নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

রাজীব নুর

আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।

রাজীব নুর › বিস্তারিত পোস্টঃ

মেয়েটার নাম ছিলো সুকন্যা

১২ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ৮:৫২



ব্লগার চাঁদগাজী মাঝে মাঝে নিজের ছোটবেলার কথা লিখেন।
গ্রামের কথা লিখেন। তার আত্মীজীবনী মূলক ছোট পোষ্ট গুলোতে অনেক চরিত্র উঠে আসে। উঠে আসে তখনকার গ্রামীন জীবনযাপন। অভাব, দারিদ্রতা। তৎকালীন সমাজ ব্যবস্থা। বিভিন্ন পোষ্টে শ্রদ্ধেয় চাঁদগাজীর বেশ কয়েকটা কিশোরী মেয়ের নামসহ আরো অনেকের নাম উঠে এসেছে। সে নাম গুলো আমার এখনও মনে আছে। যেমন আনু, মালতী, মাদরাসার দরিদ্র ছাত্র আবদুল করিম, হাসিনা চৌধুরী, শতাব্দী রায়, হাবাধন, লালু কাকা এবং তার স্ত্রী। তার আত্মজীবনী মূলক লেখাগুলো আমার ভীষন ভালো লাগে। আমি খুব আনন্দ নিয়ে পড়ি। পড়ে আনন্দিত হই, ব্যথিত হই। তার লেখা গুলো পড়ে আমি আমার ছেলেবেলার অনেক ভুলে যাওয়া ঘটনা মনে পড়ে যায়। আজ সেরকম একটা ঘটনা বলবো।

ছোটবেলায় আব্বার সাথে গ্রামে যেতাম।
আমাদের গ্রামের বাড়ি মুন্সিগঞ্জ। বিক্রমপুর। শ্রী নগর থানা। এখন গ্রামে যেতে মাত্র দেড় ঘন্টা সময় লাগে। কিন্তু ছোটবেলা গ্রামে যেতে সময় লাগতো ৭/৮ ঘন্টা। কিভাবে যেতে হতো একটু বলি। আমার এখ্নও স্পষ্ট মনে আছে। প্রথমে বেবীটেক্সী বা রিকশা করে সদরঘাট যেতে হতো। তারপর সদরঘাট থেকে লঞ্চ অথবা ইঞ্জিনওয়ালা নৌকা করে পদ্মা নদী দিয়ে বিক্রমপুর। নদী পথ যেন শেষ আর হয় না। নৌকা চলছে তো চলছেই। লঞ্চ বা ইঞ্জিনওয়ালা নৌকা থেকে নেমে অনেকখানি প্যাক কাদা পাড়িয়ে পাড়ে আসতে হতো। খুব নরম মাটি ছিলো বলে হাটু পর্যন্ত পা ডেবে যেত। চাপকল থেকে পানি তুলে পা ধুতে হতো। হেঁটে হেঁটে আসতে হতো কামার গা বাজার পর্যন্ত। তারপর রিকশা। ইঞ্জিনওয়ালা নৌকায় আমার খুব কষ্ট হতো। ইঞ্জিনের ভটভট শব্দে মাথা ব্যথা করতো। নৌকা থেকে নেমে অনেকক্ষন কানে কিছু শুনতাম না। শুধু কানে বাজতো ভটভট।

গ্রামে আমাদের দু'টা বাড়ি ছিলো পাশাপাশি।
একটা পাকা দোতলা বাড়ি। জমিদার বাড়ি। আমার দাদার বাপ জমিদার ছিলেন। উনার নাম ছিলো মোহর খা। যাই হোক, এখন অবশ্য পাকা বাড়ি অনেকখানি ভেঙ্গে পড়েছে। আমাদের আরেকটা বাড়ি হলো কাঠের দোতলা বাড়ি। বিক্রমপুরে আগে সব বাড়িঘর গুলো কাঠের ছিলো। গ্রামে বেশ মজা হতো। আত্মীয়স্বজন পাড়া প্রতিবেশি খুব খাতির যত্ন করতো। আর কোথাও গেলে আব্বা ঢাকা থেকেই সব রকম খাবার কিনে নিতো আমাদের জন্য। এর মধ্যে আমার প্রিয় ছিলো আলুর চিপস আর ফানটা। তখন কোক ফানটা ইত্যাদি সব কাচের বোতলে বিক্রি হতো। আমি ঊঠানে হেঁটে হেঁটে ফানটা আর চিপস খেতাম। আশে পাশের সমস্ত পোলাপান আমাকে লুকিয়ে লুকিয়ে দেখতো। আমি খুব ভাব নিতাম। শহর থেকে এসেছি বলে। অবশ্য সব পোলাপান আমাকে সমীহ করতো শহরের ছেলে বলে। আমি দেখতে বেশ সুন্দর ছিলাম।

