নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।
মুভির নাম- Waltair Veerayya
মুভির প্রথম দৃশ্যটা আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে। এজন্যই পুরো মুভিটা দেখেছি। দৃশ্যটা এইরকমঃ আকাশ ভরে মেঘ জমেছে। চারিদিক কালো হয়ে এসেছে। অনেক বাতাস দিচ্ছে। পাহাড়ি এলাকা। এক ৫/৬ বছরের বাচ্চা একটা পাথরের উপর বসে মোবাইলে গেমস খেলছে। বাচ্চাটা মূলত রাখাল বালক। সে তার ছাগলকে ঘাস খাওয়াতে এনেছে। এদিকে যে আকাশ ভরা মেঘ জমেছে। যেকোনো সময় ঝুমঝুম বৃষ্টি নামবে সেদিকে বালকের খেয়াল নেই। এমন সময় বাচ্চাটা আকাশে একটা বিমান দেখে। বিমানটা বিকট শব্দ করছে। দেখতে দেখতে বিমানের পাখায় আগুন ধরে যায়। বিমানটি পাইলটের নিয়ন্ত্রনের বাইরে চলে যায়। বিমানটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পাহাড়ের গায়ে এসে পড়ে। বাচ্চা ছেলেটি সময় মতো সরে যেতে পেরেছিলো বলে বেঁচে গেলো।
পরের দৃশ্যে দেখা গেলো-
বিমান থেকে চারজন লোক নামে। এরা সরকারের গোয়েন্দা বিভাগের লোক। তাঁরা একজন ইন্টারন্যাশনাল আসামীকে নিয়ে শহরে যাচ্ছিলো। আসামীর মুখ কালো কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছে। গোয়েন্দারা মোবাইলের মাধ্যমে হেড অফিসে যোগাযোগ করে। এবং জানায় প্লেন দূর্ঘটনার কথা। হেড অফিস থেকে তাদের জানানো হয়- আপাতত আসামীকে নিকটস্থ থানায় রাখার জন্য। সকালে অনেক লোক এসে আসামীকে নিয়ে যাবে। গোয়েন্দারা বাচ্চাটিকে জিজ্ঞেস করে আশেপাশে থানা আছে কিনা? থাকলে কতদূর। যাইহোক, আসামীকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। এখনও আসামীর মুখ থেকে কালো কাপড় সরানো হয়নি। এই আসামী বিশ্বের অনেক দেশে ড্রাগ সাপ্লাই করে। আসামির আরেক বড় ভাই আছে। সে আরো ডেঞ্জারাস।
তৃতীয় দৃশ্যটা এরকমঃ
থানায় উৎসব চলছে। কেক কাটা হবে। আজ একজন এই থানা থেকে অবসরে যাচ্ছে। যাকে অবসর দেওয়া হয়েছে, সে এই থানায় ত্রিশ বছর সার্ভিস দিয়েছে। উৎসবের মাঝখানে গোয়েন্দারা এসে উপস্থিত হয়। তাদের পরিচয় দেয়। আসামীকে লকাপে রাখা হয়। এমন সময় থানার ওসির মোবাইলে ফোন আসে। তার স্ত্রী সিড়ি থেকে পড়ে ব্যথা পেয়েছে। এখনই হাসপাতালে নিতে হবে। ওসি তার বন্ধুকে বলে আজ রাতটা তুমি সামাল দাও। আমি সকালে এসে যাবো। তখন বন্ধু বলে, ত্রিশ বছর তোমার সাথে কাজ করেছি। আর একটা রাত কাজ করতে সমস্যা কি? যাও বন্ধু, তুমি যাও। আমি সামাল দিচ্ছি। ওসি চলে যায়। তারপর ইন্টারন্যাশনাল আসামীকে ছাড়িয়ে নিতে থানায় হামলা করা হয়। থানায় থাকা সমস্ত পুলিশদের হত্যা করে আসামীকে নিয়ে যাওয়া হয়। এবং যে ব্যাক্তি অবসর পেয়েছিলো তাকে ফাঁসি দেওয়া হয়। সকালে থানায় এসে ওসি এরকম অবস্থা দেখে খুব কান্না করে।
মুভির পরিচালক ববি কল্লি।
পরিচালক নিজেই মুভিটা লিখেছেন। মুভিটা চলতি বছরের জানুয়ারীতে মুক্তি পায়। মুভিটি তৈরি করতে ১৪০ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। আয় করেছে- ২৩৬ কোটি টাকা। মুভিতে রবি তেজা আর চিরঞ্জীব দুই ভাই থাকে। রবি তেজা পুলিশ অফিসার। আর চিরঞ্জীব সমুদ্রে মাছ ধরে। এই মুভিতে বাংলাদেশ এর নাম এসেছে। কিন্তু নামটা খারাপ অর্থে ব্যবহার করা হয়েছে যা আমার মোটেই ভালো লাগেনি। এক দৃশ্যে বলা হয় সমুদ্রে পথে বাংলাদেশ থেকে মাদক আসবে। বাংলাদেশ খুবই ছোট একটা দেশ। বাংলাদেশ মাদক তৈরি করে না। বরং অন্যান্য দেশ থেকে বাংলাদেশে মাদক আসে। আমার ধারনা ডাবিং করার সময় বাংলাদেশ নামটা ঢুকিয়ে দিয়েছে। যাইহোক, মুভিতে রবি তেজা মারা যায়। তারপর তার স্ত্রী একমাত্র কন্যাকে নিয়ে মালোশিয়া চলে যায়। মুভির অনেক দৃশ্য চমৎকার লেগেছে। রবি তেজা মৃত্যুর আগে বিড়ি খায়। এ দৃশ্যটা দারুন। অনেকদিন মনে থাকবে। এক কথায় বলতে গেলে রবি যতক্ষন স্ত্রিনে ছিলো- জাস্ট আগুন।
ভরপুর বিনোদনে ভরা মুভি।
মারামারি কাটাকাটি আছে। কমেডি আছে। প্রেম ভালোবাসা আছে। দূর্দান্ত একশন আছে। ছ্যাবলামি আছে। নাচ আছে। যে নাচ সাউথ ইন্ডিয়ান মুভি ছাড়া আর দেখা যায় না। এই মুভিতে বেশ কয়েকটা গান আছে। গানের সাথে নাচ আছে। এররকম নাচ সাউথ ইন্ডিয়ান মুভি গুলোতে থাকেই। এরকম নাচ বালাকৃষ্ণা কাকু নায়িকার সাথে অনেক নেচেছেন। নাচ গুলো আমি বেশ উপভোগ করেছি। বিশেষ করে রবি তেজা আর চিরঞ্জিতের একসাথে একটা নাচ আছে। যা আমাকে 'আরআরআর' মুভির কথা মনে করিয়ে দিয়েছে। আরেকটা গানে চিরঞ্জীত লুঙ্গি পড়ে এবং পায়ে থাকে কেডস। এই মুভিতে বেশ কিছু লজিকহীন দৃশ্য আছে। যা মুভিতে থাকেই নইলে পাবলিক কিভাবে হলে গিয়ে সিটি মারবে? সব মিলিয়ে একবার দেখার মতো এই তেলেগু মুভিটি। অনেক লম্বা মুভি। দুই ঘন্টা ৩৫ মিনিট। প্রথম অর্ধেকে রবি তেজাকে দেখা যাবে না। বিরতির পর রবি তেজাকে দেখা যায়। রবি তেজার একশন গুলো দারুন। উপভোগ্য।
©somewhere in net ltd.