নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

রাজীব নুর

আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।

রাজীব নুর › বিস্তারিত পোস্টঃ

আজকের ডায়েরী- ১৬১

৩০ শে আগস্ট, ২০২৫ দুপুর ১:৪৫



অনেকদিন মাটির পথে খালি পায়ে হাঁটি না।
অনেকদিন সবুজ ঘাসের উপর হাঁটি না। শহরে মাটি নাই। চারিদিকে পাকা দালান। অথচ কয়েকদিন ধরে হাঁটতে ইচ্ছা করছে মাটির রাস্তা দিয়ে। সবুজ ঘাসে ভরা মাঠে ফুটবল খেলতে ইচ্ছা করছে। যদি বৃষ্টি হয়- তাহলে তো কথাই নেই। কতদিন বৃষ্টিতে ভিজে ফুটবল খেলি না। ফুটবল আমার পছন্দের খেলা ছিলো। বাকি জীবনে ফুটবল খেলতে পারবো কিনা জানি না। আমাদের গ্রামের উঠানটা বেশ বড়। এবড়ো থেবড়ো নয়। সমান। প্রতিদিন দুইবেলা ঝাড়ু দেওয়া হয় বলে- পরিস্কার পরিচ্ছন্ন। জোছনা রাতে পাটি বিছিয়ে আমরা ফুপাতো ভাইবোনরা সব গল্পে মেতে উঠতাম। আমার দাদার ব্যাক্তিত্ব ছিলো। কথা বলার বাচনভঙ্গি সুন্দর ছিলো। দাদা এসে ভূরের গল্প বলতেন। সবাই ভয়ে জড়সড় হয়ে থাকতাম। সেই দিনগুলি কোথায় হারিয়ে গেলো!

আজকাল আমার ইচ্ছা করে-
সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে- রঙ চা খাই। সাথে চাল ভাজা। বহুদিন খাই না- চাল ভাজা সাথে লাল চা। ছোটবেলায় দেখেছি দাদা বাড়িতে সবাই সকালবেলা লাল চা আর চাল ভাজা খেতো। যে ঘুম থেকে উঠতে দেরী করতো সে চা আর চাল ভাজা পেতো না। অনুরোধ করেও লাভ হতো না। দশটার দিকে আসতো আসল নাস্তা। খিচুড়ি বা খুদের চালের ভাত। সাথে অনেক রকমের ভর্তা। আজকাল খুদের চালের ভাত অনেক রকমের ভর্তা দিয়ে খেতে ইচ্ছা করছে। মাটির রাস্তা দিয়ে হেঁটে বাজারে যেতে মন চায়। গ্রামের বাজার মানেই টাটকা দেশী মাছ। যে মাছ এসেছে আশেপাশের খাল বিল থেকে। একটা নদীর পাঙ্গাশ খেতে ইচ্ছা করছে অনেকদিন ধরে। নদীর মাছের স্বাদই অন্য রকম। ঢাকা শহরে সব চাষের মাছ। অসহ্য।

যে-দিন বা সময় চলে যায়- সেটা আর ফিরে আসে না।
স্কুল ছুটির ঘন্টা পড়ার সাথে সাথেই বৃষ্টি শুরু হতো। বৃষ্টি থামার অপেক্ষা না করে ভিজতে ভিজতে বাসায় ফিরতাম। আমার ইচ্ছা করে বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে বাসায় ফিরি। বাসায় ফেরার পর মায়ের চিল্লাচিল্লি। জ্বর আসবে। আমি রাত জেগে মাথায় পানি দিতে পারব না। সেবা করতে পারবো না। মা বকতে থাকতো! কে শোনে মায়ের কথা। আমি বৃষ্টিতে ভিজতে থাকতাম। আমার আগের দিনে, আগের সময়ে ফিরে যেতে মন চায়। এখন সব কিছু বড্ড জটিল কুটিল হয়ে গেছে। আমার দম বন্ধ হয়ে গেছে। যুগের সাথে আমি যেন তাল মিলিয়ে চলতে পারছি না। নিজেকে সেকেলে মনে হয়। যেন আমি আধুনিক হতে পারিনি। এযুগের ছেলেমেয়েদের সাথে আমার মতের মিল হয় না। এরা আমাকে বুঝে না। আমিও এদের বুঝি না।

