নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

রাজীব নুর

আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।

রাজীব নুর › বিস্তারিত পোস্টঃ

মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে খোলা চিঠি

০৩ রা মার্চ, ২০২২ দুপুর ২:৫৪


ছবিঃ গুগল।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আসসালামু আলাইকুম।
আমার স্বচ্ছ পবিত্র ভালোবাসা গ্রহন করুণ। আমি আপনার ভক্ত। আপনাকে অনেক পছন্দ করি। আমি সব সময় নৌকায় ভোট দেই। এমনকি আমার বাবাও যতদিন বেঁচে ছিলেন নৌকায় ভোট দিয়েছেন। কোরবানীর সময় বঙ্গবন্ধুর নামে কোরবানী দিতেন। বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে এবং মৃত্যুবার্ষিকীতে গরীব দুঃখীদের খাওয়াতেন। আমাদের বসার ঘরে আব্বা বিশাল সাইজের বঙ্গবন্ধুর একটা ছবি বাঁধাই করে লাগিয়ে রেখেছিলেন। আপনি দেশের জন্য অনেক করেছেন। পদ্মাসেতু, মেট্রোরেলসহ অসংখ্য কাজ আপনি করেছেন। অবকাঠামো উন্নয়ন প্রচুর হয়েছে। হচ্ছে। আপনাকে আমরা মাহাথিরের সাথে তুলনা করতে পারি। আপনি একজন গ্রেট প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশের ইতিহাসে আপনার মতো প্রধানমন্ত্রী আর নেই। উন্নয়ন কি জিনিস আপনি দেখিয়ে দিয়েছেন।

আমার প্রিয় প্রধানমন্ত্রী-
একদিন আপনি ফার্মগেট থেকে লোকাল বাসে চড়ে মিরপুর যাবেন। দেখবেন সাধারণ মানুষের বাসে উঠতে, সিট পেতে কত কষ্ট করতে হয়। সমস্যা হলে আপনি বোরকা পরে নিবেন। কেউ আপনাকে চিনবে না। বাসে উঠতে আপনার সময় লাগবে কমপক্ষে আধা ঘন্টা। বাসে উঠার পর সিট পাবেন না। নারী হিসেবেও কোনো পুরুষ আমাকে দেখে সিট ছেড়ে দিবেন না। আপনি নিজে যখন সমস্যার সম্মূখীন হবেন তখন বুঝবেন সাধারণ মানুষের কত কষ্ট। আপনাকে মুখে বলে মানুষের কষ্ট বুঝানো যাবে। মাঠে নেমে আপনাকে মানুষের সমস্যা ফেস করতে হবে। এজন্য অন্তত একদিন আপনি ফার্মগেট থেকে মিরপুর যান বাস চড়ে। প্লীজ। দেখুন প্রতিদিন আপনার দেশের মানুষ কত কষ্ট করছে। গুলিস্তান, মিরপুর দশ নম্বর, গাবতলী, মহাখালি, মগবাজার, সদরঘাট টার্মিনাল ইত্যাদি এলাকা গুলো আপনি নিজে ঘুরে ঘুরে দেখুন। দয়া করে দেখুন। উন্নয়ন দেখুন।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী-
আমি চাই আপনি একদিন রাস্তায় দাঁড়িয়ে টিসিবির গাড়ি থেকে তেল, পেঁয়াজ, আটা কিনুন। সমস্যা নেই বোরখা পড়ে নিবেন। আপনাকে কেউ চিনবে না। গাড়ি আসার আগেই ২/৩ ঘন্টা আগে রোদের মধ্যে, রাস্তার ধুলো ময়লার মধ্যে আপনি দাঁড়িয়ে থাকবেন। দেখবেন লাইন কত লম্বা হয়। সেই লাইনে দাঁড়িয়ে আপনি কিনবেন। দেখবেন কত ঝগড়া হয়, কত ধাক্কাধাক্কি হয়। কত হাহাকার। নিজে অনুভব করতে পারবেন মানুষের কষ্ট। মানুষের কষ্ট গুলো আপনার অনুভব করার দরকার আছে। কষ্ট অনুভব করতে না পারলে আপনি কিভাবে মানুষের কষ্ট লাঘব করবেন? আপনি দেশের মালিক। পুরো দেশের রাজা আপনি। মানুষের সকল ভরসা আপনার উপর। আপনার বাংলাদেশে এরকম পরিবারও আছে বছরে একবার মাত্র গরুর মাংস খায়। যেহেতু আপনি দেশের প্রধানমন্ত্রী আপনাকে সব জানতে হবে। এবং এসব আপনাকে কেউ জানাবে না। এগুলো আপনি রাস্তায় নেমে নিজে জানুন, দেখুন।

