নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।
আজকের সন্ধ্যাটা এত সুন্দর কেন?
রাস্তায় বের হয়েই কেমন অন্য রকম লাগছে। মেস বাড়ি থেকে বের হতেই এক রিকশাচালক কাছে এসে থামলো। আমি রিকশায় উঠে বসলাম। অথচ আমার কোথাও যাওয়ার নেই। পকেটে মাত্র একশ' টাকা আছে। রিকশাচালক বলল, স্যার কোথায় যাবেন? আমি বললাম, একশ' টাকা দিয়ে যতটকু যাওয়া যায়, ততটুকু নিয়ে যাও। রিকশাচালক আমাকে পনের মিনিট পর অন্ধকার একটা রাস্তায় নামিয়ে দিলো। আমিও নেমে গেলাম। রিকশাচালককে কিছু বললাম না। সে আমায় ঠকিয়েছে। আমার ধারনা ছিলো সে কমপক্ষে আমাকে আধাঘণ্টা রিকশায় নিয়ে ঘুরবে। যাইহোক এটা কোনো বিষয় না। আমাকে রাত আট টায় যেতে হবে হাসপাতালে। ছোট চাচা অসুস্থ। খবর পাঠিয়েছেন। এরপর রাত দশটায় যেতে হবে কমলাপুর রেলস্টেশন। মেজো মামা খুলনা থেকে ঢাকা আসছেন। তিনি কেন আসছেন আমি জানি না। আত্মীয়স্বজন থাকলেও জ্বালা। না থাকলে জ্বালা।
একলোক রাস্তায় দাড়িয়ে বেলপুরি বিক্রি করছে।
চ্যাপ্টা পুরির উপর ঘুমনি দিচ্ছে। সাথে পেঁয়াজ মরিচের কুচি। তারপর শশা কুচি। শেষ না। আরো আছে। টক দিচ্ছে। শুকনো মরিচের গুড়ো ঘুমনির উপরে দিয়ে দিচ্ছি। লোকজন বেশ আগ্রহ নিয়ে খাচ্ছে। কেউ কেউ পার্সেল নিয়ে যাচ্ছে। চার পিছ বিশ টাকা। বেলপুরির পাশেই বিক্রি হচ্ছে- ঝাল মুড়ি। লোকজন ভিড় করে খাচ্ছে। এই ঝালমুড়িতে আলুর দমও দেওয়া হচ্ছে। ডিম দেওয়া হচ্ছে। এক ধরনের বিশেষ ঝোল দেওয়া হচ্ছে। লোকজন বেশ আগ্রহ নিয়ে খাচ্ছে। ঝালমুড়িওলার পাশে আছে হালিম বিক্রিতা। লোকজন রাস্তায় দাঁড়িয়ে কি সুন্দর হালিম খাচ্ছে। ছোট এক বাটি ৬০ টাকা। জমজমাট অবস্থা। একলোক বিক্রি করছে শরবত। চিনি ছাড়া শরবত। শুধু লেবু আর বিট লবন। খাবেন? আমি বললাম, আমার কাছে টাকা নেই। লোকতা বলল টাকা লাগিবে না। এমনিই খান। ফ্রি। আমি ফ্রি শরবত খেলাম। খারাপ না। চলে। শরবত বিক্রেতার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে হাঁটা শুরু করলাম।
বদ রিকশাওলা আমাকে নামিয়ে দিয়েছে সেগুন বাগিচা।
এখন আমাকে হেঁটে হেটে পান্থপথ যেতে হবে, গ্রীন লাইট হাসপাতালে। কিন্তু আমার এখন একটুও হাঁটতে ইচ্ছা করছে না। পাঠাও বা উবারে করে যে যাবো সেই উপায় নেই। পকেট ফাঁকা। এমন সময় একটা গাড়ি আমার সামনে এসে থামালো। গাড়ি চালাচ্ছে একটা মেয়ে। মেয়েটা সুন্দর। বলল, পান্থপথ কোন দিক দিয়ে গেলে ভালো হবে? আমি মেয়েটাকে বললাম, আমি পান্থপথ যাচ্ছি। মেয়েটা বলল, উঠে বসুন। আমি মেয়েটার পাশে বসে পড়লাম। আসলেই মন থেকে কিছু চাইলে পাওয়া