সুকন্যা নামে একটা মেয়ের সাথে আমার খুব ভাব হয়ে গেল।
মেয়েটা দেখতে বেশ। মাথা ভরতি চুল ছিলো। চোখ দু'টা ভীষন মায়া মায়া। আমি আর সুকন্যা মিলে সারাদিন খেলি। মেয়েটা লতাপাতা দিয়ে নানান রকম জিনিস রান্না করে আমাকে খাওয়ায়। তখন আমি থ্রি বা ফোরে পড়ি। ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে পড়ি। আমার মনে আছে আমি গাছে উঠতে পারি না বলে সুকন্যা খুব অবাক হতো। সুকন্যা মুহুর্তের মধ্যে যে কোনো গাছে উঠে পড়তো। সুকন্যা এত সাহসী ছিলো যে গাছে উঠে নিচে পুকুরে লাফ দিতো। আমার এত সাহস নেই। আমি তো পুকুরে গোছলও করতে পারি না। পুকুরের মাটি থাকে নরম। নরম মাটিতে আমি দাড়াতেই পারি না। পা পিছলে পুকুরে ডুবে যাই। সুকন্যার বাবা প্রাইমারী স্কুলের শিক্ষক ছিলেন। উনার হাতে সব সময় একটা ছাতা দেখেছি। ছাতা ছাড়া উনি ঘর থেকে বের হতেন না।

একদিন সুকন্যা বলল, আমি নাকি প্রচন্ড ভীতু।
গাছে উঠতে পারি না। পুকুরে গোছল করতে পারি না। গরু হাত দিতে ধরতে সাহস পাই না। সুকন্যা আমাকে যতই ধমক দিক, ভীতু বলুক তাতে আমার কিচ্ছু যায় আসে না। কারন মেয়েটাকে আমার প্রচন্ড ভালো লাগে। মেয়েটা যতক্ষন আমার পাশে থাকে ততক্ষন দুনিয়াটা আমার থাকে। গ্রামের দিন গুলো সুকন্যার জন্য আনন্দময় হয়ে উঠতো। শহরে ফিরতে চাইতাম না। একদিন সুকন্যাকে সাহস করে বলেই ফেললাম, আমি তোমাকে বিয়ে করবো। সুকন্যা বলল, সত্যি? আমি বললাম, তিন সত্যি। সুকন্যা বলল, মনে থাকে যেন। সুকন্যাকে আমার বিয়ে করা হয়নি। সুকন্যা এখন তার স্বামীর সাথে আমেরিকার ফার্গো শহরে থাকে। গত ২৭ বছর সুকন্যার আছে আমার কোনো দেখা সাক্ষাত বা কোনো রকম যোগাযোগ নেই। তবে আমি জানি সে স্বামী সংসার নিয়ে ভালো আছে। তার দু'টা ছেলে। আমি প্রায়ই সুকন্যার কথা ভাবি। সুকন্যা কি আমার কথা ভাবে?

মন্তব্য ৩৬ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৩৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ৯:২৮

চাঁদগাজী বলেছেন:



সবার কৈশোর, হাইস্কুল, কলেজের জীবনে হাজার হাজার মহুর্ত আছে, সেগুলো খুবই প্রিয় কাহিনী।

১২ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ৯:৩৩

রাজীব নুর বলেছেন: এই কাহিনি গুলো মনকে আজও আনন্দ দেয়। বিষন্ন করে। হাসায়।

২| ১২ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ৯:৩২

ডার্ক ম্যান বলেছেন: বিয়ে হয়ে গেলে মেয়েরা অন্য কারো কথা ভাবার ফুসরত পায় না

১২ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ৯:৩৪

রাজীব নুর বলেছেন: আরে না-- অবসরে অবশ্যই অন্য কারো কথা অবশ্যই ভাবে।

৩| ১২ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ৯:৪০

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: ভালো থাকবেন সবসময়।

১২ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ৯:৪৬

রাজীব নুর বলেছেন: ভালো থাকার চেষ্টা অব্যহাত আছে।

৪| ১২ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ১০:০৯

ক্ষুদ্র খাদেম বলেছেন: সত্যি ঘটনা কী?? সুকন্যারা ভালো থাকুক, আপনিও ভালো থাকুন :)

১২ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ১০:২২

রাজীব নুর বলেছেন: সত্য ঘটনা।
ভালো থাকার চেষ্টা করতেছি।

৫| ১২ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ১০:০৯

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

সুকন্যা আপনি তিন সত্যি বলেও কথা রাখেন নি!!
এরকম কথা আর কতজনকে দিয়েছিলেন ?
আপনি কথা রাখেন নাই বলেই তারা
ঘুম আর তন্দ্রার মাঝে আপনাকে
হ্যাক করে!!

১২ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ১০:২৪

রাজীব নুর বলেছেন: মুরুব্বী আসসালামু আলাইকুম।
ভালো থাকুন।

৬| ১২ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ১০:৫২

নেওয়াজ আলি বলেছেন: অনন্য। শুভেচ্ছা

১৩ ই এপ্রিল, ২০২০ দুপুর ১:০১

রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ।

৭| ১৩ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ১২:২১

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

ন্যাড়া হবার শখ এখনো আছে খানসাব ?

