নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

রাজীব নুর

আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।

রাজীব নুর › বিস্তারিত পোস্টঃ

চিকু

০৬ ই এপ্রিল, ২০২৩ বিকাল ৩:২৪



এই পুতুলটা ভালো করে দেখুন।
এই পুতুলটার মাঝে মাঝে জীবন্ত হয়ে যায়। নিশ্চয়ই ভাবছেন আমি হস্যকর কথা বলছি। পুতুলটা আমার কন্যার। কন্যাকে নিয়ে একদিন সন্ধ্যায় হাঁটতে বের হয়েছি। রাস্তার পাশেই একটা দোকান। সেই দোকানে বাচ্চাদের নানান রকম খেলনা পাওয়া যায়। আমার কন্যা এই পুতুলটা পছন্দ করে। পুতুলটা ৫৫০ টাকা দিয়ে কিনি। ভ্যাট আলেদা। ছোট পুতুল। আমার কন্যা পুতুলটার নাম রাখে চিকু। তার সব গুলো পুতুলের একটা করে নাম আছে। নাম গুলো আমার কন্যা নিজেই রেখেছে। আমার কন্যার বয়স এখনও আড়াই বছর হয়নি।

কন্যা যেখানে যায় চিকু কে সাথে করে নিয়ে যায়।
সেদিন কন্যাকে নিয়ে ডাক্তারের কাছে যাচ্ছি। সে চিকু ছাড়া ডাক্তারেরে কাছে যাবে না। রাতে চিকু কে তার বালিশের পাশে রেখে ঘুমাবে। দিনের বেলা সে চিকু কে খাওয়ায়, গোছল করায়, লোসন মেখে দেয়। পটি করায়। মানে তাকে যেভাবে লালন পালন করা হয় সে চিকুকে সেভাবেই দেখভাল করে। বাচ্চারা এরকম খেলা খেলে এটা স্বাভাবিক। বাচ্চাদের খেলা দেখা একটা দারুন ব্যাপার। বড় আনন্দ হয় মনে। নিজের ছোটবেলার কথা মনে পড়ে যায়। প্রতিটা বাচ্চার শিশু কালটা সুন্দর হওয়া দরকার। প্রতিটা বাবা মায়ের উচিৎ খেয়াল রাখা- তার বাচ্চাটা যেন এক আকাশ আনন্দ নিয়ে হেসে খেলে বড় হয়।

একদিন রাতে আমি বসার ঘরে বসে ল্যাপটপে কাজ করছি।
রাত তখন দুটা। কন্যা এবং কন্যার মা গভীর ঘুমে। চিকু আমার পাশে। কিন্তু আমার স্পষ্ট মনে আছে আমার কন্যা ঘুমানোর সময় তাকে নিজের কাছে রেখেছিলো। এখন চিকু আমার কাছে এলো কি করে? সবচেয়ে বড় কথা চিকু আমার দিকে তাকিয়ে আছে। হঠাত আমি খুব ভয় পেলাম। আমি চিকুর মাথাটা অন্যদিকে ঘুরিয়ে দিলাম। নিজের অজান্তেই আমার মাঝে মাঝে চিকু কে জীবন্ত বলে মনে হয়। প্রচন্ড ভয় লাগে। অথচ ভয় লাগার কোনো কারন নেই। দুনিয়া চলে লজিকে। নিজেকে নিজে বুঝাই ভয় পাওয়ার কিচ্ছু নেই।

যাইহোক, আবার ল্যাপটপে মন দিলাম।
একটু পর দেখি পুতুলটার মাথা আমার দিকে ঘুরানো। একটা পুতুলের মাথা নিশ্চয়ই একাএকা ঘুরে যেতে পারে না। আমি ভয় পেয়ে বিছানায় চলে এলাম। এবং একসময় ঘুমিয়ে গেলাম। সকালে ঘুম থেকে ঊঠে দেখি পুতুলটা কন্যার পাশে। ঐ ঘর থেকে পুতুলটা কিভাবে কন্যার পাশে চলে এলো? আমি একজন আধুনিক মানুষ। কোনো প্রকার কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। কোনো সমস্যা হলে আমি ঘটনার ব্যাখ্যা নিজেই খুঁজে বের করি। অথচ চিকুর ঘটনার ব্যাখা আমি খুঁজে বের করতে পারছি না। ভুলভাল বিশ্বাস করা আমার পক্ষে সম্ভব না।

গতকাল রাতের কথা। একটা বই পড়ছি।
চোখে কোনো ঘুম নেই। আমার স্ত্রী ও কন্যা গভীর ঘুমে। কন্যার পাশে তার পুতুলটা নেই। আজ কন্যা চিকুকে পাশে নিয়ে ঘুমাতে ভুলে গেছে। আমি চিকুকে ড্রয়ারে রেখে দিয়েছি। রাত তিনটা। আমি এখন ঘুমাবো। ঘুমের আগে এক গ্লাস পানি খাবো। জগ থেকে পানি নিলাম। পানি খেলাম। বিছানায় এলাম। আমার ঘুমন্ত কন্যার কপালে একটা চুমু দিলাম। ফজরের আযানের পর হঠাত ঘুমটা ভেঙ্গে গেলো। হঠাত মনে হলো চিকুর কথা। দেখি, চিকু আমার আর কন্যার মাঝখানে শুয়ে আছে। অথচ আমার স্পষ্ট আছে মনে চিকুকে আমি আলমারিতে তিন নম্বর ড্রয়ারে রেখেছিলাম।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.