নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।
এই কয়েক বছর আগের কথা।
অফিসের কাজে ঢাকার বাইরে যেতে হলো। রাত তখন ১ টা। বাইকে করে ডাক বাংলোয় ফিরছি। ঝাঁকিয়ে শীত পড়েছে। বাগের হাট অঞ্চলের বিখ্যাত শীত। শীতের জামা পড়েছি। মাফলার দিয়ে চোখ মুখ ঢেকেছি। তবু তীরের মতো এসে শীত গায়ে বিধছে। মাটির রাস্তার দু'পাশে ধানক্ষেত। বাইকে করে যাচ্ছি তো যাচ্ছি। পথ যেন শেষ হয় না। কিন্তু এত সময় লাগার কথা না। দুই একটা শিয়াল দেখলাম, এপার থেকে দৌড়ে ওপারে গেল। গ্রামে দেশে এখনও কিছু শিয়াল অবশিষ্ট আছে। হঠাত মাঝ রাস্তায় বাইক বিগড়ে গেল। বাইক চালক হানিফ ভাই বলল- সামনে কিছু দূর হেঁটে গেলেই ডাক বাংলো পেয়ে যাবেন। একা যেতে পারবেন না? আমি খুব সাহস দেখিয়ে বললাম- কোনো ব্যাপার'ই না। অথচ আমি মোটেও সাহসী না। প্রচন্ড ভীতু একটা ছেলে।
অন্ধকার রাস্তা।
বিশাল এক খন্ড মেঘ এসে চাঁদকে ঢেকে রেখেছে। খুব সাবধানে হাঁটছি। প্রচন্ড ভয় লাগছে। কিসের ভয় তা জানি না। রাস্তায় কাউকে দেখা যাচ্ছে না। দম যেন আমার বন্ধ হয়ে আসছে! কাউকে যে ফোন দিব তাও পারছি না। মোবাইল অফ। চার্জ নেই। কিছুক্ষন পর বুঝতে পারলাম, আমি ভুল পথে চলে এসেছি। নিজেকে খুব অসহায় লাগছিল। আশে পাশে কোনো বাড়ি ঘর দেখতে পাচ্ছি না। আমি মনে হয় পথ হারিয়েছি। সারা জীবন শহরে থেকেছি। গ্রামে এসে একি বিপদে পড়লাম! অচেনা অজানা জায়গা। এর মধ্যে অসংখ্য কুকুর চারিপাশে। ঘেউ ঘেউ করছে। কুকুর আমি খুব ভয় পাই। ছোটবেলা একবার কুকুরের দৌড়ানি খেয়েছিলাম।
হাঁটতে হাঁটতে ক্লান্ত হয়ে- একটা গাছের নিচে বসলাম।
মনে হচ্ছে বাকি রাতটা এখানেই কাটাতে হবে। কখন ভোর হবে কে জানে! চুপচাপ বসে আছি। কি করবো বুঝতে পারছি না। আশে পাশে কোথাও কুকুর খুব ঘেউ ঘেউ করছে। হঠাত ঠান্ডা বাতাস বইতে শুরু করলো। বাতাসে চারপাশে নানান গাছ পালার শনশন শব্দ। কেমন ভয় ধরানো শব্দ। আমি স্পষ্ট শুনতে পেলাম কে বা কারা যেন বলছে- আহা ছেলেটা!! অথচ আশে পাশে কাউকেই দেখা যাচ্ছে না। আমি প্রচন্ড ভয় পেলাম। আবার সেই বাতাসের শনশন শব্দ হলো। আহ-হা, বেচারা! আমি চারপাশে ভালো করে তাকালাম। অন্ধকারে কিছুই দেখতে পাচ্ছি না। ঠিক এই সময় আবার শুনতে পেলাম আহ-হা লোকটা।
অবশ্যই আমার মনের ভুল, তাতে কোনো সন্দেহ নেই।
আমি আধুনিক মানুষ। ভূতে আমার বিশ্বাস নেই। কিন্তু তীব্র ভয় যে কোথা থেকে এসে আছন্ন করে রাখে! আমি জোরে তিনবার শ্বাস নিয়ে হাঁটতে শুরু করলাম। আমি কি আজ মরে যাবো? মরে যাওয়ার আগে নীলার সাথে শেষ দেখা হবে না? ক্লান্ত লাগছে। বিধ্বস্ত অবস্থা। বেশ ক্ষুধার্থ। কোন দিকে যাচ্ছি, কোথায় যাচ্ছি- জানি না। কিন্তু চারপাশ থেকে সেই করুন সহানুভুতিময় সেই সুর, আহ-হা বেচারা, আহ-হা ছেলেটা, আহ-হা লোকটা।
মানুষের জীবনে খুব অদ্ভুত কিছু ঘটনা ঘটে।
