নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।
জলিল সাহেব তার স্ত্রীকে মনে মনে কুৎসিত দুটা গালি দিলো।
এই গালি সভ্য সমাজে একজন ভদ্র মানুষ দিতে পারে না। যদি সত্যি সত্যি জলিল তার স্ত্রীর সামনে এই গালি দিতো তাহলে- তার স্ত্রীর নাক, কান দিয়ে অটোমেটিক রক্ত বের হয়ে যেতো। জলিল সাহেব ভদ্র মানুষ। সে অনেক গালি জানলেও সে কখনও কাউকে গালি দেয় নাই। তার স্ত্রী ফাতেমা অনেক উজাইছে। গতকাল সে চিৎকার করে বলল, আমি এখন আগের ফাতেমা নাই। তোমার কপালে লাথথি দিয়ে চলে যাবো। স্বামীকে কেউ এই কথা বলে? ধর্মীয় দিক দিয়ে ভাবলে ফাতেমা অবশ্যই গুনাহ করেছে। সামাজিক ভাবে বিচার করলেও এটা অন্যায়। তার স্ত্রীর অন্যায়ের মাত্রা দিন দিন বেড়েই চলেছে। নিজের গাড়ি, নিজের স্ত্রী এগুলোকে সব সময় কন্টোলে রাখতে হয়। নইলে বিপত্তি ঘটে।
জলিল বিয়ে করেছে প্রায় এক যুগ হয়ে গেছে।
কিন্তু বিয়ের তিন দিনের মাথায় তার মনে হয়েছে ফাতেমাকে বিয়ে করা বিরাট ভুল হয়েছে। গ্রেট মিসটেক। ফাতেমার শরীরে কেমন একটা গন্ধ। গন্ধটা তার ভালো লাগে না। সহবাস করার সময় তার শরীর থেকে গন্ধটা বেশি বের হয়। স্ত্রীর সাথে সহবাস করার আগ্রহ জলিল হারিয়ে ফেলেছে। তবু করতে হয়। খুব অল্প সময়ে জলিল কাজ শেষ করে উলটো দিকে মুখ ফিরিয়ে ঘুমিয়ে যায়। মাসের পর মাস একই ব্যাপার। ফাতেমার জন্য জলিল সাহেব দুঃখী। নিতান্ত সে ভদ্র মানুষ বলে চুপ করে সংসার করে যাচ্ছে। তার জায়গায় অন্য কেউ হলে তালাক দিয়ে চলে যেতো। বিয়ের সময় ফাতেমা ছিলো ভাজা মাছ উলটে খেতে জানে না, এই টাইপ। আর এখন সে পুরো বদলে গেছে। চিৎকার করে স্বামীর সাথে কথা বলে। ধমক দেয়। একেই বলে কলি যুগ।
আজকাল ফাতেমা জলিলকে ভয় দেখায়-
তোমাকে তালাক দিয়ে চলে যাবো। মনে মনে জলিলও তালাক চায়। কিন্তু ভদ্রতার খাতিরে চুপ করে থাকে। পরিবার ও সমাজের ভয়ে জলিল চুপ থাকে। মাঝে মাঝে জলিলের খুব ইচ্ছা করে একটা মেয়ের সাথে সম্পর্ক করতে। অলরেডি একটা মেয়ে জলিলের সাথে সম্পর্কে জড়াতে চায়। মেয়েটার নাম রোজিনা। ভালো স্বাস্থ্য। রোজিনা বিয়ে করেছে। তার দুটা ছেলেমেয়ে আছে। স্বামী বিদেশ থাকে। রোজিনা বড় একা। রাতে তার ঘুম আসে না। মাঝে মাঝে জলিল রোজিনার সাথে ফোনে কথা হয়। বড় ভালো লাগে। কন্ঠটা কি সুন্দর। দেখতেও সুন্দর। জলিলের খুব ইচ্ছা হয়- রোজিনার সাথে সময় কাটাতে। তাকে নিয়ে সিনেমা দেখতে। অন্ধকারে এবং পেছনের সিটে বসবে। দুজন দুজনের হাত ধরে রাখবে। তাকে নিয়ে সমদ্র অথবা পাহাড়ে বেড়াতে যেতে।
যতদিন যাচ্ছে, ফাতেমাকে তত অসহ্য লাগছে।
