নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

রাজীব নুর

আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।

রাজীব নুর › বিস্তারিত পোস্টঃ

মবিন স্যারের গল্প

০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০২২ বিকাল ৩:০২

ছবিঃ গুগল।

মবিন স্যারের বাসায় পড়তে যেতাম।
স্যার আমাকে অত্যন্ত স্নেহ করতেন। স্যার পড়াতেন অল্প সময়। কিন্তু খুব গল্প করতেন। স্যার খুব সুন্দর করে কথা বলতেন, তার অতি তুচ্ছ গল্পও শুনতে অসাধারণ লাগতো। আমি মুগ্ধ হয়ে স্যারের গল্প শুনতাম। আমার জীবনে মবিন স্যারের প্রভাব অনেকখানি। মবিন স্যার হাসিখুশি মানুষ। একদিন স্যারকে আমি প্রশ্ন করেছিলাম, স্যার আপনি কি নাস্তিক? স্যার আমার প্রশ্নের জবাব দেননি। এড়িয়ে গেছেন। আমার ধারনা স্যার ঈশ্বর বিশ্বাস করেন না। কিন্তু আমার এই বিশ্বাস একদিন ভেঙ্গে গেলো। স্যার হজ্ব করতে গেলেন। অথচ স্যার আমাকে বলতেন, এত টাকা দিয়ে হজ্ব করতে না গিয়ে সেই টাকা দিয়ে নেপাল, ভূটান ঘুরে আসা অনেক ভালো। মরু ভূমি দেখার কিচ্ছু নাই। পাহাড় দেখো, সমুদ্র দেখো। মানুষ দেখো।

স্যারের স্ত্রীর নাম লায়লা।
এত সুন্দর এবং এরকম ভালো মানুষ আমি আমার জীবনে দেখি নাই। লায়লা ম্যাডামের কোনো সন্তান ছিলো না। অবশ্য এজন্য মবিন স্যার আর লায়লা ম্যাডামকে কোনোদিন হা-হুতাশ করতে দেখিনি। স্যারের বাসায় কাজ করতো রহিমা নামের এক বুয়া। লায়লা ম্যাডাম সেই রহিমা বুয়ার জন্মদিন পালন করতো খুব ধূমধাম করে। টানা তিন বছর আমি মবিন স্যারের বাসায় পড়েছি। এমন কোনো দিন ছিলো না স্যারের বাসায় গিয়েছি এবং না খেয়ে ফিরেছি। লায়লা ম্যাডাম চমৎকার রান্না করতেন। সামান্য ডিমের ঝোল খেতেও অতি সুস্বাদু লাগতো। ইলিশ মাছের ডিম দিয়ে করলা বাজি মবিন স্যারের বাসায় আমি প্রথম খাই। অতি সুখাদ্য। ম্যাডাম বাসাতে বার্গার, পিজা, স্যান্ডউইচ সব বানাতেন। এমন কি টোমেটো সস এবং মেয়োনিজ ঘরেই বানাতেন।

এক জীবনে আমি বহু মানুষের ভালোবাসা পেয়েছি।
মবিন স্যার এবং লায়লা ম্যাডাম আমাকে নিজের সন্তানের মতো আদর করতেন, ভালোবাসতেন। লায়লা ম্যাডাম যতবার শপিং এ যেতেন আমার জন্য জামা কিনে আনতেন। এই লায়লা ম্যাডাম নানান রকম খাবার খাইয়ে খাইয়ে আমাকে ভোজনরসিক বানিয়েছে। বর্তমানে মবিন স্যার এবং লায়লা ম্যাডাম কানাডা থাকেন। দেশে থাকতে স্যার ম্যাডাম দুজনের খুব ঘুরে বেড়াতেন। বাংলাদেশের এমন কোনো জায়গা নেই যেখানে তাঁরা বেড়াতে যাননি। আমিও তাদের সাথে অনেকবার ঘুরে বেড়িয়েছি। সুসংদূর্গাপুর মবিন স্যারের সাথেই প্রথম যাই। এবং সেখানে বন্য হাতী দেখেছিলাম। ম্যাডাম আমাকে বলেছিনে, হাতীর পিঠে চড়বে নাকি? এক শীতের রাতে ম্যাডাম আর আমি রাস্তায় শুয়ে থাকা মানুষদের কম্বল দিয়ে ছিলাম।

উপরে লেখাটুকু প্রস্তাবনা।
এখন আমি মূল লেখায় আসবো। মবিন স্যার একদিন স্বপ্নে দেখলেন তিনি হজ্ব করতে গিয়েছেন। চারিদিকে হাজার হাজার মানুষ। সবাই চেষ্টা করছে কাবা শরীফের কাছে যেতে। কাবা শরীফের দরজা ধরতে এবং পাথরে চুমু খেতে। অনেক ভিড়। মানুষের ধাক্কাধাক্কি চলছে। যারা কাবা শরীফের দরজা ধরতে পেরেছে তাঁরা চিৎকার করে কান্না করছে। নান রকম দোয়া দুরুদ পড়ছে। পাথরে চুমু দেওয়ার জন্য মারাত্মক হুলস্থুল লেগে গেছে। মবিন স্যার দূর থেকে সব কিছু দেখছেন। স্যারের ইচ্ছা হলো- কাবা শরীফের দরজা ধরবেন এবং পাথরে চুমু খাবেন। স্যার ধীরে ধীরে ভিড় সামলিয়ে কাবা শরীফের দিকে খুব সহজেই চলে গেলেন। কাবা ঘরের দরজায় হাত রাখলেন। ঠিক তখন স্যারের পেছনে একটা মেয়ে কাবা শরীফের দরজা ধরতে খুব চেস্টা করছে। স্যার মেয়েটার হাত টেনে নিয়ে কাবা শরীফের দরজায় রাখেন। মেয়েটা আবেগে কান্না করে দেয়।

