নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।
ছবিঃ আমার তোলা।
শফিক আমার পরিচিত।
আমাদের এলাকাতেই থাকে। শফিক তিন বছর আগে বিয়ে করেছে সুমনাকে। তাদের একটা ছেলে হয়েছে। সুমনা একটা কলেজের অস্থায়ী শিক্ষিকা। এছাড়া সুমনা কোচিং এ পড়ায়। বেশ কয়েকটা টিউশনি করে। সব মিলিয়ে সুমনার ইনকাম চল্লিশ হাজার টাকার কিছু বেশি। এখন অবশ্য করোনার কারনে ইনকাম কমে গেছে। সুমানার স্বামী শফিক কোনো কামকাজ করে না। স্ত্রীর প্রতিভায় সারাক্ষণ সে মুগ্ধ। স্ত্রী স্বামীকে নিয়মিত হাত খরচ দেয়। এমন কি শফিকের বাপ মায়ের ওষুধপত্র কেনার টাকাও দেয়। এই ভাবেই গত তিন বছর চলেছে। সবচেয়ে বড় কথা বিয়ের সময় কথা ছিলো- বিয়ের ছয় মাস পর বড় অনুষ্ঠান করে সুমনাকে তুলে নিবে শফিক। সেটাও শফিকের পক্ষে আজ পর্যন্ত সম্ভব হয়নি। কোনোদিন হবেও না। সুমনার বাবা নেই। আছে শুধু এক ছোট বোন আর মা। সুমনার টাকা দিয়েই মা- বোন চলে। বাড়ি ভাড়াও সুমনা দেয়। সুমনাদের সম্পদ বলতে- কেরানীগঞ্জে তাদের পাঁচ কাঠা জমি আছে। যা তার বাবা রেখে গেছেন।
সুমনার যখন বাচ্চা হলো-
শফিক একটা টাকা দিতে পারে নাই। তবে হাসপাতালে বসে আল্লাহকে খুব ডেকেছে, যেন সুন্দর ভাবে বাচ্চা হয়। কোনো সমস্যা যেন না হয়। আল্লাহ ডেকে ডেকে সে অনেক চোখের জল ফেলেছে। শফিকের চোখের জল আল্লাহ কবুল করেছেন। বাচ্চা এবং বাচ্চার মা সুস্থ। বিয়ের পুর থেকেই সপ্তাহে দুইদিন শফিক সুমনাদের বাসায় থাকে। অবশ্য বিয়ের সময় শফিক সুমনাকে বলেছিলো সে বড় চাকরী করে। সরকারের এক ক্ষমতাবান মন্ত্রী তাদের বাড়ির। সম্পর্কে তার দাদা। ইত্যাদি ইত্যাদি অনেক বড় বড় কথা। সুমনার মা তার মেয়েকে স্পষ্ট বলে দিয়েছে- শফিক ভন্ড। তার সব কথাবার্তা সে মিথ্যা বলেছে। এই কথা সুমনা আবার তার স্বামীকে বলেছে। এরপর থেকে শফিক তার শ্বাশুড়িকে দুইচক্ষে দেখতে পারে না। একদিন সুমনাদের বাসায় খুব ঝগড়া হয়। শফিক রেগে গিয়ে তার শ্বাশুরিকে বলে দিয়েছে বেয়াদপ মহিলা একটা। বসে বসে আমার বউয়েরটা খাও। লজ্জা করে না। হাদীসে আছে স্ত্রীর সম্পদে স্বামীর অধিকার আছে।
সুমনা বুঝে গেছে শফিক লোভী।
ভয়াবহ মিথ্যাবাদী এবং ভন্ড। শফিক এখন সুমনাকে চাপ দিচ্ছে কেরানীগঞ্জের জমি বিক্রি করতে। জমির বিক্রির টাকা দিয়ে তাঁরা আলাদা বাসা ভাড়া নিয়ে থাকবে। বেয়াদব মহিলা আর তার ছোট মেয়েকে সাথে রাখবে না। তাঁরা জাহান্নামে যাক। মাঝে দিয়ে শ্বাশুড়ি একবার শান্তির জন্য বলেছেন, হ্যাঁ আমি জমি বিক্রি করে দুই মেয়েকে সমান ভাগ করে দিবো। বড় মেয়ের জামাইকে ২০/২৫ লাখ টাকা দিব ব্যবসার জন্য। শফিকের বাপ মাকে হজ করাবো। কিন্তু এখন করোনার কারনে জমি বিক্রি করা যাচ্ছে না। শেষে শফিক নিজেই জমি বিক্রি করার জন্য উঠেপরে লেগেছে। এদিকে শফিক সবাইকে বলে বেড়াতো কেরানীগঞ্জে আমার জমি আছে। সেটা বিক্রি করে খুব শ্রীঘই ব্যবসায় নামবো। একদিন সুমনা তার স্বামীকে বলল, আমাদের জমি বিক্রি নিয়ে তুমি মাথা ঘামাচ্ছো কেন? শফিক বলেছে, তোমার জমিতে আমার ভাগ আছে। কোরআন হাদীসে সেই কথা লিখা আছে। আমি আমার জন্য কিছু চাই না। আমি চাই আমার ছেলের জন্য। আমার ছেলে তার নানার সম্পত্তির ভাগ আইনত পাবেই। আমি আমার ছেলের ভাগ ছাড়বো না।
কিছু দিন পরপরই শফিক তার শ্বশুর বাড়িতে চিল্লাচিল্লি করে।
