নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।
ঢাকার বৈশাখী উৎসবের একটি আবশ্যিক অঙ্গ মঙ্গল শোভাযাত্রা।
এই শোভাযাত্রায় গ্রামীণ জীবণ এবং আবহমান বাংলাকে ফুটিয়ে তোলা হয়। শোভাযাত্রায় সকল শ্রেণী-পেশার বিভিন্ন বয়সের মানুষ অংশগ্রহণ করে। শোভাযাত্রার জন্য বানানো হয় রং-বেরঙের মুখোশ ও বিভিন্ন প্রাণীর প্রতিলিপি। যা অত্যন্ত মনোমুগ্ধকর। ১৯৮৯ সাল থেকে এই মঙ্গল শোভাযাত্রা পহেলা বৈশাখের উৎসবের একটি অন্যতম আকর্ষণ। শিশু, কিশোর-কিশোরী, তরুন-তরুনী, শিক্ষক, ছাত্রছাত্রী সব শ্রেনীর পেশার মানুষ হাসিমুখে অংশ গ্রহন করে। পৃথিবীর অনেক মুসলিম
দেশেই পহেলা বৈশাখে নাচ গান করে দিনটি পালন করা হয়।
তবে আমাদের দেশের মঙ্গল শোভাযাত্রা বেস্ট। এজন্য অনেক বিদেশী এই মঙ্গল শোভা যাত্রারায় অংশ গ্রহন করেন। বাংলা নববর্ষ তো সম্রাট আকবর প্রচলন করেন। সুতরাং এটা হিন্দুয়ানী বলে যা প্রচার করা হচ্ছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা! বাংলাদেশের মুসলমানরা আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে ভোগা জাতি। তারা আগে মুসলমান না আগে বাঙালি সেটা আজও বুঝে উঠতে পারে নি। একশ্রেণীর হুজুরদের যত রাগ পহেলা বৈশাখ নিয়ে। ইসলামের সাথে কোন জাতির সংস্কৃতিই সাংঘর্ষিক নয়। আর সংস্কৃতিকে টিকিয়ে রাখার জন্য আলাদা করে কিছু করার দরকার নেই। আমরা যা, তাই আমাদের সংস্কৃতি। অর্থাৎ, আমাদের কথাবার্তা, চলাফেরা, পোশাক ইত্যাদি কাজের ধরণ গুলোই আমাদের সংস্কৃতি। সুতরাং কোন উৎসব পালন না করলেও আমরা বাঙালিই থেকে যাব। ইসলাম যদি আসলেই কোন সংস্কৃতির সাথে সাংঘর্ষিক হত তবে, মুসলমান হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই একজন মানুষকে আরবী ভাষায় কথা বলতে হত, তাকে খেজুর, রুটি ইত্যাদি মরু অঞ্চলের খাবারে অভ্যস্থ হতে হত। তাই নয় কি?
পুরাতনকে বিদায় দিয়ে নতুনের স্বপ্ন রচনা করতে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বৈশাখী গান গেয়ে নতুন বাংলা বছরকে স্বাগত জানাই আমরা। মিষ্টি মুখ, পান্তা ইলিশ আর নতুন দেশি পোশাকে আমরা এই দিনটিতে একদিনের জন্য হলেও পুরো বাঙালি হয়ে যাই। পহেলা বৈশাখ বাঙালির সর্বসেরা উৎসবের দিন ৷ পুরাতনকে ভুলে নতুনকে আলিঙ্গন করার দিন ৷ এদিন গোটা বাঙালি আলোড়িত হয়। অথচ জুম্মার খুৎবায় হুজুরেরা কান্নাকাটি করেন, বাংলার মাটিতে বাংলা সালের পরিবর্তে হিজরী সাল প্রবর্তিত হোক। তারাই মূলত প্রধান বিরোধী। ধার্মিকদের মনে রাখা দরকার- যে অনুষ্ঠান বোমা হামলা রুখে দিতে পারেনি সেই অনুষ্ঠান কিভাবে বন্ধ করা সম্ভব হবে?
আমাদের ভাষা আন্দোলন এবং মুক্তিযুদ্ধ আমাদের কাছে বিশাল ব্যাপার।
আমরা প্রতিবছর ভাষা আন্দোল এবং মুক্তিযুদ্ধের শহীদের সম্মান প্রদর্শন করি। মনে রাখা দরকার- সংষ্কৃতি কোনো দিন স্থির থাকে না, সময়ের সাথে সাথে পরিবর্তন পরিবর্ধন বিয়োজন হতে থাকে। সংষ্কৃতি তখন ধ্বংস হয় যখন নতুন কিছুকে চেষ্টা না করেই অপসংস্কৃতি এর নাম দেওয়া হয়। আমাদের দেশে শুরু থেকেই এই উৎসব মৌলবাদি জঙ্গীদের কুনজরে পরে। ১৯৯৮ সালে পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠানে ভয়াবহ জঙ্গী হামলা হয়। এখন বাংলাদেশে ঈদ উৎসবের পর সবচেয়ে বড় উৎসব পহেলা বৈশাখ উদযাপন। বাংলাদেশের সাধারন মুসলমানেরা ধর্ম পালনের পাশাপাশি নিজের জাতিগত পরিচয়টাও ধরে রাখার চেষ্টা করে।
দেশ এগিয়ে যাচ্ছে।
যদিও উৎপাদনমুখী অর্থনীতি থেকে ধীরে ধীরে আমরা মুদ্রা নির্ভর অর্থনীতিতে নির্ভরশীল হয়ে পড়েছি। যার ভবিষ্যৎ ভাল না। হ্যাঁ দেশে এখন ১৮ কোটি মানুষ। হয়তো কেহ না খেয়ে থাকে না। একবার আমাদের দেশে দুর্ভিক্ষ হয়েছিলো, তখন দেশের জনসংখ্যা ছিলো মাত্র সাড়ে সাত কোটি। এখন ১৮ কোটি, অথচ দেশে কোনো খাদ্যের অভাব নেই। এখন কম জমিতে অধিক ফসল হচ্ছে, কিন্তু জমিতে যেই ধরণের সার ব্যবহার হচ্ছে, এসব জমি একদিন আর ব্যবহার করা যাবে না। দেশে না'খেয়ে কেহ নেই, কিন্তু খাবার যোগাড় করতেই ৫০ ভাগ মানুষের জীবন শেষ! আসলে, আফ্রিকার বেশীরভাগ মানুষ খাদ্য উৎপাদন না করেও বেঁচে আছে। তবে, তাদের জীবনটাকে মানুষের জীবন বলা কষ্টকর। কাজেই এসব বিষয় নিয়েও আমাদের ভাবা উচিত।
ইসলামে বাঙালি সংস্কৃতি উদযাপনের কোন বাধা নাই।
ইয়েস, কোনো বাঁধা নাই। বাঙালির প্রাচীন ঐতিহ্য মন্ডিত নববর্ষ/পহেলা বৈশাখ চিরঅম্লান হয়ে যুগ যুগ বাঙালির প্রজন্ম থেকে প্রজন্মের হৃদয়ে বেচেঁ থাকবে।
©somewhere in net ltd.