নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।
ছবিঃ আমার তোলা।
শাহেদ জামাল গতকাল একটা স্বপ্ন দেখেছে-
স্বপ্নটা বেশ ভয়ঙ্কর। স্বপ্নে দেখে সে বেহেশতে গিয়েছে। বইয়ে বেহেশতের বর্ণনা যেরকম দেখা যায়, এখানে বেহেশত ঠিক সেরকম না। শাহেদ জামাল চিন্তিত। তার কপালে ভাঁজ পড়লো। মেঘের উপর তাকে একটা ঘর দেওয়া হয়েছে। সেই ঘরে কোনো দেয়াল নেই। একটা খাট আছে। একটা আলমারি আছে। খাটটা বেশ নরম। তবে আলমারিতে কোনো জামা কাপড় নেই। এমন কি তার গায়েও কোনো জামা কাপড় নেই। শাহেদ জামাল পুরো উলঙ্গ। এই বেহেশতে কারো গায়েই কোনো জামা নেই। আশে পাশে যাদের কে দেখা যাচ্ছে সবাই উলঙ্গ। উলঙ্গ থাকার বিষয়টা শাহেদের মোটেও ভালো লাগছে না। শাহেদ জামাল মনে মনে ভেবে রেখেছে যদি তাকে জামা কাপড় দেওয়া না হয় তাহলে সে বেহেশতে থাকবে না। নো নেভার।
শাহেদ জামাল বুঝে গেছে-
বেহেশত মোটেই ভালো জায়গা না। পৃথিবীর চেয়েও খারাপ জায়গা এই বেহেশত। পৃথিবীতে ইচ্ছা হলেই শাহেদ একটা বার্গার আর কোক কিনে খেতে পারতো। যাই হোক, খাটের পাশেই একটা সুইচ আছে। শাহেদ জামাল সেই সুইচ টিপ দিলো। একজন চাকর শ্রেনীর লোক এলো। শাহেদ বলল, আমাকে একটা বার্গার আর কোক দাও। চাকর বলল, বার্গার আর কোক কি জিনিস? এটা এখানে নেই? আপনি কি আনার খাবাবেন? শাহেদ বলল, দুনিয়াতে আমি কোনো দিন আনার খাইনি। আনার আমার পছন্দ না। চাকর বলল, স্যার আপনাকে খেজুর দেই। ভালো খেজুর আছে। শাহেদ বলল খেজুর আমার পছন্দ না। বেশ ক্ষুধা লেগেছে। যাও গরুর কালো ভূণা আর নান রুটি আনো। চাকর বলল, স্যার এখানে গরুর মাংস নেই। উঠের মাংস আছে। শাহেদ বলল, যা ব্যাটা ভাগ। নইলে থাপ্পড় খাবি। শাহেদ শুনেছে বেহেশতে যা চাইবে তাই পাবে। এজন্য শোনা কথায় কান দিতে হয় না।
শাহেদ জামালের মেজাজ অত্যাধিক খারাপ।
সারা জীবন বেহেশতের কত সুনাম শুনেছে। এই তাদের সার্ভিস! একটা কিছু চাইলে দিতে পারে না। শাহেদ জামাল চিৎকার করে বলল, বেহেশতের মালিক কে আমার কাছে আসুন। আমি আপনার সাথে কথা বলতে চাই। সাথে সাথে একটা গলা শোনা গেলো। তুমি কি বলতে চাও বলো? শাহেদ বলল, আপনার বেহেশতের অবস্থা তো করুণ। কিছু চাইলে পাওয়া যায় না। গমগমে গলায় সে বলল, বাবারে বেহেশত বানিয়েছি বহু বছর আগে। এখন তোমরা আধুনিক দুনিয়া থেকে এসেছো। আমার পুরান বেহেশত তো তোমাদের কাছে ভালো লাগবে না। শাহেদ বলল, তাহলে আপডেট করছেন না কেন? সেই গলা বলল, আপডেট কি করবো ভেবে পাই না। সবই তো দুনিয়াতে তোমরা ভোগ করে এসেছো। বরং দুনিয়ায়তে যা পেয়েছো সেটা বেহেশতে নাই। শাহেদ বলল, তাহলে আপনি আমাদের বেহেশতের লোভ দেখিয়ে ভুল করেছেন।