সে বলে, তার স্ত্রীর সব টাকা তার শ্বাশুড়ি আর শালী খেয়ে ফেলছে। সুমনার কষ্টের ইনকাম দিয়ে শ্বাশুরি আর শালী মজা করছে। এক কথায় দুই কথায় খুবই জটিল অবস্থার সৃষ্টি হলো। তখন সুমনা শফিককে বলল- তুই আমাদের বাড়ি থেকে বের হয়ে যা হারামজাদা। আর কোনো দিন তুই আমাদের বাসায় আসবি না। তুই লোভী, তোর বাপ মা পর্যন্ত লোভী। গত তিন বছরে অনেক টাকা পয়সা তোকে এবং তোর পরিবারকে দিয়েছি। আর না। স্ত্রীর টাকা খেতে খেতে তোর জিব বড় হয়ে গেছে। হারামীর বাচ্চা। বের হ বাড়ি থেকে। বিয়ে করে আজ পর্যন্ত বউকে একটা সুতা কিনে দিতে পারিস নাই। আবার বড় বড় কথা। আমার সামনে আমার মাকে অপমান করিস! ফাজিল কোথাকার। শফিকের শ্বাশুরি কান ধরে শফিককে বাড়ি থেকে বের করে দিলো। শফিক যেতে যেতে বলেছে, থু দিলাম তোদের মুখে। আর কোনোদিন তোদের বাড়িতে পা দিব না। ছোটলোক একটা পরিবার। ফকিরন্নী। পথের কুকুরও তোদের চেয়ে উন্নত।
আজ দুই মাস ধরে সুমনার সাথে শফিকের কোনো যোগাযোগ নেই।
শফিকের আর্থিক অবস্থা খুবই খারাপ হয়ে পড়েছে। একটা সিগারেট খাওয়ার টাকাও তার নেই। শফিকের ধারনা ছিলো, সুমনা তাকে ঠিক ফোন দিবে। কিন্তু দেয় নী। শেষে বাধ্য হয়ে শফিক সুমনাকে ফোন দেয় ঈদের দিন। কিন্তু সুমনা ফোন ধরে নি। শফিকের ধারনা সুমনা ফোন না ধরার কারন তার শ্বাশুড়ি। শ্বাশুড়ি বুড়ি মাগীকে একটা শিক্ষা দিতেই হবে। শ্বাশুড়ি তার সংসার নষ্ট করে দিয়েছে। আজ দুই মাস ধরে শফিক তার সন্তানকে দেখতে পারে নি। শফিক তার স্ত্রীর কাছে খবর পাঠিয়েছে জমি বিক্রির টাকা নিয়ে তুমি চলে আসো। আমরা আলাদা বাসা নিয়ে থাকব। তোমার মা আর ছোট বোন আমাদের ভালো চায় না। তাঁরা আমাদের শত্রু। আমার পায়ের নীচেই তোমার বেহেশত। কোরআন হাদীসে লেখা আছে, আল্লাহ যদি কাউকে সেজদা করতে বলতো- সে হচ্ছে স্বামী। স্বামী খুশি না থাকলে স্ত্রী বেহেশতে যেতে পারবে না। এত কিছুর পরও, এটাই তোমাকে শেষ সুযোগ দিলাম।
গত মঙ্গলবার শফিক একটা চিঠি পায়।
সুমনা শফিককে তালাক দিয়েছে। তালাকের কাগজ নিয়ে শফিক কাঁদতে কাঁদতে সুমনাদের বাসায় যায়। সুমনাকে বলে, সুমনা আমি তোমাকে ভালোবাসি। আমিই যেসব ভুল করেছি তার জন্য আমাকে ক্ষমা করে দাও। আসলে আমরা খুব গরীব। গ্রামে আমাদের নিজেদের বাড়িও নেই। গ্রামে গেলে চাচার বাসায় উঠি। বিয়ের সময় বলি নাই। কারন এগুলো তো চিৎকার করে বলার মতো কিছু না। আমি দুইবার বিদেশ গেছি। কিন্তু কিছুই করতে পারি নাই। এই শহরে আমাকে চাকরী কে দিবে? তাই ভাবলাম, তোমার ইনকাম দিয়েই আমাদের খুব সুন্দর চলে যাবে। এমন কি আমার বা মায়েরও চলে যাবে। আমি লোভী নই। পরিস্থিতি আমাকে লোভী বানিয়েছে। শফিক কাঁদতে কাঁদতে শ্বাশুরির পায়ে ধরলো। মা আমাকে মাফ করে দিন। মা। প্লীজ। আল্লাহর দোহাই লাগে মা। আমি নিয়মিত নামাজ, রোজা করি। আল্লাহরে ডাকি। তাছাড়া স্বামী ছাড়া সুমনা এই শহরে একা একা কিভাবে থাকবে ছোট একটা বাচ্চা নিয়ে? আমাকে দয়া করেন। আমাকে আর একবার সুযোগ দেন। আমি ভালো হয়ে যাবো।
২৯ শে জুলাই, ২০২১ দুপুর ১২:৫৮
রাজীব নুর বলেছেন: হ্যা ঠিক বলেছেন। এদের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে।
২| ২৮ শে জুলাই, ২০২১ বিকাল ৩:৩৪
আনোয়ার রেজা বলেছেন: এমন অনেক শফিক আছে আমাদের সমাজে।
২৯ শে জুলাই, ২০২১ দুপুর ১২:৫৯
রাজীব নুর বলেছেন: এজন্য বিয়ের আগে ভালো করে খোঁজ খবর নেওয়া দরকার।
৩| ২৮ শে জুলাই, ২০২১ বিকাল ৪:১৭
হাসান জাকির ৭১৭১ বলেছেন: হ্যাঁ, দেশ শফিকে ভরে গেছে............