জলিল কি করবে? তালাক দিতে পারলে ভালোই হতো কিন্তু সেটা সম্ভব না। তার নিজের দুটা সন্তান আছে। নিজের সন্তানকে সে অবশ্যই ভালোবাসে। রোজিনাকে সে হয়তো ভালোবাসে না। কিন্তু ঘর সংসার ঠিকই টেনে নিয়ে যাচ্ছে। বাজার করছে। ছেলেমেয়েকে স্কুলে দিয়ে আসছে, নিয়ে আসছে। আজকাল ফাতেমার সাথে একই বিছানায় ঘুমাতে ইচ্ছা হয় না। হা করে ঘুমায়। দেখতেই বিশ্রী লাগে। মাঝে মাঝে ঘুমের মধ্যে জলিলের গায়ে একটা পা উঠিয়ে দেয়। গাবদা পা। এই পা যার উপর পড়বে তার খবর আছে। গায়ে কেমন একটা বোটকা গন্ধ। আবার নাক দিয়ে ফসফস শব্দ বের হয়। আরাম করে ঘুমাতেও পারে না জলিল। যাকে ভালো লাগে না, তার সাথে থাকা যে কি কষ্টকর! দুটা বাচ্চা না থাকলে জলিল অনেক আগেই ফাতেমাকে বিদায় করে দিতো।
ফাতেমা বিয়ের সময় কত সহজ সরল ছিলো।
সামান্য রাস্তাও পার হতে পারতো না। এখন সে পুরো ঢাকা শহর ভেজে খেয়ে ফেলতে পারে। এই কথা ফাতেমা নিজেই স্বীকার করে, আমি আর সেই আগের ফাতেমা নাই। বিয়ের পর পর জলিল দেরীতে বাসায় ফিরলে ফাতেমা না খেয়ে বসে থাকতো। এখন সে খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। আজিব! স্বামী ফিরলো কিনা, রাতে খেলো কিনা সেই খোজ নেয় না। কঠিন এক শিক্ষা দিতে হবে ফাতেমাকে। সকালবেলা জলিল ঘুম থেকে উঠেই বলল, তুমি চলে যাও। তোমাকে আমার দরকার নাই। তোমাকে আমি সহ্য করতে পারছি না। ফাতেমা কোনো কথা না বলে তার দুই বাচ্চা নিয়ে বাসা থেকে বের হয়ে গেলো। তখন ফাতেমার চোখ ভেজা দেখা যাচ্ছিলো। জলিল অফিসে গেলো। রাতে হোটেল থেকে খেয়ে বাসায় ফিরলো। এভাবে তিন মাস পার হয়ে গেলো। সময় কত দ্রুত যায়!
জলিল একদিন তার শ্বশুর বাড়ি গেলো।
কারন, বাচ্চা দুটাকে দেখার জন্য তার কলিজা ছিড়ে যাচ্ছে। বাচ্চারা বাবাকে দেখে ঝাপিয়ে পড়লো। বাচ্চাদের জড়িয়ে ধরতেই জলিল সাহেবের চোখ ভিজে উঠলো। ফাতেমা টেবিলে খাবার দিলো। জলিল আরাম করে খেলো। খাওয়ার পর বিশ্রাম নিতে গিয়ে ঘুমিয়ে গেলো। ঘুমের মধ্যে জলিল খুব সুন্দর একটা স্বপ্ন দেখলো। স্বপ্নটা এই রকমঃ জলিল আর ফাতেমার নতুন বিয়ে হয়েছে। তারা পাহাড়ে বেড়াতে গিয়েছে। চারিদিকে কুয়াশা। কুয়াশার ভিড়ে জলিল হারিয়ে যায়। ফাতেমা জলিলকে খুজে পায় না। ফাতেমা এদিক ওদিক ছোটাছুটি করছে। কিন্তু জলিলকে খুজে পাওয়া যাচ্ছে না। ফাতেমা কান্না করছে। একটু পর জলিল ফাতেমার কাছে এসে বলল, কান্না করছো কেন? আমি তোমার জন্য মিষ্টি পান আনতে গিয়েছিলাম। ফাতেমা জলিলকে জড়িয়ে ধরে বলল, আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি। স্বপ্নটা দেখে জলিল খুশি হলো। কারণ, এরকম একটা ঘটনা অনেক আগে সত্যিই ঘটেছিলো।
জলিলের ঘুম ভাঙল ভর সন্ধ্যায়।
ছেলেমেয়েরা তাকে ঘিরে রেখেছে। বাচ্চাদের দেখে জলিলের অনেক আনন্দ হলো। ফাতেমা বিকেলের নাস্তা দিয়েছে। সে অনেক কিছু তৈরি করেছে। জলিল নাস্তা খেলো। আরাম করে চা খেলো। তারপর ফাতেমাকে বলল, আমাকে ক্ষমা করো। আমি নির্বোধ। আমি মাথা মোটা। আমি তোমাকে কষ্ট দিয়েছি। অপমান করেছি। অবহেলা করেছি। বাকি জীবনে আর এরকম হবে না। নো নেভার। আমি কথা দিলাম। আমি কথা দিলে, কথা রাখি। ফাতেমা কাঁদছে। জলিল তার মোবাইল থেকে রোজিনা নামের একজনের নাম্বার ডিলিট দিয়ে দিলো। ফাতেমা ব্যাগট্যাগ গুছিয়ে স্বামীর সাথে চললো। বাচ্চারা ভীষন খুশি।
