নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

রাজীব নুর

আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।

রাজীব নুর › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমার গ্রামের গল্প

১৩ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ১০:১২



কোনো ভনিতা করবো না।
সরাসরি মূল গল্পে প্রবেশ করবো। স্কুলে বার্ষিক পরীক্ষা শেষ। হাতে অনেক সময়। ডিসেম্বর মাস। প্রচন্ড শীত। তখন আব্বার নিজের একটা লঞ্চ ছিলো। পদ্মা নদীতে চলতো। সেই লঞ্চে করে আমরা সদরঘাট থেকে বিক্রমপুর যাচ্ছি। লঞ্চ ভরতি মানুষ। যেহেতু আব্বার লঞ্চ তাই আমি ভিআইপি কেবিনে বসে আছি। আমার সামনে নানান রকম খাবার। দুই হাত ভরতি করে আমি খেয়ে যাচ্ছি। ছোটবেলা আমি খুব বেশি খেতাম। সারাক্ষন খেতেই থাকতাম। বেশ মোটা ছিলাম আমি। লঞ্চে অনেকরকম হকার। কেউ ঝালমুড়ি বিক্রি করছে, কেউ সিদ্ধ ডিম, কেউ বাদাম, কেউ চা ইত্যাদি। আমি লঞ্চের ছাদে গেলাম। আমার সাথে লঞ্চের বাবুর্চি আছে। যদি পড়ে-টড়ে যাই সে আমাকে ধরবে। রক্ষা করবে।

বিকেলে গ্রামের বাড়ি গেলাম।
এবার আমার অন্য ভাইরা আশে নাই। শুধু আমি আর আব্বা। থাকবো তিন দিন। আমাদের কাঠের দোতলা বাড়িতে একটা স্পেশাল রুম আছে। সেই রুমকে আমার দাদী নাম দিয়েছেন 'কেবিন'। গ্রামে গেলে আমি সেই কেবিনেই থাকি। যদি আমি রাতে ভয় পাই, তাই আমার সাথে আমার ছোট ফুপি থাকতেন। ছোট ফুপি এখন নাটোর থাকেন তার স্বামীর সাথে। তার তিনটা মেয়ে। গত পাচ ধরে ছোট ফুপির সাথে দেখা হয় নাই। তার স্বামীর চাকরির কারনে তাকে নানান জেলায় জেলায় ঘুরে বেড়াতে হয়। ফুপি যখন সিলেট থাকতেন তখন তার সাথে দেখা হয়েছিলো। একদিন মধ্যরাত্রে ফুপির বাসায় গিয়ে তাকে চমকে দিয়েছিলাম। যাই হোক, গ্রামে গিয়ে রিয়া নামের একটা মেয়ের সাথে আমার খুব ভাব হয়ে গেল। অথচ আমি সুকন্যাকে পছন্দ করি। রিয়া সুকন্যা দুইজনই ভালো বন্ধু। তারা একই স্কুলে পড়ে। একই ক্লাশে।

আজ পহেলা বৈশাখ।
আগের দিন কথা ছিলো সুকন্যা আর আমি মেলায় যাবো। তখন ছোটদের কাছে বৈশাখ মানেই মেলা। মেলায় গিয়ে নাগর দোলায় উঠা। নাগর দোলায় না উঠলে মেলার আনন্দ অসম্পূর্ন থেকে যেত। নানান রকম খেলনা পাওয়া যেত মেলায়। মজার মজার খাবার খাওয়া। মেলাতে এমন কোনো খাবার নাই যেটা পাওয়া যেত না। লাল রঙ্গের আমত্তি পাওয়া যেত। আমত্তি এত বড় যে একটা খেলেই পেট ভরে যেত। প্রতি বছর মেলা বসে রাঢ়িখাল গ্রামের স্কুল মাঠে। আমাদের গ্রাম থেকে রিকশা করে রাঢ়িখাল যেতে সময় লাগে পনের মিনিট। সকালে আমি সুকন্যার বাসায় গেলাম। সুকন্যা বলল, আমি এখন যেতে পারবো না। মাসায় মেহমান আছে। বিকেলে যাবো। প্লীজ তুমি রাগ করো না। আমার মেজাজ প্রচন্ড খারাপ হলো। ইচ্ছা করলো গাছের উপরে উঠে পুকুরে লাফ দেই। ভাগ্যিস সাতার জানি না। সাতার জানলে ঠিকই লাফ দিয়ে দিতাম।

আমি রিয়াকে নিয়ে মেলায় গেলাম।
সেদিন রিয়া একটা লাল শাড়ি পরেছিলো। রিয়ার বাবা মুন্সিগঞ্জ থানার দারোগা ছিলেন। আমার বাবার বেশ ভালো বন্ধু। তারা দুজনেই কামারগাও স্কুলে একসাথে পড়েছেন। মেলায় গিয়ে রিয়া খুব খুশি। আমিও খুশি। রিয়া যদি মেলায় হারিয়ে যায় তাই আমি শক্ত করে রিয়ার হাত ধরে রেখেছি। মেলার মাঠ ভরতি লোকজন। মনে হচ্ছে পুরো বিক্রমপুরের সমস্ত লোকজন চলে আসছে মেলার মাঠে। বাশির শব্দ। মাইকে কি কি যেন বলছে একটু পরপর। আমরা আমিত্তি খেলাম, মালাই আইসক্রীম, লজেন্স খেলাম। এখন কেউ লজেন্স বলে না। বলে চকলেট। কি মনে করে আমি রিয়াকে দুই মুঠ কাচের লাল চুড়ি কিনে দিলাম। চুড়ি পেয়ে রিয়া ভীষন খুশি। মাইকে গান বাজছে- ''বুজতে আমার হইল দেরি, পিরিত ভিষন জালা, পিরিত ভিসন জালা।''

