নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।
ছবিঃ আমার তোলা।
সেদিন কুলাউড়া থেকে ট্রেনে করে সিলেট যাচ্ছিলাম।
বগি ভরতি যাত্রী। অনেকে সিট না পেয়ে দাঁড়িয়ে আছে। ২২/২৫ বছরের এক ছেলেকে দেখলাম বিশ টাকার বাদাম কিনলো। সেই বাদামের খোসা গুলো ট্রেনেই ফেলে দিলো। পরিস্কার জায়গাটা নোংরা করে দিলো। কিন্তু ছেলেটার সেদিকে কোনো হুশ নেই। ছেলেটা যদি প্রতিবন্ধী হতো তাহলে না হয় আমি মেনে নিতাম। চুল ডিজাইন করে কেটেছে। জিন্স প্যান্ট, পায়ে কেডস। ছেলেটা কি বাদামের খোসা গুলো বাইরে ফেলে দিতে পারতো না? এখন এই ছেলেকে যদি আমি 'ছাগল' বলি তাহলে কি আমার অন্যায় হবে? যাইহোক, এই ছাগল চলমান একটা হকারের কাছ থেকে মেসওয়াক কিনলো। তারপর সে চোখ মুখ খিচিয়ে সকলের সামনে দাঁত ঘষতে শুরু করলো। ট্রেন ভরতি মানুষ সেদিকে তার খেয়াল নেই। মেসওয়াক শেষে কুলি করতে মুখে পানি নিলো, সেই পানি ট্রেনেই ফেলে দিলো। এই জন্যই বাংলাদেশে ছাগলের সংখ্যা এত এত বেশি।
এক মহিলা স্বামীর সাথে ঢাকা এসেছে।
এই প্রথম স্বামী স্ত্রী দুজন ঢাকায় পা রাখলো। তাদের পকেট শূন্য। স্বামী বোকা মানুষ। স্ত্রী মোটামোটি বানান করে বাংলা পড়তে পারে। তবে সে আরবীতে ভালো। পুরো কোরআন তার মূখস্ত। অনেক হাদীস জানেন। কন্ঠ পরিস্কার। উচ্চারন স্পষ্ট। দেখতেও বেশ। তাঁরা একটা ঘর ভাড়া নিলো। স্ত্রী স্বামীকে বলল, কোনো চিন্তা করো না আল্লাহর বানী আমাদের সাথে আছে। এই শহরে আমাদের গাড়ি হবে, বাড়ি হবে। ব্যাংকে অনেক টাকাও থাকবে। মহিলার কথা সত্য হয়েছে। তাঁরা ফ্লাট কিনেছে। নিজস্ব একটা গাড়িও আছে। কেরানীগঞ্জে পাঁচ কাঠা জায়গা রেখেছে। খুব শীঘ্রই বাড়ির কাজ করা হবে। এই মহিলা শুধু মাত্র আরবী জেনে আজ ঢাকা শহরে নিজের অবস্থান তৈরি করে নিয়েছে। আসলে এই মহিলা আরবী জানার চেয়ে বেশী গুরুত্বপূর্ন ছিলো তাঁরা বুদ্ধি। বুদ্ধিত জোরে সে সফল হয়েছে।
ভদ্র মহিলা যে বাসায় ভাড়া থাকতেন-
তার পাশে ছিলো একটা বারো তলা এপার্টমেন্ট। এই এপার্টমেন্টে এক মহিলা থাকতো। তাঁরা বিরাট ধনী। এবং ধার্মিক মানসিকতায় ভরা। সেই ধনী মহিলার সাথে গ্রাম থেকে আসা স্ত্রী লোকটির পরিচয় হয়। ধনী মহিলা বলল, আপনি আমাকে কোরআন শিখিয়ে দিন। ছোটবেলায় শিখেছিলাম, এখন ভুলে গেছি। গ্রাম থেকে আসা মহিলা কোরআন শিখাতে শুরু করলো। তার হাদিয়া দশ হাজার টাকা। এরপর এই ধনী মহিলা একদিন তার ছেলেকে স্কুলে আনতে গেলো। এবং কথায় কথায় অন্যান্য মহিলাদের তার আরবী পড়ার কথা বললেন। অন্যান্য মহিলারা এখন গ্রাম থেকে আসা মহিলার কাছে আরবী শিখতে চায়। যত টাকা লাগে তাঁরা দিতে রাজী আছে। তখন গ্রাম থেকে আসা মহিলা বলল, সম্ভব না। আমি পড়াতে পারবো না। আমার সময় নেই। কিন্তু এই কথা মানতে নারাজ ধনী মহিলারা। তাঁরা খুব আকুতি মিনতি করলো। আরবী আপা তাদের আকুতি মিনতি মেনে নিলো।
শেষে ১৫ জন মহিলা মিলে খুব অনুরোধ করায়-
শেষমেশ গ্রাম থেকে আসা মহিলা রাজী হলেন। কিন্তু শর্ত সে বাসায় গিয়ে কাউকে আরবী পড়াবে না। অনলাইনে পড়াবে। প্রতিদিন সে আধা ঘন্টা অনলাইনে আরবী উচ্চারন শেখায়। 'বুসতানুন' মানে বাগান। 'রাজুলুন' মানে মানুষ। 'হাবিবুন' মানে বন্ধু। বয়স্ক মহিলারা এখন মাথা ঝাকিয়ে ঝাকিয়ে আরবি শিখছে। এবং তাঁরা অনুতপ্ত। কেন আরো আগে আরবী শিখেনি। অনেক গুনাহ হয়ে গেছে তাদের। গ্রাম থেকে আসা মহিলা সবাইকে বুঝাতে সক্ষম হয়েছে- আরবী ভাষা অবশ্যই শিখতে হবে। এটা মহান আল্লাহর ভাষা। নবীজির ভাষা। মৃত্যুর পর আরবীতে প্রশ্ন করা হবে। পরকালের ভাষা হবে আরবী। এই দুনিয়া কিছুই না। পরকালই আসল। ঘরে হিজাব পড়ে থাকতে হবে। বাইরে গেলে অবশ্যই বোরকা পড়তে হবে। একেকজন একেকদিন পাল্লা দিয়ে আরবী আপার বাসায় পোলাউ টোলাউ রান্না করে পাঠায়। আরবী আপা মানা করলেও তার শিষ্যরা মানা শুনেন না।
