নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

রাজীব নুর

আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।

রাজীব নুর › বিস্তারিত পোস্টঃ

জীবনের গল্প- ৩৩

২০ শে এপ্রিল, ২০২০ দুপুর ২:২৮



শাহেদ। জাহেদ জামাল।
গতকাল রাতে বেশ গরম গেছে। ফ্যান ছাড়া থাকলেও টপটপ করে ঘামতে হয়। শাহেদ থাকে ছয় তলায়। সারাদিন প্রচন্ড গরম গেছে। রোদের তাপে ঘরের দেয়াল গুলো মধ্যরাত্র পর্যন্ত গরম হয়ে থাকে। ভোর চারটা শাহেদ বই পড়ছিলো। ঘুম নেই চোখে তাই বিছানায় ছটফট না করে সে বই পড়ছিলো। শরৎ বাবুর 'দত্তা' বইটা তার ভীষন প্রিয়। কতবার যে এই বইটি সে পড়েছে তার হিসাব নেই। এমন সময় বাইরে বাতাস ছাড়লো। বেশ ঠান্ডা বাতাস। মুহুর্তের মধ্যে পুরো ঘর ঠান্ডা হয়ে গেল। বাইরে বেশ বিদ্যুত চমকাচ্ছে। শাহেদ তার স্ত্রী নীলার গায়ে একটা পাতলা চাদর দিয়ে দিলো। তার মেয়ে গেছে দিদার সাথে ঘুমাতে। আজকাল সে তার দিদার সাথে ঘুমায়। দিদা তাকে মজার মজার গল্প শোনায়। গল্প শুনতে মেয়েটা খুব পছন্দ করে। তাছাড়া দিদার ঘরে এসি আছে। মেয়েটা গরম একেবারে সহ্য করতে পারে না।

আকাশ বেশ মেঘলা। অন্যদিনের মতো আজ কড়া রোদ নেই।
শাহেদ বাসা থেকে বের হয়েছে। কোনো কাজ নেই। এমনি বাসা থেকে বের হয়েছে। কিছুক্ষন হাটাহাটি করে বাসায় ফিরবে। শাহেদ জামালের স্ত্রী আজ খিচুড়ি রান্না করেছে। পোলাউ এর চাল দিয়ে খুচিড়ি। সাথে মূরগীর মাংসও আছে। নীলার হাতের রান্না বেশ। মেয়েটা তার মায়ের কাছ থেকে খুব রান্না শিখেছে। শাহেদ নীলাকে বলেছে, তুমি রান্না করতে থাকো- আমি চলে আসবো। দুপুরে একসাথেই খাবো। শাহেদ রেললাইনের সামনে গেল। তার প্রিয় জায়গা। এখানে বেশ কয়েকটা চায়ের দোকান আছে। সব গুলো দোকানই শাহেদের পরিচিত। শাহেদ রেল লাইনের পাশে একটা চায়ের দোকানে বসলো। কিছুক্ষন পর-পর ট্রেন যায়-আসে। বেশ ভালো লাগে দেখতে। খুব রুগ্ন একটা চায়ের দোকান। কাপ গুলো খুব ময়লা। দুপুর টাইম বলে দোকানে কোনো কাস্টমার নেই।

চায়ের দোকানের মালিক কলিম ভাই।
কলিম ভাইয়ের চায়ের দোকানের পেছনেই তার খুপরি বাসা। দুই সন্তান নিয়ে থাকে। স্ত্রী আছে। তাদের দুইজনকে দেখলেই বুড়ো বুড়ি বলে মনে হয়। অথচ তাদের বয়স বেশি নয়। কলিম ভাইয়ের স্ত্রী খিচুড়ি রান্না করছেন। পাশে তার দুই সন্তান আর স্বামী বসে আছে। তারা আগ্রহ নিয়ে খিচুড়ি রান্না দেখছে। পরিবারটি চোখে মুখে প্রচন্ড ক্ষুধা। শাহেদ জামাল পাশে বসে খিচুড়ি রান্না দেখছে। তার বেশ ভালো লাগছে। খুচিড়ির মধ্যে একটা ডিম ছেড়ে দেওয়া হলো। বেশ ভালো গন্ধ ছড়িয়েছে। পাতলা খিচুড়ি। মাটির চুলায় অনেক সময় লাগলো খুচুড়ি রান্না হতে। শাহেদের খিচুরি খেতে ইচ্ছা করছে। কলিম ভাই শাহেদকেও একটা প্লেট দিলেন। সবাই আরাম করে খিচুড়ি খাচ্ছে। পাতলা খিচুড়ি শাহেদ চামচ ছাড়া খেতে পারে না। অথচ তাকে হাত দিয়ে খেতে হচ্ছে। কলিম বলল, এই খিচুরির সাথে গরম গরম ডিম ভাজা হলে খেতে বেশ লাগতো। কলিম ভাইয়ের স্ত্রী বললেন, আচার হলেও বেশ হতো। বাচ্চা দু'টার কোনো কথা নেই। তারা গপগপ খেয়ে যাচ্ছে। এত গরম খিচুড়ি কিভাবে খাচ্ছে তাও এক রহস্য।

