নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

রাজীব নুর

আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।

রাজীব নুর › বিস্তারিত পোস্টঃ

এই সমাজ- ৩৫

০৪ ঠা অক্টোবর, ২০২০ রাত ১১:৪৭



ঢাকা শহরের মানুষ কিভাবে বেঁচে আছে!
বাজারে আগুন। প্রতিটা জিনিসে দাম বেশি। অনেক বেশি। ডিম ডজন ১১০ টাকা। আগে ছিলো ৮০ বা ৯০ টাকা। একটা লাউ ৮০ টাকা। আগে ছিলো ৩০/৪০ টাকা। বাজারে যে কোনো সবজি ৮০ টাকার উপরে। পেঁয়াজ ৯৫ টাকা। আলু ৪০ টাকা। আলু সব সময় কিনতাম ২০ টাকা করে। এখন ডবল দাম। বাজার ভর্তি চাষের মাছ। খেতে একটুও স্বাদ না। তবু সেই চাষের মাছের দামও ৫ শ' টাকার উপরে কেজি। চিংড়ি মাছ কিনতাম ৫ শ' টাকা কেজি। এখন ৬৫০ টাকা। বাজার ভর্তি ইলিশ মাছ কিন্তু অনেক দাম। এত দাম দিয়ে মানুষ কিভাবে কেনাকাটা করছে, আমি ভেবে পাই না! বাজারে গেলে আমার হিমসিম খেতে হয়। দম বন্ধ হয়ে আসে। চোখে অন্ধকার দেখি। শেষমেষ মন খারাপ করে বাসায় ফিরি।

এই শহরের মানুষ কিভাবে খেয়েপড়ে বেঁচে আছে!
বিরাট এক রহস্য। এই রহস্য আমি বের করতে পারছি না। রাস্তার বের হলেই আমি হাঁ করে মানুষের মুখের দিকে তাকিয়ে থাকি। এই শহরে যাদের টাকা আছে, তাদের প্রচুর টাকা আছে। আর যাদের টাকা নেই, একেবারেই নেই। একসময় শুধু ঈদের সময় শহরে ভিক্ষুক বেড়ে যেত। এখন করোনাকাল আসার পর থেকে শহরে ভিক্ষুক অনেক বেড়ে গেছে। ভিক্ষুকদের ভিক্ষা চাওয়ার স্টাইল অনেক বদলে গেছে। একটা বোরকা পরা মহিলা ছয় সাত মাসের বাচ্চা কোলে নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে ফুটপাতে। লোকজনদের বলে আমাকে এক কেজি ভাতের চাল কিনে দেন। অথবা বলে আমাকে একটা পাউয়া রুটি কিনে দেন। আবার একটি পরিবারের বাবা মা আর দুই ছেলেমেয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকে, বলে- গ্রামে যাব টাকা নাই আমাকে নওগা যাওয়ার ভাড়া দেন। সব মিলিয়ে শহরের বেশির অর্ধেক লোক ভালো নেই। তারা চুল করে আছে। আড়ালে হয়তো কাঁদেও।

আমি গত চার দিন ধরে পকেটে তিন হাজার টাকা নিয়ে ঘুরছি।
প্রতিদিন বাজারে যাই। কিছু না কিনে বাসায় ফিরে আসি। সুরভি যে লিস্ট দিয়েছে তাতে দশ হাজার টাকার বেশি লাগবে। বাসায় ফিরলে সুরভি বলে বাজার কই? আমি বলি- আজ বাজারে যাই নি। বৃষ্টি হয়েছে। বাজারে অনেক প্যাঁক কাঁদা, পরে। আগামীকাল যাব। এই করতে করতে পকেটে থাকা তিন হাজার টাকা শেষ। মাছের বাজারে গিয়ে দেখি কিছু লোকজন পাগলের মতো মাছ কিনছে। তারা কোনো দামদরও করছে। এক লোক তিন হালি ইলিশ কিনলো তেরো হাজার টাকা দিয়ে। যে লোক বারোটা ইলিশ মাছ কেটে দিলো তাকে এক হাজার টাকা দিয়ে দিলো। আমি অবাক হয়ে তাকিয়ে দেখি। কিছু মানুষের এত টাকা কেন? শীত শুরু হয়নি কিন্তু বাজারে টমেটো, শিম, ফুলকপি আর বাধাকপি পাওয়া যাচ্ছে। শিম আর টমেটো ১২০ টাকা কেজি। ইলিশ মাছ, শিম টমেটো ইত্যাদি জিনিস কিনতে একজন মানুষের প্রতিমাসে অনেক টাকা ইনকাম করতে হবে।