আমি খুব চিন্তায় পড়ে গেলাম।
সুকন্যাকে আমি বিয়ে করবো কথা দিয়েছি। অথচ আমার রিয়াকেও অনেক ভালো লাগে। অনেক চিন্তা ভাবনা করার পরও দুইজনের সাথে একসাথে থাকার কোনো উপায় আমার মাথায় এলো না। একবার ভাবলাম দুইজনকেই আমি বিয়ে করবো। সুকন্যা থাকবে গ্রামে। রিয়া থাকবে ঢাকায়। মাসে পনের দিন থাকবো রিয়ার কাছে, পনের দিন থাকবো সুকন্যার কাছে। আমি ছোট মানূষ। সহজ সরল আমার চিন্তা। ছোট বয়স- তাই দুনিয়ার জটিলতা কুটিলতা কিছুই বুঝি না। এদিকে সুকন্যা এসে বলল, আমাকে ভুলে যাও। আমি বললাম, কেন ভুলে যাবো? সুকন্যা বেশ রাগ দেখিয়ে চোখ মুখ ফুলিয়ে বলল, বিয়ে করবে আমাকে আর চুরি কিনে দিবে রিয়াকে! আমি বললাম, চুরি তো দুই মুঠ কিনেছি। এক মুঠ তোমার, এক মুঠ রিয়ার। সুকন্যা চলে গেল। যাওয়ার আগে বলে গেল- গাধা একটা।

মন্তব্য ১৮ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১৮) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ১০:৪২

মনিরা সুলতানা বলেছেন: হাহাহাহা :)
বেশ প্রেমিক পুরুষ ভাই আমার !
আপনারা মেলা বলতেন ? আমাদের ওখানে গোলুইয়া বলত মুরুব্বী রা। তবে বৈশাখী মেলা আর গোলুইয়া তে হয়ত পার্থক্য আছে ।

১৩ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ১১:০৪

রাজীব নুর বলেছেন: গোলুইয়া!!!

একেক অঞ্চলে কেক নামে ডাকে।

২| ১৩ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ১০:৫৯

নেওয়াজ আলি বলেছেন: এক রাশ মুগ্ধতা ।

১৩ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ১১:০৪

রাজীব নুর বলেছেন: হুম।

৩| ১৩ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ১১:১৬

আমি রানা বলেছেন: জীবনে প্রথম ছেকা? নাকি অভিমান ছিল?

১৪ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ১:৩৬

রাজীব নুর বলেছেন: ছ্যাকা শব্দটা আমার পছন্দ না।

৪| ১৪ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ৩:১৬

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আপনি অধ্যাবধি
গাধাই আছেন!!

১৪ ই এপ্রিল, ২০২০ দুপুর ২:০০

রাজীব নুর বলেছেন: চালাকদের লোকদের কাছে আমি অবশ্যই গাধা।

৫| ১৪ ই এপ্রিল, ২০২০ ভোর ৬:১৬

ইসিয়াক বলেছেন: আসসালামু আলাইকুম জনাব,
শুভ নববর্ষ ।

১৪ ই এপ্রিল, ২০২০ দুপুর ২:০০

রাজীব নুর বলেছেন: শুভ নববর্ষ ।

৬| ১৪ ই এপ্রিল, ২০২০ সকাল ১০:০২

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
ভালো লাগলো প্রেম কাহিনী।

১৪ ই এপ্রিল, ২০২০ দুপুর ২:০০

রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ।

৭| ১৪ ই এপ্রিল, ২০২০ দুপুর ১২:২৪

সাইন বোর্ড বলেছেন: কয়দিন আগে আমার এক পরিচিতজন বলছিল, বেশি বিয়ে করলে স্বামী আদর পায় বেশি, বউদের মধ্যে রীতিমত প্রতিযোগিতা শুরু হয়, যতক্ষণ পর্যন্ত পতিধন মাইনকা চিঁপায় না পড়ে । গল্প ভাল রেগেছে ।

১৪ ই এপ্রিল, ২০২০ দুপুর ২:০১

রাজীব নুর বলেছেন: গল্প হলেও বাস্তব কিন্তু।

৮| ১৪ ই এপ্রিল, ২০২০ দুপুর ১:৫০

ইসিয়াক বলেছেন: কি ব্যপার বন্ধু আপনি কই?

১৪ ই এপ্রিল, ২০২০ দুপুর ২:০১

রাজীব নুর বলেছেন: আছি।

৯| ১৪ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ৯:৩৬

খায়রুল আহসান বলেছেন: গাধা একটা - গল্পের সমাপ্তিটা চমৎকার হয়েছে! :)

১৪ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ৯:৩৮

রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ শ্রদ্ধেয়।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.