নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।
সময়টা তখন ৬২২ সাল।
আমাদের নবীজি মোহাম্মদ (সাঃ) স্বপ্নে দেখলেন তাকে মদীনায় যেতে বলা হয়েছে। কারন, মদীনাবাসীর নবীজিকে ভীষন দরকার। যদিও মক্কা নবীজির সবচেয়ে প্রিয় শহর। কিন্তু তথ্য আছে- মদীনায় লোকজন বেলাইনে চলে গেছে। তারা নামাজ পড়ে না। মূর্তি পূজা করে। নেশা করে। নাচ গান করে। নবীজির কল্যানে মক্কাবাসী লাইনে এসে গেছে। মূর্তিপূজা বন্ধ হয়েছে। হয়তো গোপনে কেউ কেউ পূজা করে থাকে। তাদের যথাসময়ে ধরা হবে। চিন্তার কিছু নাই। নামাজ মানুষকে সকল প্রকার মন্দ কাজ থেকে বিরত রাখে।
নবীজি তার দল নিয়ে মদীনায় গেলেন। নবীজির এক স্ত্রী বললেন, হুজুর আপনি সাবধানে থাকবেন। মদীনায় দুষ্টলোকের অভাব নেই। তারা আপনার ক্ষতি করবে। নবীজি মুচকি হেসে বললেন, আমার আল্লাহ আছেন। আমি আর কোনো কিছু ভয় করি না। (নবীজি ৬১০ সালে আল্লাহর পক্ষ থেকে নবুওয়াত লাভ করেন) যাইহোক, মদীনার উদ্দেশ্যে কাফেলা চলল। নবীজির সাথে অনেক টাকা। স্ত্রীর ব্যবসার সমস্ত টাকা নবীজি নিজের সাথে করে নিয়ে এসেছেন। কারন, তিনি একটা মসজিদ নির্মান করবেন। মসজিদের নামও নবীজি ঠিক করে রেখেছেন- মসজিদে নববী।
নবীজি মসজিদ তৈরির কাজ শুরু করে দিলেন।
নবীজি নিজে শ্রমিকদের সাথে কাজে হাত লাগালেন। বসে থাকলেন না অন্যান্য সাহাবীরাও। এক মাসের মধ্যে মসজিদ নির্মান হয়ে গেলো। সুন্দর মসজিদ। ৪৫ জন একসাথে নামাজ আদায় করতে পারবেন। নবীজি নিজের বানানো মসজিদে সাহাবীদের নিয়ে নামাজ আদায় করলেন। কিন্তু দেখা গেলো মদীনাবাসী নামাজ পড়তে আসছে না। নবীজি বিভিন্ন এলাকায় গেলেন। লোকজনকে নামাজের জন্য দাওয়াত দিলেন। সবাই বলল, নামাজ কখন শুরু হবে? কিভাবে জানবো? ইত্যাদি নানান কথাবার্তা। এক সাহাবী বললেন, মক্কাবাসী তো নামাজের সময় হলেই নামাজ পড়ে নেয়। তাদের তো ডাকতে হয় না। নবীজি ও তার সাহাবীরা চলে এলেন। মসজিদে নববীর পাশেই নবীজির ছোট্র বাসা। একেকজন সাহাবী একেক রকম বুদ্ধি ও পরামর্শ দিলেন নবীজিকে। একজন বললেন, নামাজের সময় হলে- বাড়ি বাড়ি গিয়ে তাদের ডেকে নিয়ে আসবো। আরেকজন বললেন, খুব জোরে ঢোল বাজাতে হবে। ঢোলের শব্দে বুঝবে নামাজের সময় হয়েছে। জায়েদ নামের একজন বললেন, নামাজের সময় হলে বাশি বাজাতে হবে। নবীজি বললেন, আমাদের ধর্মটা অন্যসব ধর্ম থেকে আলাদা। আমরা ইহুদীদের মতো কিছু করবো না। সেই সময় বিশ্ব জ্ঞান বিজ্ঞানে উন্নত ছিলো না। বিদ্যুৎ ছিলো না। মাইক ছিলো না। ঘড়ি ছিলো না। সময় বুঝার জন্য সূর্যই ভরসা।
