নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

রাজীব নুর

আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।

রাজীব নুর › বিস্তারিত পোস্টঃ

ধর্মকর্ম

২৮ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ রাত ১২:৩৪



সরকারী তৃতীয় শ্রেনীর চাকরি ছেড়ে দিলো সুলেমান।
শহরে এসে বড় দোতলা বাসা ভাড়া করলো। সরকারী চাকরি করে অল্প কিছু অর্থ জমিয়েছে। এই টাকা দিয়ে সারাজীবন চলবে না। তাই সে নতুন পেশা গ্রহণ করলো। বাড়ির সামনে ঝুলিয়ে দিলো সাইনবোর্ড। তাতে ইংরেজি ও বাংলায় লেখাঃ সু খবর এবং অপূর্ব সুযোগ! হিমালয়ের সন্ন্যাসী থেকে প্রাপ্ত অলৌকিক ওষুধ! ভূত-প্রেত, স্বপ্নদোষ, পরকীয়া, যৌন সমস্যা, জমি সংক্রান্ত সমস্যা, পাওনা টাকা আদায়, অবাধ্য স্ত্রী, বানমারা, হাত দেখে ভবিষ্যৎ বলা, নাস্তিক কে আস্তিক করা, বশীকরণ, ভয়, ইত্যাদি দুরারোগ্য ব্যাধির চিকিৎসা করি। এক সপ্তাহের মধ্যে হাতে হাতে ফল না পাইলে মুল্য ফেরত। সাক্ষাতের সময় সকাল নয়টা থেকে, দুপুর একটা পর্যন্ত। প্রোঃ সুলেমান শেখ।

লোকজন সাইনবোর্ড দেখে আর মুচকি মুচকি হাসে।
কোনো খদ্দের আসে না। কিন্তু সুলেমান জানে শহরে ছাগলের অভাব নেই। নির্বোধের অভাব নেই। কুসংস্কার বিশ্বাসী মানুষের অভাব নেই। তারা আসবেই। দেরী হোক, যায়নি সময়। সুলেমান কোট প্যান্ট টাই পরে অপেক্ষা করে। সামনে থাকা চেয়ারে পা তুলে সিগারেট টানে। ছাগলের দল আসবেই। ভূত, প্রেত, জ্বীন, পরী বিশ্বাসী লোকের অভাব নেই। সমাজের বেশির ভাগ মানুষই রুপকথা বিশ্বাস করতে পছন্দ করে।

সুলেমানের প্রথম খরিদ্দার এলো।
সে একজন সাংবাদিক এবং অনলাইনে ব্যবসা করে ধনী হয়েছে। সে কেরানীগঞ্জে একটা বাড়ি কিনেছে। সে বাড়িতে ভূত আছে। সাংবাদিক সাহেব নিজের চোখে ভূত দেখেছেন। সুলেমান শেখ সাত দিনের মধ্যে বাড়ি থেকে ভূত তাড়িয়ে দিলো। সাংবাদিক সাহেব খুব খুশি। এতই খুশি যে সুলেমানকে নিয়ে একটা নিউজ লিখে ফেলল। এরপর সুলেমানের বেশ নাম ডাক হয়ে গেলো। খরিদ্দার আসতে শুরু করলো বর্ষাকালের বৃষ্টির মতো।

সুলেমান তার কাস্টমারদের সাথে নানান রকম রসিকতা করে।
রাজশাহী থেকে এক এমপি এলো। তার ভাগ্নের ভয় পেয়ে দাত কপাটি লেগে গেছে। ডাক্তার দেখানো হয়েছে। কিন্তু তারা কিছুই করতে পারেনি। ভাগ্নে না খেয়ে আছে দুদিন ধরে। ভাগ্নে রাতে ছাদে গিয়েছিলো কি দেখে যেন ভয় পেয়ে দাত কপাটি লেগে গেছে। সব শুনে সুলেমান বলল, এটা কোনো সমস্যাই না। পাচ মিনিটের মধ্যে ঠিক করে দিচ্ছি। এই কথা শুনে এমপি সাহেব তো অবাক! ডাক্তার পারলো না। সুলেমান ভাগ্নেকে পাশের ঘরে নিয়ে গিয়ে কুৎসিত একটা গালি দিয়ে, কসিয়ে দুই থাপ্পড় দিলো। দাত কপাটি খুলে গেলো। এমপি সাহেব সুলেমানের কেরামতি দেখে মুগ্ধ! এমপি সাহেব খুশি হয়ে লাখ টাকা দিয়ে দিলেন।

