নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।
ছবিঃ আমার তোলা।
আমাদের মহল্লায় রিনা আপা থাকেন।
খুব ভালো মানুষ। সহজ সরল। ঝামেলাবিহীন জীবনযাপন তার। রিনা আপার এক ছেলে, এক মেয়ে। কন্যার বয়স ৪, পুত্রের বয়স দুই বছর। তার স্বামীটা যেন কেমন! সংসারে মন নেই। যাকে খারাপ ভাষায় বলে বাদাইম্মা। ভদ্র ভাষায় বলে ছন্নছাড়া। মাঝে মাঝে সে উদাও হয়ে যায়। ৩/৪ মাস তার আর কোনো খোজ খবর থাকে না। একদিন হুট করে আসেন। ৫/৭ দিন থাকেন। আবার দীর্ঘদিনের জন্য নিখোঁজ হয়ে যান। এদিকে তার সংসারের অবস্থা করুণ। অনেক মাসের বাড়ি ভাড়া জমে গেছে। মুদি দোকানে অনেক টাকা বাকি হয়ে গেছে। রিনা আপা আমাদের বাসায় কোনো অনুষ্ঠান থাকলে মাঝে মাঝে এসে রান্না করে দিয়ে যান। তার রান্নার হাত দারুন। উনি দেশী- বিদেশী সব রকম খাবার রান্না করতে পারেন।
একদিন আমি রিনা আপাকে বললাম-
আপনার একটা গুণ আছে। সেটা আপনাকে কাজে লাগাতে হবে। আপনি অনলাইনে খাবার বিক্রি করুণ। এই ব্যবসা ঠিক ভাবে করতে পারলে আপনার সংসার সুন্দর চলে যাবে। আমি আপনাকে একটা পেজ খুলে দিচ্ছি। রিনা আপা সামান্য লেখাপড়া জানেন। পেজ খুলে আমি রিনা আপাকে সব বুঝিয়ে দিলাম। এবং রান্নার জিনিসপত্র কেনাকাটা করতে তার যেন বাইরে যেতে না হয় সেজন্য কয়েকটা ফোন নম্বর দিয়ে দিলাম। ফোন দিলেই বাসায় এসে মূরগী দিয়ে যায়। তরকারী দিয়ে যায়। গরুর মাংস দিয়ে যায়। রিনা আপা বিজনেস শুরু করলেন। রিনা আপার ভাগ্য ভালো। উনি প্রথমেই একটা ব্যাংক থেকে পঞ্চাশ বক্স কাচ্চির অর্ডার পেলেন। খাবার তার গিয়ে দিয়ে আসতে হয় না, ফোন দিলেই উবার বা পাঠাও এর লোক এসে নিয়ে যায়। আপা আমার উপর অনেক খুশি হলেন।
টানা তিন বছর রিনা আপা ব্যবসায় খুব ভালো করলেন।
এখন তার বাড়ি ভাড়া বাকি নেই। মুদি দোকানে বাকি নেই। কন্যাকে স্কুলে ভরতি করিয়ে দিয়েছেন। সুন্দর সংসার চলছে। কিন্তু তার স্বামী ঠিক হয়নি। সে আগের মতোই তিন চার মাস পরে আসে। এক সপ্তাহ থেকে আবার কোথাও চলে যায়। রিনা আপার কাছ থেকে জানলাম- তার স্বামী যেন কার মুরিদ হয়েছে। এখন সে মাজারে মাজারে ঘুরে বেড়ান। অর্থ্যাত রিনা আপার স্বামী আল্লাহর রাস্তায় গেছেন। আমি বুঝি না আল্লাহর রাস্তায় যাওয়ার মানে কি? এতে তার বা তার পরিবারের কি উপকারটা হবে? আর মাজারে মাজারে গেলেই বা লাভটা কি? মানুষ যে কত ভুলের মধ্যে থাকে। একবার ভুলে প্রবেশ করলে, আর ভুল থেকে বের হয়ে আসা যায় না। খোজ নিলে জানা যাবে লাখ লাখ ঘর সংসার ফেলে আল্লাহর রাস্তায় গিয়েছে। যার ফলাফল শূন্য।
