নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

রাজীব নুর

আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।

রাজীব নুর › বিস্তারিত পোস্টঃ

জীবনের গল্প- ৬২

১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২১ বিকাল ৩:৩১

ছবিঃ আমার তোলা।

ছেলেটার নাম জনি।
জনিরা দুই বোন, দুই ভাই। ভাই বোনের মধ্যে জনি মেজো। জনি একটা প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিতে বিবিএ পড়ছে। ভালো ছেলে। দেখতে ভীষন সুন্দর। ইউনিভার্সিটি ভর্তি হবার পর জনি বদলে যেতে শুরু করে। ইউনিভার্সিটিতে প্রথম এক বছর সে ভালোই ছিলো। খুব মন দিয়ে পড়াশোনা করছিলো। ঘটনা চক্রে সে দুষ্ট ছেলেদের পাল্লায় পড়ে নেশা করতে শুরু করলো। ধীরে ধীরে সে সব নেশায় আসক্ত হয়ে গেলো। শুধু মাত্র নারী নেশা ছাড়া তার সব নেশাই আছে। ইয়াবা, ফেনসিডিল, গাঁজা কিছুই সে বাদ দেয় নি। প্রতিদিন সে নেশা করে। নেশা টাকা জোগাড় না হলে সে ঘরের জিনিসপত্র ভাঙতে শুরু করে। জনিদের আর্থিক অবস্থা ভালো।

টানা তিন বছর জনি নেশা করলো।
তার পরিবার নেশার বিষয়টা এক বছর পর জানতে পারে। বাবা মা ছেলেকে নেশা ছাড়তে নানান রকম চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। নানান রকম ডাক্তারই চিকিৎসা করিয়ে নেশা ছাড়াতে পারেনি। এমন সময় এলাকার এক বড় ভাই জনিকে বুঝায়। এবং বুঝাতে সক্ষম হয়। বড় ভাই আবার নামাজি মানুষ। যদিও একসময় সন্ত্রাস ছিলো। যাই হোক, বড় ভাই এখন ইসলামি তরিকায় চলেন। একদিন বড় ভাই জনিকে নিয়ে তাবলীগে যায়। চিল্লায় যায়। তাবলীগে ধর্মীয় বয়ান শুনে জনি ধীরে ধীরে ভালো হতে থাকে। সব রকম নেশা থেকে দূরে থাকে। জনি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ শুরু করলো। মাসে বিশ দিন সে তাবলীগ করে বেড়ায়। ধর্মীয় নানান রকম বই পড়তে শুরু করলো। বাবা মা ছেলের উন্নতি দেখে অনেক শান্তি পেলেন।

টানা দেড় বছর পর জনি পুরো ধার্মিক হয়ে যায়।
এক হুজুরের অনুরোধে নিজের নাম বদলে ফেলে। নতুন নাম রাখে আব্দুল্লাহ। মূখ ভরতি দাঁড়ি রাখে। টাকনুর উপর প্যান্ট পড়ে। কথায় কথায় আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করে। একদিন সে তার বোন ও মাকে বলে বোরকা পড়তে। হিজাব পড়তে। ধর্মী অনুশাসন সব মেনে চলতে। কিন্তু তার মা এবং বোনরা ধর্মীয় নিয়ম অনুযায়ী চলে না। তখন জনি বাসায় খাওয়াদাওয়া বন্ধ করে দেয়। সে স্পষ্ট বলে দিয়েছে পরিবারে সবাই যদি ধর্মীয় নিয়ম গুলো মেনে না চলে তাহলে সে বাসায় খাবে না। নো নেভার। ধীরে ধীরে সে তার মা এবং বোনদের সামনে আসা বন্ধ করে দিলো। একা এক রুমে থাকে। নামাজ পরে। রোজা রাখে। সারারাত জেগে ইবাদর বন্দেগী করে।

জনির এই অবস্থা দেখে তার বাবা মা তার বিয়ে করিয়ে দিলো।
বিয়ের পর জনি আরো বেশি ধার্মিক হয়ে যায়। তার স্ত্রীকে টিভি দেখতে দেয় না। বাইরে বের হতে দেয় না। প্রতিদিন কোরআন এবং নামাজ পড়তে বাধ্য করে। যদি স্ত্রী তার কথা না শুনে তাহলে সে প্রথমে বুঝায় পরে স্ত্রীকে মারে। খুব মারে। এবং পরিবারের সদস্যদের বলে তোমরা সবাই জাহান্নামে যাবে। আল্লাহকে ভয় করো। ইহকাল না, পরকাল কিনে ভাবো। পরকালের দুনিয়াই আসল। এই দুনিয়া কিছুই না। এবং পরিবারকে বুঝাতে ব্যর্থ হলে সে নামাজে দাঁড়ায়। দুই হাত তুলে প্রার্থনা করে নিজ পরিবারের জন্য। খুব কান্না করে। পরিবারের সদস্যরা জনির কথা মতো চলে না। এই দুঃখে জনি একদিন ঘর থেকে বের হয়ে যায়। তাবলীগ করে। হুজুরদের সেবা করে। তাবলীগের খাবার নিজ হাতে রান্না করে। থালাবাটি ধুয়ে দেয়। এশার নামাজের পর ধর্মীয় আলোচনায় অংশ নেয়।

