নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।
একজন সত্যিকারের প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত বিজ্ঞানী বিশ্বাস করে যেকোন কিছু হয় বস্তু অথবা শক্তি দ্বারা তৈরী। এটা ঠিক যে, বস্তু এবং শক্তি একই মুদ্রার দুই পিঠ মাত্র। বস্তু আর শক্তির দুনিয়া যিনি দেখেন, সেই বিজ্ঞানী যখন প্লেটোর দর্শন পড়েন তার কাছে খুবই মজার ঠেকে। বিশেষ করে সক্রেটিসীয় ঐতিহ্যে ধরে প্লেটোর সংলাপ নির্ভর লেখা। প্লেটো নিজের তরফে কিছু বলতেন না, সব কিছুর বরাত ছিলেন গুরু সক্রেটিস। সক্রেটিসের হেয়াঁলিপূর্ণ কথাবার্তা তার কালের লোকজনকে মুগ্ধ করত, নিঃসন্দেহে এইকালের বিজ্ঞানীদেরও করে। তারা যখন প্লেটোর দি রিপাবলিক বইটি পড়েন, সক্রেটিসের মুখে বয়ানকৃত গুহার রূপক পড়ে চমৎকৃত হন বলে জানা যায়।
তিনজন মনীষী গ্রিক জ্ঞান-বিজ্ঞান ও ঐতিহ্যকে সবচেয়ে প্রভাবিত করেছিলেন। তারা হলেন- সক্রেটিস, প্লেটো এবং এরিস্টটল। সক্রেটিসের সবচেয়ে প্রিয় ও বিখ্যাত শিষ্য ছিলেন প্লেটো। সক্রেটিস নিজে কিছু লেখেন নি। সক্রেটিসের কথা ও চিন্তা-ভাবনা সম্পর্কে আমরা জানতে পারি প্লেটোর লেখা থেকে। আর এরিস্টটল ছিলেন প্লেটোর শিষ্য। প্রায় ৪২ বছর বয়সে খ্রিষ্টপূর্ব ৩৪২ সালে মেসিডোনিয়ার রাজা দ্বিতীয় ফিলিপ তাঁর ১৩ বছরের ছেলে আলেক্সান্ডার- এর গৃহশিক্ষক হওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানান। এরিস্টটল এই আমন্ত্রণ গ্রহণ করেন। এরিস্টটল তাঁর ছাত্র আলেক্সান্ডারকে সামরিক বিদ্যাসহ একজন ভাবী রাজার উপযোগী অন্যান্য বিদ্যায় পারদর্শী করে তোলেন। এরিস্টটলের পদার্থবিদ্যা প্রাচীনকালের বিষয় আর আধুনিক ভৌত বিজ্ঞানসমূহ আধুনিক যুগের বিষয়- এই পার্থক্যের চেয়েও বড় পার্থক্য হচ্ছে এরিস্টটলের পদার্থবিদ্যা ছিল দর্শন, যেখানে আধুনিক পদার্থবিজ্ঞান একটি ইতিবাচক বিজ্ঞান যা একটি দর্শনকে প্রথমেই সত্য বলে ধরে নেয়। এরিস্টটলের পদার্থবিদ্যা না থাকলে গ্যালিলিও'র জন্ম হতো না।
এরিস্টটল, বিশ্ববিখ্যাত গ্রিক বিজ্ঞানী ও দার্শনিক।
