নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।
ছবিঃ আমার তোলা।
টিউশনি মোটেও সম্মানের পেশা না।
যদিও কাউকে শিক্ষাদান করা মহৎ পেশা। আর্থিক সংকটে পড়ে আমাকে টিউশনি করতে হয়েছে। টানা তিন বছর এক এলাকা থেকে আরেক এলাকা টিউশনি করেছি। ছয়টা ছেলেমেয়ে কে পড়িয়েছি। প্রচুর পরিশ্রম করেছি। হ্যাঁ টিউশনি করলে মাস শেষে কিছু টাকা পাওয়া যায়। কিন্তু অপমানও কম নয়। টিউশনি করলে সবাই ভাবে বেচারা চাকরী পায়নি, তাই বাড়ি বাড়ি গিয়ে টিউশনি করছে।
যাই হোক, কোনো ভনিতা না করে চরম লজ্জার কথাটা বলেই ফেলি।
ক্লাশ ফোরের এক মেয়েকে পড়াই। মেয়েটার বাবা মা অনেক ধনী। মাস শেষে আমাকে ৫ হাজার টাকা দেয়। একদিন মেয়েটাকে পড়াচ্ছি। তখন মেয়েটার মা বলল, চা খাবে? আমি বললাম, জ্বী খাবো। চায়ে না নাই। তখন ছাত্রীর মা বললেন, যাও রান্না ঘরে যাও। নিজে চা বানিয়ে খাও। আর আমার জন্যও এক কাপ বানিয়ে নিয়ে আসো। আমার রান্না ঘরে যেতে ইচ্ছা করে না। গরম লাগে। গতকাল'ই পার্লারে অনেক গুলো টাকা দিয়ে এলাম।
মহিলা বললেন, তুমি কিছু মনে করো না।
আমার কাজের মেয়েটা দোকানে গেছে। তা না হলে ঐ মেয়েটাকেই বানিয়ে দিতে বলতাম। তুমি তো আমার ঘরের ছেলেই। তোমাকে পর ভাবি না। তোমার মতো আমার একটা ছোট ভাইও আছে। আমার প্রচন্ড লজ্জা লাগলো। পড়াতে এসে এখন আমাকে চা বানাতে হবে! তাছাড়া আমি কোনো দিন চা বানিয়ে খাই নি। আমার বাসায় মা আমাকে চা বানিয়ে দেয়। ইচ্ছা করলো নিজের গালে নিজে দুইটা থাপ্পড় দেই। বিধাতা আমাকে নিয়ে রসিকতা করছেন কেন? আমাই তার কি ক্ষতি করেছি!
যাই হোক, রান্না ঘরে গেলাম।
আন্দাজে দুই কাপ চা বানালাম। মহিলাকে এক কাপ দিলাম। মহিলা চা খেয়ে মুগ্ধ!! বলল, এই ছেলে তুমি তো চা খুব ভালো বানাও। চমৎকার চা হয়েছে। এখন থেকে রোজ তুমি আমাকে এক কাপ চা বানিয়ে খাওয়াবে। তুমিও খাবে। কাজের মেয়েটা বিশ্রাম পাবে। আগামী সপ্তাহে আমার বান্ধবীরা আসবে, তাদের সবাইকে তুমি চা বানিয়ে খাওয়াবে। তাঁরা দেখুন আমার মেয়ের শিক্ষক কত ভালো চা বানায়। প্লীজ তুমি মানা করবে না। ফর গড সেক।
এই মহিলা আমাকে আরেকবার এরকম অপমান করলো।
একদিন তার মেয়েকে পড়াচ্ছি। তখন বললেন, আজ তিন ধরে ময়লার গাড়ি আসে না। ঘরে অনেক ময়লা জমে গেছে। বাজে গন্ধ ছড়াচ্ছে। তুমি যাওয়ার সময় ময়লা গুলো নিয়ে যেও। রাস্তার পাশে যে বড় ডাস্টবিন থাকে সেখানে ফেলো দিও। প্লীজ। এতটুকু উপকার করো। ময়লার গন্ধে ঘরে টিকতে পারছি না। তোমাকে ঘরের ছেলে মনে করি বলেই বললাম। আবার যেন রাগ করো না। তোমার মতো আমার এক ভাই আছে। সে এখন লন্ডন থাকে।
এই দুই ঘটনার পর আমার এত রাগ হলো।
যে মনে মনে সিদ্ধান্ত নিলাম। টিউশনির মায়রে বাপ। বাকি জীবনে আর টিউশনি করবো না। প্রয়োজনে না খেয়ে থাকবো। দিলাম সব টিউশনি ছেড়ে। এখনও কয়েকজন কাছে টাকা পাই। সেই টাকা আজও নিই নাই। টিউশনি ছেড়ে এখন বেশ ভালো আছি। নিজেকে স্বাধীন মনে হয়। যা ইচ্ছা তাই করতে পারছি। মুভি দেখছি। বই পড়ছি। চায়ের দোকানে আড্ডা দিচ্ছি। রাস্তায় এলোমেলো হাঁটছি। মোবাইলে গেমস খেলছি। ফার্মেসীতে গিয়ে পত্রিকা পড়ছি। লাইফ ইজ বিউটিফুল।
০৭ ই মে, ২০২২ রাত ১১:৩৬
রাজীব নুর বলেছেন:
২| ০৭ ই মে, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:৪৮
সোনাগাজী বলেছেন:
আপনাকে নিয়ে একটা পোষ্ট লেখার দরকার ছিলো; কিন্তু সামুটিম ইহা নিয়ে সমস্যা করবে; আমিআরো কিছু সময় কিছু বলতে চাচ্ছি না।
০৭ ই মে, ২০২২ রাত ১১:৩৭
রাজীব নুর বলেছেন: আপাতত কিছু না বলাই ভালো।
©somewhere in net ltd.
১| ০৭ ই মে, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:১০
সোনাগাজী বলেছেন:
আপনার ব্লগিং ষ্টেটাস কি এখন?