নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।
ইদানিং রাতে শশীভূষনের একেবারেই ঘুম আসে না।
স্ত্রীও বেঁচে নেই যে রাত জেগে গল্প করবেন। দুজন মিলে চা খাবেন। তার স্ত্রী অপলা ছিল তার বন্ধু। অপলা’র এত তাড়াতাড়ি মরে যাওয়া ঠিক হয়নি। খুব ভালো বন্ধু অপলা। যে বন্ধুর কাঁধে মাথা রেখে নিশ্চিন্ত হওয়া যায়। ইচ্ছা করলে কান্নাও করা যায়। এখন সে বড্ড একা। একমাত্র মেয়ে অলকা সেও লেখা পড়তে করতে চলে গেলো দেশের বাইরে। এখন মধ্যে রাত্রে চা খেতে ইচ্ছা করলেও বানিয়ে দেবার কেউ নেই। শশীভূষন চা বানাতে পারেন না। অনেক বার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছে। বৃদ্ধ বয়সে একা থাকা দারুন কষ্টের। তখন সারাক্ষন আশেপাশে কেউ না থাকলে দুঃখবোধ হয়।
শশীভূষনের সময় কাটে না।
দিনের বেলা এদিক সেদিক যাওয়া যায়। এ পাড়ায় একটা লাইব্রেরী আছে, সেখানে বই নিয়ে বসলে সময় কিভাবে চলে যায় টের পাওয়া যায় না। রাতটা পার করাই বড্ড মুশকিল। রাতের বেলা কোথাও যাওয়া যায় না। সময় তো পার করতে হবে তাই শশীভূষন ক্লান্তিহীন ভাবে তার ডায়েরীতে লিখে চলেছেন- ‘ভারতের মানুষ সহজেই বুক বাজিয়ে বলতে পারতেন তাঁদের ইতিহাসও মিশর, ইউনান আর চীনের সভ্যতার মতোই হাজার হাজার বছরের পুরনো। সমস্ত পৃথিবী জুড়েই দু’টি ভাগে বিভক্ত হয়ে আছে মানুষ। তাদের একটি দল হচ্ছে শাসক শ্রেণী, অন্যটি শোষিত শ্রেণী। পৃথিবীর আদিতে এই সব শ্রেণী বিভাজ্যতা ছিল না। কারণ তখন রাজা প্রজার ভেদ বুঝতে পারতো না মানুষ। পশ্চিমা দেশগুলো সভ্যতার সংগ্রামের ইতিহাস দীর্ঘদিনের।
শশীভূষনের লেখা থামালেন।
বাইরে উথাল পাথাল জোছনা। এখন তার মধ্যে কবিতা লেখার ভাব এসেছে। কলেজে পড়ার সময় তিনি প্রচুর কবিতা লিখতেন। পত্রিকাতে তার কবিতা ছাপানো হতো। তার কবিতার মুগ্ধ পাঠক ছিলেন অপলা, তার স্ত্রী। অবশ্য সেসব কবিতা তিনি জমা করে রাখেন নি। যদি কবিতা গুলো জমা করে রাখতেন তাহলে হাজার খানেক কবিতা হতো। বিয়ের আগে অপলার সাথে শশীভূষনের কখনও দেখা হয় নাই। পূজোর ছুটিতে কলকাতা থেকে বিক্রমপুর যায় শশীভূষন। তখন তার দাদা বললেন, আগামীকাল তোর বিয়ে। ব্যস বিয়ে হয়ে গেলো। অপলা দেখতে কেমন সেটাও তিনি জানতেন না। তাদের সময় মেয়ে দেখাদেখির এত চল ছিলো না। শশীভূষন ব্যলকনিতে গিয়ে কিছুক্ষন রাতের আকশের দিকে তাকালেন তারপর তিনি কবিতা লিখতে শুরু করলেন।
’অদৃশ্য কুয়াশায় দেখা যায় না ইষ্টিশন মাস্টারের ঘর
ওয়েটিং রুমে বসে চোখে ভাসে তোমার কপালের টিপ
তুমি তো জানো- আমি আমার ইচ্ছা মতো লিখি
যেখানে ইচ্ছা কমা বসাই, যেখানে ইচ্ছা দাড়ি দেই।
বাড়িয়ে রাখো তোমার হাত- সময় মতো ধরে নিবো।
এতটুকু লিখে কবিতা আর এগোয় না।