তাকে প্রাণীবিজ্ঞানের জনক বলা হয়। শৈশবে তাঁর বাবা মারা যান এবং ১৭ বছর বয়সে তার অভিভাবক প্রোক্সেনাস তাকে এথেন্সে জ্ঞানার্জনে পাঠিয়ে দেন। এথেন্স তখন বিশ্বে জ্ঞান চর্চার কেন্দ্র হিসেবে গণ্য হত। সেখানে তিনি প্লেটোর একাডেমিতে সরাসরি প্লেটোর অধীনে প্রায় বিশ বছর শিক্ষা গ্রহণ করেন। একসময় প্লেটো ও তার একাডেমিতে থাকাকালেই তিনি নিজেই ভাষাত্বত্ত নিয়ে লেকচার দিতে শুরু করেন। খ্রিষ্টপূর্ব ৩৪৭ সালে প্লেটোর মৃত্যুর পর অ্যারিস্টটলই একাডেমির প্রধান হবার যোগ্য ছিলেন। কিন্তু প্লেটোর দর্শণের সাথে অ্যারিস্টটলের নিজের দর্শণের দূরত্বের দরুণ প্লেটোর আত্মীয় Speusippus কেই একাডেমির প্রধান হিসেবে বেছে নেয়া হয়। এরিস্টটলের ফুজিকোস আক্রোয়াসেওস (ইংরেজিতে যে বইটি Physics নামে পরিচিত, আক্ষরিক অনুবাদ 'প্রকৃতি বিষয়ক বক্তৃতামালা' গ্রন্থটি মূলত একটি বক্তৃতা যাতে তিনি এমন সব বস্তু নির্ণয়ের চেষ্টা করেছেন যারা নিজে থেকেই উদ্ভূত হয়।
এরিস্টটলের রচনাবলী শুধুমাত্র তার সময়েই প্রভাব বিস্তারকারী ছিলো না বরং নিউটনের আগ পর্যন্ত পরবর্তী দুই হাজার বছর ধরে সমস্ত বিজ্ঞানের ভিত্তিমূল হিসাবে স্বীকৃত ছিল। দর্শন, যুক্তি, জোতির্বিজ্ঞান, জীববিজ্ঞান, পদার্থবিজ্ঞানসহ অসংখ্য বিষয়ে লিখে গেছেন তিনি। যুক্তিবাদী হিসেবে তিনি ছিলেন সবচেয়ে শক্তিশালী। অন্যদিকে তার সবচেয়ে দুর্বল দিক ছিল প্রাকৃতিক দার্শনিক বা বিজ্ঞানী হিসাবে। গ্রীকদের চিন্তাভাবনার বেশীর ভাগই সংরক্ষিত ছিল আলেকজান্দ্রিয়া শহরের লাইব্রেরীতে। এরিস্টটলের মৃত্যুর সময়কালীন সময়ে আলেকজান্দ্রিয়া পরিনত হয় সারাবিশ্বের জ্ঞানের তীর্থভূমিতে। আলেকজান্দ্রিয়ার এই লাইব্রেরী দুই বার ধ্বংস করে দেয়া হয়। প্রথমবার করেছিল ক্রিশ্চান বিশপ থিওফিলাস ৩৯০ সালের দিকে। সপ্তদশ শতাব্দীতে একে দ্বিতীয়বারের মত ধ্বংস করে দেয় মুসলমানেরা। রোমান সাম্রাজ্যের পতনের পর পরই প্লেটোর ধারণা সমূহ জনপ্রিয় হয়ে উঠে। ধর্মনিরপেক্ষ চিন্তা-চেতনা বড় ধরনের দুঃসময়ে পতিত হয়। প্লেটোর দর্শনের কারণে এরিস্টটলের অনেক ধারণাও মার খেয়ে যায় সেই সময়। প্লেটো ছিলেন মানবকেন্দ্রিক (Anthropocentric) ধারণার অনুসারী। তিনি বিশ্বাস করতেন যে, বিশ্ব চরাচর পরম কোন সত্ত্বা সৃষ্টি করেছেন এবং তা তিনি নিয়ন্ত্রণ করে চলেছেন। এই বিশ্ব ব্রক্ষ্মান্ডে মানুষের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে বলে তিনি মনে করতেন।
এরিস্টটলের স্ত্রীর নাম ছিল পাইথিয়াস।
তাঁদের এক কন্যা সন্তান জন্মগ্রহণ করে। কন্যা পাইথিয়াস দীর্ঘদিন বাঁচে নি। খ্রিষ্টপূর্ব ৩২৩ সালে মহাবীর আলেক্সান্ডারের মৃত্যুর পর এরিস্টটল এথেন্স থেকে চলে যেতে বাধ্য হন এবং ইউবা দ্বীপের ক্যালসিস নামক স্থানে তার মায়ের জমিদারিতে অবস্থান নেন। সেখানেই তিনি পরের বছর পেটের পীড়ায় ৬৩ বছর বয়সে দেহত্যাগ করেন।
