নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

রাজীব নুর

আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।

রাজীব নুর › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্রিয় কন্যা আমার- ৬০

৩০ শে জুলাই, ২০২৩ দুপুর ২:১৩



প্রিয় কন্যা আমার-
এবার অনেকদিন তোমার নানা বাড়ি থাকলে। প্রায় দেড় মাস। এত লম্বা সময় এর আগে তোমার মা কখনও তার বাপের বাড়ী থাকেনি। এবার অবশ্য কারন ছিলো। তার বোন শাম্মি অনেক বছর পর দেশে ফিরেছে। এদিকে তোমার মামা মামীও দেশ ছেড়ে চলে যাচ্ছেন। তোমার নানা একা হয়ে গেলেন। তোমার নানী বেঁচে থাকলে সে একা হয়ে যেতো না। এত বড় বাসায় সে একাএকা থাকবে কি করে? অবশ্য তোমার ছোট মামা আছে। কিন্তু সে তো সকালে বের হয়, রাতে ফিরে। কোনো কোনোদিন ফিরেও না। তোমার নানা বয়স্ক মানুষ। যদিও এখনও তিনি কাজ করেন। তোমার নানা তো আর আমাদের বাসায় এসে থাকবেন না। ঠিক করেছি, মাঝে মাঝে গিয়ে তোমার নানাকে দেখে আসব। তাতে কি তার একাকীত্ব ঘুচবে?

মাত্র দেড় মাস তুমি আর তোমার মা বাসায় ছিলে না।
আমার খুবই অস্থির লেগেছে। একাএকা আমার ভালো লাগে না। এখন আমি তোমার নানার কথা ভাবি। এই বয়সে উনি একা থাকবেন কেমন করে? অথচ তার চারটা ছেলেমেয়ে। মানুষের বয়স হয়ে গেলে, মানুষ বড় অসহায় পড়ে। তখন তার জন লাগে। একা থাকা যায় না। ঠিক এসময় তোমার মামা মামীও চলে গেলেন। তোমার খালা বিদেশ চলে গেলো। সুরভি আমার কাছে। তোমার নানাভাই বড় একা হয়ে গেলো। একদিন কি আমিও একা হয়ে যাবো? তোমার মামা মামী যদি তোমার নানান কথা না ভাবে, তাহলে আমি কেন তার কথা ভাবতে যাবো? আমি শুধু বুঝি বয়স হয়ে গেলে মানুষ একা থাকতে পারে না। তোমার নানী মারা যাওয়ার পর যদি তোমার নানা আরেকটা বিয়ে করতো তাহলে ভালো হতো। আজ তার একা থাকতে হতো না।

প্রিয় ফারাজা তাবাসসুম খান-
আর পাঁচ মাস পর তোমার তিন বছর হয়ে যাবে। আমি বুঝতে পারছি না, কত বছর বয়সে তোমাকে স্কুলে ভরতি করাবো? কোন স্কুলে ভরতি করাবো? আমার মাথা কাজ করছে না। তোমার জন্য কি বাসায় শিক্ষক রাখবো? তোমার মায়ের ইচ্ছা তোমাকে আরো অনেক পরে স্কুলে ভরতি করাবে। কিন্তু আমার ইচ্ছা তোমাকে তিন বছর বয়সেই স্কুলে ভরতি করিয়ে দেই, প্লে গ্রুপে। তারপর নার্সারী। প্লে গ্রুপ আর নার্সারীতে তো লেখাপড়া নেই। শুধু স্কুলে যাবে আর আসবে। এখন তো স্কুল গুলোতে অনেক টাকা নেয়। অনেক সময় অনেক টাকা দিয়েও স্কুলে ভরতি করানো যায় না। ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে মাসে বেতন দিতে হবে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা। সেই সাথে অন্যান্য খরচ তো আছেই। কিভাবে যে কি করি, মাথা কাজ করে না। এখন তো সব কিছুতেই খরচ ডাবল হয়ে গেছে। আগে পাঁচ হাজার টাকা দিয়ে যে বাজার করতাম, এখন সে বাজার করতে দশ হাজার টাকা লাগে।

প্রিয়া কন্যা ফাইহা-
এখন চারিদিকে ডেঙ্গু। আমি তোমাকে নিয়ে বেশ ভয়ে ভয়ে আছি। আমি সারাদিন বেশ সর্তক আছি। কিন্তু আমি সর্তক থাকলে কি হবে আমাদের বাসার আশে পাশের মানুষ গুলো সর্তক নয়। অসভ্য একটা দেশে বাস করি। প্রতিটা বাড়ির ছাদে পানি জমে থাকে। পানির মটর ছেড়ে দেয়। মটর বন্ধ করতে মনে থাকে। ফলাফল ছাদে পানি জমে থাকে। সেই পানি অনেকদিন জমে থাকে। আমি বাড়িওলাকে বলেছি, সে বলে- আমার বাড়ি,আমার পানির মটর, আমার বিদ্যুৎ খরচ হয়, আপনার সমস্যা কি? এদের কি করে বুঝাবো? আসলে এদের উচিৎ সকাল বিকাল দুইবেলা থাপড়ানো। নইলে এরা মানুষ হবে না। যাইহোক, আমি মশার কয়েল জ্বালাচ্ছি, এরোসল স্প্রে করছি। সন্ধ্যার আগেই জানালা কপাট বন্ধ করে দিচ্ছি। একটা মশার স্প্রে'র দাম তিন শ' টাকার বেশি। বড়টার দাম প্রায় পাচশ' টাকা। যাবো কই? আজিব লাগে! তেলাপোকা মারার স্প্রে ৩৯০ টাকা!

