নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

রাজীব নুর

আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।

রাজীব নুর › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্রিয় কন্যা আমার- ২৩

০২ রা নভেম্বর, ২০২১ রাত ১২:৩০



প্রিয় কন্যা আমার,
আজ নভেম্বরের এক তারিখ। আজ তুমি এগারো মাসে পা রাখলে। দশ মাস শেষ তোমার। এই দশম মাসটা তোমার ভালো যায়নি। জ্বর, ঠান্ডা আর কাশি তোমাকে খুব ভূগিয়েছে। পাঁচ বার যেতে হয়ে ডাক্তারের কাছে। তোমাকে অনেক ওষুধ খেতে হয়েছে। তোমার মা আমি আমরা দুজনেই খুব সাবধান থাকি। যেন তোমার ঠান্ডা না লাগে। তবু বারবার তুমি ঠান্ডায় আক্রান্ত হচ্ছো। এখনও তোমার কিছুটা ঠান্ডা রয়েছে। যাই হোক, আমার ভাবতে ভালো লাগছে আর দুই মাস পর তোমার এক বছর হয়ে যাবে। আগামী দুই মাসের মধ্যে তুমি হাঁটা শিখে যাবে। একা একা হাঁটবে! তখন আর তোমার হামাগুড়ি দিতে হবে না। তুমি সারা ঘর টুক টুক করে হেঁটে বেড়াবে- ভাবতেই ভালো লাগছে। আমার কন্যা। আমার কলিজা। আমার পৃথিবী।

প্রিয় কন্যা ফারাজা,
আমার সব সময়ের অভ্যাস ফুল স্প্রীডে ফ্যান ছেড়ে ঘুমানো। ইদানিং ফ্যান খুব কমিয়ে রাখা হয়। তোমার জন্য। যদি তোমার ঠান্ডা লেগে যায়। তাই আমার আরাম বাদ দিয়েছি। আমার আরাম কোনো ব্যাপার না। আমার কাছে সবার আগে তুমি। তুমি ভালো থাকলেই আমি ভালো থাকবো। কাজেই তোমার ভালো থাকাটা আমার কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ন। এই কয়েকদিন আগে তুমি হঠাত করে বমি শুরু করলে। সারা রাতে তুমি মোট নয় বার বমি করেছো। আমি আর তোমার মা সারারাত জেগে ছিলাম। আমার ভাবী, তোমার বড় মা- আমাদের সাথে ছিলেন রাত তিনটা পর্যন্ত। ভয়াবহ এক রাত পার করেছি। সম্ভবত তোমার পেটে গ্যাস হয়েছিলো। সেই গ্যাস থেকে বমি। প্রিয় কন্যা বমি করতে তুমি যুতটা না কষ্ট পেয়েছো তার চেয়ে হাজার গুণ বেশি কষ্ট পেয়েছি আমি আর তোমার।

প্রিয় কন্যা ফারাজা তাবাসসুম,
ইদানিং তুমি হুটহাট দুই একটা শব্দ বলে ফেলো। শুনতে ভালো লাগে। সেদিন আমি ঘুমিয়ে ছিলাম। তুমি হঠাত আমাকে ধাক্কা দিয়ে বললে উঠো উঠো। আমি পরিস্কার শুনেছি। আমি লাফ দিয়ে বিছানা থেকে উঠলাম। এখন তুমি যে কোনো কিছু ধরে একাএকা দাঁড়াতে পারো। কিছু জিজ্ঞেস করলে তুমি মাথা কাঁত করে জবাব দাও। তোমার মাথা কাঁত করা দেখে তোমার দীদা হাসতে হাসতে শেষ। আজকাল কেউ কোনো প্রশ্ন করলে তুমি হেসে দাও। সবচেয়ে বড় কথা ইদানিং তুমি রাগ প্রকাশ করতে পারো। মনে করো, তোমার হাতে আমার মোবাইল। আমি মোবাইলটা নিয়ে গেলে তুমি ভীষন রেগে যাও। চিৎকার করো। আমার হাত থেকে মোবাইলটা নিয়ে যেতে চেষ্টা করো। না দিলে তুমি কান্না করো। হাত পা ছোড়াছুড়ি করো।