প্লেটো এরিস্টটলের রাষ্ট্র ভাবনায় রয়েছে দুটি শ্রেণীর উপস্থিতি। এক, অভিজাত, দুই দাস। যাদের অস্তিত্ব হলো অভিজাতদের আরাম আয়েশের ব্যবস্থা করার জন্যে। এই দর্শনকে এখনো পড়ানো হয় এবং দর্শনের ভিত্তি বলা হয়। তাদের এই দর্শনকে বোঝাবার জন্যে কার্টুন ইলাস্ট্রেশন-এ দেখানো হয়েছিলো একটি পাহাড়, যার চূড়োটা সমতল। সেখানে বসে আছে আট দশজন অভিজাত শ্রেণীর মানুষ। আর পাহাড়ের নিচে আছে লক্ষ লক্ষ সাধারণ মানুষ যারা কোনোরকমে কুঁজো হয়ে পাহাড়ের বোঝাটাকে বহন করে চলেছে। এটাকে অবিদ্যা ছাড়া আর কী বলা যায়। গ্রিক সভ্যতায় যে গণতন্ত্রের কথা বলা হয়, সে গণতন্ত্র হচ্ছে অভিজাত কিছু মানুষের গণতন্ত্র। সাধারণ মানুষের নয়।
তথ্যসুত্রঃ
১। এরিস্টটলের এর পলিটিক্স/ সরদার ফজলুল করিম।
২। এরিস্টটলের পলিটিক্স/ অসীম কুমার সাহা।
১৪ ই মে, ২০২১ রাত ১২:০৮
রাজীব নুর বলেছেন: সহমত।
২| ১৩ ই মে, ২০২১ রাত ৮:২৪
অনল চৌধুরী বলেছেন: সবারই কিছু তত্তগত ভুল আছে। প্লেটো দাসপ্রথা সমর্থন করতেন ।
এরিষ্টোটলের ছাত্র হয়েও আলেক্মান্ডার সারা পৃথিবীতে খুনাখুণি ছাড়া ভালো কিছু করেনি।
সুতরাং এক্ষেত্রে শিক্ষক ব্যার্থ হয়েছেন।
১৪ ই মে, ২০২১ রাত ১২:০৮
রাজীব নুর বলেছেন: ভালো পয়েন্ট চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিলেন।
৩| ১৩ ই মে, ২০২১ রাত ৮:৪৭
কামাল১৮ বলেছেন: আল্লাহ নিজেও দাস প্রথা বাতিল করেনাই।দাস প্রথা বাতিল করলে দাসী সরবরাহ বন্ধ হয়ে যেতো।
১৪ ই মে, ২০২১ রাত ১২:০৯
রাজীব নুর বলেছেন: পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে বাজে কাজ হচ্ছে দাস প্রথা।
৪| ১৩ ই মে, ২০২১ রাত ৯:৩৩
চাঁদগাজী বলেছেন:
সক্রেট, প্লেটো ও এরিষ্ট টেটল আধুনিক ভাবনার গুরু; আমাদের দার্শনিক অনল চৌ'এর দর্শন তত্ব নিয়ে আমাডেরকে ভাবতে হবে শীঘ্রই।
১৪ ই মে, ২০২১ রাত ১২:১৪
রাজীব নুর বলেছেন: সবার চিন্তা ভাবনা এক রকম হয় না।
তবে সবার মতামত জানতে হবে, বুঝতে হবে।
৫| ১৩ ই মে, ২০২১ রাত ৯:৩৭
কানিজ রিনা বলেছেন: দাস-দাসী এই দুটি শব্দ এখন ভাষার ভিতরেই সীমাবদ্ধ, এখন প্রচলন বুয়া যে সব নারীরা বাসায় বাসায় কাজ করে। কোন মালিকের আন্ডারে ছোটখাটো কাজ করে এখন কেউ দাস হয় না, নাম দেওয়া হয় কর্মচারী দারোয়ান বা কৃষাণ এরকম আরও অন্যান্য।
