নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।
মানুষের মস্তিষ্ক কি আসলে?
আমাদের চিন্তা ভাবনা আমাদের জীবন যাপন, জীবন ধারণ সব কিছু চালিত হচ্ছে মস্তিস্ক থেকে হৃদয় বা হৃৎপিন্ড আমাদের বাঁচিয়ে রাখার একটি অঙ্গ মাত্র এর বেশি কিছু নয়। মানুষের চেয়ে মানুষ দুনিয়াতে দ্বিতীয়টি নেই। সময় সুযোগ অতি ভালো মানুষকেও অমানুষ বানিয়ে দেয়। হৃদয়হীন আর অমানবিক করে দেয়। প্রতিটা মানুষের মধ্যে কুৎসিত একটা রুপ আছে। আসলে প্রতিটা মানুষের একটা মূখোশ আছে। যা বিভিন্ন সময় বের হয়ে আসে। আজ আমি একটি মেয়ের গল্প বলব।
মেয়েটির নাম- মারিনা আবরামোবিক।
মারিনার বয়স ২৮ বছর। ১৯৭৪ সালে ইতালির একটা বড় হল রুমে ছয় ঘন্টাটা দাড়িয়ে ছিল। হল ভরতি অনেক নারী পুরুষ। মারিনা হলের ভিতর লিখিত একটা কাগজ হাতে নিয়ে দাড়িয়েছিল। কাগজে লেখা ছিল 'মনে করো আমি একটা বস্তু, আমি তোমাদের ৬ ঘন্টা সময় দিচ্ছি এর মধ্যে তোমরা আমার সাথে যা খুশি করতে পারো এবং এর সম্পূর্ণ দায়ভার আমার নিজের। এর জন্য তোমাদের কোনো শাস্তি পেতে হবে না।' সময়টা ছিল রাত আট টা থেকে রাত দুইটা পর্যন্ত।
মারিনা টেবিলের উপর রেখেছিল মোট ২৭ রকমের নানান জিনি্সপত্র। ব্লেড, গোলাপ, আঙ্গুর, মধু, পাউডার, পিস্তল, কনডম, পাখির পালক, বাঁশি, লাঠি ইত্যাদি। এগুলো দিয়ে মারিনাকে টর্চার করা যাবে। যেমন খুশি ব্যবহার করা যাবে। মারিনা কাউকে কিছু বলবে না। সে শুধু চুপ করে দাড়িয়ে থাকবে।
একটা মেয়ে যখন ৬ ঘন্টার পারমিশন দিচ্ছে আসো আমার সাথে যা খুশি করো, ঠিক সেই সময় তার সাথে কেমন ব্যবহার করা হয়েছিল সেটা শুনলে শরীরের লোম শিহরিত হয়ে ওঠে। হিউম্যান ব্রেইন হয়তো ধরেই নিয়েছিলো সে মুহূর্তে একজন নারী যখন ৬ ঘন্টার পারমিশন দিচ্ছে আমরা তার সাথে যা খুশি করতে পারি। ঐ ছয় ঘন্টা মানুষের আসল রুপ ফুটে উঠেছিলো।
কেউ কেউ স্পর্শ করছিল কেউ বুকে-পেটে-নিতম্বে। কেউ ধাক্কা দিচ্ছিল এবং ভাবছিল এর সাথে এখন কি কি করা যায়। একজন তাকে তুলে দেয়ালের দিকে ছুড়ে মারলো। কেউ কেউ বুকে কামর বসিয়ে দিলো। কেউ কেউ থাপ্পড় দিলো। কেউ ব্লেড দিয়ে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কেটে রক্ত বের করে দিলো। শুধু তাই নয়। কেউ কেউ তার শরীরের পোশাক খুলে তার সঙ্গে যৌন সঙ্গমও করেছিল। এত কিছুর পরও তাদের মন ভরছিল না, তারা কেউ কেউ মারিনার শরীরে কাঁটা বিদ্ধ করছিল। যার যা মন চায় তাই করলো। মারিনা চুপ করে শুধু সহ্য করে গেল। ব্যথায় মারিনা ছটফট করছিলো। মারিনা যত ছটফট করছিলো- হল ভরা লোক গুলো তত আনন্দ পাচ্ছিলো।
এই ছয় ঘন্টার মধ্যে যা যা করার তার সবই করেছিল।
তার পরেও তাদের খায়েশ কিছুতেই মিটছিল না। একটা পর্যায়ে মারিনার দেয়া ৬ ঘন্টা সময় শেষ হলো। মারিনা হাঁটতে শুরু করল। আর হলে থাকা যত মানুষ ছিল, যারা তার সাথে এমন আচরণ করেছে, শারীরিক নির্যাতন করেছে, গায়ে কাঁটা ঢুকিয়ে দিয়েছে, কাপড় খুলে দিয়েছে, মারিনা এক এক করে তাদের সামনে গিয়ে দাড়ালো এবং তাদের চোখে চোখ রেখে তাকিয়ে ছিলো।
এতক্ষন যারা তার সঙ্গে অসভ্য আচরন করল, তার গায়ের কাপড় খুলে নিল, সেই মানুষ গুলো তার চোখের দিকেও তাঁকাতে পারছিল না। মারিনা এই পারফরমেন্সে মানুষদের মাঝে লুকিয়ে থাকা একটা রাক্ষস দেখিয়েছে। খারাপ মনোভাব গুলো বের করে এনেছেন। মানুষ মনের মাঝে কতটা রাক্ষস লালন করে সেটা দেখানোই মারিনার উদ্দেশ্য ছিল।
মানুষ যখন আপনাকে অসহায় বা সহনশীল পাবে তখন আপনাকে যন্ত্রণা দেয়ার একটা উপায়ও বাদ রাখবে না। অসহায় ও প্রতিবাদ করার ক্ষমতা না থাকলে সবাই আপনাকে বস্তু মনে করবে। ওরা তখন টর্চার করে মজা পাবে। ওরাও কিন্ত মানুষ। মানুষ রাক্ষস! যারা মারিনার সাথে অমন করেছিল। সমাজে সব পুরুষই আসলে এই রকম। সময় আর সুযোগের অভাবে তারা ভালো সেজে আছে। আসলে তারা ভয়ানক রাক্ষস।
কে এই মারিনা? কি পরিচয় তার?
পেশায় মারিনা একজন সাইবেরিয়ান আর্টিস্ট, ফিলেনথ্রপিস্ট এবং একজন ফিল্ম মেকার। তার সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনায় সে হয়তো অনেক মানুষকে দেখিয়ে দিয়েছিলো আমাদের মানুষ সত্তার ভেতরে বাস করা এক পশু বেরিয়ে আসার নমুনা। পরিশেষে বলা যায় যে, আপনারা বনে জঙ্গলে কোথাও রাক্ষস পাবেন না, এই মানুষের মাঝেই রাক্ষস, মানুষরূপী জন্তু-জানোয়ার গুলো লুকিয়ে থাকে। আমাদের উচিত এদের থেকে সাবধান থাকা।
(তথ্যসুত্রঃ ইন্টারনেট)
©somewhere in net ltd.