নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।
ছবিঃ বিবিসি বাংলা।
বৃষ্টি তো আর সারা বছর হয় না। বর্ষাকালে হয়।
বর্ষাকাল ছাড়াও মাঝে মাঝে দুই একবার হয়। আবহাওয়া বদলে গেছে। এখন ঋতুর হিসাব মেনে বৃষ্টি হয় না। যাইহোক, বৃষ্টি আমার ভালো লাগে। ঝুম বৃষ্টি হলে আমি ছাদে গিয়ে বৃষ্টিতে ভিজি। এই অভ্যাস আমার ছোটবেলা থেকেই। এমনকি রাস্তায় থাকলেও আমি ইচ্ছা করে বৃষ্টিতে ভিজি। এজন্য মা অনেক চিল্লাচিল্লি করেছে। এখন চিল্লাচিল্লি করে সুরভি। চিল্লাচিল্লি থেকে যেন এই জীবনে আর মুক্তি নেই। ভিজে ভিজে শহরের রাস্তায় এক গলি থেকে আরেক গলি হেঁটে বেড়াই। এটা অনেক বড় একটা আনন্দ। ঢাকা শহরের সমস্যা হলো- সামান্য বৃষ্টিতে রাস্তায় পানি জমে যায়। লেগে যায় জ্যাম। কঠিন জ্যাম।
আজ থেকে দশ বা বিশ, ত্রিশ বছর আগে বৃষ্টি হলে রাস্তায় পানি জমে যেতো আজও পানি জমে যায়। অথচ কত দল ক্ষমতায় এলো, গেলো। তাদের কত বড় বড় কথা। দেশ নাকি উন্নয়নের মহাসড়কে। সব ফাঁকা বুলি। মিথ্যা। কোনো সরকারই আজ পর্যন্ত জলাবদ্ধতা বন্ধ করতে পারেনি। যেমন পারেনি ফুটপাত থেকে হকার মুক্ত করতে। পারেনি সরকারী লোকজনের ঘুষ খাওয়া বন্ধ করতে। সে যাক গে, বৃষ্টি হলে দরিদ্র মানুষদের ভারী বিপদ। বিশেষ করে যারা রাস্তায় ঘুমায়। রাস্তায় ব্যবসা করে। পথচারীরাও বিরক্ত বোধ করে। ভিক্ষুকদের আয় রোজগার বন্ধ। অবশ্য আজকাল কেউ কারো কথা ভাবে না। নিজে ভালো থাকলেই হলো। এরকমই এক বৃষ্টির দিনে আমি আর সুরভি রিকশা করে সংসদ ভবনের কাছে ভিজেছিলাম। রিকশার হুড ছিলো, প্লাস্টিকের পর্দা ছিলো। তবু দুজনে ভিজে একাকার অবস্থা। সেদিন আমাদের বৃক্ষমেলাতে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিলো।
বৃষ্টি হলে আমি সুরভিকে বলি, আজ খিচুড়ি রান্না করো।
মোটা করে বেগুন ভাজো। ফ্রিজে ইলিশ মছ থাকলো ভাজো। গরুর মাংস রান্না করো। বৃষ্টির সাথে খিচুড়ির কি সম্পর্ক আমি জানি না, কিন্তু বৃষ্টি হলেই খিচুড়ির কথা মনে পড়ে। দীর্ঘদিন একসাথে থাকার কারনে সুরভি আমার পছন্দ অপছন্দ সব জেনে গেছে, বুঝে গেছে। এখন তাকে আর কিছু বলতে হয় না। বৃষ্টি দেখলেই সুরভি খিচুড়ি বসিয়ে দেয়। ছোটবেলায় আমি বহুবার স্কুল থেকে বৃষ্টিতে ভিজে ভিজে বাসায় ফিরেছি। আর মায়ের বকুনি খেয়েছি। বড় হয়ে অনেকবার অফিস থেকে বৃষ্টিতে ভিজে ভিজে বাসায় ফিরেছি। আমার সহজে অসুখ বিসুখ হয় না। অসুখ হয়ে কোনোদিন আমাকে হাসপাতালে থাকতে হয়নি। বছরে একবারও আমাকে হাসপাতালে যেতে হয় না। আমার ভাইয়ের মাথায় একফোটা বৃষ্টির পানি পড়লে সাথে সাথে ঠান্ডা লেগে যাবে। জ্বর এসে যাবে। আমার এরকম সমস্যা নেই।
অনেক বছর আগে একবার সিলেট গিয়েছিলাম।
আমরা সাত জন বন্ধু। তখন কলেজে পড়ি। রেলস্টেশন থেকে নেমেই দেখি আকাশ ভরা মেঘ। চারপাশ কালো হয়ে গেছে। শীতল হাওয়া বইছে। তখন এমন একটা বয়স যা দেখি তা-ই ভালো লাগে। আনন্দ লাগে। অকারনেই হাসি, অকারনেই বিষন্ন হই। আমরা ক্বীন ব্রীজ পাড় হতেই ঝুম ঝুম করে বড় বড় ফোটায় বৃষ্টি শুরু হয়ে গেলো। রাস্তার পাশেই একটা রেস্টুরেন্ট ছিলো, আমরা সেখানে আশ্রয় নিলাম। চা নাস্তা খাওয়া শেষ, কিন্তু বৃষ্টি আর থামে না। আমরা দোতলায় বসে বন্ধুরা গল্প করছি আর বারান্দা থেকে বৃষ্টি দেখছি। সেই বৃষ্টি থামলো দুপুর তিনটায়। আমরা যাবো মৌলবিবাজার। সেখানে আমাদের এক বন্ধুর বোনের বিয়ে। আমাদের জন্য ডাকবাংলোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। কত না আনন্দ করেছিলাম। মজা করেছিলাম। কিন্তু এখন জানি না আমার সেই বন্ধুরা কোথায়। ফেসবুকেও তাঁরা নেই।