রেস্টুরেন্ট গুলোতে ভরা মানুষ।
রেস্টুরেন্ট গুলো দেখলে মনে হয়- এই শহরে কোনো গরীব মানুষ নেই। লোকজন পাগলের মতো খাচ্ছে। সেদিন কেএফসি গেলাম গিয়ে দেখি বসার জায়গা নেই। পুরান ঢাকায় বিরানী খেতে গিয়েও একই অবস্থা, বসার জায়গা নেই। বংশালের আল রাজ্জাক হোটেলে যখনই যাই দেখি মানুষ গিজ গিজ করছে। অর্থ্যাত এক শ্রেনী ইচ্ছা মতো খাচ্ছে, ইচ্ছা মতো কেনাকাটা করছে, আরেক শ্রেনী রেস্টুরেন্টের আর বাজারের সামনে দাঁড়িয়ে ভিক্ষা করছে। এক শ্রেনীর ঘর ভর্তি খাবার, আরেক শ্রেনী না খেয়ে আছে। এক শ্রেনীর পকেট ভর্তি টাকা আরেক শ্রেনীর পকেট ফাঁকা। যাদের টাকা নাই, যারা না খেয়ে আছে তাদের নিয়ে ঈশ্বর বা সরকার চিন্তিত নয়। আমার দুঃখ লাগে একদম পিচ্চি পিচ্চি পোলাপান ভিক্ষা করছে। এটা প্রচন্ড দুঃখজনক। একটা ৫/৭ বছরের বাচ্চা ছেলেমেয়ে হাত পাতছে। আমার খুব কষ্ট হয়। এখন তাদের পুতুল নিয়ে খেলার কথা।

ঢাকা শহরে অনলাইন মার্কেটিং বেশ জমজমাট হয়েছে।
প্রচুর ছেলেমেয়ে এবং ঘরের বউরা অনলাইন মার্কেটিং করছে। অনেক চাকরীজীবিও অনলাইন ব্যবসা করছে। তাদের বেশ লাভও হচ্ছে। ফেসবুকে অনলাইন ব্যবসার পেজের অভাব নাই। আমি সব খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে মন দিয়ে দেখি। এক মেয়ে পত্রিকা অফিসে চাকরি করে, ফাঁকে ফাঁকে সে ইলিশ মাছও বিক্রি করে অনলাইনে। তার প্রচুর লাভ হচ্ছে। সে নিজেই তা স্বীকার করছে। এক মহিলা মধু বিক্রি করছে। ফেসবুকে তার পেজ আছে। সে বেশ ভালো বিক্রি করছে। এত এত অর্ডার পাচ্ছে যে রীতিমত মধু ডেলিভারী দিতে তাকে হিমসিম খেতে হচ্ছে। এক হুজুর বিক্রি করছে চা পাতা। তার ব্যবসাও ভালো হচ্ছে। একমেয়ে রান্না করা খাবার বিক্রি করছে। সে প্রচুর অর্ডার পাচ্ছে। আমার এক বন্ধু বিক্রি করছে ফিল্টার পানির মেশিন। সে আবার অটবি ফার্নিচারে চাকরিও করছে। তার সেলারিও ভালো। আমার এক বন্ধুর ওয়াইফ বিক্রি করছে লিপস্টিক, মেকাপ বক্স আর ফ্রেশ ওয়াশ। তার পেজে মেম্বার আছে সাত হাজারের উপরে। সবাই কাম কাজ নিয়ে ভয়াবহ ব্যস্ত। আর আমি নালায়েক খা খা করে ঘুরে বেড়াচ্ছি। শহরের ধূলাবালি গায়ে মাখাছি। আর বলছি জীবনটা মন্দ নয়।

মন্তব্য ১৪ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই অক্টোবর, ২০২০ রাত ১২:১০

কলিমুদ্দি দফাদার বলেছেন: ২০১২ তে প্রথমবার রাংঙামাটি যেয়ে শহরটির প্রেমে পড়ে যায়। এত সুন্দর পাহাড়ের মধ্য বিশাল এক লেক, সহজ, সরল পাহাড়ীদের জীবন-যাপন আমাকে মুগ্ধ করে। ঢাকায় এসে সিদ্ধান্ত নেই এই কোলাহল ছেড়ে পাহাড়ে চলে যাব। ছোট একটা চায়ের দোকান আর সুন্দর একটি পাহাড়ী মেয়েকে বিয়ে করে সেখানে ই থেকে যাব। :) কিন্তু পাহাড়ী মেয়েরা বাংগালীদের বিশ্বাস করে না। অতীতে অনেক পাহাড়ী মেয়ে বাঙালীকে বিশ্বাস করে ঠকেছে।