নীলা ফোন দিলো শাহেদকে।
এখন বিকেল পাচটা বাজে। কোথায় তুমি? শাহেদ বলল, জানি না আমি কোথায়। নীলা ফোন রেখে দিলো। রাস্তার পাশে এক মহিলা রুটি বানাচ্ছে। সাথে এক টুকরা গুড়ের চাকা দিচ্ছে। বিশাল সাইজ রুটি। বুটের ডালও আছে। রিকশাওলারা ফুটপাতে বসে রুটি খাচ্ছে গুড় বা ডাল দিয়ে। একেক জন তিনচার পিস করে রুটি খাচ্ছে। শাহেদ রুটি নিলো। তাকে একটুকরো গুড় দেওয়া হলো। শাহেদ রুটির অর্ধেকটা খেল। এত বড় রুটি তার পক্ষে একটা খাওয়া সম্ভব না। কি মনে করে শাহেদ আরও দুইটা রুটি আর দুই টুকরা গুড় নিলো। নীলা আর মেয়ের জন্য। সন্ধ্যা হয়ে গেছে। শাহেদ লক্ষ করে দেখেছে সন্ধ্যার সময় দুনিয়ার সমস্ত প্রানীকূল কেমন অস্থির বোধ করে। পাখিরা কিচির মিচির করতে করতে তাদের বাসায় যায়। মানুষও ঠিক তাই। কিন্তু শাহেদের এখন বাসায় যেতে ইচ্ছা করছে না। এই শহরে দেখার অনেক কিছু আছে। অনেক কিছু। শাহেদের অতি তুচ্ছ ঘটনাও দেখতে অনেক ভালো লাগে। রাস্তায় কেউ ঝগড়া করলেও শাহেদ দাড়িয়ে দাড়িয়ে দেখে। পুরো ঘটনাটা বুঝতে চেষ্টা করে।

রাত আট টা।
শাহেদ দেখল- গার্মেন্টস ছুটি হয়েছে। চারটা মেয়ে একসাথে বাজারে গেল। তারা তেলাপিয়া মাছ কিনল। কিছু সবজিও কিনলো। দোকানদাররা মেয়ে গুলোর সাথে অশ্লীল মজা করলো। মেয়ে গুলো হেসে হেসে একজন আরেকজনের গায়ের উপরে পড়লো। এখন নিশ্চয়ই মেয়ে গুলো বাসায় গিয়ে রান্না করবে তারপর খাবে। খেয়ে ঘুম দিবে। তারা বেশ আছে। ভোরে আবার ঘুম থেকে উঠে গার্মেন্টেসে যেতে হবে। রাত নয়টায় শাহেদ বাসায় ফিরলো। তার হাতে দুইটা রুটি আর গুড়ের চাকা।
নীলা বলল, তুমি খিচুড়ি পছন্দ করে বলে আজ খিচুড়ি রান্না করলাম। অথচ তুমি দুপুরে এলে না।
শাহেদ বলল, আমি দুপুরে আজ খিচুরিই খেয়েছি। বিশ্বাস করো এত ভালো খিচুড়ি আমি বহুদিন খাই নি।
নীলা বলল, বিকেলে নাস্তা কি খেয়েছো?
শাহেদ বলল, রুটি আর আখের গুড়। তোমাদের জন্যও নিয়ে এসেছি- এই দেখো।
নীলা বলল, রাস্তার খাবার কি করে আনলে?
শাহেদ বলল, অসংখ্য মানুষ তো প্রতিদিন রাস্তায় খাবারই খাচ্ছে।
নীলা বলল, ফালতু কথা রাখো। বড় ভাবী আজ রাতে আমাদের সবাইকে দাওয়াত দিয়েছে।
শাহেদ বলল, উপলক্ষ্য কি?
নীলা বলল, বড় ভাবীর কোনো উপলক্ষ্য লাগে না।

মন্তব্য ২০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২০) মন্তব্য লিখুন

১| ২০ শে এপ্রিল, ২০২০ বিকাল ৩:৪৭

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
খানসাব লেখাটা কি আপনার!
নাকি কারো কাছ থেকে ধার করা!
আপনিতো খালি মিথ্যা কথা বলেন!!
পুত্র সন্তানের বাবা হয়েছেন, ৫ এপ্রিল
আপনার জন্মদিন !! এত মিথ্যুক কেন আপনি?