প্রিয় ফারাজা তাবাসসুম খাই ফাইহা,
এখন আমি তোমাকে প্রতিদিন বিকেলে বাইরে নিয়ে যাই। তুমি বাইরে গেলে ভীষন খুশি হও। মুগ্ধ হয়ে চারপাশ দেখো। গ্রাম থেকে শহরে মানুষ প্রথম এলে যেভাবে সব কিছু দেখে- তুমি ঠিক সেভাবে চারপাশ দেখো। তখন তোমার চোখে মুখে এক আকাশ আনন্দ ঝলমল করে। সমস্যা হলো তুমি এখনও হাঁটতে পারো না। বাইরে গেলে সারাক্ষণ তোমাকে কোলে নিয়ে রাখতে হয়। তোমাকে কোলে নিয়েই আমি এক গলি থেকে আরেক গলি হেঁটে বেড়াই। তুমি যত বড় হবে, তোমাকে নিয়ে আমি তত ঘুরে বেড়াবো। এই ইচ্ছা আমার আছে। তোমাকে নিয়ে আমার অনেক স্বপ্ন। সে সব স্বপ্ন অবশ্যই পূরন করতে হবে। তুমি অনেক সাধনার ফল আমাদের। প্রতিদিন কত কিছু ত্যাগ করতে হচ্ছে আমাদের। সেই ত্যাগেও আনন্দ আছে।

প্রিয় কন্যা আমার-
তোমার মা ঘরের কাজে ব্যস্ত থাকলে তোমাকে আমি গোছল করিয়ে দেই। গত তিন দিন তোমাকে আমিই গোছল করিয়েছি। প্রথমে তোমার গায়ে সামান্য শরিষার তেল মাখি। হাতে ও পায়ের তালুতেও তেল মাখি। যেন গোছল করার সময় তোমার ঠান্ডা না লাগে। তোমাকে গোছল করাই ফিল্টার পানি দিয়ে। কলের পানি দিয়ে গোছল করাই না। ফিল্টার পানিতে আবার সামান্য গরম পানি মেশাই। সাবধান থাকা ভালো। যদি তোমার ঠান্ডা লেগে যায়। তারপর তোমাকে একটা বড় বোলে বসিয়ে দেই। তুমি দুই হাত দিয়ে বোল ধরে রাখো। তোমার খালা তোমার জন্য ইটালী থেকে লিকুইড সাবান পাঠিয়েছে সেটা তোমার গায়ে মাখি। তিন মগ পানি দিয়েই তোমার গোছল হয়ে যায়। গোছল করার সময় তুমি কান্না করো না। হাসো।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই নভেম্বর, ২০২১ সকাল ১০:১৯

খায়রুল আহসান বলেছেন: এসব কথা একদিন স্মৃতিকথা হয়ে পিতা-কন্যা উভয়কে প্রভূত আনন্দ দেবে। মা ও বোনদেরকেও দেবে।

এ বয়সে ও হামাগুড়ি দিয়ে সাড়া বাড়ি ঘুরে বেড়াবে। এটা ওটা ধরে হাত ময়লা করবে। আবার সে হাত দিয়ে কিছু তুলে মুখে দিবে। এতে বমি ও পেটের পীড়া দেখা দিতে পারে। যতটা সম্ভব, তার হাত দুটো পরিষ্কার রাখবেন। বার বার ধোয়াতে গেলে জামা টামা ভিজে যাবে, ঠাণ্ডা লেগে যাবে। তার চেয়ে বরং হাতের কাছে একটা ভেজা তোয়ালে বা গামছা বা নরম কোন কাপড় রাখবেন। কিছুক্ষণ পর পর তার হাত দুটো মুছে দিয়ে যাবেন (আপনি বা অন্য কেউ)।

পোস্টে প্লাস। + +

১২ ই নভেম্বর, ২০২১ বিকাল ৩:৩১

রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে।
সুন্দর মন্তব্য করেছেন। আমি এবং ওর মা ছাড়াও পরিবারের সকলে খেয়াল রাখে। তারপরও চোখের প্রলকে এটা ওটা মুখে দিয়ে দেয়। গত মাসে বেশ জ্বর, ঠান্ডা গিয়েছে। দীয়া করবেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.