![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।
ঢাকা শহরের সব রাস্তার মোড়ে মোড়ে চায়ের দোকান আছে।
একদিন দুপুরবেলা হঠাত আকাশ কালো করে ঝুম বৃষ্টি নামল। আমি ভিজতে ভিজতে রাস্তার পাশের এক দোকান থেকে এক কাপ চা খেলাম। খুব মুগ্ধ হলাম। আশ্চর্য ব্যাপার সাথে সাথে আমার রবীন্দ্রনাথের কথা মনে পড়ল! রবীন্দ্রনাথ কি কখনও বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে রাস্তার পাশের দোকান থেকে চা খেয়েছেন? খেলেও আমার মতো মুগ্ধ কী কখনও হয়েছেন! যাইহোক, আমাদের রবীন্দ্রনাথের জীবনে কিছু ভয়ংকর অভিজ্ঞতা হয়েছিল। আসলে আমাদের সবার জীবনেই কম বেশি ভয়ংকর অভিজ্ঞতা হয়ে থাকে। আমার জীবনের কয়েকটা ভয়ংকর অভিজ্ঞতা আছে।
১। অফিসের কাজে একবার ফরিদপুর গিয়েছিলাম।
উঠেছি ডাকবাংলোতে। সালতা নামে এক গ্রামে গিয়েছিলাম। ফিরতে ফিরতে অনেক রাত হয়ে গেলো। একজন বাইকে করে ডাকবাংলোয় পৌছে দিবেন। শীতের রাত। বাইক চলছে হুহু করে। আমি শীতের জামা পড়া আছি। তবু শীতে কাপছি। ভাগ্য খারাপ রাস্তায় হটাৎ বাইক নষ্ট হয়ে গেলো। চারিদিকে অন্ধকার। কিছুতেই বাইক ঠিক করা গেলো না। বাইক চালক বলল, অনেকখানি পথ চলে এসেছি। আর দশ মিনিট হেটে গেলেই আপনি বাংলো পেয়ে যাবেন। আমি আল্লাহর নাম নিয়ে হাটা শুরু করলাম। পথ আর শেষ হয় না। শিয়াল ডাকছে। কুকুর ডাকছে। ভয়ে আমি এই শীতের মধ্যেও ঘামতে শুরু করেছি। আমি পথ হারিয়ে ফেলেছি। অনেক গুলো কুকুর আমার পেছনে এসে জড়ো হয়েছে। আমি ভীতু মানুষ। ভয়ের মুখোমুখি হলেই আমার দম বন্ধ হয়ে আসে।
২। ভাটিয়াপাড়া গিয়েছি অফিসের কাজে।
তখন আমি এক পত্রিকা অফিসে কাজ করি। রাতে ভাটিয়াপাড়া গিয়েছি ডিনার করতে। ভাটিয়াপাড়াতে কিছু খাওয়ার হোটেল প্রায় সারারাত খোলা থাকে। রাত বারোটায় খাওয়া শেষ হলো। রিকশা নেই। হেটে ফিরতে হবে। আমার সাথে আরো কয়েকজন ছিলেন। গ্রামের ভিতর দিয়ে হেটে ফিরছিলাম। আমার মনে আছে পোনা গ্রামে আসা মাত্রই আমাদের ঘিরে ফেলা হলো। গ্রামবাসী আমাদের ঘিরে ধরেছে। তাদের ধারণা আমরা ডাকাত। ডাকাতি করতে গ্রামে এসেছি। আমাদের মধ্যে একজন দৌড়ে পালাতে গিয় ধরা খেয়েছে। আমাকে ইচ্ছে মতো মারছে। আমার জামা কাপড় ছিড়ে গেছে। আমি বলছি, দেখুন আমি চোর ডাকাত নই। এই যে আমার আইডি কার্ড দেখুন। গ্রামের মানুষ আমার কথা শুনে না, আমাকে সমানে মেরেই চলেছে। আমার শরীরের বিভিন্ন জায়গা থেকে রক্ত পড়ছে। একজনকে বললাম, আমাকে এক গ্লাস পানি দেন। পানি না দিয়ে আমাকে লাথথি দিতে শুরু করলো। সেদিন আমি মরেই যেতাম। কিন্তু ভাগ্য ভালো পুলিশ এলো। পুলিশ এসে আমাকে থানায় নিয়ে গেলো। আমাকে প্রাথমিক চিকিৎসা না দিয়ে লকাপে ঢুকিয়ে দিলো। পানি চাইলাম, পানিও দিলো না।
