নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।
শুনতে পেলাম চৌধুরী বাড়ির নতুন বউকে নাকি ভূতে ধরেছে।
একথাটা দিনে দিনে মহি্লাদের কানে মুখে সারা গ্রামে ছড়িয়ে পড়ল। সারা গ্রামের মানুষ সকাল বিকাল চৌধুরী বাড়িতে আনাগোনা শুরু করল। আর সন্ধ্যায় হাজার মানুষের ভীড়। নতুন বউ এর উপর জ্বীন আছড় করেছে। নতুন বউ চোখ মুখ খিচিয়ে চিৎকার করে কথা বলে। নোংরা নোংরা কথা বলছে। হাতের কাছে যা পাচ্ছে ভেঙ্গে ফেলছে। কেউ নতুন বউকে ধরে রাখতে পারে না। হঠাত করে তার শরীরে শক্তি বেড়ে গেছে। সামনে যাকে পায় তাকেই মারতে যায়। অশ্লীল গালা-গাল সস্মানে দিয়ে যাচ্ছে। কখনো হাসে। কখনো গুনগুন করে লালনের গান গায়। দৌড়-ঝাপের কারনে তার শাড়ির আঁচল এলোমেলো হয়ে গেছে। নিজের মনে একাএকা কথা বলে। তার স্বামী কাছে এলে রাগ যেন হাজার গুন বেড়ে যায়। তেড়ে স্বামীকে মারতে আসে।
বাধ্য হয়ে এ অবস্থা থেকে পরিত্রানের জন্য আমাকে ডাকা হলো।
গর্ব করি না কিন্তু খুব অল্প সময়ে জ্বীন ভূত তাড়ানোয় আমার খুব নামডাক আছে। চৌধুরী বাড়ির নতুন বউ আমাকে দেখেই রাগে চোখ বড় হয়ে গেলো। চোখ মুখ খিচিয়ে আমাকে ভয় দেখানোর চেষ্টা করতে লাগল। তবুও আমি কোনো ভয় পেলাম না, এরকম অনেক দেখেছি। সারা দেশে আমার অনেক খ্যাতি আছে। যাইহোক, মধ্যরাত্রে আমি উঠানে শীতল পাটি বিছিয়ে বসলাম। আমার সামনে আগরবাতি জ্বলছে, চারিদিকে সৌরভে ভরে গেছে। চৌধুরী বাড়ির নতুন বউকে আমার সামনে ধরে আনা হলো। এখন নতুন বউ এর ঘাড়ে ভূত নেই। বউ এখন শান্ত, হাসিখুশি। একজন বলল- আমাকে দেখে নাকি ভূত পালিয়ে গেছে। আমি ভীড় পাতলা করতে বললাম। নতুন বউ অজানা এক লজ্জায় মাটির দিকে তাকিয়ে আছে। এখন সে খুব শান্ত, আমি তার ঘাড়ে জ্বীন আনার ব্যবস্থা করলাম। যেনো আর কখনো নতুন বউকে জ্বালাতন না করে। মানুষকে যন্ত্রনা না দেয়, তার একটা উত্তম ব্যবস্থা আমি করবই।
আমি বিড়বিড় করে আমার সব বিখ্যাত মন্ত্রগুলো পড়তে লাগলাম।
তারপর ডাকলাম আয়...আয়... আয়রে....। তাড়াতাড়ি আয়, দেরী করিস না, তাহলে আমার খুব রাগ লাগবে। চারপাশে পিনপতন নিরবতা। আমি আবার ডাকলাম- কিরে এত দেরী কেন? তাড়াতাড়ি আয়, আমার দেরী হয়ে যাচ্ছে- তোর ঝামেলা শেষ করে আবার আমাকে উত্তরবঙ্গ যেতে হবে। হঠাৎ নতুন বউ এর পেছনের বেলগাছটা নড়ে উঠল। মনে হলো কেউ একজন বেলগাছ থেকে নেমে এলো। চারিদিকে নিরবতা, শুধু নিঃশ্বাসের শব্দ ছাড়া।
নতুন বউ মুখ তুলে কথা বলে উঠল। আমায় ডেকেছেন কেন? যেন সে খুব বিরক্ত।
আমি বললাম- তোর নাম কী?
জ্বীন বলল আমার নাম জেনে আপনার দরকার কী?
আমি বললাম- সে কথা পরে, আগে তোর নাম বল। বেয়াদবি করবি না। আমি বেয়াদবি লাইক করি না।
জ্বীন বলল আমার কোনো নাম নেই।
আমি বললাম- ফাজলামো বাদ দে।
জ্বীন বলল আমি ফাজলামো করছি না।
আমি বললাম- তাহলে তুই নাম কইবি না? তুই নাম ছাড়া?