সেই রাতেই একসাথে ১৪ জন সাহাবী এক অদ্ভুত স্বপ্ন দেখলেন।
স্বপ্নে তারা দেখলেন- সবুজ রঙের অদ্ভুত পোশাক পরা একলোক। তার হাতে খঞ্জনী। খঞ্জনী হাতে লোকটা বলছে, তোমরা দিশেহারা কেন? নামাজের সময় মুসুল্লিদের এক করতে পারছো নাতো! তোমরা আযান দাও। নামাজের সময় হলেই আযান দাও। সেই আযানের ধ্বনি শুনে লোকজন নামাজের জন্য পাগলের মতো ছুটে আসবে''। সকালবেলা ঘুম থেকে উঠেই ইবনে জায়েদ দৌড়ে গেলেন নবীজির কাছে। স্বপ্নের কথা নবীজিকে বললেন। নবীজি বললেন, আমি সব জানি। এই স্বপ্ন অনেকেই দেখেছেন। এই স্বপ্ন আল্লাহপাক দেখিয়েছেন। নবীজি বললেন, যাও বিলালকে ডেকে আনো। বিলাল শক্তিশালী পুরুষ। তার গলার জোর অনেক। বিল্লাহ এলেন। নবীজি তাকে আযানের ব্যাপারে বুঝিয়ে বললেন। হযরত বিল্লাল আযান দিলেন। বিলাল ইবনে রাবাহ ইসলামের ইতিহাসে প্রথম আযান দেন। মদীনাবাসী আযানের সুরে মুগ্ধ হয়ে গেলো। সবাই ছুটে এল নবীজির তৈরি করা মসজিদে নামাজ পড়তে। কুরআনে মোট পাঁচ স্থানে আজুন শব্দটি এসেছে। ১ম হিজরি সনে আযানের প্রচলন হয়। যা কেয়ামত পর্যন্ত অবহ্যত থাকবে।
আযান ওহী থেকে প্রাপ্ত নয়।
স্বপ্নে প্রাপ্ত। অবশ্য মক্কাতে আযান ছাড়াই নামাজ পড়া হতো। এমনকি আমাদের নবীজিও আযান ছাড়া নামাজ পড়তেন। বলা যেতেই পারে সর্বপ্রথম মেরাজের রাতে আজানের সূচনা হয়। নামাজ ছাড়াও আরো দুই সময় আযান দেওয়ার নিয়ম আছে। এক, কারো ওপর যদি জিনের বদ-আছর পড়ে তখন আজান দেওয়া যাবে। আযান শুনলে শয়তান কানে হাত দিয়ে দৌড়ে পালায়। এবং দুই, নবজাতকের ডান কানে আজান দেওয়ার নিয়ম আছে। একবার নবীজি আরাম করে ঘুমাচ্ছিলেন- তখন হজরত বেলাল উচ্চকণ্ঠে নবীজির কানের কাছে বললেন-‘আস-সালাতু খাইরুম মিনান নাওম। অর্থাৎ ঘুমের চেয়ে নামাজ উত্তম। নবীজি ঘুম থেকে উঠে, ওজু করতে বসলেন। এখন মাইক আছে। মসজিদে মোয়াজ্জিন আছেন। সময় মত আযান দেওয়া হয়। আযান শুনে লোকজন মসজিদের দিকে ছুটে। আযানের সময় ঘরে টিভি চললে, টিভির সাউন্ড বন্ধ করে দেওয়া হয়। আযানকে সম্মান করা হলো। আযানের বাংলা অর্থ এই রকমঃ
আল্লাহ সবচেয়ে বড়, আল্লাহ সবচেয়ে বড়।
আমি স্বাক্ষ্য দিচ্ছি আল্লাহ ছাড়া কোনো মাবুদ নেই।
আমি স্বাক্ষ্য দিচ্ছি মুহাম্মদ সা. আল্লাহর রাসুল।
আমি স্বাক্ষ্য দিচ্ছি মুহাম্মদ সা. আল্লাহর রাসুল।
এসো নামাজের দিকে, এসো নামাজের দিকে।
এসো কল্যাণের পথে, এসো কল্যাণের পথে।
আল্লাহ সবচেয়ে বড়, আল্লাহ সবচেয়ে বড়।
২৪ শে নভেম্বর, ২০২৩ বিকাল ৫:৪০
রাজীব নুর বলেছেন: মসজিদেরই পাশে আমার কবর দিও ভাই।