৩। কুমিল্লা গিয়েছিলাম। ফিরতে ফিরতে রাত হয়ে গেলো।
বেশি রাত নয়, ১০/১১ টা হবে। গুলিস্তান বাস থেকে নেমেছি। রাস্তা নিরব। পার্কের পাশ দিয়ে হেটে আসছিলাম রাজউকের দিকে। হঠাৎ অন্ধকার থেকে একটা মেয়ে বের হয়ে এলো। সস্তা মেকাপ করেছে। ল্যাম্পপোস্টের ঘোলাটে আলোয় মেয়েটাকে দেখলাম। বিকট মেকাপ না করলেই মেয়েটাকে বেশি ভালো লাগতো। মেয়েটা বলল, আদর করবেন আমায়? অল্প টাকা দিলেই হবে। আমি ভীষণ ভয় পেলাম। ভয়ে আমি কিছুটা কাপছি। আমি পকেট থেকে দুই শ টাকা বের করে মেয়েটার হাতে দিলাম। বললাম, যাও বাসায় চলে যাও। মেয়েটা বলল, কাজ না করলে আমি টাকা নিবো না। তারপর মেয়েটা আমার হাত ধরলো। বলল, ভয়ের কিছু নেই। আসেন আমার সাথে। আমি মেয়েটাকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে, দিলাম এক দৌড়। এক দৌড়ে দৈনিক বাংলা চলে এলাম। বহু বছর আগের ঘটনা। কিন্তু আজও মেয়েটাকে ভুলতে পারিনি। কি সুন্দর ও সহজ করে বলেছিলো, আদর করবে আমায়!!
৪। একদিন ভোরবেলা কাপ্তান বাজারে গিয়েছি।
তখন অনেক কবুতর পাওয়া যেতো। কবুতরের হাট বসতো সপ্তাহে একদিন। দুই লোক ঝগড়া করছিলো। কেউ আমার সামনে ঝগড়া করলে, আমি চুপচাপ থাকতে পারি না। আমি চেস্টা করলাম ঝগড়া থামাতে। কিছুতেই ঝগড়া থামে না। অনেক লোক ঝমে গেলো। একদল লোক চলে এলো। তাদের হাতে চাপাতি, রামদা, চায়নিজ কুড়াল। তুমুল মারামারি শুরু হলো। ডাব কাটার দা দিয়ে একজন আমাকে তেড়েফুঁড়ে কোপ দিতে এলো। অথচ আমার কোনো দোষ নেই। আমি বরং ঝগড়া থামাতে গিয়েছিলাম।
৫। একদিন রাতে ঘুমাচ্ছিলাম।
বাসায় কেউ ছিলো না। রাত দুটায় দরজায় নক। পিনহোল দিয়ে তাকিয়ে দেখি পুলিশ। আমি ভীষণ অবাক হলাম! দরজা খুললাম। পুলিশ আমাকে হাতকড়া পরালো। এবং থানায় নিয়ে গেলো। আমি বারবার জিজ্ঞেস করলাম, আমার অপরাধ কি? পুলিশ কোনো উত্তর দেয় না। আমি বললাম, আপনাদের বোধহয় ভুল হচ্ছে। থানায় যাওয়ার পর পুলিশ বলল, আপনি মার্ডার করেছেন। আমি জীবনে একটা মূরগী জবো করিনি। গরু জবাই দেখিনি। আমি খুবই নরম মনের মানুষ। আর আমি করবো মার্ডার। অবশ্য পুলিশ চাইলে দিনকে রাত করতে পারে, রাতকে দিন। আমাকে লকাপে ঢুকিয়ে দিলো।
২| ০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ভোর ৪:২৩
কামাল১৮ বলেছেন: সকল অভিজ্ঞতাই রবি ঠাকুরের ছিলো নয়ত অত লেখা লিখলেন কি করে।মানব জীবনের এমন কোন দিক নেই যা নিয়ে তিনি লিখেন নাই।অত বড়মাপের লেখক পৃথিবীতে খুব কম আছে।
পুলিশ নাপারে এমন কাজ নাই।এখন দেখেন না যাঁদের উপর এক্রমন করে তাদের পুলিশ ধরে নিয়ে যায় আর যারা আক্রমন করে তাদের ছেড়ে দেয়।
©somewhere in net ltd.
১|
০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:১৮
ক্লোন রাফা বলেছেন: বেশ ভালো স্বৃতি