নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

রাজীব নুর

আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।

রাজীব নুর › বিস্তারিত পোস্টঃ

ছেলেবেলা

০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ দুপুর ২:০০



তখন ক্লাশ ফোরে পড়ি।
সকালবেলা স্কুল। ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে পড়ি। পড়ালেখার অনেক চাপ। প্রাইমারী স্কুলে লেখাপড়ার চাপ কম। শুনেছি প্রতিদিন স্কুলে না গেলেও শিক্ষকরা কিছু বলেন না। সকালবেলা ঘুম থেকে উঠেছি। আব্বা আম্মা কঠিন ঘুমে। কারন তাঁরা সারারাত ভিসিআরে মুভি দেখেছেন। আমি তাড়াহুড়া করে দাঁত ব্রাশ করে নিলাম। বাবা মাকে ডেকে তোলার কোনো মানে হয় না। একা একাই স্কুলের ইউনিফর্ম পড়ে নিলাম। জুতো পড়ে নিলাম। তবে জুতোর ফিতা খোলা থাকলো। জুতোর ফিতা লাগাতে পারি না। মা ঘুমে নাস্তা কে বানাবে! আব্বার পকেট থেকে কিছু টাকা নিয়ে নিলাম। পরিকল্পনা হলো- হোটেল থেকে নাস্তা এনে খেয়ে নিবো।

কাঁধে ব্যাগ নিয়ে বের হলাম।
খুব চিন্তা হচ্ছে হোম ওয়ার্ক করি নি। রোজি মিস অনেক রাগি। আল্লাহ আল্লাহ করে রোজি মিস যদি আজ স্কুলে না আসেন তাহলে খুব ভালো হয়। রোজি মিস শাস্তি দেন। বেঞ্চের উপর দাঁড় করিয়ে রাখেন। খুব লজ্জা লাগে। কারন নীলা নামে একটা মেয়ে। মেয়েটাকে আমার ভালো লাগে। নীলার সামনে বেঞ্চে দাঁড়িয়ে থাকতে ভীষন লজ্জা করে। হেঁটে হেঁটে স্কুলে যাচ্ছি। বাসার কাছেই স্কুল। বাসা থেকে হেঁটে স্কুলে যেতে সময় লাগে তেরো মিনিট। তেরো মিনিট হাঁটা কোনো ব্যাপার না। প্রতিদিন বিকেলে আমি এক ঘন্টা একা একা হেঁটে বেড়াই। বাসা থেকে অনেক দূর পর্যন্ত চলে যাই।

সকাল সাত টা বাজে।
ক্লাশ শুরু হবে আট টায়। ভাবলাম হাতে অনেক সময় আছে। তাই দূর পথে অনেকটা ঘুরে স্কুলে যাবো আজ। দোকান থেকে সুপার বিস্কুট কিনলাম। ছোট ছোট বিস্কুট। দুই টাকায় অনেক গুলো দেয়। খেতে খেতে যাচ্ছি। হঠাত একটা কুকুর আমার পিছু নিলো। কুকুর আমি খুব ভয় পাই। রাস্তা বেশ নিরব। কি করবো বুঝতে পারছি না। একটা বিস্কুট কুকুরটাকে দিলাম। মুহুর্তের মধ্যে খেয়ে ফেললল। এখন কুকুর আরো বিস্কুট চাচ্ছে। যদি কুকুরকে সব বিস্কুট খাইয়ে ফেলি তাহলে আমি খাবো কি? এদিকে কুকুরটা আমার পিছু ছাড়ছে না। আমি চোখ মুখ খিচিয়ে দিলাম এক দৌড়। কুকুরটাও আমার সাথে দৌড় দিলো। ভয়াবহ অবস্থা।

কুকুর আমাকে কামড় দেয়নি।
তবে কামড় দিতে চেয়েছিলো। পেছনের পকেট ছিড়ে নিয়ে গেছে। ভাগ্যিস কামড়টা পাছায় লাগেনি। আমি দৌড় দেওয়ার কারনে কুকুরটা ভীষন রেগে গিয়ছিলো। যাই হোক, স্কুলে গেলাম। নীলার পাশে গিয়ে বসলাম। আজকে নীলাকে খুব বেশি সুন্দর লাগছে। নীলাকে দেখে মুগ্ধ হলাম। নীলা বলল, আজ তোমাকে নুডুলস খাওয়াবো। আমি বললাম, নুডুলস আমার খুব পছন্দ। কুকুরের দৌড়ানি খেয়ে দিনটা খারাপ ভাবে শুরু হয়েছিলো। এখন নীলাকে দেখে মনে হচ্ছে আজকের দিনটা ভালোভাবে যাবে। একটু পর জানতে পারলাম- রোজি মিস আজ আসেন নি। আমার এত খুশি লাগলো যে আনন্দে নেচে উঠলাম।

টিফিন টাইম চলছে।
আমি নীলার কাছ থেকে নুডুলস খেলাম। নুডুলস খুব ভালো হয়েছে। চিংড়ি মাছ ছিলো নুডুলসে। নীলাকে বললাম, স্কুল ছুটির পর তোমাকে দোকান থেকে কিছু কিনে খাওয়াবো। আমার কাছে টাকা আছে। নীলা বলল, মা বলেছেন, বাইরে খাবার খাওয়া ঠিক না। পেট খারাপ করে। আমি বললাম, তাহলে একদিন বাসায় আসো। তোমাকে বাসার খাবার খাওয়াবো। আমার মা ভালো বিরানী রান্না করে। নীলা বলল, মা আমাকে কোথাও যেতে দেয় না। আমি বললাম, তাহলে আমি তোমার বাসায় গিয়ে তোমাকে বিরানী দিয়ে আসবো। নীলা বলল, এটা ভালো বুদ্ধি।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.