নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

রাজীব নুর

আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।

রাজীব নুর › বিস্তারিত পোস্টঃ

শৈশবের গল্প

১৪ ই মে, ২০২৩ বিকাল ৫:৩২

ছবিঃ আমার তোলা।

আপনার শৈশব, আমার শৈশব একেবারে মন্দ কাটেনি।
অন্তত আমরা খাদ্য পেয়েছি, আদর ভালোবাসা পেয়েছি। লেখাপড়া করার সুযোগ পেয়েছি। আমরা যারা আদর ভালোবাসা ও লেখাপড়া করতে পেরেছি, তাদের শৈশব জেনে আমাদের কি হবে? আমাদের জানতে হবে, যাদের শৈশব কেটেছে খেয়ে না খেয়ে। যারা লেখাপড়ার সুযোগ পায়নি আমাদের জানতে হবে তাদের শৈশব। এখন যাদের শৈশব ভালো যাচ্ছে না, তাদের জন্য আমাদের কিছু করতে হবে। যেন তাঁরা খেয়েপড়ে বেঁচে থাকতে পারে। যেন লেখাপড়ার সুযোগ পায়। তবেই না আমরা নিজেদের 'মানুষ' বলতে পারবো। শুধু নিজ পরিবার নয় আমাদের অন্য পরিবারের কথাও ভাবতে হবে। শুধু নিজে ভালো থাকলে হবে না। আমাদের সকলকে নিয়ে ভালো থাকতে হবে। আপনার শৈশব আনন্দময় ছিলো। ভালো কথা। কিন্তু যাদের শৈশব কেটেছে দরিদ্রতায় তাদের কথা কখনও ভেবেছেন?

আসুন আমরা কিছু মানুষের শৈশব জেনে নিই-
দুই ভাই ঈদের দিন না খেয়ে বসে আছে। তাদের মা'র মন ভীষন খারাপ। ঈদের দিন মা তার দুই ছেলের জন্য সেমাই রান্না করতে পারেন নি। পোলাও মাংস তো দূরের কথা। এই দুই ছেলের বাবা আরেকটা বিয়ে করেছে। বাবা তাঁর দুই সন্তানের খোঁজ নেয় না। স্ত্রীর খোজও নেয় না। দুপুরবেলা পাশের বাসার এক মহিলা বাচ্চা দুটাকে খাবার দিয়ে যায়। দুই ভাই ও মা সেই খাবার খায়। এই হচ্ছে এই বাচ্চা দুটার শৈশব। খেয়ে না খেয়ে অন্যের দেওয়া পুরান জামা পড়ে বাচ্চা দুটা বড় হচ্ছে। তাদের মা তাদের লেখাপড়া করাতে পারছে না। আপনি যখন আপনার বিলাসিতার শৈশবের কথা বলেন, তখন আপনার লজ্জা লাগে না? যাদের শৈশব ভালো যাচ্ছে না, তাদের জন্য আপনি কি করেছেন? তাদের কথা ভাবুন। তাদের জন্য কিছু করুণ।

আরেকটা শৈশবের গল্প বলি-
দুই ভাই তাঁরা। তাদের ঘরে টিভি নেই। কিন্তু বাচ্চা দুটা টিভি দেখতে ভীষন পছন্দ করে। দুই ভাই এক বাড়ির জানালার সামনে দাড়িয়ে থাকে। টিভি দেখার জন্য। জানালার ফাঁক দিয়ে দুই ভাই মন দিয়ে টিভি দেখে। প্রচুর মশা দুই ভাইকে কামড়ায়। মশার কামড় খেয়েও দুই ভাই টিভি দেখে। মাঝে মাঝে জানালা লাগিয়ে দেয়। দুই ভাই অনুরোধ করে জানালাটা খোলার জন্য, কিন্তু তাদের দয়া হয় না। বরং তাঁরা ধমক দেয়। বলে, জানালার সামনে দাড়াবি না। গায়ে পানি ঢেলে দিবো। অনেকবার তাঁরা পানি ঢেলেও দিয়েছে। কখনও কখনও জানালা খুলে দেয় টিভি দেখার জন্য কিন্তু তার বদলে তাদের দোকান থেকে আলু পেঁয়াজ এনে দিতে হতো। এই হচ্ছে দুটা বাচ্চার শৈশব। দুই ভাই না খেয়ে বসে থাকে। অপেক্ষা করে, কখন বাবা বাজার নিয়ে আসবেন।

এক বাচ্চা মেয়ে তার বাবার কাছে আবদার করে-
একটা পুতুল কিনে দেবার জন্য। দরিদ্র বাবা তার কন্যাকে পুতুল কিনে দিতে পারে না। কন্যা কাঁদতে কাঁদতে ঘুমিয়ে যায়। আরেক বাচ্চা মেয়ের শৈশবের কথা বলি- বাচ্চাটা ফল খেতে পছন্দ করে। কিন্তু তার বাবা মেয়েকে ফল খাওয়াতে পারে না। দরিদ্র বাবা ডাল-ভাত খাওয়াতেই হিমশিম খায়। ফল খাওয়াবে কি করে? সমাজে এত এত মহৎ মানুষ, ধনী মানুষ কিন্তু কেউ এসে এক ঝুড়ি ফল কিনে দেয় না এই বাচ্চা মেয়েটাকে। এরা কি মানুষ না? আপনি যখন আপনার বিলাসিতার শৈশবের গল্প বলেন, তখন আমার লজ্জা করে। যাদের শৈশব এখন দরিদ্রতায় ভরা তাদের জন্য আপনি কি করেছেন? কোনো দরিদ্র বাচ্চাকে কি স্কুলে ভরতি করিয়ে দিয়েছেন? তাদের লেখাপড়ার খরচ দিয়েছেন? অসুস্থ হলে চিকিৎসা করিয়েছেন? কাজেই ভাব কম নেই। চ্যাটাং চ্যাটাং কম করেন। কত দিন আর ভালো মানুষী মুখোশ পড়ে থাকবেন।

এক ছেলের শখ হয়েছে সে ইলিশ মাছ খাবে।
সে তার বাবাকে বলে বাবা ইলিশ মাছ খাবো। দরিদ্র বাবা ছেলেটাকে ইলিশ মাছ খাওয়াতে পারে নাই। তিন ভাই বোন। ঈদের দিন তাঁরা নতুন জামা পরতে পারে নাই। পোলাও কোরমা খেতে পারে নাই। সামান্য ঘুড়ি নাটাই কিনতে পারেনি। অন্যের ঘুড়ি ওড়ানো দেখেছে। নাটাই হাতে নিতে পারেনি। কত কিছু খেতে মন চায়, তাঁরা খেতে পারেনি। মন ভরে টিভিতে কার্টুন দেখতে পারেনি। ভালো স্কুলে পড়তে পারেনি। আপনি আছেন আপনার শৈশব নিয়ে। এদের শৈশবের কথা ভাবেন না কেন? আপনি কোনোদিন চেয়েছেন ওদের শৈশব ভালো হোক। ওরা ভালো খাক, ভালো পরুক, সাইকেল চালাক। আনন্দ নিয়ে বড় হোক। নিজের শৈশব তো পার করে ফেলেছেন। এখন যাদের শৈশব ভালো না। তাদের জন্য কিছু করুণ। মহৎ সাজবেন না। মহৎ হোণ।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.