নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

রাজীব নুর

আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।

রাজীব নুর › বিস্তারিত পোস্টঃ

এমন থাপ্পড় খাবি!

০৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৩৩



ঘটনাঃ ইরাকের প্রেসিডেন্ট সাদ্দামের পতনের সময়।
চৈত্র মাস। সারাদিন প্রচন্ড গরম। জামাই তার বউকে নিয়ে শ্বশুর বাড়ি যাচ্ছে। সুন্দর গ্রামের রাস্তা। পড়ন্ত বিকেল। বউটা সুন্দর করে সেজেছে। গ্রামের মেয়ে। সাজ বলতে নতুন শাড়ি আর চোখে মোটা করে কাজল দিয়েছে। অনেকদিন পর সে বাপের বাড়ি যাচ্ছে। জামাই একটা পুরাতন কোডাক ক্যামেরা কিনেছে। সেটা দিয়ে একটু পরপর ছবি তুলছে। বউয়ের নাম কমলা। জামাইয়ের নাম জালাল। জালাল বলল, কমলা আমার একটা ছবি তুলে দে, এই জায়গার সিনারি অত্যাধিক সুন্দর। ময়না ক্যামেরার কিছুই বুঝে না। সে জালালের ছবি তুলতে গিয়ে ক্যামেরা উলটো করে ধরে। তখন জালাল বলে- ওই বান্দি, ক্যামেরা ঠিক করে ধর। একটা কাজ যদি ঠিক করে পারে! কমলা বলে, অনেকদিন পর বাপের বাড়ি যাচ্ছি, আপনের আল্লাহর দোহাই লাগে- বাপ মায়ের সামনে তুই তুকারি করবেন না।

গ্রামের বাউন্ডেলে মকবুল দেখে-
ময়না আসছে। মকবুল দৌড় দিয়ে গিয়ে ময়নার মাকে খবর দেয়। চাচী, চাচী আপনার মেয়ে, আর আপনার মেয়ের জামাই আসতেছে। ময়নার মা অবাক! সে শাড়ির আচলের গিট খুলে শেষ সম্বল দশটা টাকা মকবুলের হাতে দিয়ে বলে, বাবা আমাকে দশ টাকার চা-পাতি এনে দাও। আমার মেয়ের জামাইয়ের আবার ঘনঘন চা খাওয়ার অভ্যাস। মকবুল দশ টাকা নিয়ে উধাও হয়ে যায়। সে সিগারেট কিনে, চা খায়। বন্ধুদের সাথে কার্ড খেলে। চা-পাতির কথা ভুলে যায়। এদিকে জালাল-কমলা বাড়ি আসে। জালাল তার শ্বাশুড়িকে সালাম করে। শ্বাশুড়ি বলে হঠাত তোমরা এলে! জালাল বলে, আছে। ঘটনা আছে, যথাসময়ে বলবো। শ্বাশুড়ি তাড়াতাড়ি গাছ থেকে পাকা পেপে পেড়ে আনে। জালাল পায়ের উপর পা তুলে পাকা পেপে খায়। আর বলে- ''বড়'ই মিষ্টি পেপে। আম্মা আপনিও এক পিছ খান। খুবই মিষ্টি। এই ময়না আম্মার সাথে আমার একটা ছবি তুলে দাও। ছবি হইলো একটা ইতিহাস''।

শ্বাশুড়ি চিন্তায় অস্থির।
জামাই হঠাত এলো! কি ঘটনা? কি ব্যাপার! কমলা বলে, মা ঘরে দই পাতো। তোমরার জামাইয়ের দই পছন্দ। মোরগ রান্না করো। রাতে কিন্তু পোলাউ কোমরা করতে হবে। মা বলে, হ্যা ব্যবস্থা করিব। দুধ বাজার থেকে কিনতে হবে না। নিজেদের গাইগরু আছে। মূরগীও কিনতে হবে না। পালা মোরগ মূরগী আছে। এদিকে ময়নার বাপ একজন রাজমিস্ত্রি। সারাদিন সে কাজ করে। সন্ধ্যায় চেয়ারম্যান সাহেবের বাড়ি যায় টিভিতে খবর দেখে। ইরাকে যুদ্ধ হচ্ছে। সাদ্দামের পতন আসন্ন। ময়নার বাপের মন ভালো নেই। ইরাকে পানির অভাব দেখা দিয়েছে। ছোট ছোট বাচ্চারা পানির জন্য কষ্ট করছে। কমলার বাপ বিষয়টা কিছুতেই মানতে পারছে না। আল্লাহর দুনিয়ায় পানির অভাব কেন হবে? ভাতের অভাব মেনে নেওয়া যায়। কিন্তু পানির অভাব!! রাতে কমলার বাপ মন খারাপ করে বাসায় ফিরে। বাসায় ফিরে দেখে মেয়ে আর মেয়ের জামাই আসছে। অবশ্যই খুশির ব্যাপার। অনেকদিন পর মেয়ে আসছে। কিন্তু তার মন খারাপ, ইরাকে পয়ানির অভাব! ছোট বাচ্চারা পানি খেতে পারছে না।

