নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

রাজীব নুর

আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।

রাজীব নুর › বিস্তারিত পোস্টঃ

ঢাকা শহরের কিছু সমস্যা- যা যুগ যুগ ধরে চলছে

২০ শে নভেম্বর, ২০২৩ বিকাল ৫:৩৫

ছবিঃ উইকিপিডিয়া।

আমার জন্ম ঢাকায়। সম্ভবত মৃত্যুও ঢাকাতেই হবে।
সারা ঢাকা শহর আমি ঘুরে বেড়াই। কোন রাস্তা ভাঙ্গা, কোন রাস্তায় কয়টা স্পীড বেকার আছে সেটাও আমি বলে দিতে পারবো। এই শহরের কোনো অলিগলি বাদ নেই যেখানে আমার পা পড়েনি। আমাদের দুই মেয়রের চেয়ে আমি বেশি জানি এই শহরের সমস্যা গুলো কি কি। গুলিস্তান এলাকায় ফুটপাত ভাড়া দেওয়া হয়। এমনকি ফুটপাত ২/৩ লাখ টাকায় কেনাবেচা হয়। সরকারি দলের পাতিনেতারা এসব ফুটপাত ভাড়া দেয়। অবশ্য টাকার ভাগ পুলিশও পায়। মিরপুর ১ ও ১০ নম্বরের ফুটপাত, ফার্মগেট এলাকার ফুটপাত, মগবাজার এলাকার ফুটপাত, গুলিস্তান-পল্টন বায়তুল মোকাররম এলাকার ফুটপাত সহ দেশের ৮৫% এলাকার ফুটপাত দখল করা হয়ে গেছে। হকারদের দোষ নেই। তারা পুলিশ ও স্থানীয় পাতি নেতাকে টাকা দিয়ে ফুটপাতে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। আমাদের এলাকায় ভ্যানগাড়িতে করে মাছ-সবজি-ফল ইত্যাদি বিক্রি হয়। স্থানীয় থানার লোক পুলিশের গাড়িতে আসে। স্যার গাড়িতে বসে থাকেন। একজন এসে তাকে একটা কোকের বোতল হাতে দেয়। স্যার কোকে চুমুক দেন। একজন ফুটপাত ব্যবসায়ী সবার কাছ থেকে টাকা সংগ্রহ করে স্যারের হাতে তুলে দেন। স্যার যাওয়ার আগে বলে যান, টাকা এত কম কেন? প্রয়োজনে ভ্যান গাড়ির সংখ্যা বাড়িয়ে দাও।

বাংলামটর থেকে মগবাজার মোড় পযর্ন্ত বেশ কিছু দোকান আছে।
এরা রাস্তায় গাড়ি থামিয়ে গাড়ির কাজ করে সারাদিন। বাংলামটর ব্যস্ত এলাকা। লেগে যায় জ্যাম। যুগ যুগ ধরে একই ঘটনা। একই কাহিনী। গুলিস্তান এলাকার হকাররা ডেঞ্জারাস। তাদের ব্যবহার অতি খারাপ। তাদের কাছে জিনিসের দাম করলে নিতেই হবে। নইলে আপনার শার্টের কলার চেপে ধরবে। মিরপুর দশ নম্বর ফুটপাতের একই ঘটনা। বড় বড় রাস্তার মোড়ে হুজুররা মসজিদ নির্মানের জন্য টাকা নিচ্ছেন। সেই ১৯৭৫ সাল থেকে। যা আজও অব্যহত আছে। এমনকি চিড়িয়াখানার ভিতরেও মসজিদ নির্মানের জন্য টাকা নিচ্ছে। চলন্ত বাসে উঠে মসজিদ নির্মানের জন্য টাকা নিচ্ছে। সত্যি কথা বলতে ঢাকায় আর একটা মসজিদের দরকার নাই। প্রতিটা গলিতে গলিতে মসজিদ। যখন আযান শুরু হয়, একসাথে ৪/৫ টা মসজিদের আযান কানকে যন্ত্রনা দেয়। ঢাকা শহরের এমন কোনো এলাকা নেই- যেখানে গাজা, ফেনসিডিল ও ইয়াবা বিক্রি হয় না। রাত আটটা থেকে একদম খোলামেলা বিক্রি হয় গাজা। কাওরানবাজার, মিরপুর দশ, কমলাপুর, স্টেডিয়াম, গোপীবাগ, গুলিস্তান ইত্যাদি এলাকায়।ওদের কেউ কিছু বলে না। যেসব এলাকায় প্রতিদিন ছিনতাই হয় সেসব জায়গায় কোনো পুলিশের চেকপোষ্ট থাকে না। টহল পুলিশের এক জায়গা বসে মোবাইল টিপায় ব্যস্ত থাকে।