এক যুবতী মেয়েকে খারাপ জ্বীন ধরেছে।
সেই মেয়ে পুরুষের গলায় কথা বলে। শরীরে তার অনেক শক্তি। জ্বীন যতক্ষণ তার শরীরে থাকে ততক্ষণ কেউ সামনে এলেই তাকে মারতে যায়। সুলেমান মসজিদের ইমাম সাহেবদের সব কথা মনোযোগ দিয়ে শুনলেন। এই ইমামের নিজের মসজিদ আছে, মাদ্রাসা আছে, এতিমখানা আছে। সুলেমান বলল, হুজুর আমি দোয়া করে দিলাম। দূর থেকেই ফু দিয়ে দিলাম। খারাপ জ্বীন সাত দিনের মধ্যে পালিয়ে যাবে। আগামী সাত দিনের মধ্যে মেয়েটার বিয়ে দিয়ে দেন। হুজুর বলল, তাবিজ দিবেন না? সুলেমান বলল, আমার ফুতেই কাজ অলরেডি হয়ে গেছে। ফু'য়ে কাজ না হলে তাবিজ দিতাম।

এক ধনী মহিলা এসেছেন সুলেমানের কাছে।
মহিলা বললেন, তার মেয়ে ধর্মীয় নিয়ম কানুন মানে না। পার্লারে যায়, পার্টিতে যায়, বন্ধুদের নিয়ে জন্মদিন পালন করে, ইংরেজি সিনেমা দেখে, ছেলে বন্ধুদের সাথে মিশে, থিয়েটার করে, গান গায়, লাইব্রেরীতে সময় কাটায়, হিজাব বা বোরখা পড়ে না। মেয়ে বলে, মা আমি প্লেন চালাবো। দেশ বিদেশ ঘুরে বেড়াবো। মহিলা কাদতে কাদতে বলল, আমার খুব শখ ছিলো মেয়েকে মাদ্রাসায় পড়াবো। কিন্তু মেয়ে ভরতি হলো ইংরেজি স্কুলে। অই স্কুলে ভরতি হয়েই মেয়ে বেলাইনে গেলো। সুলেমান সাহেব আমার মেয়েকে ধর্মীয় লাইনে এনে দেন। টাকা কোনো সমস্যা না।

সুলেমান মাত্র সাত দিনের মধ্যে মেয়েটাকে ধার্মিক বানিয়ে দিতে সক্ষম হয়েছে।
মেয়েটা এখন ঘরের মধ্যেও হিজাব পড়ে থাকে। বাইরে গেলে বোরখা পড়ে। অনলাইনে আরবী শিখে। কবরের আজাব থেকে বাচার জন্য সূরা মুলক পড়ে। নানান রকম ধর্মীয় বই পড়ে। হাদীসের বই পড়ে। সারাদিন দোয়াদরুদ পড়তেই থাকে। মেয়েটা এখন জানে ইহকাল কিছুই না। পরকালটাই আসল। হাশরের ময়দানে আরবীতে প্রশ্ন করা হবে, তাই সে মন দিয়ে আরবী ভাষা শিখছে। নামাজে বসে চোখের পানি ফেলে। মধু খায়, কালিজিরা খায়। অসুস্থ হলে হাদীস মোতাবেক নিজের চিকিৎসা করে। মেয়েটা বুঝে গেছে কোরআন হাদীসের বাইরে যাওয়া যাবে না। বাইরে গেলেই দোজকে যেতে হবে।

মন্তব্য ২৮ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২৮) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ রাত ১২:৫৮

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:



আফসোস!

২৮ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১২:৩৫

রাজীব নুর বলেছেন: বড়ই আচানক ঘটনা।

২| ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ রাত ১:১৯

রানার ব্লগ বলেছেন: গল্প জমে গেছে ।

২৮ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১২:৩৭

রাজীব নুর বলেছেন: শুকরিয়া।

৩| ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ রাত ১:৪৫

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন:
- গল্প ভালো হয়েছে।

২৮ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১২:৪০

রাজীব নুর বলেছেন: শুকরিয়া।

৪| ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ রাত ২:৪০

কামাল১৮ বলেছেন: ধর্ম আর কুসংস্কারের ব্যবসা বাংলাদেশে বড় হ্যবসা।

২৮ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১২:৪২

রাজীব নুর বলেছেন: কারন দেশে নির্বোধদের সংখ্যা বেশি।

৫| ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ সকাল ৯:৪০

আলমগীর সরকার লিটন বলেছেন: বেশ মজা করে লেখেছেন কবি দা
ভাল থাকবেন---------------

২৮ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১২:৫৫

রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ।

৬| ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ সকাল ১০:২৫

নাহল তরকারি বলেছেন: কোন ধর্ম কুসংস্কার বিশ্বাস করে না। এই গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র আর কিছু বলদ মার্কা পাবলিকের জন্য ধর্মের বদনাম হয়। পৃথিবীতে সবচেয়ে প্রতিষ্ঠিত জাতি হচ্ছে ইহুদী। তারা জ্ঞান, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, চালাকির দিক থেকে সবার এগিয়ে। তারা কি ধর্ম ত্যাগ করে বিজ্ঞান চর্চা করেছে? না। তারা ধর্ম কর্ম করেই জ্ঞান বিজ্ঞানে এগিয়েছে।