প্রিয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা,
একদিন আপনি ঢাকা শহরে ফুটপাত দিয়ে হেঁটে যাবেন। সমস্যা নেই কেউ আপনাকে চিনবে না। আপনি বোরকা পড়ে নিবেন। ফুটপাত দিয়ে আপনি শান্তিতে হাঁটতে পারবেন না। ফুটপাত ভাঙ্গা। যে ফুটপাত ঠিক আছে সেই ফুটপাতেও আপনি হাঁটতে পারবেন না। সেখানে নানান রকম দোকান। সেসব দোকান থেকে আপনার পুলিশ বাহিনী নিয়মিত টাকা পায়। যে ফুটপাতে দোকান নেই, সে ফুটপাতেও আপনি হাঁটতে পারবেন না। সেখান কেউ না কেউ গাড়ি পার্ক করে রাখবে অথবা সেই ফুটপাত দিয়ে বাইক চালিয়ে যাবে। যদি বাইকারদের আপনি কিছু বলেন, দেখা যাবে তাঁরা আওয়ামীলীগ করে। তাই চুপ করে থাকতে হয়। একদিন সময় করে আপনি দয়া করে ফুটপাতে হাটুন। তাহলে সমস্যা গুলো আপনি নিজেই অনুভব করতে পারবেন। চারিদিকে প্রচুর নব্য ধনী। আপনি কি তাদের সুযোগ দিয়েছেন বলেই কি তাঁরা অল্প সময়ে বিরাট ধনী হতে পেরেছে? আমাদের দেশটা গরীব। গরীব দেশের টাকা দিয়ে মন্দ লোকজন বিলাসিতা করছে। ওদের থামান। দয়া করে থামান।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা,
আপনি গোপনে আপনার মন্ত্রী, এমপি এবং তাদের ছত্রছায়ায় থাকা লোকদের খোজ খবর নিন। দেখুন তাঁরা কত বিসালীপূর্ন জীবনযাপন করছে। একরাতে লাখ লাখ টাকা খরচ করছে। মেয়ে নিয়ে ডাক বাংলোয় রাত কাটাচ্ছে। বিলাবহুল ফ্লাটে সিনেমার নায়িকাদের সাথে ফুর্তি করছে। ফ্লাটে মদ খাচ্ছে। ইন্ডিয়া থেকে নায়িকা এনে মধ্যরাতে নাচাচ্ছে। সম্পূর্ন অপ্রয়োজনে কোটি কোটি টাকা খরচ করছে। গ্রামের সাধারণ মানুষদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছে। জোর করে মানুষদের কাছ থেকে জমিজমা লিখে নিচ্ছে। হেলিকাপ্টারে করে গ্রামে যাচ্ছে। কোটি কোটি টাকা খরচ করছে। সব দেশের টাকা। ওদের থামান। এমন কি আপনার বড় বড় সরকারী কর্মকর্তারা যা ইচ্ছা তাই করছে। দুদকও দূর্নীতি করছে। কোরবানীর ঈদের সময় তাদের বাসায় আস্তো গরু পাঠিয়ে দেওয়া হয়। আপনি নিজে অনুসন্ধান করে দেখুন। প্লীজ। কেউ টিভি চ্যানেল খুলছে, কেউ কেউ দৈনিক পত্রিকা বের করছে। এগুলোর পিছনে তাদের উদ্দেশ্য অন্য। আপনার বাংলাদেশে সমস্ত মন্দ মানুষেরা ভালো আছে। খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ ভালো নেই।

প্রিয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা-
আপনি একদিন অতি সাধারণ মানুষদের মতো রাস্তায় নামুন। দেখুন মানুষের কত কষ্ট। ঘন্টার পর ঘন্টা আপনাকে জ্যামে বসে থাকতে হবে। অথচ আপনি যখন গাড়ি নিয়ে রাস্তায় নামেন মুহুর্তের মধ্যে রাস্তা ক্লিয়ার করে ফেলে। আপনি একদিন সরকারী হাসপাতালে যান। দেখুন সাধারণ মানুষের চিকিৎসা পেতে কত কষ্ট করতে হয়। আপনি একদিন চিকিৎসার জন্য সরকারী হাসপাতালে ভরতি হন। দেখবেন কত ধানে কত চাল। কোনো কাজের জন্য সরকারী অফিসে যান অথবা সিটি করপোরেশনের অফিসে যান দেখুন মানুষের কত দুর্ভোগ পোহাতে হয়। আপনি বোরকা পরে যান। নিজে দেখুন। অনুভব করুণ মানুষের কষ্ট। আল্লাহর দোহাই লাগে। বাজারে যান দেখুন মানুষের মধ্যে হাহাকার। দেখুন দেশের মানুষ কত কষ্ট ও অভাবে আছে। কত কষ্টে আছে। এগুলো আপনার নিজের চোখে দেখতে হবে। আপনার বহু মন্ত্রী, এমপি এবং তাদের ছত্রছায়ায় থাকা লোকদের ঘরে দেখবেন আলমারি ভরতি টাকা। কালো টাকা।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী-
একদিন রাতে রাস্তায় বের হয়ে দেখুন কত লোক রাস্তায় ঘুমায়। কত কষ্ট তাদের। অল্প বয়সী ছেলেরা সকলের সামনে জুতোর আঠা দিয়ে নেশা করছে। কেউ তাদের থামাচ্ছে না। দেশে বেকারের অভাব নেই। বলা যায় প্রতিটা ঘরে ঘরে কমপক্ষে একজন করে বেকার আছে। এসব বেকার গুলো অসংখ্য মানুষের হাতে পায়ে ধরেছে একটা চাকরির জন্য। আবার যোগ্যহীনরা মামা চাচার ক্ষমতার জোরে বড় বড় পদে বসে আছে। আপনার পুলিশ বাহিনী প্রচুর ঘুষ খায়। তাঁরা যেন ঘুষ খেতেই পুলিশে চাকরী নিয়েছে। আপনিসহ আপনার মন্ত্রী, এমপিরা চ্যাটাং চ্যাটাং করে বলেন। বাস্তব কিন্তু অন্যরকম। সেই অন্যরকম বাস্তবটা আপনি নিজের চোখে দেখুন। অনুভব করুণ। ক্ষমতাবানরা কত রকম অন্যায় যে করছে! শুধু মুখে বললেই হবে না দেশ উন্নয়নের মহাসড়কে। উন্নয়নের মহাসড়ক থেকে নেমে আপনি নিজে দেখুন আসলেই কি উন্নয়ের মহাসড়কে দেশ?

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.