২৯ শে জুলাই, ২০২১ দুপুর ১২:৫৯
রাজীব নুর বলেছেন: এরকম সফিকদের জন্য পুরো পরিবারের কষ্ট।
৪| ২৮ শে জুলাই, ২০২১ বিকাল ৪:৫২
শোভন শামস বলেছেন: বাস্তব সমস্যা, সুন্দর করে তুলে ধরেছেন
২৯ শে জুলাই, ২০২১ দুপুর ১:০০
রাজীব নুর বলেছেন: আমার নিজের চোখে দেখা ঘটনা।
৫| ২৮ শে জুলাই, ২০২১ রাত ১০:৫৮
ডঃ এম এ আলী বলেছেন:
গল্প সুন্দর হয়েছে ।
দ্বিতীয় প্যরার তৃতীয় লাইনের নিচের
কথাগুলি খাপছাড়া মনে হয়েছে ।
বিয়ের পর থেকেই সপ্তাহে দুইদিন শফিক সুমনাদের বাসায় থাকে
এখানে সপ্তাহে দুইদিন না বললেও চলত ।
যাহোক পরিচ্ছন্ন গল্পটি পাঠে ভাল লেগেছে ।
২৯ শে জুলাই, ২০২১ দুপুর ১:০০
রাজীব নুর বলেছেন: স্যার এটা গল্প নয়। বাস্তব।
সফিকের সাথে গতকালও দেখা হয়েছে। মুলত সফিক একটা বদমাশ।
৬| ২৯ শে জুলাই, ২০২১ রাত ১:২২
কামাল১৮ বলেছেন: আল্লা বিল্লা করাইতো সব থেকে বড় চাকরী।এখন সময় এসেছে মহিলাদের ভুল ভাঙ্গার।যে বেশি আল্লা বিল্লা করে তাকে বিয়ে না করা।আর তাদের উচিত মাদ্রাসার ছাত্রীদের বিয়ে করা।পৃথীবির আর সবাই ভালো হলেও এরা ভালো হবে না।যেমন কুত্তার লেজ সোজা হয় না।এই রকম স্বামীর পায়ের নিচে যে বেহেস্ত ,সেই বেহেস্তে লাথি মারা উচিত।
হুমায়ুন আহমেদের একটা বইতে পড়েছি ,সেখানে মসজিদের ইমাম নেংটা হয়ে গ্রামে ঘুরে।এটা সে ইমামদের ছোট করতেই লিখেছে।আপনি হুমায়ন বিশেষজ্ঞ,বইয়ের নামটা জানা থাকলে বলবেন,আর একবার পড়ে দেখবো।
২৯ শে জুলাই, ২০২১ দুপুর ১:০৩
রাজীব নুর বলেছেন: সফিকরা বিশ্বাস করে আল্লাহ তাদের সকল সমস্যার সমাধান করে দিবে। মাথার চুল সাদা হয়ে যায় কিন্তু আল্লা সমস্যার সমাধান করে না।
সম্ভবত মসজিদে ইমাম না। গ্রামের এক পাগল ন্যাংটা হয়ে ঘুরে। টিভি নাটকও হয়েছে। পাগলের অভিনয় করে মির সাব্বির।
©somewhere in net ltd.
১| ২৮ শে জুলাই, ২০২১ দুপুর ২:২২
চাঁদগাজী বলেছেন:
দেশ শফিকে ভরে গেছে, ভয়ংকর জাতি গড়ছে সরকার, আয়হীন জাতি।