যায়। আল্লাহ মানুষের মনের সৎ ইচ্ছা গুলো কোনো না কোনো ভাবে পূরন করে দেন। এই জন্যই আল্লাহপাক পবিত্র গ্রন্থে বলেছেন, আমার কোন কোন নিয়ামতকে অস্বীকার করবে? না অস্বিকার করি না। কেন অস্বীকার করবো? আমাদের জীবন সহজ ও সুন্দর করে দেওয়ার জন্য- আল্লাহ প্রেরিত পুরুষদের পাঠিয়েছেন। আল্লাহর রাসূল আর আমাদের প্রিয় নবীজি দুনিয়াতে না এলে আল্লাহ্ এই দুনিয়াই সৃষ্টি করতেন না।
ছোট চাচার অবস্থা খুব খারাপ।
ডাক্তার বলে দিয়েছেন- এখন তাদের হাতে কিছু নাই। সব আল্লাহর হাতে। আমি চাচার পাশে বসলাম। চাচা আমার একটা হাত ধরলেন। চাচার সারা শরীরে নানান রকম যন্ত্রপাতি লাগানো। আমার এই চাচা বিরাট বদ। সারাটা জীবন শুধু মামলা মকদ্দমা করেছেন। গ্রামের দরিদ্র ও অসহায় পরিবারকে গ্রাম ছাড়া করছেন। তাদের জমি দখল করে নিয়েছেন। এত এত জমি দিয়ে তিনি এখন কি করবেন? এখন তো মরতে বসেছেন। চাচা আমাকে থেমে থেমে বললেন, আমার কোনো সন্তান নেই। আমার সমস্ত জমি ও বিষয়আষয় আমি তোমার নামে লিখে দিয়েছি। যার বর্তমান বাজারদর দেড় কোটি টাকা তো হবেই। আমি বললাম, চাচা আমার কিছু লাগবে না। আমি বেশ ভালো আছি। চাচা বললেন, আমি জানতাম তুমি এই কথাই বলবে। যাইহোক, তুমি আর মেসে থেকো না। ঢাকার ধানমন্ডিতে আমার একটা ফ্লাট আছে। তুমি সেখানে থাকো। একটা বিয়ে করো। আমি ফিরে আসার সময় চাচা বললেন, বাবা শাহেদ আমি মানুষ খারাপ। অনেক পাপ করেছি জীবনে। কিন্তু আমি তোমাকে অত্যাধিক স্নেহ করি। ভালোবাসি। এটা সত্যি।
গ্রীন লাইট হাসপাতাল থেকে বের হলাম।
এখন যেতে হবে কমলাপুর। মামা আসছেন। সমস্যা নেই। এখন আমার পকেট ভরতি টাকা। চাচা জোর করে পকেটে অনেক গুলো টাকা গুজে দিয়েছেন। রাস্তায় জ্যাম থাকার কারনে কমলাপুর গিয়ে পৌছালাম সাড়ে দশটায়। সব সময় ট্রেন লেট করে আজ আমি আমি লেট করেছি। মামা দাঁড়িয়ে আছেন। মামার শরীর অনেক রুগ্ন হয়ে গেছে। মামা আমাকে দেখে বললেন, কই আমাকে তো কদমবুসি করলি না। শহরে থেকে থেকে থেকে আদব লেহাজ সব ভুলে গেলি! আমি মামাকে কদমবুসি করলাম। মামা বললেন, গতকাল রাতে তোকে স্বপ্নে দেখলাম। তাই সকালে ঘুম থেকে উঠেই ট্রেনে চেপে বসলাম। যাই ভাগ্নে কে দেখে আসি। তোর মামি বলল, দুটা দিন পড়ে যেতে। মেয়েছেলের বুদ্ধি কাঁচা হয়। মেয়েছেলের কথা মতো চললে সর্বনাশ। ভাগ্নে বউ এর কোথায় চলবি না। আমি বললাম, মামা চলেন। নিশ্চয়ই আপনি অনেক ক্লান্ত। মেসে এসে মামা বললেন, তোর মেসে থাকাটা আমার পছন্দ না। আমি আমি এসেছি, সাথে করে তোকে নিয়ে যাবো। বিয়ে দেবো। তোর জন্য নতুন ঘর তুলেছি। মেয়েও দেখে রেখেছি। মেয়ের নাম জিনাত।