১৩ ই এপ্রিল, ২০২০ দুপুর ১:০১

রাজীব নুর বলেছেন: না।

৮| ১৩ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ১২:৩৪

Rajibrpsoft বলেছেন: অবাক লাগলো এই ভেবে আপনার মনের কোন এক কোণে এখনও সুকণ্যা কে খুব যত্ন করে রেখেছেন

১৩ ই এপ্রিল, ২০২০ দুপুর ১:০২

রাজীব নুর বলেছেন: অবশ্যই।
তারা আমার স্বপ্ন, আমার আনন্দ। আমার ভালোবাসা।

৯| ১৩ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ১২:৪০

নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: আপনার গল্প পড়ে মনে হল আমি ওখানে গেয়েছি।৬৯বা৭০য়ে,আমার এক বন্ধু ওখানকার হাইস্কুলে শিক্ষকতা করতো।ওরসাথে দেখা করতে।বর্ষা কাল।স্কুলে অনেক ছাত্র নৌকা নিয়ে এসেছে।চারিদিক পানি আর পানি।সুন্দর ছিলেন না,এখনও আছেন।এই গল্প বাংগালির ঘরে ঘরে।তারপরও পড়ে ভাল লাগল।

১৩ ই এপ্রিল, ২০২০ দুপুর ১:০৩

রাজীব নুর বলেছেন: আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। ভালো থাকুন।

১০| ১৩ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ১২:৫২

গন্ধহীন বেলী ফুল বলেছেন: আজও হয়তো সুকন্যা তিন সত্যির কথা মনে করে নিঃশব্দে হাসে..

১৩ ই এপ্রিল, ২০২০ দুপুর ১:০৩

রাজীব নুর বলেছেন: তার মনে আছে কিনা কে জানে!!!

অবশ্য তার এত সময় কোথায়?

১১| ১৩ ই এপ্রিল, ২০২০ ভোর ৪:০৭

এইচ তালুকদার বলেছেন: মনটা খারাপ করে দিলেন ভাই।

১৩ ই এপ্রিল, ২০২০ দুপুর ১:০৬

রাজীব নুর বলেছেন: অন্য কোনো লেখা লিখে আবার মনটা ভালো করে দিবো।

১২| ১৩ ই এপ্রিল, ২০২০ সকাল ৮:১০

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: প্ল্যাটনিক ভালোবাসা ছিল না রোমান্টিক ভালোবাসা ছিল? যেহেতু বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিলেন তাই বোঝা মুশকিল।

১৩ ই এপ্রিল, ২০২০ দুপুর ১:০৮

রাজীব নুর বলেছেন: কতোটা বেহায়া আমি এত ছোট বয়সে একটা পুতুলের মতো বাচ্চা মেয়েকে বিয়ের কথা বলেছি। ছিঃ । নিজের উপরে নিজের রাগ হয়।

১৩| ১৩ ই এপ্রিল, ২০২০ দুপুর ১:১১

আর্কিওপটেরিক্স বলেছেন: বেশ বেশ :)

১৩ ই এপ্রিল, ২০২০ দুপুর ১:৪৬

রাজীব নুর বলেছেন: ওকে।

১৪| ১৩ ই এপ্রিল, ২০২০ দুপুর ১:১৮

সাইদুর রহমান বলেছেন: খুব সুন্দর লিখেন বরাবরই। শুভ কামনআ।

১৩ ই এপ্রিল, ২০২০ দুপুর ১:৪৬

রাজীব নুর বলেছেন: শুকরিয়া সাইদুর ভাই।

১৫| ১৩ ই এপ্রিল, ২০২০ দুপুর ২:৪০

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:


সনেট কবি কোথায়? অনেক দিন ধরে নিখোঁজ।

১৩ ই এপ্রিল, ২০২০ বিকাল ৪:৫৪

রাজীব নুর বলেছেন: তাই খোজ আমি কিছুই জানি না।

১৬| ১৩ ই এপ্রিল, ২০২০ বিকাল ৩:২৯

পলাতক মুর্গ বলেছেন: লেখাটা অসাধারণ হয়েছে, এরকম লেখা আরও চাই।

১৩ ই এপ্রিল, ২০২০ বিকাল ৪:৫৫

রাজীব নুর বলেছেন: ওকে।

১৭| ১৩ ই এপ্রিল, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৪৩

শোভন শামস বলেছেন: অপূর্ব লিখেছেন, চালিয়ে যান, ভাল থাকবেন নিরাপদে থাকবেন, ধন্যবাদ।

১৩ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ৮:৩০

রাজীব নুর বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ।

১৮| ১৩ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ১১:২৯

আশরাফ আল দীন বলেছেন: ঝরঝরে লেখা। ভালো লেগেছে।

১৪ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ১:৩৮

রাজীব নুর বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ। ভালো থাকুন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.