প্রিয় কন্যা, ফারাজা তাবাসসুম খান (ফাইহা)-
একটা শিশুকে তো শুধু জন্ম দিলেই হয় না। সব রকম দেখভাল করতে হয়। তার খাওয়া, ঘুম, গোছল, পটি পরিস্কার, ডাক্তার-ওষুধ, তার শত আবদার। একটা শিশুর জন্য- কত কিছু যে করতে হয়। সেদিন রাত তিন টায় তুমি আমাকে ঘুম থেকে ডেকে তুললে। বললে, ওয়াশরুমে যাবে। আমি ঘুম ঘুম চোখে তোমাকে ওয়াশরুমে নিয়ে গেলাম। তুমি পটি করলে, তোমাকে পরিস্কার করিয়ে দিলাম। আবার ঘুমিয়ে গেলাম। তুমি আবার আমায় ডেকে তুললে। বললে, তোমার ক্ষুধা পেয়েছে। আমি বললাম, ভাত খাবে? নাকি আপেল খাবে? তুমি বললে- আপেল। ফ্রিজ থেকে একটা আপেল বের করে ধুয়ে তোমার হাতে দিলাম। তুমি এক কামড় আপেল খেয়েই ঘুমিয়ে গেলে। আমি তোমার ঘুমন্ত মুখের দিকে তাকিয়ে থাকলাম। আমার চোখ ভিজে উঠলো।

মন্তব্য ৯ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৯) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে জুলাই, ২০২৩ দুপুর ২:৩২

শাওন আহমাদ বলেছেন: একটা সময় গিয়ে সব মানুষই একা হয়ে যায়, কোনোকিছুতেই আর সেই একাকিত্ব ঘুচে না।

৩০ শে জুলাই, ২০২৩ বিকাল ৫:২৮

রাজীব নুর বলেছেন: একাকীত্ব বড় যন্ত্রনাময়।

২| ৩০ শে জুলাই, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:০৮

কামাল১৮ বলেছেন: আমি প্রায় সারা দিন একাই থাকি।আমরা দুই মেরুর মানুষ।কথা যত কম বলা যায় ততই ভালো।
রাতের মশায় কামড়ালে ডেঙ্গু হয় না শুনতাম।কথাটা কতোটুকু সত্য।
নাতিকেও সামনের মাসে ফুল টাইম স্কুলে দিবে।নয়টা তিনটা স্কুল।মেয়ের চোখে ঘুম নাই।নাতি নিজে সারা দিন বক বক করে, অন্যের কথায় মনোযোগ নাই।
ইংলিশ মিডিয়ামেই পড়াতে হবে এটা ঠিক না।পড়া শুনা ভালো হয় এমন যে কোন স্কুলে পড়লেই হলো।ইউরোপের দেশগুলো তাদের নিজেদের ভাষাতেই পড়ে।অনেকেই ইংরেজি জানে না।

৩১ শে জুলাই, ২০২৩ দুপুর ১২:৪১

রাজীব নুর বলেছেন: এখনকার ডেঙ্গু মশা যে কোনো সময় কামড়াতে পারে।

৩১ শে জুলাই, ২০২৩ দুপুর ১২:৪২

রাজীব নুর বলেছেন: আমাদের দেশে বাংলা মাধ্যমের লেখাপড়া উন্নত নয়।

৩| ৩১ শে জুলাই, ২০২৩ সকাল ৮:৪২

বুনোগান বলেছেন: এটা জীবনের গল্প। জীবন সমস্যাময় আবার মায়াময়। নিজের মধ্যে সব মানুষই একা। মুখোসটা শুধু সমাজের। আমরা মুখোসটা দিয়ে সমাজের সাথে ক্রিয়া প্রতিক্রিয়া করি। নিজের মধ্যের ক্রিয়া প্রতিক্রিয়া গোপনই থেকে যায়। অন্যের কাছে কিছু আশা করাটা মানুষকে আশাহত করে। আবার মানুষ একাকীও থাকতে পারে না। অদ্ভুদ এক দ্বন্দ্ব মানুষকে ঘিরে আছে। একটা ঘোরের মধ্যে যেন জীবনটা পার হয়ে যাচ্ছে। যেন প্রকৃতি তার অমোঘ নিয়মে মানুষকে বেধে রেখেছে। কিছুতেই তার মুক্তি নেই।

৩১ শে জুলাই, ২০২৩ দুপুর ১২:৪৩

রাজীব নুর বলেছেন: সঠিক কথাই বলেছেন।

৪| ৩১ শে জুলাই, ২০২৩ দুপুর ১২:১৬

মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন বলেছেন: কন্যা নয় রাজকন্যা। সব বাবার কাছেই তার কন্যা রাজকন্যা। আপনার রাজকন্যার জন্য অফুরন্ত ভালোবাসা এবং দোয়া রইল।

৩১ শে জুলাই, ২০২৩ দুপুর ১২:৩৮

রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ। অনেক ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.