ধীরে ধীরে গ্রাম থেকে আসা মহিলার কথা চারিদিকে ছড়িয়ে পড়লো।
'মহিলা অনেক ভালো, খুব সুন্দর করে পড়ায়, খুব সহজে বুঝিয়ে দিতে পারে'। ধনী মহিলা গুলো এখন তাদের বাচ্চাদের এই মহিলার কাছে আরবী পড়াতে শুরু করেছেন। টাকা কোনো সমস্যা না, যত টাকা লাগে নিন। তবু আপনাকেই পড়াতে হবে। দয়া করে আপনি মানা করবেন না। রোজী ভাবী আপনাকে দশ হাজার টাকা দেয়, আমি দিবো পনের হাজার। আরেকজন বলে, নাসরিন ভাবীকে আপনাকে পনের হাজার টাকা দেয়, আমি দেবো বিশ হাজার। তবু আপনাকেই পড়াতে হবে। ধনী মহিলা গুলো এখন পার্লারে যায় না। রংচঙা জামা পড়ে না। তাদের জীবন এখন হিজাব এবং বোরকাময়। আরবী আপা এখন আরবী পড়ার পাশাপাশি হিজাব, তজবি, জায়নামাজ, ধর্মীয় গ্রন্থ ইত্যাদি বিক্রি করে। সম্প্রতি একজন আরবী আপাকে একটা আইফোন গিফট করছেন। এবং অনেকে আরো কিছু দিতে চাচ্ছেন। কিন্তু আরবী আপা ফিরিয়ে দিচ্ছেন। তিনজন মহিলা আরবী আপাকে হজ করাতে চাচ্ছে।
১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২২ দুপুর ১:২৩
রাজীব নুর বলেছেন: শাহেদ জামালের সাথে অনেকদিন দেখা হয় না।
এখন থেকে তাকে ফোন দিবো। রাতে আমাদের সাথে খেতে বলব। তারপর তাকে নিয়ে কিছু লিখব। অনেকদিন শাহেদ জামালকে নিয়ে কিছু লিখি না।
২| ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:১৭
সোনাগাজী বলেছেন:
আপনিও আরবী শিখে রাখেন, ওপারে অনুবাদকের চাকুরী পাবেন।
১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২২ দুপুর ১:২৪
রাজীব নুর বলেছেন: আরবী শিখে লাভ নাই। হুজুর হতে আমি পারবো না।
৩| ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২২ রাত ৮:৩৭
জুল ভার্ন বলেছেন: এটা কি গল্প?
১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২২ দুপুর ১:২৪
রাজীব নুর বলেছেন: না গল্প নয়। বাস্তব।
৪| ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২২ রাত ৮:৫০
কামাল১৮ বলেছেন: আরবের লোকেরা ভালো কবিতা লিখতে জানতো।কোরান পয়ার ছন্দে লিখা।তাই সুর করে পড়তে হয়।আমি ছোট বেলায় শিখে ছিলাম।না পড়ে ভুলে গেছি।
১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২২ দুপুর ১:২৫
রাজীব নুর বলেছেন: ভুলে যাওয়াতে খারাপ কিছু হয়নি।
৫| ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২২ রাত ১০:২৯
শূন্য সারমর্ম বলেছেন:
আরবী শিখলে দামি চাকুরী সম্ভব?
১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২২ দুপুর ১:২৫
রাজীব নুর বলেছেন: না সম্ভব না।
তবে বাচ্চা কাচ্চাদের কায়দা, আমপাড়া এবং কোরআন পড়াতে পারবেন।
©somewhere in net ltd.
১| ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২২ বিকাল ৩:৫৬
ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন:
ভয়াবহ অবস্থা! আমরা আরোও ভালো আরবী শিখতে চাই এখন করণীয় কি - আরব চলে যাবো? খানিকটা মজা করেছি। যাক সেইসব, বইয়ের ভাষার আরবী আর কথ্য আরবী এক নয়। অনেক অনেক পার্থক্য।
আপনার শাহেদ জামাল কেমন আছেন?