নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।
ছবিঃ ফেসবুক।
আমি বই পড়া শুরু করেছিলাম-
হুমায়ূন সাহিত্য থেকে অনুপ্রাণিত হয়েই। আসুন আমরা হুমায়ূন সাহিত্য থেকে অনুপ্রাণিত হই। তার বই আপনার হতাশা দূর করে দিবে। আপনাকে শান্তি দিবে। আনন্দ দিবে। বেঁচে থাকা শেখাবে। ১৩ নভেম্বর ও ১৯ জুলাই আসলেই মন ব্যাকুল হয়ে ওঠে কি যেন এক হারানোর বেদনায়। মনের মাঝে এক জমাট বাধা কষ্ট এই দুইটি দিনে, অশ্রু হয়ে চোখের কোন দিয়ে বেয়ে পড়তে চায়।
হুমায়ূন আহমেদের দীর্ঘদিন বেঁচে থাকা দরকার ছিলো।
বাংলাদেশ গর্ব করতে পারে এমন একজন লেখক হচ্ছেন হুমায়ূন আহমেদ। হুমায়ূন আহমেদ এর এমন কোনো বই নেই, যা আমি পড়ি নাই। বরং প্রতিটা বই ৫০/৬০ বার করে পড়েছি। এখনও পড়ে যাচ্ছি। তৃপ্তিটা যেন বেড়েই চলেছে। আমার ধারনা, যারা স্যারের সব বই পড়েছে তারা কখনও স্যারকে নিয়ে কটূক্তি করতে পারবে না। বরং যারা কটূক্তি করে তারা স্যারের সব বই পড়েনি।
হুমায়ূন আহমেদের কবি উপন্যাস থেকে কয়েক লাইন-
লীলাবতী তাকিয়ে আছে। আতাহার লক্ষ্য করছে, মেয়েটির চোখে পানি জমতে শুরু করেছে। চোখ পানিতে ভরে উঠতে শুরু করছে। কি আশ্চর্য সুন্দর দৃশ্য! সে অনেকবার ভেবেছে, এই পৃথিবীর অপূর্ব কিছু দৃশ্যের সে একটা তালিকা করবে। যেমন-
১। গরমের দুপুরে মেঝেতে শুধুমাত্র একটা বালিশ পেতে তরুণী শুয়ে ঘুমুচ্ছে। তার মাথার উপর ফ্যান ঘুরছে। ফ্যানের হাওয়ায় মাথার কিছু চুল উড়ছে।
২। বাচ্চা একটা ছেলের হাত থেকে গ্যাস বেলুন ছুটে গেছে। বেলুনটা আকাশে উঠে যাচ্ছে। ছেলেটা হতভম্ব হয়ে বেলুনটার দিকে তাকিয়ে আছে। কান্না তার বুকের কাছে জমা হয়ে উঠেছে, এখনো গলার কাছে আসে নি।
৩। প্রেমিকপ্রেমিকা রিকশা করে যাচ্ছে। রিকশার হুড খোলা। ছেলেটা ক্রমাগত বকবক করছে, হাতপা নাড়ছে, মেয়েটা বসে আছে মাথা নিচু করে। তার ঠোঁটের কোণায় চাপা হাসি।
৪। বাচ্চা মেয়ে মায়ের হাই হিল পরে হাঁটার চেষ্টা করছে। এঁকেবেঁকে যাচ্ছে।
৫। একটা তরুণীর চোখ ধীরে ধীরে পানিতে ভরে উঠছে। শেষ পর্যন্ত সে অবশ্য কাঁদবে না। চোখের জল চোখেই শুকিয়ে ফেলবে।
৬। স্ত্রী রাতে স্বামীর জন্য এক কাপ চা নিয়ে এসেছেন। স্বামী বিস্মিত হয়ে বললেন, চা চাইনি তো! তারপর অতি আনন্দের সঙ্গে চায়ের কাপের জন্য হাত বাড়ালেন...
‘কোথাও কেউ নেই’ নাটকের সেই বাকের ভাই মাস্তান হলেও তার মনে ছিল পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সম্পদ, মনুষ্যত্ব। সে কঠোর ছিল তবে তা অন্যায়ের প্রতি।জীবনের চলার পথে অসংখ্য অন্যায়ের প্রতি মাথা নত করে চলে মানুষ। বাকের ভাই তার ক্ষমতা দিয়ে যতটা না অন্যায় করতেন, অসহাস মানুষের সহায় হতেন তার চেয়ে বেশি। সেই বাকের ভাইয়ের স্রষ্টা ছিলেন হুমায়ূন আহমেদ।
মন ছুঁয়ে যাওয়া তার আরেকটি নাটক ‘অয়োময়’। গ্রামের জমিদারের সেই কর্মচারী কানকাটা রমজান। নাটকের মধ্য দিয়ে হুমায়ূন আহমেদ যেমন জমিদার ও তার কর্মচারীদের অন্যায় কর্মকাণ্ড তুলে ধরেছিলেন তেমনি তিনি অন্যায়ের বিপরীতে সত্যের জয়কেও তুলে ধরেছেন। কানকাটা রমজানের কথা ভাবলেই মনে ভেসে ওঠে ফেরদৌসী মজুমদারের কপালে সেই পয়সা গরম করে ছ্যাঁকা দেয়ার ঘটনা। নাটকের প্রতিটা চরিত্র মানুষের মনে ছাপ ফেলার কারণ এই ছোট ছোট ঘটনা হুমায়ূন আহমেদ এমনভাবে তুলে ধরতেন যে বাস্তব জীবন থেকে তা কখনো ভিন্ন মনে হতো না। তার ‘বহুব্রীহি’ নাটকটিও দর্শকের মন কেড়েছিল।
শুভ জন্মদিন স্যার।
আপনার একজন ভক্ত, যার চোখে আপনি মহাপুরুষ।
©somewhere in net ltd.