জ্বীন বলল- হুম।
আমি বললাম- তোর বাপের নামও বুঝি নাই?
জ্বীন বলল আছে।
আমি বললাম বল, তোর বাবার নাম বল।
জ্বীন বলল- আমার বাপের নাম হামবুড়া।
আমি বললাম- ভূতের বাপের নাম হামবুড়া। এ কথা প্রথম শুনলাম। আর তোর কোনো নাম নাই, না?
জ্বীন বলল- আমার নাম আছে, আমার নাম হলো- চ্যাংড়া, এই বলেই ফিকফিক করে হেসে উঠল নতুন বউ।
আমি রেগে গিয়ে বললাম- তয় তুই যে এতক্ষন বললি তোর নাম নেই। এখন কচ্ছিস চ্যাংড়া। তুই হলি একটা মস্ত বড় ফাজিল। বড় শয়তান। চ্যাংড়া তুই আমার সাথে ফাজলামো কচ্ছিস। এখন আমি তোর নামও জানি, তোর বাপের নামও জানি। আমার সাথে বাঘ-বন্দী খেলতে চাস? তোর বাপের নাম হলো রাম। আর তোর নাম কবো? না থাক।
আমি আবার দুইটা মন্ত্র পড়ে, রেগে গিয়ে চিৎকার দিয়ে দুষ্ট জ্বীনকে বললাম- তোর বাড়ি কোথায়?
জ্বীন বলল- কোয়েকাফ নগরীতে।
আমি বললাম আচ্ছা, ভালো। ওটা তো ভূতের'ই নগরী। তুই এখানে কোথায় থাকিস?
জ্বীন বলল- নতুন বউ এর সাথে আর বেলগাছে।
আমি বললাম- তুই নতুন বউ এর ঘাড়ে চেপে অশান্তি শুরু করলি ক্যান?
জ্বীন বলল- আমি কোনো অশান্তি করি নাই হুজুর।
আমি বললাম- তুই ওর ঘাড়ে চেপে আসিস ক্যা?
নতুন বউকে আমার ভালো লাগছে।
ভালো লাগলেই বুঝি ঘাড়ে চেপে বসতে হবে? ওর স্বামী সংসার আছে না?
জ্বীন চুপ করে আছে।
আমি আবার ধমক দিতে জ্বীন বলতে শুরু করলো- ও সেদিন সন্ধ্যায় নদীর ঘাটে পানি আনতে গেলো, মাথায় ছিল না ঘোমটা। বাতাসে চুল উড়ছিল-শাড়ির আঁচল উড়ছিল। তখন আমি স্মার্ট যুবক সেজে ওর চলার পথে দাঁড়িয়ে ছিলাম। ও আমাকে দেখে মুচকি হাসি দিয়েছিল। আমার খুব ভালো লেগেছিল।
আমি বললাম- শোন- তুই নতুন বউ এর ঘাড়ে আর থাকবি না। বেলগাছে আর থাকবি না। এই এলাকা ছেড়ে চলে যাবি। তোর স্বভাব ভালো না। জ্বীন বলল- না, আমি যাবো না। আমি থাকব। দুষ্ট জ্বীনের এই কথা শুনে আমার অনেক রাগ লাগল, আমি দিলাম এক থাপ্পড়। তারপর বললাম- তোর এই এলাকায় কোনো স্থান নেই। আর যদি না যাস, তো আমি অন্য ব্যবস্থা করবো। জ্বীন বলল- কী ব্যবস্থা করবেন জানতে পারি? আমি বললাম- তা পারিস। তোর মুরব্বিদের ডেকে বলে দিব। আর তাতেও যদি কাজ না হয়। তাহলে তোকে বোতলে বন্দী করে রাখব। এখন যা ভাগ। আর বিরক্ত করিস না।
জ্বীন বলল- আমি যাবো না। আমাকে তাড়িয়ে দিবেন না বস।
আপনার অনেক কাজে লাগব আমি। আমাকে যা বলবেন আমি তাই করবো। তবু আমাকে নতুন বউ এর কাছ থেকে আলাদা করবেন না। আমি বললাম- না। নো নেভার। তোকে শেষ বারের মতন কয়ে দিচ্ছি যা চলে যা। জ্বীন বলল- ঠিক আছে, আপনি মনে রাখবেন, সুযোগ পেলে আমি আপনাকে দেখে নিবো। আমাকে যেমন এলাকা ছাড়া করেছেন, আমিও আপনাকে দুনিয়া ছাড়া করবো। আমি বেশ রেগে গিয়ে বললাম- দাড়া তোকে বোতল বন্দী করছি। দেখি, তুই আমার কী ক্ষতি করতে পারিস। জ্বীন কটমট করে বলল- না বস। তার আর দরকার হবে না। আমি চলে যাচ্ছি। তখন নতুন বউ অজ্ঞান হয়ে গেলো। তারপর জ্ঞান ফেরার পর পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠল।
ভোর বেলা আমি সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে চলে গেলাম উত্তর বঙ্গের দিকে।
যাবার আগে বলে গেলাম- বউ, ঝি, বেটি- সন্ধ্যার পরে নদীর ঘাটে, পুকুর ঘাটে না যাওয়াই ভালো। তারপর আমি গুনগুন করে গান গাইতে গাইতে হাঁটতে শুরু করলাম।
০৫ ই জুলাই, ২০২৩ রাত ৯:৫৮
রাজীব নুর বলেছেন: জ্বীন বলতে আসলে কোনো কিছু নেই। এগুলো কুসংস্কার।
২| ০৫ ই জুলাই, ২০২৩ রাত ৩:৩০
স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন: বেশ ভালো।
০৫ ই জুলাই, ২০২৩ রাত ৯:৫৮
রাজীব নুর বলেছেন: একটুও ভালো না।
আজাইরা ত্থাকলে যা হয় আর কি।
৩| ০৫ ই জুলাই, ২০২৩ সকাল ৯:১৪
ধুলো মেঘ বলেছেন: জ্বীনটা কি পুরুষ ছিল নাকি নারী?