তিন দিন আগে রিনা আপা ফোন দিলেন আমাকে।
আপা প্রায়ই ফোন দেয়। বাসায় গেলে না খেয়ে যেতে দেন না। এমন কি মাঝে মাঝে রান্না করে বাসায় খাবার পাঠিয়ে দেয়। যাইহোক, আবার বাসায় গেলাম। গিয়ে শুনি- এক মহিলা দুই বার খাবার অর্ডার করে দশ হাজার টাকার খাবার নিয়েছেন। কিন্তু টাকা দিচ্ছে না। ফোন দিলেন নানান রকম কথা বলে। আজ দিচ্ছি, কাল দিচ্ছি। পরশু দিচ্ছি। আরেহ টাকার জন্য এত অস্থির হচ্ছেন কেন? টাকা তো দিবোই। খাবার নিয়েছি, টাকা তো দিবোই। আমরা ৭০/৮- হাজার টাকার খাবার অনলাইন থেকে কিনি। মহিলা আরো খাবারের অর্ডার দেয়। কিন্তু টাকা দেয় না। এই হলো রিনা আপার ঘটনা। আমি সেই মহিলাকে ফোন দিলাম। বললাম, খাবার নিয়েছেন। টাকা দিচ্ছেন না কেন? সেই মহিলা বলল, ঠিক আসে আগামীকাল দিয়ে দিবো। দেখা গেলো মহিলা আগামীলাও টাকা দিলেন না। আমি ফোন দিলাম। বলল, ফোন ধরে না। তাকে ফেসবুকে ম্যাসেজ দিতে গিয়ে দেখি- সে সব রকম অপশন বন্ধ করে দিয়েছে।
আমি এই মহিলা সম্পর্কে কিছুটা খোজ খবর নিলাম।
জানতে পারলাম, এই মহিলা অনেক পেজ থেকে এরকম খাবার অর্ডার দেয় কিন্তু টাকা দেয় না। কোনো কোনো পেজ থেকে মহিলা শাড়ি কিনেছে কিন্তু টাকা দেয় নি। এরকম বেশ কিছু ঘটনা মহিলা করেছে। আমি সরাসরি মহিলার বাসায় গেলাম। মহিলা আমার সাথে দেখা করেন না। আমি বাড়িওলার সাথে কথা বললাম, বাড়িওলা বললেন, ভাই কি বলব, আমার বাড়ি ভাড়া দেয় না ৭ মাস ধরে। বাড়িতে প্রতিদিন কেউ না কেউ আসে এই মহিলার কাছে টাকা নিতে। মহিলা অতি দুষ্ট মহিলা। পাওয়াদার আসলে গালিগালাজ করে দেয়। নানান রকম ভয়ভীতি দেখায়। একবার তো এক লোক পুলিশ নিয়ে এসে বাসায় হাজির। জানতে পারলাম তাদের কাছ থেকে জামদানী শাড়ি নিয়েছে দুটা। শেষে পুলিশ দেখে মহিলা ভয় পেয়ে টাকা দিয়ে দিয়েছে।
অনলাইনে যারা ব্যবসা করেন, এদের অনেক দোষ আছে। একটা বলে আরেকটা দিয়ে দেয়। এক জিনিস দেখিয়ে অন্য জিনিস দিয়ে দেয়। আমার ধারনা অনলানে যারা ব্যবসা করেন এদের ৭৫% ব্যবসায়ী প্রায় ভন্ড। কিন্তু অনলাইনে এরকমও হয় জিনিস নিয়ে টাকা দেয় না। যেটা রিনা আপার সাথে ঘটেছে। এই ধরনের প্রতারকদের সংখ্যাও কম নয়। অনলাইনে বেশির ভাগ ব্যবসা করে মহিলারা, এবং অনলাইনে বেশি প্রতারণা করে মহিলারা। ইহা দুঃখজনক।
