নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।
সেইসব ঘটনা আজ মনে পড়লে বুকের ভেতরটা কেঁপে ওঠে।
মাঝে মাঝে ঘুমের মধ্যে সেই করুণ কঠিন সময় গুলো স্বপ্নে আসে। আমি ঘুমের মধ্যেই কেঁপে উঠি। ঘেমে যাই। যাইহোক, ভনিতা না করে আসল কথায় আসি। একবার অফিসের কাছে গোপালগঞ্জ গিয়েছিলাম। জায়গাটার নাম সম্ভবত কাশিয়ানী। রাতে ভাড়িয়াপাড়া খেতে গিয়েছিলাম। খাওয়া শেষ করে হেঁটে হেঁটেই ফিরছিলাম। তখন রাত আনুমানিক ১২ টা হবে। অন্ধকার রাস্তা। ভাবলাম গ্রামের ভিতরের পথে দিয়ে ফিরি, তাহলে সময় কম লাগবে।
গ্রামের নাম ছিলো পোনা গ্রাম।
পোনা গ্রামের পথে ধরে হেটে যাচ্ছিলাম। হঠাত ১৫/২০ জন লোক আমার পথে আটকে দাঁড়ালো। তাঁরা আমাকে ঝাপটে ধরলো। বলল- তুই ডাকাত। তোর সাথে আরো লোকজন আছে। বলেই তাঁরা আমাকে মারতে শুরু করলো। আমাকে কোনো কথা বলার সুযোগ দিলো না। যে যেভাবে পারে মারছে। সমানে মেরে যাচ্ছে। কেউ হাত দিয়ে মারছে, কেউ বাশ দিয়ে মারছে, কেউ লাকড়ি দিয়ে মারছে। টানা দশ মিনিট আমাকে মারলো। আমার জামা কাপড় ছিড়ে গেছে। শরীরের নানা জায়গা দিয়ে রক্ত পড়ছে। পুরো গ্রামের মানুষ এসে হাজির হয়েছে। তাঁরা ডাকাত দেখতে এসেছে।
শেষে পুলিশ এলো। আমাকে উদ্ধার করলো।
পুলিশ টেনে হিচড়ে আমাকে থানায় নিয়ে গেলো। মনে মনে ভাবলাম থাক মৃত্যু তো আর হয় নাই। বড় বাঁচা বেঁচে গেছি। পুলিশ আর দশ মিনিট দেরী করলে আমার মৃত্যু হয়ে যেতো। আমাকে থানায় নিয়ে যাওয়ার পর আরেক কাহিনী। পুলিশ আমার প্রাথমিক চিকিৎসা করালো না। সোজা আমাকে লকাপে ঢুকিয়ে দিলো। আমি বারবার করে বললাম, প্লীজ আমাকে প্রাথমিক চিকিৎসা করান। শরীরের নানান জায়গা কেটে ছিড়ে গেছে। পুলিশ আমার কোনো কথা শুনলো না। গলা শুকিয়ে কাঠ। আশে পাশে কাউকে দেখছি না। কার কাছে পানি চাইবো? তবুও পানি পানি করে চিৎকার দিলাম। কেউ পানি দিলো না। সবচেয়ে দুঃখের কথা লকাপে ভীষন বাজে গন্ধ। পাশেই টয়লেট। মশার অভাব নেই। যাইহোক, সকালে ছাড়া পেয়ে যাই। ওসি সাহেব জোর করে নাস্তা খাইয়ে দিলেন।
আরেকটা ঘটনা বলি-
অফিসের কাছে নেত্রকোনা গিয়েছি। কাজ শেষ করতে করতে অনেক রাত হয়ে গেছে। আমি উঠেছি ডাক বাংলোয়। ডাক বাংলোটা ঠিক ইন্ডিয়ার বর্ডারের কাছে। রাতে বাজারের কাছে এক হোটেলে থেকে ডিনার খেয়ে নিলাম। একজন আমাকে বাইকে করে ডাক বাংলোয় পৌঁছে দেবে। অন্ধকার রাস্তা। বাইক চলছে। প্রচন্ড শীত। কুয়াশায় কিছুই দেখা যায় না। বাইকে লাইটের আলোতে মাঝে মাঝে দুই একটা শেয়াল দেখা যাচ্ছে। শীতে আমি কাঁপছি। আল্লাহ্ আল্লাহ করছি মনে মনে। আশেপাশে কোনো বাড়ি ঘর দেখা যাচ্ছে না। শহরের মতো ল্যাম্পপোস্ট থাকে না গ্রামে।