মামা গোছল করলেন। ক্বাযা নামাজ পড়লেন।
তারপর খেয়ে ঘুম দিলেন। আমি ব্যলকনিতে এসে সিগারেট ধরালাম। লতা নামের মেয়েটাকে খুঁজে বের করতে হবে। যার নাম আমি দিয়েছিলাম বনজ্যোস্না। দেবপযানি খালে যাকে চুমু খেয়েছিলাম। লতাকে খুঁজে বের করেই বা কি হবে? আমার তো নীলা আছে। অনেকদিন নীলার সাথে দেখা হয় না। আগামীকাল যাবো নীলাদের বাসায়। কিন্তু নীলার বাপ কবি নজরুল কলেজের অবসর প্রাপ্ত শিক্ষক আব্দুল জলিল সারাদিন বাসায় থাকেন। এই শালা আমার দিকে বাঁকা চোখে তাকান। চিবিয়ে চিবিয়ে কথা বলেন। এতদিন পর নীলার সাথে দেখা হবে। একটু হাত ধরবো, খুব কাছাকাছি দাড়াবো। প্রেম ভালোবাসার কিছু কথা বলব, তা না। আব্দুল জলিল সাহেব এক মুহুর্তের জন্যও সামনে থেকে যাবেন না। তুই বুড়া মানুষ। দুপুরে খেয়ে লম্বা একটা ঘুম দে। একটানা সন্ধ্যা পর্যন্ত ঘুমা। একমাত্র আব্দুল জলিলের জন্যই নীলাদের বাসায় যেতে ইচ্ছা করে না। আকাশের অবস্থা ভালো না। বৃষ্টি হবে।
২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ১২:৪৯
রাজীব নুর বলেছেন: বাস্তব থেকেই ভাবনা আসে। ভাবনা থেকেই বাস্তব আসে।
২| ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ৮:২২
সোনাগাজী বলেছেন:
আপনার গ্রামের বাড়ীতে ঘর আছে।
২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ১২:৫০
রাজীব নুর বলেছেন: হ্যাঁ আছে।
৩| ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ৮:৩৫
কামাল১৮ বলেছেন: আল্লাহর খুব প্রিয় বন্ধু ছিলো মোহামদ।তার যাতে কোন অসুবিধা না হয় এই জন্য বিভিন্ন বয়সের মহিলাদের সাথে তার বিয়ে দেন আল্লাহ ।ছয় বছর থেকে বৃদ্ধা পর্যন্ত।এমন কি নিজের পালিত পুত্রের স্ত্রীর সাথেও আল্লাহ নিজে বিয়ের ব্যবস্থা করেন।
২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ১২:৫১
রাজীব নুর বলেছেন: আসলে সেই সময় মানুষের চিন্তা ভাবনা উন্নত ছিলো না।
৪| ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ সকাল ৯:৩৩
স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন:
হুমায়ুন আহমেদের ধারা থেকে বের হওয়া কঠিন। এর আগের গল্পটা বেশি ভালো ছিল।
২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ১২:৫৩
রাজীব নুর বলেছেন: আমি কোনোদিনও হুমায়ূন আহমেদ থেকে বের হবো না।
মূলত আমি লিখতে জানি না। হাতে সময় আছে, তাই হাবিজাবি কিছু লিখি। লিখতে চেষ্টা করি। আর সেই হাবিজাবি লেখা যখন আপনি/আপনারা পড়েন বড় ভালো লাগে।
৫| ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ১২:৩৮