কখনো কখনো বুয়ারা অনেক চালাকী করে ঘরের মালিক এর বউ বনে যায়। আবার কখনো কখনো কোন ভুয়া মালিক দ্বারা ধর্ষিত হয়। এটাই এখন সমাজে বিদ্যমান
দাস-দাসীর প্রথা শব্দ দাস-দাসী বলেই গণ্য।
প্লেটোর অসাধারণ বাণী বিশ্ব চরাচর পরম কোন সত্তা সৃষ্টি করেছেন ও সেটা নিয়ন্ত্রণ করছেন।
নাস্তিকরা তো তা বিশ্বাস করে না। ধন্যবাদ।
১৪ ই মে, ২০২১ রাত ১২:১৬
রাজীব নুর বলেছেন: নিরাপদ থেকে যতটা ঈদ আনন্দ করা যায় ততই মঙ্গল।
ধরণীতে সুখ নামুক ঈদের ছোঁয়ায়। ঈদের শুভেচ্ছা। সুস্থ থাকুন, ভাল থাকুন, পরিবারের সবাইকে নিয়ে আনন্দে থাকুন।
৬| ১৪ ই মে, ২০২১ রাত ২:৪৪
অনল চৌধুরী বলেছেন: চাঁদগাজী বলেছেন: সক্রেটিস, প্লেটো ও এরিষ্টোটল আধুনিক ভাবনার গুরু; আমাদের দার্শনিক অনল চৌ'এর দর্শন তত্ব নিয়ে আমাদেরকে ভাবতে হবে শীঘ্রই[/sb যতোই ঠাট্টা করে না কেনো, মনে মনে ঠিকই জানেন যে, আমি, রাজীব নূর এবং আরো কয়েকজন ব্লগারের নির্দেশনা অনুযায়ী চললে, শুধু বাংলাদেশই না,সারা পৃথিবীই পাল্টে যাবে।
কারণ আমরা পরিবর্তনের জন্যই সারাদিন পড়াশোনা আর লেখালেখি করি।
১৪ ই মে, ২০২১ রাত ২:৫২
রাজীব নুর বলেছেন: আপনি কি একজন আশাবাদী মানুষ?
৭| ১৪ ই মে, ২০২১ রাত ৩:০২
এ কাদের বলেছেন: অনেক কিছু জানলাম।
১৪ ই মে, ২০২১ রাত ৩:০৩
রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ।
৮| ১৪ ই মে, ২০২১ সকাল ১১:৫০
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
অত্যন্ত সুলিখিত প্রবন্ধ।
১৪ ই মে, ২০২১ দুপুর ১২:২৫
রাজীব নুর বলেছেন: করোনা মহামারী এখনও তার থাবা বিস্তার করে রেখেছে। কেড়ে নিচ্ছে বহু প্রাণ। আমাদের জন্মভূমিতে এখন সে ভয়াবহ রূপ নিয়ে বিরাজমান। সতর্কতার বিকল্প নেই। বেঁচে থাকলে ঈদ আরও আসবে জীবনে। ঘরে থাকুন, নিরাপদ থাকুন।
৯| ১৪ ই মে, ২০২১ বিকাল ৩:৫২
অনল চৌধুরী বলেছেন: লেখক বলেছেন: আপনি কি একজন আশাবাদী মানুষ? -আমার বক্তব্য পরিস্কার।
বাংলাদেশের লোকজন নিজেদের পাল্টাতে পারলে সবকিছু পাল্টাবে, না পারলে কোনোদিনও না।
১৪ ই মে, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:২৩
রাজীব নুর বলেছেন: ভাল বলেছেন।
ঈদ মোবারক।
©somewhere in net ltd.
১| ১৩ ই মে, ২০২১ রাত ৮:১৯
কামাল১৮ বলেছেন: সরদার ফজলুল করিমের অনাবাদ করা এই বইটি আমাদের দেশে জ্ঞান বিজ্ঞান চর্চার একটি মাইল ফলক।