জনি আমাদের এলাকাতেই থাকে।
আমার সাথে প্রায়ই দেখা হয়। জনির লেখাপড়া, নেশা, বিয়ে এবং ধর্মীয় মনোভাব সম্পর্কে আমি সব কিছুই জানি। গতকাল সন্ধ্যায় জনির সাথে আমার দেখা হয়। জনির এই পরিবর্তন দেখে আমি অনেক অবাক! জনি আমাকে বলল, ভাই ইসলাম আমাকে বদলে দিয়েছে। এখন আমি একজন ভালো মানুষ। তাবলীগ থেকে অনেক কিছু শিখেছি। জেনেছি। আপনিও একদিন আমার সাথে তাবলীগে চলুন। দেখবেন কত ভালো লাগে। নামের কারনে মানুষ জান্নাতে যাবে না। এই জন্য আমি আমার নাম বদলে আব্দুল্লাহ রেখেছি। এবং জনি নাম রাখার জন্য বাবাকে বকেছি। অতীতের ভুলের জন্য বারবার মহান আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইছি। দুই হাত তুলে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইলে আল্লাহ মানুষকে ক্ষমা করে দেন। আল্লাহ চায় বান্দা তার কাছে ক্ষমা চাক।

জনির কাছ থেকে আরো যা যা জানলাম-
বেহেশতের হুর অনেক সুন্দর। অনেক সুন্দর। যা ভাষায় বলা যায় না। বেশেতের হুর যদি একবার দুনিয়ার দিকে উঁকি দিতো তাহলে সারা দুনিয়া আলোকিত হয়ে যেত। ঝলমল করতো। বেহেশতের হুর যদি একফোটা থুথু দুনিয়াতে ফেলতো তাহলে দুনিয়ার সমস্ত সাগর, মহাসাগরের পানি মিষ্টি স্বাদ যুক্ত হয়ে যেত। সুবাহানাল্লাহ। আমি খেয়াল করে দেখলাম- হুরদের কথা বলতে গিয়ে জনির চোখমুখ চকচক করছে। জনি এখন ধর্মীয় আলাপ ছাড়া অন্য কোনো আলাপ করে না। জনি বলে আল্লাহ বলেছেন, ধর্মের কথা সবাইকে বলো। এতে অনেক সওয়াব। যাকে বলছো সে না মানুক তাতেও সমস্যা নাই। তবু তুমি বলে যাও। মুসলমান হিসাবে এটা তোমার দায়িত্ব। জনি ধর্মের প্রতি এতটা ক্রেজি কেন হলো আমি জানি না।

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২১ বিকাল ৩:৪৩

ইসিয়াক বলেছেন: ইয়াবা, ফেনসিডিলের নেশা কেউ বোঝালেই নেশা ছেড়ে দেয় এটা কি করে সম্ভব?

১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২১ রাত ২:১৪

রাজীব নুর বলেছেন: অনেক কিছুই সম্ভব।

২| ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২১ বিকাল ৩:৪৪

প্রতিদিন বাংলা বলেছেন: আল্লাহ ভালো জানেন
তবলীগ !

১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২১ রাত ২:২০

রাজীব নুর বলেছেন: আল্লাহ চাইলে একদিন আমিও হয়তো তাবলীগে যাব।

৩| ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২১ বিকাল ৪:২৭

তারেক ফাহিম বলেছেন: নেশাখোর, বদমাশ, নাঠা ও সন্ত্রাস প্রকৃতির অনেককেই দেখলাম তাবলীগে গিয়ে ধার্মিক হতে।

প্রতি মাসে একবার করে হলেও তাবলীগে যাওয়া অব্যাহত রাখে, দুনিয়ার মোহ তাদের কাছে তুচ্ছ মনে হয়।

আবার এ-ও দেখলাম, তাবলীগ-এ দু-একবার সময় লাগিয়ে বিরত নিলে পূর্বের চেয়ে অধিক খারাপ হয়ে যায়।

আমিও এ নিয়ে তিন দিনের চিল্লায় গত ২০১৭ সাল পর্যন্ত ০৪ বার যাওয়া হয়েছে।
এখন নামাও ঠিকমত পড়ি না, শুক্রবার ব্যাতিত।

১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২১ রাত ২:২৩

রাজীব নুর বলেছেন: তাবলীগে সবার পরিবর্তন হয় না। কারো কারো হয়।

৪| ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:৫৩

জহিরুল ইসলাম সেতু বলেছেন: নেশার বিবর্তন

১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২১ রাত ২:২৩

রাজীব নুর বলেছেন: মাদকের চেয়ে ধর্মের নেশা ভাল।

৫| ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২১ রাত ১১:৫৯

চাঁদগাজী বলেছেন:



জনির কবরে কিছু ভায়াগ্রার প্যাকেট দিতে হবে।

১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২১ রাত ২:১৫

রাজীব নুর বলেছেন: হা হা হা---
এক নেশা বাদ দিয়ে সে আরেক নেশা ধরেছে।

৬| ২৫ শে ডিসেম্বর, ২০২১ রাত ১২:৫২

জহিরুল ইসলাম সেতু বলেছেন: মাদকের চেয়ে ধর্মের নেশা ভাল। -আমার তো মনে হয়, উভয় নেশাই ভয়ঙ্কর।

২৫ শে ডিসেম্বর, ২০২১ রাত ১:০১

রাজীব নুর বলেছেন: মাদক অবশ্যই খারাপ।
দুষ্টলোকেরাই ধর্মের ছায়া তলে আশ্রয় নেয়।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.