গ্রামে মেলা বসে, সপ্তাহে একদিন হাঁট হয়।
অনেক বছর হয়ে গেলো- গ্রামের মেলা দেখি না। গ্রামের মেলাতে আমিত্তি পাওয়া যায়। এই আমিত্তি ঢাকায় পাওয়া যায় না। সেই আমিত্তি খেতে মন চায়। গ্রাম দেশের হাঁট আমি খুব উপভোগ করি। টাটকা শাক সবজি পাওয়া যায়। দেশী মাছ পাওয়া যায়। চিড়া মুড়ি থেকে শুরু করে মাটির খেলনা সব কিছুই পাওয়া যায়। বৈশাখে মাসে গ্রামে নৌকা বাইচ হয়। আহ দারুন। ঢাকায় হয় কনসার্ট। টিকিট কেটে গান শুনতে হয়। ফালতু গান। স্টেজের সামনে ছেলেমেয়েরা কুৎসিত ভাবে নাচে। গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানে ডিজে পার্টি হয়। এইসব ডিজে পার্টি থেকে গ্রামের বিয়েতে কাঁদা মাটি দিয়ে যে খেলা হয়, সেটা অনেক সুন্দর।

অতীত নিয়ে হায়-আফসোশ করে লাভ নাই।
অতীত ফিরে আসে না। এটাই জীবন। অতীতের কথা ভেঙ্গে নস্টালজিক হবো। সময় কাটাবো। নতুন প্রজন্মকে অতীতের গল্প বলব। তারা অবাক হবে! বিস্ময় প্রকাশ করবে। অতীতে ফিরে যাবার যন্ত্র কি কোনোদিন আবিস্কার হবে? আবিস্কার হলে ভালো হত। চলে যেতাম ১৭৫৭ সালে। চলে যেতাম ৫৭০ সালে। চলে যেতাম ১৯৭১ এ। যাইহোক, আজ একটা বিয়ের দাওয়াত আছে। আমাদের পাশের বাসায় বিয়ে হচ্ছে। তারা পুরো বাড়ি আলো দিয়ে সাজিয়েছে। গত মাসেও পাশের বাসায় একটা বিয়ে হয়েছে। এমাসেও একটা বিয়ে হচ্ছে। সেই একই কমিউনিটি সেন্টারে। একই বাবুর্চি। একই রান্না।

মন্তব্য ৭ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (৭) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে আগস্ট, ২০২৫ দুপুর ২:২০

সাইফুলসাইফসাই বলেছেন: চমৎকার লেখা পড়ে ভালো লাগলো

৩০ শে আগস্ট, ২০২৫ বিকাল ৩:১০

রাজীব নুর বলেছেন: ওকে। ধন্যবাদ।

২| ৩০ শে আগস্ট, ২০২৫ দুপুর ২:২৩

সৈয়দ কুতুব বলেছেন: লেখা ভালো হয়েছে।

৩০ শে আগস্ট, ২০২৫ বিকাল ৩:১০

রাজীব নুর বলেছেন: শুকরিয়া।

৩| ৩০ শে আগস্ট, ২০২৫ বিকাল ৩:৪৩

ইমরান৯২ বলেছেন: লেখাটা পরে অনেক ভাল লাগলো

৪| ৩০ শে আগস্ট, ২০২৫ বিকাল ৩:৫১

জেনারেশন একাত্তর বলেছেন:




চট্টগ্রামের সব পুকুরে মাছের চাষ করে পুকুর নষ্ট করে ফেলেছে।

৫| ৩০ শে আগস্ট, ২০২৫ রাত ৯:৫৯

কামাল১৮ বলেছেন: আপনি কতো বছর বয়সে শহরে চলে আসেন।আমি এসএসসি পাশ করে মুন্সি গঞ্জ চলে আসি।ঢাকায় স্থায়ী ৭২ এর পর থেকে।গ্রামে বেড়ে উঠা সবার জীবন প্রায় একই রকম।বিশেষ করে দুই বাংলায়।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.