বৃষ্টি এলে আমাদের দেশের মানুষের মন কিছুটা নরম হয়ে যায়।
অতি দরিদ্র একজন রিকশাচালক পর্যন্ত একটা বেনসন সিগারেট খেতে কার্পন্য করে না। আর সিগারেটের সাথে চা তো অবশ্যই। মেয়েরা বৃষ্টি দেখলেই উতলা হয়ে যায়। জানালার গ্রীল দিয়ে হাত বাড়িয়ে বৃষ্টি স্পর্শ করবে। বৃষ্টির পানি গালে ছোঁয়াবে। এরকমই এক বৃষ্টির দিনে সাহস করে আমি সুরভিদের বাসায় চলে যাই। সুরভি আমাকে দেখে ভীষন অবাক! তখন বাসায় কেউ ছিলো না। সুরভি বলল, আমি মাত্রই রান্না শেষ করলাম তুমি খেয়ে যাও। টেবিলে খাবার দিলো। আমি খেতে শুরু করলাম। রান্না খুব ভালো হয়েছে। এমন সময় সুরভির ভাই এসে উপস্থিত! সে আবার ভীষণ রাগী মানুষ। আমি বললাম, ভাইয়া আসসালামু আলাইকুম। আমার নাম রাজীব। তিনি বললেন, আগে খাওয়া শেষ করো। বলেই তিনি পাশের ঘরে চলে গেলেন। আমি সুরভিকে বললাম, দরজা খুলে রাখো। ঝেড়ে একটা দৌড় যেন দিতে পারি। সুরভি বলল, আমার ভাই রাগী হলেও ভালো মানুষ।
২২ শে ডিসেম্বর, ২০২২ দুপুর ২:৪৫
রাজীব নুর বলেছেন: আপনি একজন আবেগী মানুষ।
এতটা আবেগী হবেন না। তাহলে অনেক অনেক কষ্ট পেতে হবে। সবচেয়ে ভালো হয় যদি বাস্তববাদী হতে পারেন।
২| ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২২ দুপুর ২:২৮
বাকপ্রবাস বলেছেন: লেখায় মুগ্ধ
২২ শে ডিসেম্বর, ২০২২ দুপুর ২:৫৩
রাজীব নুর বলেছেন: কি যে বলেন!!!
আমি তো লিখতেই জানি না।
৩| ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২২ দুপুর ২:৩২
আলমগীর সরকার লিটন বলেছেন: সত্যই এক সময় বৃষ্টিতে কত বার ভেজেছি
ঝড় বৃষ্টিতে আম কুরেছি বুঝাতে পারবো
তারি হাওয়া লেগে গেলো রাজীব দা!
ভাল থাকবেন---------
২২ শে ডিসেম্বর, ২০২২ দুপুর ২:৫৪
রাজীব নুর বলেছেন: শুনলাম আপনি কবিতায় মনোনয়ন পেয়েছেন। অভিনন্দন।
৪| ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২২ দুপুর ২:৩৫
জুল ভার্ন বলেছেন: চমৎকার!
২২ শে ডিসেম্বর, ২০২২ দুপুর ২:৫৫
রাজীব নুর বলেছেন: ভালো থাকুন।
৫| ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২২ বিকাল ৩:০৬
স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন:
লেখক বলেছেন: আপনি একজন আবেগী মানুষ।
আবেগহীন কারা ? আপনি নিজেও আবেগী।
২২ শে ডিসেম্বর, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:১৬
রাজীব নুর বলেছেন: ব্লগটিম আবেগহীন।
আমি আমার আবেগ লুকিয়ে রাখতে চেষ্টা করি। কিন্তু মাঝে মাঝে প্রকাশ পেয়ে যায়।
৬| ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২২ বিকাল ৩:১৮
শূন্য সারমর্ম বলেছেন:
আপনার ইম্যুনিটি তো চমৎকার।
২২ শে ডিসেম্বর, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:১৭
রাজীব নুর বলেছেন: আমার মধ্যে মন্দ ব্যাপার স্যাপার কম।
আমার বেশির ভাগ ব্যাপারই চমৎকার।
৭| ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:০৬
সোনাগাজী বলেছেন:
আপনি ঢাকার উঁচু এলাকায় থাকেন?