শাহেদ জামাল আবার বেল টিপলো।
একজন চাকর এলো। আসলে এটা চাকর নয়। বেহেশতে চাকর বলে কেউ থাকবে। এটা আসলে একটা ফেরেশতা। শাহেদ বলল, আমার মন অস্থির লাগছে। আমাকে রবীন্দ্র সংগীত শোনার ব্যবস্থা করে দাও। ''পূর্ণিমা সন্ধ্যায়, তোমার রজনীগন্ধায়, রূপসাগরের পাড়ের পানে উদাসী মন ধায়''। এই গানটা আমি শুনতে চাই। আমার খুব প্রিয় গান এটা। ফেরেশতা বলল স্যরি স্যার গান শোনার ব্যবস্থা নাই। শাহেদ জামালের খুব রাগ হলো। এটা কেমন বেহেশতো- যা চাই সেটাই নাই। শাহেদ জামাল ফেরেশতাকে একটা চড় দিলো। ফেরেশতা ছিটকে মাটিতে পড়ে গেলো। ফেরেশতার ঠোঁট অনেকখানি কেটে গেছে। রক্ত পড়ছে। শাহেদ বলল, স্যরি। আসলে আমি তোমাকে থাপ্পড মারতে চাই নি। ফেরেশতা বলল, না ঠিক আছে ব্যাপার না। ফেরেশতা বলল, বেলি ড্যান্স দেখতে চান। সেই ব্যবস্থা আছে। শাহেদ বলল, বেলি ড্যান্স না, আমার পছন্দ সামবা নাচ। ফেরেশতা বলল স্যরি স্যার। সামবা এখানে পাবেন না।
ফেরেশতা বলল, আপনি মশাই অদ্ভুত মানুষ।
বেহেশতে এসেই সবাই হুর চাচ্ছে, হুর খুঁজছে। হুর সাপলাই দিতে দিতে আমরা ক্লান্ত। আর আপনি চান কোক বার্গার, রবীন্দ্রসংগীত, গরুর কালা ভূনা। আজিব মাইরি। শাহেদ বলল, হ্যাঁ ভালো কথা বলেছে- হুর। আমার হুর লাগবে না। আমি চাই নীলাকে। পৃথিবীতে আমি নীলাকে চেয়েছি। বেহেশতে এসেও আমি নীলাকে চাই। তাড়াতাড়ি নীলাকে এনে দাও। তাহলে আমার আর কিচ্ছু লাগবে না। রবীন্দ্র সংগীতও লাগবে না। কোক, বার্গার, কালা ভূনা কিচ্ছু লাগবে না। ফেরেশতা এক হাত পেছনে গিয়ে গালে হাত রেখে অপরাধী ভঙ্গি করে বলল, স্যরি নীলাকে পাবেন না। তবে নীলার চেয়ে সুন্দর হুর পাবেন। শাহেদ বলল, ছাগলের ছাগল, গাধার গাধা। আমি কোনো কথা শুনতে চাই না। আমি নীলাকে চাই। যেখান থেকে পারো নীলাকে এনে দাও। অন্যথায় আমি তোমাদের বেহেশতে আগুন লাগিয়ে দিব। পুড়ি দেবো। ছারখান করে দিবো।
২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২২ দুপুর ২:৩৭
রাজীব নুর বলেছেন: হুর যারা বিশ্বাস করে তাঁরা বোকা।
২| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২২ সকাল ১১:২৫
শোভন শামস বলেছেন: মজা লাগল, লিখে জান।
২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২২ দুপুর ২:৩৭
রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ। ভালো থাকুন।
©somewhere in net ltd.
১| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২২ সকাল ৯:০৯
সোবুজ বলেছেন: পড়লাম আর হাসলাম।দুনিয়ার মানুষ পাগল হুরের জন্য আর আপনি আছেন আপনার নীলা নিয়া।