সেদিন আমার সাথেও একটা অদ্ভুত ব্যাপার ঘটলো। কোথা থেকে একটা মেয়ে এলো। দারুন সুন্দর। মাথা ভরতি চুল। মেয়েটার চোখে মুখে খুব মায়া। দেখলেই আপন আপন মনে হয়। বিশ্বস্ত মনে হয়। মনে ভরসা জাগে। মেয়েটা আমাকে বলল, ভয় নেই। আপনি আমার সাথে আসুন। আমি মেয়েটার পেছনে পেছনে হাটা শুরু করলাম। কিছুক্ষন হাটার পরও মেয়েটা বলল- ওই তো ডাক বাংলো দেখা যাচ্ছে। আমি আমার রুমে ঢুকলাম। গোছল করলাম। বাবুর্চি খাবার ঢাকা দিয়ে রেখেছে। আরাম করে খেলাম। এবং ঘুমিয়ে পড়লাম। আমার কি মেয়েটাকে বলা উচিত ছিলো না- আসুন রুমে। একটু বসে যান। অন্ততপক্ষে এক কা চা খেয়ে যান। ছিঃ আমি কি অসামাজিক।
(ছবিঃ আমার তোলা)
১৫ ই জুন, ২০২০ রাত ৮:২৭
রাজীব নুর বলেছেন: শুকরিয়া বড় ভাই।
২| ১৫ ই জুন, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৪০
ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন:
গভীর রাতে কখনো কখনো রাস্তা ভুলে গেলে ভাগ্য ভালো হলে এমন সুন্দরী এক মেয়ে এসে পথ চিনিয়ে গন্তব্যে পৌছে দেন। এরা বিনিময়ে কিছুই নেন না। কারণ এরা “আলেয়া” আর আলেয়া মানুষকে উপকার করে। অপকার করে না। আপনার সাথে আলেয়ার দেখা হয়েছিলো।
১৫ ই জুন, ২০২০ রাত ৮:২৯
রাজীব নুর বলেছেন: আলেয়াকে আমি আবার দেখতে চাই। আর একটি বার।
৩| ১৫ ই জুন, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৪৯
অনল চৌধুরী বলেছেন: ২০১১ সালে একবার মধপুর জঙ্গলে বেড়াতে আমি টাঙ্গাইল সার্কিট হাউসে একাই ছিলাম।
এতোগুলি কক্ষে আর কেউ ছিলো না।
কর্মচারীরা বাইরের দরজায় তালা দিয়ে নিজেদের থাকার কোয়ার্টারে চলে গিয়েছিলো।
রাত ২ টায় কক্ষ থেকে বাউরে বের হয়ে বিশাল উঠানের সামনে দাড়িয়ে ফোনে কথা বলেছিলাম।
ডাকবাংলো-সার্কিট হাউস নিয়ে অনেক ভূতের গল্প থাকলেও আমি কোন ভূত দেখিনি।
আর ভয়ও পাইনি।
১৫ ই জুন, ২০২০ রাত ৮:৩৭
রাজীব নুর বলেছেন: আপনার ভাগ্য ভালো যে তাদের দেখা পান নি।
৪| ১৫ ই জুন, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৫০
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
এই লেখাটি এর আগেও এক বার মনে হয় পড়েছিলাম।
এটি না হলেও এই লেখাটির কাছাকাছি কোন লেখা তো হবেই।
আপনার কাছে দুনিয়ার সুন্দরীরা আসে!
রাত বিরাতে, আধাঁরে-অন্ধকারে সুন্দরীদের আনাগোনা আপনার কাছে।
১৫ ই জুন, ২০২০ রাত ৮:৩৯
রাজীব নুর বলেছেন: আসে তো।
আমার তো তুলা রাশি তাই।
৫| ১৫ ই জুন, ২০২০ রাত ৮:১৬
চাঁদগাজী বলেছেন:
বাগেরহাট এলাকার লোকজন কি সন্ত্রাসী ধরণের?
১৫ ই জুন, ২০২০ রাত ৮:৩০
রাজীব নুর বলেছেন: সন্ত্রাসী লোকজন বর্তমানে সব এলাকায় আছে।
৬| ১৫ ই জুন, ২০২০ রাত ৮:৩২
Subdeb ghosh বলেছেন: চমৎকার হয়েছে!
১৫ ই জুন, ২০২০ রাত ৮:৪০
রাজীব নুর বলেছেন: বানোয়াট নয়। বাস্তব। তাই।
৭| ১৫ ই জুন, ২০২০ রাত ৮:৫৩
সাইন বোর্ড বলেছেন: খুলনার কয়রা বা দাকোপ গেছেন কখনো ?
