নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

রাজীব নুর

আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।

রাজীব নুর › বিস্তারিত পোস্টঃ

চিলেকোঠা

০২ রা জুলাই, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:৩৫



বাড়িটার নাম মমতা মঞ্জিল।
তাজমহল রোডের এই চারতলা বাড়িটির চিলেকোঠায় আমি থাকি। চিলেকোঠা মানে ছাদে একটা রুম। সাথে বাথরুম আছে। একসময় আমি মেসে থাকতাম। কিন্তু মেসের জীবন আমার কাছে ভালো লাগে না। একবার রফিক ভাই এক মেয়ে নিয়ে এসে হাজির। আমাকে বলল, এক ঘন্টার জন্য তুমি বাইরে থেকে ঘুরে আসো। আমি আমার প্রেমিকার সাথে একান্তে কিছু সময় কাটাতে চাই। গত সপ্তাহে রফিক ভাই এক মেয়েকে নিয়ে এসেছিলো। বলেছিলো, তুমি চাইলে উপভোগ করতে পারো। সেই মেয়েটাও নাকি তার প্রেমিকা। আসলে প্রেমিকা টেমিকা কিছু না। ওদের ভাড়া করে নিয়ে আসতো। এরকম বিষয় গুলো আমার খুবই অপছন্দ। তাই সাহস করে মেছ ছেড়ে মমতা মঞ্জিলে এসে উঠি। একা থাকতেই আমার ভালো লাগে। এক টানা বই পড়া যায়। কেউ বিরক্ত করার নেই।

মমতা মঞ্জিলে বিরক্ত করার আমার কেউ নেই।
সবচেয়ে বড় কথা বিশাল একটা ছাদ পাওয়া গেছে। মধ্যরাতে আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকতে বড় ভালো লাগে। ঘরে বসেই বৃষ্টি দেখা যায়। জোছনা রাতে জোছনা উপভোগ করা যায়। এখন আমি একা। বাবা মা মারা গেছেন। টিউশনি করছি। চাকরীর অনেক চেষ্টা করেও পাইনি। টিউশনি করে যা পাই সেটা দিয়ে আমার বেশ ভালোই চলে যায়। আমার স্বাস্থ্য ভালো, কোনো অসুখ বিসুখ নেই। আমার গলার স্বর ভালো। ছাত্রছাত্রীর বাবা মা আমাকে পছন্দ করেন। আমি অংকে এবং ইংজিতে খুব ভালো। আমি পড়াই ভালো। ছাত্রছাত্রীরা আমাকে পছন্দ করে। আসলে আমি ছাত্রদের শিক্ষক হয়ে পড়াই না। ওদের বন্ধু হয়ে যাই। এতে সুবিধা হলো ওরা আমাকে ভয় পায় না এবং ওদের আমি খুব সহজেই বুঝে ফেলি। কাউকে শেখানোর মধ্যে আনন্দ আছে।

মমতা মঞ্জিল বাড়িটির মালিকের কন্যা প্রায়ই ছাদে আসে।
মেয়েটা সুন্দর। চালচলন সহজ সরল। মেয়েটার মুখ দেখলেই বুঝা যায় দুনিয়ার জটিলতা কুটিলতা সম্পর্কে সে কিছুই জানে না। মেয়েটার নাম রোমানা। মেয়েটা যখনই ছাদে আসে আমি ভয়ে ও সংকোচে থাকি। না জানি আমাকে এই চিলেকোঠা থেকে চলে যেতে হয় কোনো অপবাদ মাথায় নিয়ে। রোমানা এসে সুন্দর একটা হাসি দেয়। মেয়েটার হাসি সুন্দর। কারন মেয়েটার দাঁতের সেটিং সুন্দর। যার দাঁতের সেটিং সুন্দর তার হাসি সুন্দর। রোমানা বলে, প্রতিদিন আপনি একই রকম খাবার খেতে বিরক্ত লাগে না? আমি বলি- চাল ডাল আর সবজি একসাথে রান্না করে ফেলি। সময় কম লাগে আর খেতে খারাপ লাগে না। রোমানা বলে আজ আমাদের ইলিশ মাছ রান্না হয়েছে। নিয়ে আসবো আপনার জন্য? আমি বলি, মাছ টাস আমার ভালো লাগে না। অনেকদিন খাই নাতো অভ্যাস মরে গেছে।

গতকাল রোমানা এসেছিলো।
বলল, আমার কাছে দুটা মঞ্চ নাটকের টিকিট আছে। মহিলা সমিতিতে। আপনি যাবেন? আমি বললাম, মঞ্চ নাটক তো আমি দেখি না। রোমানা বলল, আপনি এত ম্যদামারা কেন? দুনিয়ার কোনো কিছুতেই আপনার উৎসাহ নেই! রোমানা বেশ রেগে গেছে। বলল, একটা মেয়ে প্রতিদিন কোনো না কোনো উছিলায় রোজ ছাদে কেন আসে বুঝেন না আপনি? কিসের এত অহংকার আপনার? অহংকার তো দেখাবো আমি। আমি বাবা মায়ের একমাত্র সন্তান। এই বাড়ির মালিক আমি। আমি বললাম, আপনি শান্ত হোন। এরকম করলে এই বাড়ি ছেড়ে আমাকে চলে যেতে হবে। রোমানা রাগে চোখ মুখ লাল হয়ে গেছে। এই ছেলের কি মন নেই? ভালোবাসা নেই? কোনো চাহিদা নেই? রোমানা যেতে যেতে বলল, আমি যাকে পছন্দ করবো আমার বাবা মা তার সাথেই বিয়ে দিবেন।