৩১ শে অক্টোবর, ২০২২ দুপুর ১:৩৬
রাজীব নুর বলেছেন: ইয়েস।
ধন্যবাদ আপনাকে।
২| ৩০ শে অক্টোবর, ২০২২ বিকাল ৫:৫৪
অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য বলেছেন: শেষদিকে তালগোল পাকিয়ে ফেলেছেন। রিনা আপাকে নিয়ে আরও বলা দরকার ছিল।
৩১ শে অক্টোবর, ২০২২ দুপুর ১:৩৭
রাজীব নুর বলেছেন: তালগোল পাকায় নি। আরেকবার পড়ুন।
৩| ৩০ শে অক্টোবর, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:০৪
সোনাগাজী বলেছেন:
ঢাকা শহরের ৬০/৭০ ভাগ লোকজন জালিয়াত, ঠকবাজ, দুর্নীতিবাজ
৩১ শে অক্টোবর, ২০২২ দুপুর ১:৩৭
রাজীব নুর বলেছেন: রাইট।
৪| ৩০ শে অক্টোবর, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:২২
জগতারন বলেছেন:
নূর মোহাম্মদ, নূরু ভাইকে অনেক দিন যাবত ব্লগে পাচ্ছি না।
সে কোথায় কী অবস্থায় আছে জানেন ?
৩১ শে অক্টোবর, ২০২২ দুপুর ১:৩৪
রাজীব নুর বলেছেন: উনি অনেক অসুস্থ।
৫| ৩০ শে অক্টোবর, ২০২২ রাত ৮:৩১
প্রামানিক বলেছেন: লেখা ভালো লাগল। ধন্যবাদ
৩১ শে অক্টোবর, ২০২২ দুপুর ১:৩৮
রাজীব নুর বলেছেন: সুকরিয়া। ভালো থাকুন।
৬| ৩০ শে অক্টোবর, ২০২২ রাত ৯:২৪
জুল ভার্ন বলেছেন: রিনা আপার কাহিনী আমাদের দেশে আকছার আছে। লেখা ভালো হয়েছে।
৩১ শে অক্টোবর, ২০২২ দুপুর ১:৪৪
রাজীব নুর বলেছেন: এগুলোর প্রতিকার করবে কে?
৭| ৩১ শে অক্টোবর, ২০২২ সকাল ৮:৩৬
শেরজা তপন বলেছেন: এইসব জীবনমুখী গল্প আপনার লেখকস্বত্বার পরিচায়ক!
আপনি যদি ওসব লিখে থাকেন ক্যাচাল সৃষ্টির উদ্দেশ্যে তবে ভিন্ন কথা। এমন পোস্ট দিবেন কেন যেটা সরিয়ে নিতে বাধ্য হবেন?
৩১ শে অক্টোবর, ২০২২ দুপুর ১:৩৫
রাজীব নুর বলেছেন: আমি আমার ইচ্ছা মতো লিখতে চাই।
ক্যাচাল এর জন্য লিখি নাই। যারা কুকুরের লেজ নিয়ে লিখে তাঁরা ক্যাচালবাজা। আমি না।
৮| ৩১ শে অক্টোবর, ২০২২ দুপুর ২:১২
খন্দকার সাইফুর রহমান আরিফ বলেছেন: লেখা অনেক আগ্রহ নিয়ে পড়লাম। অনেক সুন্দর একটা লেখা। রিনা আপার জীবন অনেক স্বাচ্ছন্দময় হোক এই কামনা করি । আর অনেক অনেক শুভ কামনা লেখক ও রিনা আপার জন্য ।
©somewhere in net ltd.
১| ৩০ শে অক্টোবর, ২০২২ বিকাল ৫:২৯
রানার ব্লগ বলেছেন: রিনা আপার জীবন সমৃধ্য হোক এটাই কামনা । আর তার জামাই সংসারমুখী হোক এটাও কামনা করছি ।