স্বপ্ন দেখে স্যারের ঘুম ভেঙ্গে গেল।
স্যার ভাবলেন, কোনো দিন নামাজ রোজা করলাম না। ধর্মের কোনো নিয়ম কানুন মেনে চললাম না। আর আমি স্বপ্নে দেখলাম- হজ্ব করছি। মানে কি? এরকম স্বপ্ন কেন দেখলাম! আজিব ব্যাপার। এরকম অদ্ভুত স্বপ্ন দেখার কারনে- স্যার হজ্ব করতে গেলেন। অবাক করা বিষয় হচ্ছে স্বপ্নে তিনি যা যা দেখলেন হজ্ব করতে গিয়ে তার সাথে ঠিক তা-ই ঘটলো। তিনি প্রথমে পাথরে চুমু খেলেন। কাবা ঘরের দরজায় হাত রাখলেন। ঠিক তখন একটা মেয়ে স্যারের পেছনে, সে কাবা ঘরের দরজা ধরার জন্য খুব চেষ্টা করতে থাকে। মানুষের ভিড়ে মেয়েটা কাবা ঘরের দরজায় হাত রাখতে পারছে না। তখন স্যার মেয়েটার হাত কাবা ঘরের দরজায় রাখার ব্যবস্থা করেন। সেই মেয়েটাই আমাদের লায়লা ম্যাডাম। সৌদি থেকে ফিরে মবিবন স্যার বিয়ে করেন।

মন্তব্য ১৬ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০২২ রাত ১১:১৫

সোবুজ বলেছেন: কিছুটা হুমায়ূনীয় প্রভাব আছে।হঠাৎ গল্পকে ১৮০ ডিগ্রি ঘুরিয়ে দেয়া।পাথরে চুম দেবার বিষয়টা ইসলামের পুর্বে ছিল বলায় ,এক মন্ত্রীর মন্ত্রিত্ব চলে যায়।

০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ দুপুর ২:২২

রাজীব নুর বলেছেন: হ্যাঁ কিছু হুমায়ূন আহমেদীয় ভাব চলে আসে। এজন্য আমি আনন্দিত।

২| ০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ রাত ১২:২৮

স্বরচিতা স্বপ্নচারিণী বলেছেন: সুন্দর গল্প !!

০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ দুপুর ২:২২

রাজীব নুর বলেছেন: অনেক ভালো থাকুন।

৩| ০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ সকাল ৮:৪১

৪৫ বলেছেন: সুন্দর

০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ দুপুর ২:২৩

রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ।

৪| ০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ সকাল ৯:১২

সাজিদ! বলেছেন: কমেন্টে কমেন্টে আপনি নিজেকে সংশয়বাদী বলে উপস্থাপন করেন আবার মাঝে মাঝে এমন পোস্টও লিখেন। আল্লাহ আপনাকে সহজ সরল পথ দেখান, আমিন।

০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ দুপুর ২:২৩

রাজীব নুর বলেছেন: শুকরিয়া।

৫| ০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ সকাল ৯:৪৯

জুল ভার্ন বলেছেন: চমতকার গল্প! +

০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ দুপুর ২:২৪

রাজীব নুর বলেছেন: যে ছাগল গুলো বলে আমি কপি পেস্ট করি- সেই ছাগল গুলো এখন কোথায়?

৬| ০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ বিকাল ৪:০০

বালিশ বলেছেন:



লেখক বলেছেন: যে ছাগল গুলো বলে আমি কপি পেস্ট করি- সেই ছাগল গুলো এখন কোথায়?
কিভাবে আপনাকে পাঁঠা বানান যায় তা নিয়ে গবেষণা করছে দেখলাম।

০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ দুপুর ২:০০

রাজীব নুর বলেছেন: মানুষ হও।

৭| ০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ রাত ৯:৪৪

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: সত্যি স্বপ্নকে নবুয়তের ৪৬ ভাগের ১ ভাগ বলা হয়ে থাকে।

৮| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ দুপুর ১:০০

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: গল্পটা চমৎকার হয়েছে।

০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ দুপুর ২:০৩

রাজীব নুর বলেছেন: ভালোবাসা জানবেন।

৯| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ দুপুর ১:১৬

রানার ব্লগ বলেছেন: স্বপ্ন মাঝে মাঝে কাজ করে !!! এর কি কারন জানা নাই ।

০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ দুপুর ২:০৪

রাজীব নুর বলেছেন: রহস্য।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.