ব্যাক্তিগতভাবে আমি চাই ফাতেমা আর জলিল ভালো থাকুক। ভালো থাকুক তাদের বাচ্চারা। মূলত স্বামী স্ত্রী দুজনের মধ্যে তৃতীয় ব্যাক্তি প্রবেশ করলেই দেখা দেয় নানান রকম অশান্তি। এই তৃতীয় ব্যাক্তি থেকে সাবধান। কারো জীবনে যেন ভুলেও কোনো ভুল নারী বা পুরুষ প্রবেশ করতে না পারে।
১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ বিকাল ৩:৩৪
রাজীব নুর বলেছেন: বাঙ্গালীদের সমস্যা গুলো রক্তের সাথে মিশে গেছে।
কাউন্সিলিং এ কাজ হবে না।
২| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ভোর ৬:১৯
অনামিকাসুলতানা বলেছেন: গলপটা পড়ে ভাল লাগলো ।
১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ বিকাল ৩:৫০
রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ।
৩| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সকাল ৯:৩৪
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
এটা আগেও একবার পোস্টাইছিলেন।
আজ আবার পোস্টাইিলেন।
খারাপ না।
সাধারণ মানুষের জীবন তো এমনই ।
আফসোস!
১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ বিকাল ৩:৫১
রাজীব নুর বলেছেন: স্যরি বড় ভাই।
এটা নতুন লেখা। একেবারে নতুন।
৪| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সকাল ১১:২২
এম ডি মুসা বলেছেন: এটাই সমস্যা ৩য় ব্যক্তির আগমন,
সবকিছু নষ্ট করে দেয়।
১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ বিকাল ৩:৫১
রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ। ভালো থাকুন।
৫| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সকাল ১১:২৬
ধুলো মেঘ বলেছেন: ভালো লাগলোনা। এরকম বাস্তবে হলে ভালো লাগে - গল্পে না। গল্পের জলিলেরা নিজের আর রোজিনা দুইয়েরই সংসার নষ্ট করে নিজে মজা নেয়।
১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ বিকাল ৩:৫৩
রাজীব নুর বলেছেন: রাইট কথা।
৬| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৪
নয়ন বড়ুয়া বলেছেন: সুন্দর, সহজ, সরল গল্প...
১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ বিকাল ৩:৫৩
রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ। ভালো থাকুন।
৭| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ১০:০৩
সত্যপথিক শাইয়্যান বলেছেন:
এন্ডীংটা খুব ভালো হয়েছে।
ঝগড়া-বিবাব্দ আমার ভালো লাগে না।
১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ১২:৪৯
রাজীব নুর বলেছেন: আমারও ঝগড়া বিবাদ ভালো লাগে না।
আপনি আমি শান্তি প্রিয় মানুষ।
৮| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ২:৫৩
সাহাদাত উদরাজী বলেছেন: াংলাদেশে জলিল সাহেব্দের সংখ্যা অনেক।
©somewhere in net ltd.
১| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ১:৪০
সোনাগাজী বলেছেন:
এই ধরণের সমস্যায় একজন এডভাইজরের কাছে যাওয়া দরকার।