শেরজা তপন বলেছেন: বদ রিকশাওলা আমাকে নামিয়ে দিয়েছে সেগুন বাগিচা।
~আপনি তো রিক্সা চালকে বলেননি আপনার গন্তব্য
অনেকে 'বেলপুরি' বললেও আমার ধারনা 'ভেলপুরি' শুদ্ধ শব্দ। উইকিতে আছে। আবার যেমন আপনি লিখেছেন 'ঘুমনি' এটা সম্ভবত 'ঘুঘনি' হবে তবে একেক যায়গায় একেক নামে ডাকে একে। কোনটা শুদ্ধ হবে সেটা বলা মুশকিল।
ডাক্তার বলে দিয়েছেন- এখন তাদের হাতে কিছু নাই। সব আল্লাহর হাতে।
এই অবস্থায় চাচা আপনার হাতে টাকা পয়সা গুজে দিচ্ছেন-আর জমি জমা লিখে দিচ্ছেন!! সারাজীবন ইতরামী করে মাত্র দেড় কোটি টাকার সম্পদ-কম হয়ে গেল না?
~ গল্পটা নিশ্চিত শাহেদ জামালের- আপনার নয়
এর আগে মনে হয় শাহেদ জামাল বলেছিল 'নীলার বাপ তারে খুব পছন্দ করে'- নাকি?
২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ১২:৫৮
রাজীব নুর বলেছেন: হ্যালো স্যার, কেমন আছেন?
না রিকশা চালককে আমি কিছুই বলিনি। সে তার মর্জিমাফিক সেগুবন বাগিচা নামিয়ে দিয়েছে।
খেয়াল করে দেখবেন, আমি আমার লেখা গুলোতে শুদ্ধ শব্দ নয় আঞ্চলিক শব্দ ব্যবহার করি। তবে উচ্চারন ভেলপুরি হবে। আমি বেলপুরি লেখার কারন হচ্ছে বিক্রেতা বেলপুরি বলেছিলো। ঘুমনি/ ঘুঘনি- আসল শব্দটা কোনটা আমার জানা নেই।
যে রুগির মৃত্যু আসন্ন, বেঁচে থাকার কোনো উপায় থাকে না। তখন ডাক্তার বলেন- এখন তাদের হাতে কিছু নাই। সব আল্লাহর হাতে।
যখন কেউ শেষ বয়সে পৌঁছে যায়। তখন সে অসুস্থ হলেই তার বিষয় সম্পত্তি কাছের মানুষদের বিলি করে দেয়। এই গল্প আমার নয়। আমার বন্ধু সাহেদ জামালের।
২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ১২:৫৮
রাজীব নুর বলেছেন: লেখাটা আপনি মন দিয়ে পড়েছেন। এজন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
৬| ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ বিকাল ৩:১৮
শেরজা তপন বলেছেন: আজ কর্মক্ষেত্রে যাওয়া হয়নি বিশেষ কারণে বাসায় বসে কাজ শেষ করছি। বাচ্চারা গিয়েছে স্কুলের পিকনিকে- সেই জন্যই সবগুলো লেখায় বেশ মন দিয়ে পড়তে পারছি হাঃ হাঃ
ঘুঘনিই হবে বলে জানলাম
২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ বিকাল ৩:৩৬
রাজীব নুর বলেছেন: মানুষের কেন একজন ঈশ্বরের প্রয়োজন হল?
©somewhere in net ltd.
১| ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:০৬
মুহামমদ মিনহাজ বলেছেন: বৃষ্টি তো অলরেডি হচ্ছে, একজন অর্থ-সম্পদ, ফ্ল্যাট দিচ্ছে আরেকজন ঘর তুলে দিয়েছেন বিয়ের জন্য মেয়ে ঠিক করে দিয়েছেন আর কতো বৃষ্টি লাগবে।
আসলে ভাবনার জগতটা কত উদার হয় !