ঢাকায় অনেক পাম্প ও সিএনজি স্টেশন আছে।
লোকজন তেল ও গ্যাস নেওয়ার জন্য লম্বা লাইন দেয়। এদিকে পাম্পে জায়গা নেই। রাস্তায় গাড়ি বাসের লম্বা লাইন হয়ে যায়। এমনিতেই চিপা রাস্তা। কিন্তু এর কোনো প্রতিকার নেই। মোহাম্মদপুর আর মিরপুর দশ নম্বরের জুটপট্রিতে অনেক বিহারী থাকে। অনেক বিহারীরা নেশা করে এবং নেশা দ্রব্য বিক্রি করে। এলাকায় মারামারি কাটাকাটি করে। পুলিশও ওদের ভয় পায়। তবে অনেক বিহারী ভালো হয়ে গেছে। তারা লেখাপড়া শিখে ভালো চাকরি বা ব্যবসা করছে। অনেকে 'বিহারী' নাম মুছে ফেলার জন্য এলাকা পরিবর্তন করেছে। কিন্তু এদের হৃদয়ে আজও বেচে আছে মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ। অনেকের ঘরে খুজলে ট্রাঙ্কে জিন্নার ছবি পাওয়া যাবে। অন্তরে তাদের পাকিস্তান। মেরে পাকিস্তান। এরাই বাংলাদেশ পাকিস্তান ক্রিকেট খেলা হলে পাকিস্তানের পতাকা হাতে নিয়ে আর গেঞ্জি পরে খেলা দেখে। এরা সারাদিন ঘরে বসে ইউটিউবে পাকিস্তানের নাটক সিনেমা দেখে। যাইহোক, ঢাকা শহরে একটা বাড়ি ভাড়া নিয়ে স্কুল করা হয়। মাদ্রাসা করা হয়। নেই কোনো মাঠ। আছে শুধু মসজিদ। আশেপাশে দশটা এলাকা ঘুরলে একটা লাইব্রেরী পাবেন না। পাবেন শুধু মসজিদ আর মসজিদ। মসজিদ তো আর জাতিকে সঠিক পথে আনতে পারে না। হাসপাতাল গুলো পর্যন্ত পুরো বল্ডিং ভাড়া নিয়ে করা হয়েছে। চিপা চিপা রুম। এমনকি ডাক্তার রোগী পর্যন্ত দেখেন চিপা রুমে বসে।

বাংলাদেশ বিমান বাহিনী জাদুঘর এর ফুটপাতে-
(তালতলা থেকে আগার গা) প্রতিদিন সন্ধ্যা থেকে ভোর পর্যন্ত চলে অসামাজিক কাজ। ফুটপাত চাদর দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়। ৫/৬ টা মেয়ে সেজে গুজে বসে থাকে। দামে বনলে, চাদর দিয়ে ঘেরা জায়গাটার ভিতরে চলে যায়। এই রাস্তা দিয়ে প্রায় সারা রাতই গাড়ি, বাস চলে। উঠতি বয়সের ছেলে থেকে শুরু করে রিকশাচালক, সিএনজি ড্রাইভার এবং রেস্টুরেন্টের ছেলেরা নিয়মিত এখানে আসে সার্ভিস নেয়। এছাড়া ফ্লাইওভার ব্রীজের উপর। পরীবাগ। রমনা পার্ক। গুলিস্তান পার্ক। কমলাপুর। সোহরাওয়ার্দী উদ্যান। যুগ যুগ ধরেই চলছে অসামাজিক কাজ চলছে। প্রশাসন নিরব। রাত এগারটার পর দালালরা শহরের বিভিন্ন রাস্তা এবং ব্রীজে দাঁড়িয়ে ভিজিটিং কার্ড দেয়। তাদের কাছে ভালো মেয়ে আছে। চাইলে কোনো মেয়েকে নিয়ে কক্সবাজারও যাওয়া যাবে। আমাদের দেশে মন্ত্রী, এমপি, প্রধানমন্ত্রী এবং মেয়র বদলায় কিন্তু ফুটপাত দখলমুক্ত হয় না। অসামাজিক কাজ বন্ধ হয় না। নেশা দ্রব্য বিক্রি বন্ধ হয় না। যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং বন্ধ হয় না। রাস্তায় ময়লা ফেলা বন্ধ হয় না। ফুটপাত দিয়ে বাইক চালানো বন্ধ হয় না। কিশোর গ্যাং এর মারামারি, কাটাকাটি বন্ধ হয় না। পরিবহন চাঁদাবাজি বন্ধ হয় না। ছাত্রলীগের অপকর্ম বন্ধ হয় না। বিদেশে টাকা পাচার বন্ধ হয় না। দ্রব্যমূল্যের দাম বাড়া বন্ধ হয় না। রাজনীতিবিদদের ছাত্রছায়ায় থাকা ক্ষমতাবানদের অন্যায় অবিচার বন্ধ হয় না।