জ্বীন কিভাবে প্রেম করে, তার একটা ধারণা পেলাম।
০৫ ই জুলাই, ২০২৩ রাত ৯:৫৯
রাজীব নুর বলেছেন: জ্বীন হচ্ছে জ্ঞানহীণদের জন্য।
৪| ০৫ ই জুলাই, ২০২৩ সকাল ১১:৪৮
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন:
- আপনি এর চেয়েও ভালো গল্প লিখেন। এই লেখাটি খুব একটি জমেনি।
০৫ ই জুলাই, ২০২৩ রাত ১০:০০
রাজীব নুর বলেছেন: ১০০% রাইট।
৫| ০৫ ই জুলাই, ২০২৩ দুপুর ১২:০৭
রানার ব্লগ বলেছেন: আমার তো মনে হলো জ্বীনে আপনাকেও ধরছে কখনো শুদ্ধ ভাষায় বলছেন আবার বগুরার টোনে বলছেন ।
০৫ ই জুলাই, ২০২৩ রাত ১০:০১
রাজীব নুর বলেছেন: একদম সঠিক কথা বলিয়াছেন জনাব।
৬| ০৫ ই জুলাই, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:৪৬
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: জীনদের নিয়ে এই সব লিখেন না। ওরা জানতে পারলে সত্যি সত্যি আপনার উপর ভর করতে পারে। ওরা কিন্ত অনেক সময় তুলে ওদের দেশে নিয়ে যায়। তাই সাবধানে থাকবেন রাতের বেলা। নোংরা জায়গায় যাবেন না। জীন আশে পাশে আছে বুঝলে আয়াতুল কুরসি পড়বেন।
০৫ ই জুলাই, ২০২৩ রাত ১০:০২
রাজীব নুর বলেছেন: জ্বীন আমার কাছে এলে মাইর খাবে।
৭| ০৫ ই জুলাই, ২০২৩ রাত ৮:১৭
ফেনা বলেছেন: জ্বীন জ্বীন জ্বীন জ্বীন জ্বীন জ্বীন জ্বীন জ্বীন............ আয় আয় আয়........।
কেমন আছেন রাজীব ভাই?
০৫ ই জুলাই, ২০২৩ রাত ১০:০৩
রাজীব নুর বলেছেন: আমি ভালো আছি। বেশ ভালো আছি।
৮| ০৬ ই জুলাই, ২০২৩ রাত ২:১৭
কামাল১৮ বলেছেন: “একটুও ভালো না।
আজাইরা ত্থাকলে যা হয় আর কি”
আমারো তাই মনে হয়।তবে ভূতেধরা রোগী আর ওঝার কথা বার্তা রেকর্ড করে এনে শুনে শুনে লিখলে আরো ভালো হতো।লেখার মানও উন্নত হতো।
০৬ ই জুলাই, ২০২৩ দুপুর ২:১১
রাজীব নুর বলেছেন: লেখাটা মন দিয়ে লিখলে আরো ভালো করা সম্ভব ছিলো।
©somewhere in net ltd.
১| ০৫ ই জুলাই, ২০২৩ রাত ২:০০
শূন্য সারমর্ম বলেছেন:
জ্বীন পৃথিবীতে নেমে মানুষের সাথে বিভিন্ন নিয়মকানুনে খেলাধুলা করে নিড়ে ফিরে।