২০ শে এপ্রিল, ২০২০ বিকাল ৪:৪৬

রাজীব নুর বলেছেন: আপনার মেধা বা রুচি দিয়ে চিন্তা করুন।
অবশ্য আপনি রসিকে সাপ মনে করা মানুষ।

২০ শে এপ্রিল, ২০২০ বিকাল ৪:৪৬

রাজীব নুর বলেছেন: আপনি তো কপির রাজা।
গুগলে সার্চ করে দেখুন।

২০ শে এপ্রিল, ২০২০ বিকাল ৪:৪৯

রাজীব নুর বলেছেন: আমার গল্পের চরিত্র গুলোর দোষ গুন আমার উপর চাপিয়ে দিচ্ছেন কেন?
নিজের জ্ঞান প্রসারিত করুন মুরুব্বী।

২| ২০ শে এপ্রিল, ২০২০ বিকাল ৩:৫৮

বিজন রয় বলেছেন: উপলক্ষ্য না হলে লক্ষ্য থাকে না।

২০ শে এপ্রিল, ২০২০ বিকাল ৪:৪৬

রাজীব নুর বলেছেন: জ্বী অবশ্যই।

৩| ২০ শে এপ্রিল, ২০২০ বিকাল ৪:৪৩

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
শাহেদের নাম দিয়ে তো নিজের গল্পটিই চালিয়ে দিলেন মনে হচ্ছে। তবে আমার খুবই ভালো লেগেছে । আমারও মাঝে মাঝে এরকম করতে মনে চায়।

২০ শে এপ্রিল, ২০২০ বিকাল ৪:৪৭

রাজীব নুর বলেছেন: তা ঠিক শাহেদ নাম দিয়ে নিজের গল্পই বলে দিয়েছি।

৪| ২০ শে এপ্রিল, ২০২০ বিকাল ৫:১২

ইসিয়াক বলেছেন: ভালোই লাগলো .......।

২০ শে এপ্রিল, ২০২০ বিকাল ৫:২৭

রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ।

৫| ২০ শে এপ্রিল, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:২৪

আমি রানা বলেছেন: ভাবছি নীলা নামের উপর ট্রেড মার্ক করবো। B-)

২০ শে এপ্রিল, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৩১

রাজীব নুর বলেছেন: হে হে---
আসলে নীলা নামটা সুন্দর। সহজ সরল। তাই এই নামটাই লোকজন বেশি ব্যবহার করে।

৬| ২০ শে এপ্রিল, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:২৫

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
কেউ যখন চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়
তখনতো ম্যাও প্যাও করেন !!
যা হোক আপনাকে আর রাগাবোনা
আপনি রেগে যাচ্ছেন !! হেহেহে

২০ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ৮:৩০

রাজীব নুর বলেছেন: আপনাদের এই এক সমস্যা।
বিনয় দেখালে আপনাদের কাছে ম্যাও প্যাও লাগে।

৭| ২০ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ১১:২৫

নেওয়াজ আলি বলেছেন: খিচুড়ি আমার প্রিয় তাই পড়তেই মন খারাপ হলো

২০ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ১১:২৭

রাজীব নুর বলেছেন: মন খারাপ হয়ে গেল !!!!!!

৮| ২১ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ১২:১৬

নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: আসলাম,পড়লাম,ভাল লাগলো।

২১ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ১২:৪৫

রাজীব নুর বলেছেন: শুকরিয়া ভাই সাহেব।

৯| ২১ শে এপ্রিল, ২০২০ দুপুর ১২:৫০

ক্ষুদ্র খাদেম বলেছেন: ভালো লাগলো পড়ে :D

আসলেই মানুষ তো রাস্তার খাবারই খায়, কতজন মানুষের সৌভাগ্য হয় তিনবেলা নিজের ঘরের খাবার খাওয়ার!!

২১ শে এপ্রিল, ২০২০ দুপুর ১:২১

রাজীব নুর বলেছেন: সেটাই। ক'জন এটা বুঝতে পারে!!!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.