০৫ ই অক্টোবর, ২০২০ রাত ১২:১৩

রাজীব নুর বলেছেন: ওকে।

২| ০৫ ই অক্টোবর, ২০২০ রাত ১২:৩১

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

দুঃখ কষ্টের কথা আর শুনতে ভালো লাগেনা।
সবারই কষ্ট আছে দুঃখ আছে তবে তা লাঘব
করার উপকরণ না্ই, টাকা নাই পয়সা নাই।
তারপরেও মানুষ করোণা থেকে মুক্ত আছে
এজন্য আল্লাহর কাছে শোকরানা আদায় করছে।

০৫ ই অক্টোবর, ২০২০ রাত ১২:৪১

রাজীব নুর বলেছেন: করোনা দিয়েছে কে?

৩| ০৫ ই অক্টোবর, ২০২০ রাত ৩:২৫

চাঁদগাজী বলেছেন:



যারা ফেসবুক ব্যবহার করে অনলাইনে বিক্রয় করে, তারা গ্রাহক থেকে টাকা নেয় কিভাবে?

আপনি চেষ্টা করতে পারেন।

০৫ ই অক্টোবর, ২০২০ রাত ৩:৩০

রাজীব নুর বলেছেন: বিকাশ করে দেয়। কুরিয়ার করে পোডাক্ট পাঠিয়ে দেয়। অথবা নিজের কর্মচারী দিয়ে পাঠিয়ে দেয়। অবশ্য এজন্য একস্ট্রা খরচ দিতে হয়।

৪| ০৫ ই অক্টোবর, ২০২০ ভোর ৬:১১

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:

ঢাকা শহর বসবাসের অযোগ্য হয়ে গেছে অনেক আগেই।
এখন এটাকে পরিত্যাগ করার সময় এসে গেছে।

০৫ ই অক্টোবর, ২০২০ সকাল ১১:২১

রাজীব নুর বলেছেন: আপনি যদি আজ ঢাকা শহরে থাকতেন তাহলে এভাবে বলতে পারতেন?

৫| ০৫ ই অক্টোবর, ২০২০ ভোর ৬:৪১

নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: মনে হয় ধনী আরো ধনী হয়ে গেছে গরিবের সংখ্যা বেড়ে গেছে। সার্বিক অর্থনৈতিক অবস্থাতো অতটা খারাপ হয় নাই।

০৫ ই অক্টোবর, ২০২০ সকাল ১১:২২

রাজীব নুর বলেছেন: তলে তলে করুন অবস্থা।

৬| ০৬ ই অক্টোবর, ২০২০ বিকাল ৫:২০

আঁধার রাত বলেছেন: আমেরিকার প্রেসিডেন্ট গরীব লোকদের বলত ”দে আর ফাকিং লুজার”।

০৬ ই অক্টোবর, ২০২০ বিকাল ৫:৫৩

রাজীব নুর বলেছেন: প্রেসিডেন্টের নাম কি? বুশ? ওবামা? ট্রাম্প? আব্রাহাম? কেনেডি?

৭| ০৭ ই অক্টোবর, ২০২০ দুপুর ১:২২

আঁধার রাত বলেছেন: ”আমেরিকার প্রেসিডেন্ট গরীব লোকদের বলত ”দে আর ফাকিং লুজার”। ”
যদিও এ বাক্যটা পাস্ট টেন্স বলে মনে হচ্ছে কিন্তু এইটা পাস্ট টেন্স না। কি টেন্স তাও মনে নাই তবে ”যদি এইটা ঘটত তাহলে ঐটা ঘটত” বিষয়টা এমন। টেন্স যতদিন লাগত ততদিন পড়তাম। এখন চাকুরী পেয়ে গেছি আর পড়ার দরকার নাই।
প্রেসিডেন্টের নাম ইভানাকা ট্রাম্প। ২০২৮ সালে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট।

৮| ০৭ ই অক্টোবর, ২০২০ দুপুর ২:০০

রাজীব নুর বলেছেন: ও আচ্ছা। অনেক ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.