নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

রাজীব নুর

আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।

রাজীব নুর › বিস্তারিত পোস্টঃ

জীবনের গল্প- ৯১

১৯ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:১৩

ছবিঃ আমার তোলা।

১। নাম তার হারুন।
অনেক কষ্টে জগন্নাথ থেকে লেখাপড়া শেষ করেছে। দরিদ্র পরিবারে জন্ম নিয়ে লেখাপড়া শেষ করা চারটেখানি কথা নয়। লেখাপড়া শেষ করে একমি ওষুধ কোম্পানীতে চাকরি পায়। টানা পনের বছর হারুন একমি কোম্পানীতে চাকরি করে। লাখ লাখ টাকার ওষুধ চুরী করে হারুন এখন বেশ ধনী হয়েছে। সেম্পল ওষুধ যা পেতো পুরটাই খোলা বাজারে বিক্রি করে দিতো। এভাবে হারুন ঢাকায় একটা ফ্লাট কিনেন। দুইটা রেডিমেট দোকান কিনেন। প্রতিমাসে ৮০ হাজার টাকা দোকান ভাড়া পায়। সুদে টাকা খাটাচ্ছে। চাকরি থেকে অবসর নিয়ে হারুন এখন বউ বাচ্চা নিয়ে ভালো আছে। সে তার ছেলেমেয়েদের শিক্ষা দেয়, চুরী করা ভালো না। জীবনে সৎ থাকতে হবে। হারুনকে আমি চিনি। একদিন হারুন তার জীবনের গল্প আমাকে সব বলে দেয়।

২। নাম তার মান্নান।
সে ঢাকা এসে জগন্নাথে ভরতি হয়। দরিদ্র পরিবারের সন্তান। মেসে থাকতো, কিন্তু তার কোনো টাকা পয়সা লাগতো না। মান্নান পুরো মেসের দায়িত্ব নিয়ে নেয়। সবার কাছ থেকে ভাড়া নিয়ে, বাড়িওলাকে ভাড়া সে দিতো, বাজার সে করতো। এভাবে সে অন্যদের টাকায় নিজে চলতো। যাইহোক, মান্নান এক মেসের সদস্যের মাধ্যমে অটোবি ফার্নিচারে চাকরি পেয়ে যায়। টানা পাচ বছর চাকরি করে। এবং চুরী করে। তার গ্রামের বাড়ি সুন্দরবনের কাছে। মান্নানের গ্রামের বাড়িতে- অটোবি ফার্নিচারের খাট, টেবিল, সোফা সবই আছে। অতি দক্ষতার সাথে চুরী করেছে। এমনকি সে উত্তরাতে চার কাঠা জমি রেখেছে। এরপর চাকরি নেয়, আকতার ফার্নিচারে। সেখানেও সে তুমুল লুটপাট করে। বর্তমানে সে হাতিল ফার্নিচারে চাকরি করছে। উত্তরাতে বাড়ির কাজ শুরু করেছে। চুরী না করলে এই শহরে বাড়ি ভাড়া দিয়ে বউ বাচ্চা নিয়ে টিকে থাকা যাবে না।

৩। তার নাম মাহফুজ।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লেখাপড়া করেছে। দরিদ্র পরিবারের সন্তান। অনেক গুলো ভাইবোন। মাস্টার্স শেষ হবার আগেই মাহফুজ একটা চাকরি পেয়ে যায়। ভালো চাকরি। বড় কোম্পানী। নিজের যোগ্যতা ও দক্ষতা দিয়ে সে একের পর এক প্রমোশন পেতে থাকে। সৎ পথে থেকে সে জমি কিনেছে। গাড়ি কিনেছে। দেশ বিদেশ ঘুরে বেড়াচ্ছে। মাহফুজ তার পরিবার নিয়ে খেয়েপরে সুন্দর ভাবে জীবনযাপন করছে। সে নিজের গাড়িতে করে অফিসে যায়। নিজের গাড়ি নিজেই চালায়। কোনো অহংকার। মাহফুজকে দেখে বুঝলাম সৎ পথে থেকেও গাড়ি বাড়ি করা যায়। উন্নত জীবনযাপন করা যায়। হওয়া যায় মানবিক ও হৃদয়বান মানুষ। অবশ্য একথা সত্য সবাই সৎ পথে জীবনযাপন করতে পারে না। সৎ পথে থেকে গাড়ি বাড়ি বা উন্নত জীবনযাপন করা সম্ভব না। এই সমাজের লোকজন শুধু টাকা দেখে। সেই টাকা কিভাবে ইনকাম করা হয়েছে সেটার খোজ নেয় না।

৪। আবুল বাশার। দরিদ্র পরিবারের সন্তান।
বাশার বুঝে গিয়েছিলো, ভালো রেজাল্ট করতে পারলেই সামনে আছে অফুরন্ত দ্বার। প্রচুর পড়াশোনা করতো বাশার। আমি অবাক হয়ে দেখতাম। বিদ্যুৎ চলে গেলে আমরা বাইরে আড্ডা দিতাম। কিন্তু বাশারকে দেখতাম মোমবাতি জ্বালিয়ে পড়তে। সত্যি সত্যি বাশার ভালো রেজাল্ট করে। এবং ফেনী জেলা স্কুলের ইংরেজির শিক্ষক হিসাবে চাকরি পেয়ে যায়। ধীরে ধীরে ফেনী জেলা স্কুলের বাশার একজন জনপ্রিয় শিক্ষক হয়ে যায়। অন্য শিক্ষকেরাও বাশারকে খুব পছন্দ করতে শুরু করলো। সকল ছাত্রছাত্রী বাশার স্যারের কাছে পড়তে চায়। বাশার চমৎকার পড়ায়। বাশার স্যার বাসায় ব্যাচে ছাত্রছাত্রীদের পড়াতে শুরু করলেন। এখন বাশার স্যারের অবস্থা ভালো। বাশার স্যার টাকা জমান না। সময় ও ছুটি পেলে দেশ বিদেশ ঘুরে বেড়ান। বাশার স্যারের সবচেয়ে ভালো দিক হচ্ছে- দরিদ্র পিতা মাতার মেধাবী সন্তানকে ফ্রি পড়ান।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৪১

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:


সব চাকরিতে কি চুরি আছে ?
আবার সবাই কি চুরি করার সুযোগ পায় ?
আবার সবাই সুযোগ পেলেও কি সেটা কাজে লাগাতে পারে ?
এরকম নানান বিষয় জড়িত আছে।
চুরি করা এত সহজ না রে ভাই!


২| ১৯ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১:৫৯

রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ) বলেছেন: মানুষের সবসময় অনেক বড় এক সমস্যা চুরি করলে সে মনে করে, ব্যাপারটা অপরাধ হচ্ছে না। এটা তার প্রাপ্য, সে কষ্ট করে ব্যাপারটা অর্জন করছে।

যেসময় অনুশোচনাবোধ আসে, সে সময় চুরির টাকা দিয়ে হজ্জ করে এসে হাজী হয়ে যায়। যেন সব পাপ মাফ হয়ে গেছে।

কিন্তু আসলে কি মানসিক প্রশান্তি এরা কখনও পায়?

৩| ১৯ শে মার্চ, ২০২৪ ভোর ৫:২৮

সত্যপথিক শাইয়্যান বলেছেন:


সমাজের বাস্তব কাহিনী। এরকম মানুষ আমাদের নিজের মাঝে এবং চারপাশে আছে।

৪| ১৯ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ১০:৪১

আলমগীর সরকার লিটন বলেছেন: ভাল লেখেছেন কবি রাজীব দা
ভাল থাকবেন------

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.