছে। এরকম দৃশ্য দূর থেকে দেখেও আনন্দ আছে। এই মুহুর্তে তাদের দেখে মনে হচ্ছে তারা এই পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মানুষ। তাদের কোনো দুঃখ কষ্ট নেই।
শাহেদ বলল, লাবন্য বাসায় যাবে না।
লাবন্য কোনোরকম ইতস্তত না করেই স্পষ্ট করে বলল, বাসায় যেতে ইচ্ছা করছে না। তোমার সাথে থাকতেই ভালো লাগছে।
শাহেদ বলল, আমারও বাসায় যেতে ইচ্ছা করছে না। তোমার সাথেই থাকতে ভালো লাগছে।
লাবন্য বলল, তবে থাকো। চলো আমরা দূরে কোথাও যাই। একটা বাসে উঠে পড়ি। বাস যেখানে থামবে সেখানে আমরা নেমে যাবো।
শাহেদ বলল, ওকে।
শাহেদের লাবন্যর সঙ্গ ভালো লাগছে। খুব ভালো লাগছে। তার মন বলছে, যতটা সময় পারো মেয়েটার সাথে থাকো। মেয়েটাকে একা ছেড়ে দিও না। ভালোবাসাকে অবহেলা করতে নেই।
আরামবাগ থেকে তারা একটা বাসে উঠলো।
বাস যাবে চিটাগাং। বাস চিটাগাং না গিয়ে খুলনা গেলেও সমস্যা নেই। উদ্দেশ্যবিহীণ যাত্রা। উদ্দেশ্যবিহীণ হলেও দারুন আনন্দময়। লাবন্য এবং শাহেদ দুইজনই মনে মনে একই কথা ভাবছে- সব জাহান্নামে যাক। আপাতত মানুষটার সঙ্গ প্রান ভরে উপভোগ করে নেওয়া যাক। বাস চলছে। লাবন্য শাহেদের কাঁধে মাথা রেখেছে। লাবন্যর চোখে পানি। শাহেদ বলছে, কেঁদো না। প্লীজ কেঁদো না। আমি আছি। আমি আর কোথাও যাবো না। আমার সমস্ত ভালোত্ব দিয়ে, তোমাকে আগলে রাখবো। পৃথিবীর কোনো খারাপ, ধুলো-ময়লা আর তোমাকে স্পর্শ করতে পারবে না। শাহেদ জামাল লাবন্যর কপালে চুমু দিলো। আরো শক্ত করে দুজন দু'জনকে জড়িয়ে ধরলো। যেন কেউ তাদের আর আলাদা করতে পারবে না। কেউ না।
ভোরে বাস থামলো অচেনা একটা জায়গায়।
তখন আকাশ পুরোপুরি ফর্সা হয়নি। চারিদিকে ভীষন শীত। ভীষন কুয়াশা। কুয়াশা যে এত সাদা হয় আগে জানা ছিলো না। বাস স্টেশনের পাশেই একটা চায়ের দোকান খোলা। শাহেদ লাবন্য চায়ের দোকানে বসল। তারা চা খাবে। ঠিক এমন সময় কোথা থেকে একটা পাগল দৌড়ে এলো। এই প্রচন্ড শীতেও তার গায়ে কোনো জামা নেই। ছেঁড়া একটা প্যান্ট পরা। পাগলটা শাহেদ আর লাবন্যর কাছে এসে বলল, তোরা সুখী হবি। তোদের আর কোনো দুঃখ-কষ্ট নেই। সাহস করে সামনে এগিয়ে যা। এই বলে পাগল চলে যাচ্ছে। শাহেদ বলল, এক কাপ চা খেয়ে যাও। পাগল ঘাড় কাত করে বলল, সময় নেই রে। অনেক কাজ আমার। অনেক কাজ।
শাহেদ লাবন্য জানে না কোথায় যাবে।
অচেনা শহর। তারা একটা রিকশা নিলো। আকাশে আলো ফুটতে শুরু করেছে যদিও, তবু সামনে কিছু দেখা যায় না। চারিদিকে গাঢ় কুয়াশা। রিকশা কিছু দূর যাওয়ার পর লাবন্য বলল, রিকশা ছেড়ে দিয়ে চলো আমরা হাঁটি।
শাহেদ বলল, এই পথ কোথায় শেষ হয়েছে জানি না। কতটুকু হাঁটবো?
লাবন্য বলল, নদী পর্যন্ত। মন বলছে, এই পথের শেষে একটা নদী আছে।
আসলেই চারিদিকে ভীষন কুয়াশা। এক হাত দূরের জিনিসও দেখা যায় না। ছোট্র চিকন রাস্তা। এই পথ কোথায় শেষ হয়েছে শাহেদ আর লাবন্যর জানা নেই। তারা হাঁট ধরাধরি করে হাঁটছে। হেঁটেই চলেছে।
বিধুর বিকল হয়ে খেপা পবনে
ফাগুন করিছে হাহা ফুলের বনে।
আমি যত বলি 'তবে এবার যে যেতে হবে'
দুয়ারে দাঁড়ায়ে বলে, 'না, না, না।'
০৭ ই জানুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৫:২৭
রাজীব নুর বলেছেন: হুম।
২| ০৭ ই জানুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৪:৪১
আলমগীর সরকার লিটন বলেছেন: প্রেম ভালবাসা চমৎকার হাওয়া
কোন প্রেমের দেখা ছুটে না কিন্ত
ভালবাসা সবত্রই বয়ে যায় ঝড়হাওয়া-----------------
০৭ ই জানুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৫:২৮
রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ।
৩| ০৭ ই জানুয়ারি, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:০৮
সাইয়িদ রফিকুল হক বলেছেন: ভালোলাগা রইলো।
০৭ ই জানুয়ারি, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:১৯
রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১| ০৭ ই জানুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৪:৪১
ইসিয়াক বলেছেন: মন মোর চায়.....।