গত পনের বছরে বহু লোক আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ হয়েছে।
গাড়ি বেশি বিক্রি হয়েছে, জমি বেশি কেনাবেচা হয়েছে, ফ্লাট বিক্রি হয়েছে অফুরন্ত। বাইক এবং গাড়ি বিক্রি হয়েছে অতি মাত্রায়। গ্রামের চ্যাংড়া পোলাপান পর্যন্ত এখন বাইক চালায়। সামান্য বাজার করতে গেলেও বাইক চালিয়ে যায়। প্রচুর লোকজন পরিবার নিয়ে ইউরোপ ভ্রমনে গেছে। অর্থ্যাত গত পনের বছরে দেশে নব্যধনীদের সংখ্যা অনেক বেড়েছে। গ্রামের বাড়ি গুলো পর্যন্ত রাজকীয়ভাবে তৈরি করা হয়েছে। মানুষের খাওয়ার পরিমান বেড়েছে। রেস্টুরেন্ট গুলোতে বসার জায়গা পাওয়া যায় না। জামা কাপড় বেশি কিনেছে। বহু নব্যধনীরা নিজ গ্রামে স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা করেছে। শীতের সময় কম্বল বিতরন করে। নাচ গানের আসর বসাচ্ছে। কেউ কেউ ভারত থেকে নর্তকী ভাড়া করে আনছেন। বিয়ের অনুষ্ঠানে দশ গুন বেশি খরচ করা হচ্ছে। প্রতিদিন প্রচুর পরিমানে মদ বিক্রি হচ্ছে। দেশ বিদেশে ভ্রমন করেছে রেকর্ড সংখ্যক। বহু পরিবার দেশ ছেড়ে গেছে- লণ্ডন, আমেরিকা, মালোশিয়া, দুবাই ও কানাডা স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য। এদিকে দেশে বেকারের সংখ্যা অনেক বেড়েছে। ভিক্ষুকের সংখ্যা বেড়েছে। পতিতাদের সংখ্যা বেড়েছে। দরিদ্র ও অসহায় মানুষের সংখ্যা বেড়েছে। একদিকে অভাব অন্যদিকে বিলাসিতা।

ঢাকার শুধু মন্দ কথা বললেই হবে?
ভালো কথাও তো বলতে হবে। ফ্লাইওভার দিয়ে যে উপকার নগরবাসী পায়নি, তার চেয়ে বেশি উপকার পাচ্ছে মেট্রো রেল দিয়ে। মেট্রোরেলটা খুব কাজের কাজ হয়েছে। ঢাকার রমনা পার্ক, বোটানিকেল গার্ডেন ভোরবেলা গেলে মনটা ভরে যায়। প্রচুর গাছপালা। বিশুদ্ধ অক্সিজেন! অতি মনোরম পরিবেশ! আরো আছে পুরান ঢাকার ওয়ারীর বলধা গার্ডেন। ধানমণ্ডি লেক ইত্যাদি। কিন্তু এসব জায়গা ভোর বেলাতেই সুন্দর। বাকি সময়টা ছেলেরা প্রেম ভালোবাসা নাম দিয়ে নোংরামীর জন্য বেছে নেয়। ওদের লজ্জা শরম একেবারেই নেই। মূলত ছেলেরা সেক্স করতে বেশি পছন্দ করে। এজন্য তারা মেয়েদের সাথে প্রেম ভালোবাসার কথা বলে, বিয়ের কথা বলে মেয়েদের সাথে সেক্স করে। এরপর যথাসময়ে একটা ঝগড়া বাজিয়ে কেটে পড়ে। শেষে মেয়েরা কাঁদে। ফার্মেসীতে অনেক ছেলেকে দেখেছি কনডম নিয়ে যায়। আবার কেউ কেউ দৌড়ে এসে বলে ইরমাজেন্সী পিল দেন। তাড়াতাড়ি। কি লিখতে চেয়েছিলাম, আর কি লিখছি! আমার সমস্যা হলো এক বিষয় থেকে অন্য বিষয়ে চলে যাই দ্রুত। ক্ষমা করবেন।