১৫ ই জুন, ২০২০ রাত ৯:১৬
রাজীব নুর বলেছেন: খুলনা বেশ কয়েকবার গিয়েছি। কই কই গিয়েছি জায়গার নাম তো মনে নাই। মানূষের নাম, জায়গার নাম আর সন তারিখ আমার মনে থাকে না।
তবে খুলনার খালিশপুর, ময়লাপোতার মোড়, নিউ মার্কেট রেলস্টেশন এর কথা মনে আছে।
৮| ১৫ ই জুন, ২০২০ রাত ৯:২৪
আহমেদ জী এস বলেছেন: রাজীব নুর ,
অন্ধকারে একা একা ভয় পেয়ে ,পথ হারিয়ে কেউ গাছের নীচে বসেনা, উর্দ্ধশ্বাসে দৌঁড়ায়।
নায়ক বেচারা বা লোকটা বা ছেলেটা মেয়েটার পেছনে পেছনে হাটবে কেন ? ভয়ে তার তো মেয়েটার গা ঘেসে হাটার কথা!
যাক, বেচারা বা লোকটা বা ছেলেটা আসলেই অসামাজিক। মেয়েটাকে একটু ধন্যবাদ দেয়া , চা-কফি খাওয়ার আমন্ত্রন জানানো আসলেই উচিৎ ছিলো।
ভালো হয়েছে লেখা। ঝরঝরে ..................
১৫ ই জুন, ২০২০ রাত ১১:০৮
রাজীব নুর বলেছেন: চুলচেরা বিশ্লেষন করতে গেলে আমি শেষ। এড়িয়ে যান।
৯| ১৫ ই জুন, ২০২০ রাত ৯:২৫
সাইন বোর্ড বলেছেন: এ দুটি খুলনার উপজেলা । আগে কয়রা যেতে হতো খুলনার রুপসা থেকে লঞ্চে, ১২ ঘন্টা লাগত, দুই ঘন্টা সুন্দর বনের পাশ দিয়ে লঞ্চ যেত । কয়রার পানি খাওয়া যায় না, শুধু লবণ ।
১৫ ই জুন, ২০২০ রাত ১১:১০
রাজীব নুর বলেছেন: রুপসা গিয়েছি। রুপসা ওইখানে মনে হয় ব্রিজ আছে। মংলা গিয়েছি।
১০| ১৫ ই জুন, ২০২০ রাত ১০:১৯
কাছের-মানুষ বলেছেন: চমৎকার গল্প। মেয়েটাকে আপনার ডিনার না হোক অন্তত চা খাওয়ানো উচিৎ ছিল।
১৫ ই জুন, ২০২০ রাত ১১:১০
রাজীব নুর বলেছেন: ভুল করে ফেলেছি।
১১| ১৫ ই জুন, ২০২০ রাত ১০:২০
শের শায়রী বলেছেন: এই টাইপের পেত্নীগুলার পা উল্টা হয়। পা'র দিকে খেয়াল করলেই বুজতেন আপনি কার পাল্লায় পড়ছেন
১৫ ই জুন, ২০২০ রাত ১১:১১
রাজীব নুর বলেছেন: আরে না আমার মতো সুপুরুষের কাছে পেত্নী আসবে না।
১২| ১৫ ই জুন, ২০২০ রাত ১০:২০
নেওয়াজ আলি বলেছেন: হামলা মামলা হয়রানি । এলাকায় পরিবারের নিরাপত্তা বিঘ্ন
১৫ ই জুন, ২০২০ রাত ১১:১১
রাজীব নুর বলেছেন: !
১৩| ১৫ ই জুন, ২০২০ রাত ১১:০৭
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
আমি এক সময় পাথরঘা্টায় চাকরি করতাম।
বাগের হাট দিয়ে যেতাম।
১৫ ই জুন, ২০২০ রাত ১১:১২
রাজীব নুর বলেছেন: আপনি অভিজ্ঞ মানুষ।
১৪| ১৭ ই জুন, ২০২০ বিকাল ৫:৪৮
ইসিয়াক বলেছেন:
রাত গভীর নিকষকালো অন্ধকারে একবার আমি পথ হারিয়েছিলাম। ভাবতে এখনো আমার গা কাঁটা দিয়ে ওঠে।
১৭ ই জুন, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৩৯
রাজীব নুর বলেছেন: সাহসী মানূষেরাও এই সময় ভয়ে কাবু হয়ে যায়।
©somewhere in net ltd.
১| ১৫ ই জুন, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:১৬
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: সুন্দর হয়েছে।