২৮ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১২:৫৭

রাজীব নুর বলেছেন: অ আচ্ছা।

৭| ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ সকাল ১১:১৭

Rahat islam juwel বলেছেন: যখন কেউ ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার,শিক্ষকতার পাশাপাশি নিজের ধর্মচর্চাও করে তখন কিছু শাহবাগীদের প্রচুর জালাপোড়ন শুরু হয়ে যায়।

২৮ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১:০৫

রাজীব নুর বলেছেন: রাইট।

৮| ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১২:৫৪

রানার ব্লগ বলেছেন: Rahat islam juwel বলেছেন: যখন কেউ ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার,শিক্ষকতার পাশাপাশি নিজের ধর্মচর্চাও করে তখন কিছু শাহবাগীদের প্রচুর জালাপোড়ন শুরু হয়ে যায়।

ভুল চিন্তা আপনার ! ধর্ম যে কেউ পালন করতেই পারে কিন্তু তা অন্যের উপর বোঝা আকারে চাপাতে চায় তখনি সমস্যা তৈরী হয় ।

শাহাবাগের আন্দোলন নিয়ে আপনাদের চুলকানীর মূল সমস্যা কি কাদের মোল্লা আর ম্যাশিন ম্যান সায়েদীর বিচার প্রক্রিয়ার কে ত্বরান্বিত করার চেষ্টা নিয়ে?

২৮ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১:০৭

রাজীব নুর বলেছেন: !

৯| ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১:৩৬

ইফতেখার ভূইয়া বলেছেন: আগেও বলেছি, এখনো বলছি, দেশের মানুষ যেমন, দেশও তেমন-ই হবে। ধন্যবাদ।

২৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:৩৯

রাজীব নুর বলেছেন: এই দেশ ও দেশের মানুষ নিয়ে আমি হতাশ। মানুষ গুলো জাস্ট ইতর।

১০| ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ বিকাল ৩:১৫

প্রামানিক বলেছেন: লেখা অনেক ভালো লাগল

২৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:৫৩

রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ স্যার।

১১| ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ বিকাল ৩:৩৩

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:


আগেও পড়া হয়েছিল মনে হয়।

২৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:৫৩

রাজীব নুর বলেছেন: হতে পারে।

১২| ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ বিকাল ৫:২২

ইমরোজ৭৫ বলেছেন: সুন্দর লেখা।

২৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:৫৪

রাজীব নুর বলেছেন: শুকরিয়া ভাইসাহেব।

১৩| ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ রাত ৮:৪৭

মোগল সম্রাট বলেছেন:



ঝড়ে বক মরে আর ফকিরের কেরামতি বাড়ে। আপনার এই ভন্ড কবিরাজের কথা পড়ে একটা গল্প মনে পড়ে গেলো।

আনাদের পাশের থাকায় এক কবিরাজ ছিলো হুজুর কিসিমের। দুর দুরান্ত থেকে মানুষ আসতো তদবির নিতে। কেউ নতুন বাড়ি ঘর বানালে তাকে দাওয়াত করে নিয়ে আসতো জীন পরীর আছর থেকে বাড়ি বন্ধ করার জন্য। একবার এক বাড়ি তাকে নিয়ে যাওয়া হলো রাতে। গিয়ে ঐ বাড়ির বৌকে দেখে কবিরাজের মনে কু মতলব আসলো। রাতে খাবার সময় তাকে ভাতের সাথে এক বাটি গরুর গোশত দেয়া হলো। কবিরাজ সেই গোশতের বাটি থেকে মাত্র দুই টুকরা গোশত খেয়ে বাকি গোশতে মন্ত্র পড়ে ফু দিয়ে রেখেছে। যদি ঐ বাটি থেকে বাড়ির সেই সুন্দরী মহিলা এক টুকরা গোশতও খায় তাহলে বশীভূত হয়ে যাবে। কিন্তু দুঃখের বিষয় সেই গোশতের বাটি থেকে সব গোশত বাড়ির হুলো বিড়ালটা খেয়ে ফেলেছিলো। তারপর গভীর রাতে সেই বিড়ালটা এসে খালি কবিরাজের লেপের নিচে ডোকার চেষ্টা করে। কবিরাজ যতো সরিয়ে দেয় বিড়াল ততোবার লেপের নিচে এসে ডুকে পড়ে। অবস্থা বেগতিক দেখে সেই রাতেই তার সাগরেদকে নিয়ে নাকি সটকে পরেছিলো।


:) :) :)

২৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:৫৬

রাজীব নুর বলেছেন: মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

১৪| ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ রাত ৮:৪৮

মোগল সম্রাট বলেছেন: টাইপোঃ আমাদের পাশের থানায়

২৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:৫৬

রাজীব নুর বলেছেন: বুঝতে পেরেছি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.