মন্তব্য ১৫ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১৫) মন্তব্য লিখুন

১| ২০ শে নভেম্বর, ২০২৩ বিকাল ৫:৪২

বাকপ্রবাস বলেছেন: ব্হিারের লোক বিহারি, ভারতে অবিস্থিত বিহার। ওরা পাকি পন্থি কেন?

২১ শে নভেম্বর, ২০২৩ রাত ১:০৬

রাজীব নুর বলেছেন: ১৯৬২ সালে রায়ট হয়।
তখন অনেক বাঙ্গালীকে ভারত থেকে বের করে দেওয়া হয় জোর করে।
বিহারিতা মূলত নীচু জাত বলে ধরা হয়। তাঁরা দেশ ভাগের আগে থেকেই মেথর ছিলো। পাকিস্তানে প্রচুর বিহারী আছে। তাঁরা ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে আটকা পড়ে যায়। ভারিরা বাংলাদেশ চায়নি। তাঁরা রাজাকারদের সাহায্য করেছে। এবং যুদ্ধের সময় বাঙ্গালী মেরেছে। ডাকাতি করেছে। করেছে লুটপাট।

২| ২০ শে নভেম্বর, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:১০

নতুন বলেছেন: নিচের দুইটা জায়গার নাম বলুন তো।





২১ শে নভেম্বর, ২০২৩ রাত ১:০১

রাজীব নুর বলেছেন: বাহাদূর শাহ পার্ক।

২১ শে নভেম্বর, ২০২৩ রাত ১:০৩

রাজীব নুর বলেছেন: দ্বিতীয় ছবিটা বুঝা মুশকিল।
সম্ভবত গুলোশান লেক হবে।

৩| ২০ শে নভেম্বর, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:৩৯

কামাল১৮ বলেছেন: মধ্যসত্বভোগীরাই আমাদের জনজীবন অতিষ্ঠ করে তোলছে।এর থেকে মুক্তি পেতে হবে।

২১ শে নভেম্বর, ২০২৩ রাত ১:০৭

রাজীব নুর বলেছেন: মুক্তি পেতে হলে লড়তে হবে। এছাড়া অন্য কোনো উপায় নেই।

৪| ২০ শে নভেম্বর, ২০২৩ রাত ৮:৫৭

তাহেরা সেহেলী বলেছেন: তথ্যে ভরপুর, ছবিও তোলেন নাকি?

২১ শে নভেম্বর, ২০২৩ রাত ১:০৯

রাজীব নুর বলেছেন: একসময় প্রচুর ছবি তুলতাম। আমি একজন ফটোসাংবাদিক। চাকরি ছেড়ে দিয়েছি।

৫| ২০ শে নভেম্বর, ২০২৩ রাত ৯:১৪

বিজন রয় বলেছেন: সমস্যা থাকলে সমাধান হবে।

আপনাকে আর পরীবাগ ওভার ব্রীজ, মৌচাক বা মালিবাগে দেখতে পাই না।

২১ শে নভেম্বর, ২০২৩ রাত ১:১০

রাজীব নুর বলেছেন: এখন আমার অফিস গুলশান -২।

৬| ২১ শে নভেম্বর, ২০২৩ রাত ১:৫০

কামাল১৮ বলেছেন: আমরাতো প্রতিনিয়ত লড়াই করছি কিন্তু দরকারী লড়াইটা করছি না।

২১ শে নভেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১২:০৬

রাজীব নুর বলেছেন: আমার লড়াই অব্যহত আছে।

৭| ২২ শে নভেম্বর, ২০২৩ সকাল ৭:৩৭

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: ভালো লিখেছেন।

২২ শে নভেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১২:০৬

রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.