যেন গোরে থেকেও মোয়াজ্জিনের আজান শুনতে পাই।।
-----কাজী নজরুল ইসলাম।
২| ২৪ শে নভেম্বর, ২০২৩ বিকাল ৫:৪৫
ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন:
ভালো লিখেছেন। আজকের পোস্টে প্লাস। নানান দেশের আযান শুনেছি সৌদি আরবের আযান আমার কাছে ভালো লেগেছে।
২৪ শে নভেম্বর, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:১৭
রাজীব নুর বলেছেন: শুকরিয়া।
৩| ২৪ শে নভেম্বর, ২০২৩ রাত ৮:১৯
কামাল১৮ বলেছেন: ইসলামের আগেও নামাজের জন্য ডাকা হতো।সেটা করতো ইহুদিরা।এই বিষয়টি নবী ইহুদের নিকট থেকে নিয়েছেন।হজ্ব নিয়েছেন পেগানদের থেকে।
নবী প্রান বাঁচাতে মক্কা ত্যাগ করেন।রাতের আঁধারে দুই তিন জন সাথী নিয়ে।
নামাজের খুঁটিনাটি বিষয় আসছে হাদিস থেকে।আর হাদিস কবে রচিত এটা নিয়ে বিতর্ক আছে।কোরান পন্থী আর হাদিস পন্থীদের বিতর্ক এখন চরমে।
২৬ শে নভেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১২:৫৪
রাজীব নুর বলেছেন: একদম সঠিক কথা বলেছেন।
২৬ শে নভেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১২:৫৪
রাজীব নুর বলেছেন: একদম সঠিক কথা বলেছেন।
৪| ২৪ শে নভেম্বর, ২০২৩ রাত ৮:২৪
কামাল১৮ বলেছেন: আপনার পোষ্ট পড়ে রবি ঠাকুরের একটা পংক্তি মনে পড়ে গেলো।”সেই সত্য যা রছিবে তুমি,ঘটে যা সব সত্য নয়,
৫| ২৪ শে নভেম্বর, ২০২৩ রাত ১০:৩১
সত্যপথিক শাইয়্যান বলেছেন:
আপনি খুব সুন্দর একটি বিষয় উঠিয়ে নিয়ে এসেছেন।
সেই সময়ে আজানের জন্যে মানুষের সুললিত কণ্ঠই যথেষ্ট ছিলো।
এখন কেন মাইক ব্যবহার করে যান্ত্রিকতা নিয়ে আসা হয়েছে বুঝতে পেরেছি!!!
হাই রাইজ বিলডিঙ বেশি হবার কারণে আজানের ধ্বনি কানে আসার সম্ভানা কম, যদি শুধু মানুষের কণ্ঠ ব্যবহার করে আজান দেওয়া হয়।
৬| ২৬ শে নভেম্বর, ২০২৩ সকাল ৯:২৫
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
তবে এর একটা বিরক্তিকর দিকও আছে। হয়তো আপনি স্বীকার করবেন না।
সেটা হচ্ছেঃ শব্দ দূষণ।
ঢাকা শহরে চারদিক থেকে যে ভাবে প্রচন্ড জোরে মাইকে আজানের শব্দ আসে সেটা অত্যাচারের সামিল।
যে বা যারা নামাজ পড়বে তারা পড়বেই। তাদের ডাকার জন্য মাইক লাগিয়ে চিৎকার করার কোন দরকার নেই।
মাইক ছাড়া কিংবা মাইক লাগালে কম ভলিউমে আজান প্রচার করাই উত্তম হতে পারে।
©somewhere in net ltd.
১| ২৪ শে নভেম্বর, ২০২৩ বিকাল ৫:০২
বিষাদ সময় বলেছেন: কে ওই শোনাল মোরে আযানের ধ্বনি।
মর্মে মর্মে সেই সুর, বাজিল কি সুমধুর
আকুল হইল প্রাণ, নাচিল ধমনী।
-কায়কোবাদ