২২ শে ডিসেম্বর, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:১৮
রাজীব নুর বলেছেন: হ্যাঁ উঁচু এলাকায় থাকি।
মতিঝিলের কাছেই থাকি। কিন্তু আজকাল আর উঁচু নিচু নেই। প্রায় সব এলাকাতেই পানি জমে।
৮| ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২২ রাত ৮:৩৩
কামাল১৮ বলেছেন: সুরভি আপনার ভালো লাগা মন্দ লাগা সব জেনে গেছে।আপনি কি জানেন,সুরভির ভালো লাগা মন্দ লাগার বিষয় গুলো।নাকি হাজারো মানুষের মতো ভাবেন,”মাইয়া মানুষের আবার ভালো লাগা মন্দ লাগা কি?”
সিগারেট খাওয়া (সিগারেট খায় নাকি পান করে) কমিয়ে দেন।সিগারেট খেলে ক্যানসার হবার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।প্রমানিত সত্য
তিন চার দিন আগে নায়েগ্রা গিয়েছিনাম বেড়াতে।পাঁচ দিনের জন্য।মাঝের একদিন প্রচুর বৃষ্টি।সারা দিন ত্রিশতালায় বসে জলপ্রপাত দেখলাম । মাঝে হোটেলের নিচের তালায় নেমে ক্যাসিনো খেললাম ঘন্টা দুয়েক।গিন্নী ও ছোট মেয়ে কোন রকমে ১০/২০ ডলার হারের মধ্যে ছিলো।মেজো মেয়ে সাত আটশো জিতে ছিলো।আমি ছিলাম দর্শক।
২২ শে ডিসেম্বর, ২০২২ রাত ১১:০৭
রাজীব নুর বলেছেন: এই প্রশ্নের উত্তর সুরভি ভালো দিতে পারবে।
আমার একটাই বাজে অভ্যাস সিগারেট খাওয়া। এ ছেড়ে দিলে আমার কোনো বাজে অভ্যাস থাকবে না। তাহলে তো আমি ফেরেশতা হয়ে যাবো!!!
নায়াগ্রা হলো পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর জায়গা।
ক্যাসিনো গেলে সব সময় অল্প টাকা সাথে করে নিয়ে যাবেন। নইলে পকেটে যা আছে খেলতে খলতে সব যাবে।
©somewhere in net ltd.
১| ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২২ দুপুর ২:০২
স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন:
পুরোপুরি কর্পোরেট ড্রেসে ফুল হাতে দাঁড়িয়ে থাকতে ইতস্ততবোধ করছি । তারপরে লাগামহীন বৃষ্টি। অফিস থেকে আগে বের হয়েও আটকে গেলাম। ঠাঁই নিয়েছি ফুটওভার ব্রীজের ছাউনিতে। অন্য সময় এই বৃষ্টি উপভোগ্য ছিল। আজ বরং বিরক্ত লাগছে। কখন বৃষ্টি থামবে সে আশায় ঠাঁই দাঁড়িয়ে আছি। বৃষ্টি থামার কোন নাম নেই। একটু হেঁটে যে এগুবো, প্যাঁচপ্যাচে কাদা ছিটকে পড়বে প্যান্টে। আগে এই প্যাঁচপ্যাচে কাদায় দাপিয়ে বেড়িয়েছি। তখন ছিটকে গায়ে কাদা লাগার কোন ভয় ছিলো না। বৃষ্টির দিন গুনতাম আর এখন কখন যে বৃষ্টি আসে আর বৃষ্টি যায় টেরই পাইনা। আচ্ছা ঢাকা শহর কি বড় বেশি যান্ত্রিক হয়ে গেছে? এই যে রিয়েল এস্টেট কোম্পানি গুলো বড় বড় দালান তুলছে তাদের কি কখনো হা করে বৃষ্টির ফোঁটা মুখে নেয়ার কথা মনে পড়ে। কিংবা যারা ঐ বড় বড় দালানের বাসিন্দারা, তাদের বুক শেলফে কি গীতবিতান শোভা পায় ? কংক্রিটের দালান কোঠায় বৃষ্টি ঝরে পড়লেও মাটির গন্ধ পাওয়া যায় না। রিয়েল এস্টেট তো কখনো মেঘমল্লার শোনে না।
বৃষ্টির গতি বাড়ছে। সেই সাথে মেঘের গান। অদ্ভুত তো ! হঠাৎ করে মেঘের গর্জনকে মেঘের গান মনে হচ্ছে কেন? আচ্ছা ফুল হাতে রাস্তায় নেমে পড়লে কেমন হয়? প্যান্ট শার্ট কি নষ্ট হয়ে যাবে?
বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে ফুল হাতে হেঁটে যাচ্ছি। এই ব্যস্ত শহরে কেউ কারো দিকে তাকায় না। তবুও মনে হচ্ছে অনেকেই তাকিয়ে আছে।
সামনের ছাউনিতে আমার মানবী দাঁড়িয়ে আছে। আমি শুধু তাকে গিয়ে বলবো, ভিজবা?
আপনার লেখা পড়ে মনটা আনচান করছে ব্রাদার।