শিশীভূষন মাথা চুলকায়। না নতুন কোনো শব্দ আসছে না। অথচ তিনি নিজের কাছে জিদ ধরে বসে আছেন কবিতাটা শেষ না করে ঘুমাতে যাবেন না। দুটা সিগারেট শেষ করলেন। না এলো না। নতুন কোনো শব্দ মাথায় এলো না। তার ইচ্ছা করছে মুঠো ভরে নিজের মাথার চুল টানতে। তিনি তাই করতে যাচ্ছিলেন। হঠাত তার মনে হলো- তার মাথায় চুল নেই। সেই কবে টাক পরে গেছে। তবে অল্প কিছু চুল অবশিষ্ঠ আছে এখনও মাথার পেছনে। ৫২'তে তার মাথায় অনেক চুল ছিলো। ঝাকড়া ঝাকড়া চুল। তখন তরুন বয়স। ৭১ এর পর তার চুল ঝড়তে শুরু করে। সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখতেন বালিশে কত চুল। প্রতিটা চুলকে তার এক একটা সৈনিক বলে মনে হতো। সেই সময় ধারাবাহিকভাবে প্রতিদিন তার সৈনিকের পতন হতে থাকলো।
০৫ ই মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৪০
রাজীব নুর বলেছেন: একাকীত্ব দারুন যন্ত্রনাময়।
২| ০৫ ই মার্চ, ২০২৪ সকাল ১১:০৯
এম ডি মুসা বলেছেন: শশীভূষণ আমাদের এলাকার নাম।
০৫ ই মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৪০
রাজীব নুর বলেছেন: বাহ!
৩| ০৫ ই মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:১০
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
জীবন অনেক সময় খুব কঠিন আর বোঝা হয়ে দাঁড়ায়।
আফসোস!
০৫ ই মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৪৩
রাজীব নুর বলেছেন: আফসোস করে করেই কি জীবন পার করবেন?
৪| ০৫ ই মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৪৭
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
বাংলাদেশে বেশিরভাগ মানুষেরই আফসোস করে জীবন যায়।
০৬ ই মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৬
রাজীব নুর বলেছেন: এটা দরিদ্র দেশে জন্ম নেওয়ার ফল।
৫| ০৫ ই মার্চ, ২০২৪ রাত ১০:৫৫
অধীতি বলেছেন: শেষ লাইনটা কি আগে মাথায় আসছিল?
আমার এমন হয়। সুন্দর একটা লাইন মাথায় আসে তারপরে সেটা দিয়ে আস্ত একটা গল্প বা কবিতা বলে দেই।
০৬ ই মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৬
রাজীব নুর বলেছেন: শেষ লাইনটা মূলত আমার না। শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের।
৬| ০৬ ই মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৪৮
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
বাংলাদেশ দরিদ্র ছিল না।
দরিদ্র ছিল এই দেশের মানুষের নেতাদের মন মানসিকতা।
এলিট শ্রেণীর মানুষের মন মানসিকতা।
এই দেশের বেশিরভাগ মানুষই কালো ক্রমে অসৎ হয়ে গেছে।
এখন কারো মধ্যে সততা বলতে নেই ।
যারা সৎ আছে তারা অনেকটাই সুযোগের অভাবে সৎ আছে।
০৭ ই মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:৩১
রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১| ০৫ ই মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৯
সোনাগাজী বলেছেন:
বিশ্বের শতকরা ২০ ভাগ মানুষ একাকিত্বে ভোগেন।