মাঝ রাস্তায় হঠাত বাইক নষ্ট হয়ে গেলো।
বাইকের মালিক আমাকে বলল, দশ মিনিট সোজা হেঁটে গেলেই আপনার ডাক বাংলো পেয়ে যাবেন। আমি বাইক টেনে টেনে নিয়ে যাচ্ছি। অন্ধকার রাস্তায় আমি এলোমেলো হাঁটছি। আমার প্রচন্ড ভয় করছে। তাছাড়া আমি সাহসী মানুষ নই। যাইহোক, বাইক চালক বলেছিলো দশ মিনিট হাঁটলেই আমি ডাক বাংলো পেয়ে যাবো। আমি আধা ঘণ্টা হেঁটেছি। কিন্তু ডাকবাংলো খুঁজে পেলাম না। সম্ভবত আমি ভুল পথে চলে এসছি। শেয়াল ডাকছে। কুকুর ডাকছে। আমার খুব ভয় করছে। আমি জানি না আমার কপালে কি আছে।
হঠাত দূরে সামান্য আলো দেখতে পেলাম।
আলোটা আমার দিকেই আসছে। আলোটা কাছে আসার পর দেখলাম- একটা ভ্যান গাড়ি। ভ্যান গাড়ির নিচে একটা হারিকেন জ্বলছে। ভ্যান গাড়িতে তিনজন লোক। এবং একজন মেয়ে। আমি তাদের আমার পরিচয় দিয়ে বললাম, আমাকে ডাক বাংলোয় নামিয়ে দিন প্লীজ। তাঁরা বলল ভ্যানে উঠে বসুন আপনাকে ডাক বাংলায় নামিয়ে দেবো। আমি ভ্যানে উঠে বসলাম। ভ্যান কিছু দূর যাওয়ার পর হঠাত থেমে গেলো। তিনজন লোক আমাকে ঝাপটে ধরলো। বলল, কোনো কথা বলবি না। সাথে যা যা আছে সব দিয়ে দে। আমি বুঝলাম ডাকাতের হাতে পড়েছি।
আমি মরতে চাই না। আমার সাথে যা যা ছিলো আমি সব দিয়ে দিলাম।
ওরা চলে যাচ্ছিলো। কিন্তু আবার ফিরে এলো। বলল, তুই আমাদের চিনে ফেলেছিস। থানায় গিয়ে নিশ্চয়ই সব বলে দিবি। আমি বললাম, আমি কিছু বলব না। আল্লাহর কসম আমি কিছু বলব না। ওরা আমার কথা বিশ্বাস করলো না। আমাকে মারতে শুরু করলো। যে যেভাবে পারে মারছে। ভাগ্যিস কেউ আমার পেটে ছুরি চালায় নি, রাম দা দিয়ে কোপ দেয়নি। যাইহোক, ওদের হাতে মার খেতে খেতে আমি জ্ঞান হারালাম। সকালে আমাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভরতি করা হয়।
১৩ ই মার্চ, ২০২৩ সকাল ১১:৩৪
রাজীব নুর বলেছেন: হা হা হা---
এটা আমার কাহিনী।
২| ১৩ ই মার্চ, ২০২৩ সকাল ৯:৫৫
কামাল১৮ বলেছেন: সমবেদনা জানানো ছাড়া কোনকিছুই করার নাই।বাকী জীবনে সাবধানে চলাচল করবেন।
১৩ ই মার্চ, ২০২৩ সকাল ১১:৩৫
রাজীব নুর বলেছেন: আমি তো মনে করি, বিপদ আসবে না। আসবে না। কিন্তু তারপরও আমার মতোন শান্তি প্রিয় মানুষের উপর বিনা কারনে ঝড় তুফান চলে আসে।
©somewhere in net ltd.
১| ১৩ ই মার্চ, ২০২৩ সকাল ৯:১৩
স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন:
আপনি না শাহেদ জামালের কাহিনী ?