রাতে খেতে বসেছে জামাই শ্বশুর।
কমলা খাবার বেড়ে দিচ্ছে। পোলাউ রান্না হয়েছে। দেশী মূরগী ঝাল ঝাল করে রান্না করা হয়েছে। কমলা বাবাকে এক চামচ ঝোল আর এক টুকরো আলু দিলো। ব্যস, আর কিচ্ছু না। আর জালালের প্লেটে তরকারী সব ঢেলে দিয়েছে। মাংস উপচে পড়ছে। তখন জালাল বলে, আমাকেই তো সব দিয়ে দিলে আব্বাকে তো কিছু দিলে না। তখন কমলা বলে, বাপজান মূরগীর সালুন পছন্দ করেন না। জালাল একটা মূরগীর রান হাতে নিয়ে বলে, ময়না আব্বার সাথে একটা ছবি তুলে দাও। ছবি হইলো একটা ইতিহাস। জালাল শ্বশুড়ের কাধে মাথা রেখে, মূরগীর রান মুখের কাছে নিয়ে পোজ দেয়, কমলা ছবি তুলে দেয়। রাতের খাওয়ার পর জালাল ঘটনা বলল। ঘটনা এই রকমঃ জালাল সৌদি যাবে। তার চার লাখ টাকা লাগবে। কমলার মা বলল, এত টাকা কই পাবো? দুটা গরু আছে, বিক্রি করলেও চার লাখ হবে না। ময়না কিছুটা রাগ দেখিয়ে বলে, তোমরা ধানাই পানাই করবে না। যেখান থেকে পারো টাকার ব্যবস্থা করো।

কমলার মা গ্রামের তিনজন ধনী ব্যাক্তির বাড়ি যায়।
কেউ টাকা ধার দেয় না। বরং দুই তিনটা কটু কথা শুনিয়ে দেয়। তখন গ্রামের বজলু মাস্টার (অতি দুষ্টলোক) বুদ্ধি দেয়- বসতভিটা বিক্রি করে দাও। অবশ্য দাম বেশি পাবে না। নীচু জায়গা। বর্ষায় পানি জমে। এই ভাবে ঘটনা এগিয়ে যেতে থাকে। মূলত আমি হুমায়ূন আহমেদের নাটকের কাহিনী বললাম। হুমায়ূন আহমেদে গ্রেট লেখক, গ্রেট নাট্যকার। আমি সব সময় হুমায়ূন আহমেদের বই এবং নাটকে মুগ্ধ থেকেছি। একবার পরিচালক অমিতাভ রেজার অফিসে গিয়েছিলাম তার সাক্ষাতকার নিতে। সাক্ষাৎকার শেষে আমি বললাম, হুমায়ূন আহমেদ নাট্যকার হিসেবে কেমন? রেজা বললেন, হুমায়ূন আহমেদ নাট্যকার না। উনি লেখক। আমার খুবই রাগ হলো। ইচ্ছে করলো রেজাকে একটা গুসা মেরে দেই চাপার মধ্যে। অনেক কষ্টে রাগ দমন করলাম। হুমায়ূন আহমেদের নামের আগে আমি গ্রেট ব্যবহার করতে পারবো অনায়াসে কিন্তু অমিতাভ রেজার নামের আগে আমি গ্রেট ব্যবহার করতে পারিব না।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:১৯

রাজীব নুর বলেছেন: জামাই- এমন থাপ্পড় খাবি...
কমলা- এইটা কেমন কথা? নিজের স্ত্রী'রে কেউ বলে থাপ্পড় খাবি।
জামাই- আমি বলি, আমি প্রেসিডেন্ট বুশ। আমি কারো ধারধারি না। সাইকেলে নাই পাম। আমার মেজাজ এখন অত্যাধিক খারাপ। এখন নিজের বাপেরেও তুই করে বলে ফেলতে পারি।

এই জায়গার সিনারি অত্যাধিক সুন্দর। কমলা একখান ছবি তোল।
কমলা- তুই তুকারি কইরেন না। আপনার পাও ধরি।
জামাই- চৈত্র মাসে তুই-আপনি সব সমান।

---হুমায়ূন আহমেদের নাটক- 'চৈত্র দিনের গান'।

২| ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৪৫

জ্যাক স্মিথ বলেছেন: কয়েকমাস আগে আমি এই নাটকটি দেখেছি... রিয়াজের অভিনয় সেইই.. ছিলো। :D

আমি শিউর এটা যদি হুমায়ুন আহাম্মেদের নটক না হতো তাহলে রিয়াজ এমন গ্রাম্য জামাইয়ের চরিত্রে অভিনয় করতো না, সাধারণত এ ধরণের চরিত্রে অভিনয় করে, মোশারফ করিম, চঞ্চল চৌধুরী, আখম আহসান... এরা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.