এই শহরে ব্যচেলরদের কেউ ঘর ভাড়া দেয় না।
মমতা মঞ্জিল যদি ছেড়ে যেতে হয় তাহলে আমি বেশ বিপদে পড়ে যাবো। এত সস্তায় আর ঘর পাবো না। অথচ রোমানা প্রতিদিন এসে হানা দিচ্ছে। আমি গরীব ঘরের ছেলে। খেয়ে না খেয়ে আমাকে বড় হতে হয়েছে। লেখাপড়া করতে হয়েছে। আমার বাবা অন্যের জমি চাষ করে আমাকে খাইয়েছে, বড় করেছে। মাঝে মাঝে আমি জমি চাষে বাবাকে হেল্প করেছি। লাঙ্গল চালিয়েছি। চিকিৎসার অভাবে বাবা মা মারা গেছেন। তখন আমার লেখাপড়া শেষ হয়নি। এখন আমি টিউশনি করে যা পাই তা দিয়ে আমার সুন্দর চলে যাচ্ছে। প্রেম ভালোবাসা আমার মতো দরিদ্র অসহায় ছেলের জন্য নয়। অথচ রোমানা কিচ্ছু বুঝতে চায় না। আমি মনে মনে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললাম, মমতা মঞ্জিল ছেড়ে খুব শ্রীঘই চলে যাবো। অন্য কোনো উপায় নেই। আমি অবচেতন মনে রোমানাকে নিয়ে ভাবতে শুরু করেছি।

শেষ দৃশ্য অথবা নতুন একটা অধ্যায়ের প্রথম দৃশ্য।
অবশ্যই রোমান্টিক একটা দৃশ্য। রাত আটটা। ছাদে রেলিং ধরে দাঁড়িয়ে আছি আমি আর রোমানা। চারিদিক জোছনায় ভেসে যাচ্ছে। আমরা কেউ কোনো কথা বলছি না। একেবারেই কি বলছি না? মনে মনে আমাদের অনেক কথা বলা হয়ে যাচ্ছে না! হৃদয়য়ের গভীর থেকে যা উঠে আসে সেটা ঠিক অন্য হৃদয়ের গভীরে গিয়ে ঠিকই পৌঁছায়। আমি জানি না কি ঘটতে যাচ্ছে, কি হবে? মাঝে মাঝে নিজেকে ভাগ্যের হাতে ছেড়ে দিতে ইচ্ছা করে। স্বচ্ছ পবিত্র ভালোবাসার কাছে মানুষকে অবশ্যই মাথা নত করতে হয়। স্বচ্ছ পবিত্র ভালোবাসা কে দূরে ঠেলে দেওয়া অন্যায়। তাই তো আমরা পরম ভালোবাসায়- দুজন দুজনের হাত ধরলাম। এক আকাশ ভালোবাসা নিয়ে ঠোঁটে ঠোঁট রাখলাম। জোছনায় মাখামাখি হয়ে গেলো আমাদের জীবন।

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা জুলাই, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:০৪

শূন্য সারমর্ম বলেছেন:


সত্যি ঘটনা নাকি কল্পনা?

০৩ রা জুলাই, ২০২৩ দুপুর ১:৩৬

রাজীব নুর বলেছেন: পুরোপুরি মিথ্যা কি লেখা যায়? সম্ভব?

২| ০২ রা জুলাই, ২০২৩ রাত ৯:২৯

কামাল১৮ বলেছেন: ফরমায়েশি গল্প।

০৩ রা জুলাই, ২০২৩ দুপুর ১:৩৭

রাজীব নুর বলেছেন: আপনি এরকম একটা গল্প লিখে দেখান। প্লীজ।

৩| ০২ রা জুলাই, ২০২৩ রাত ১০:৫৫

শেরজা তপন বলেছেন: ফ্যান্টাসি!

০৩ রা জুলাই, ২০২৩ দুপুর ১:৩৭

রাজীব নুর বলেছেন: মোটেও নয়। একদম বাস্তব।

৪| ০৩ রা জুলাই, ২০২৩ দুপুর ১:৫০

কাছের-মানুষ বলেছেন: শেষে মধুর মিলন। ভাল গল্প।

০৩ রা জুলাই, ২০২৩ দুপুর ১:৫২

রাজীব নুর বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ। ভালো থাকুন। সুস্থ থাকুন।

৫| ০৩ রা জুলাই, ২০২৩ রাত ৮:৪৫

কামাল১৮ বলেছেন: আমি লিখলে বাড়ি ওয়ালার ছেলে থাকতো।আমার সাথে গল্প করতে করতে তার মন মানসিকতার পরিবর্তন হতো।

০৪ ঠা জুলাই, ২০২৩ রাত ১১:৫০

রাজীব নুর বলেছেন: গ্রেট।
সেটাই লিখুন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.