| নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
রাজীব নুর
আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।
ফারাজা বা সুরভি বাসায় নেই।
তারা বেড়াতে গিয়েছে। এজন্য বাসায় যাওয়ার জন্য আমার কোনো তাড়া নেই। রাত তখন ১১টা আমি বাংলামটর মোড়ে বাস থেকে নামলাম। এখন আমি হেঁটে বাসায় যাবো। সারাদিন হাঁটা হয় না। তাই এখন আমি হেঁটে হেঁটে বাসায় যাবো। রাতে হেঁটে আরাম আছে। লোকজন কম। ফুটপাত দখল মুক্ত থাকে। আমি আস্তে ধীরে হাঁটা শুরু করলাম। শীতকাল বলে ঘামছি না। হেঁটে আরাম পাচ্ছি। হালকা ঠান্ডা বাতাস আছে। মগবাজার মোড়ে এসে ইচ্ছা করলো এক কাপ চা খাই। সাথে একটা সিগারেট। কিন্তু এসব খাওয়া বাদ দিয়েছি। আমাকে সুস্থ থাকতে হবে। বেঁচে থাকতে হবে। আমি বেঁচে থাকলে, আমার কন্যা আনন্দ নিয়ে বড় হতে পারবে। অলরেডি ডায়বেটিস দেখা দিয়েছে। প্রতিদিন সকালে কমেট এক্সআর ৫০০ খাচ্ছি।
ঠিক বারোটায় বাসায় পৌছালাম।
মা'র ঘরে গেলাম। মা জেগে আছে। মা'র সাথে কিছুক্ষন কথা বলে খেতে বসলাম। আমাকে একা একা খেতে হবে। গ্রাম থেকে লোকজন এসেছে, এরা ঘুমিয়ে গেছে। গ্রামের লোকজন তাড়াতাড়ি ঘুমায়। টেবিলে খাবার দেওয়া আছে। হাত ধুয়ে খেতে বসলাম। একটুও খেতে ইচ্ছা করছিলো না। রুই মাছ রান্না করেছে ফুলকপি, আলু আর শিম দিয়ে। আবার ফুলকপি, শিম আর আলু ভাজি। ডাল ছিলো। সামান্য কিছু খেয়ে নিলাম। গরম গরম একটা ডিম ভাজি পেলে ভালো হতো। রুই মাছ একদম খেতে ইচ্ছা করছিলো না। বাংলামটর থেকে হেঁটে আসছি। তাই আমি ক্লান্ত। গোছল করলে ভালো লাগতো। কিন্তু গোছল করতে ইচ্ছা করছে না। এখন আমি ঘুমাবো। লম্বা একটা ঘুম দেওয়া দরকার। সকালে জরুরী কাজ আছে। সাত টায় বাসা থেকে বের হতে হবে। তারেক জিয়া আগামীকাল দেশে ফিরবেন, সারাদিন অবশ্যই যানজট থাকবে। অযোগ্য, অদক্ষ নেতা দেশে ফিরবেন!
মানুষ যেরকম ভাবে, সেরকম ঘটনা ঘটে না।
বাতি নিভিয়ে বিছানায় গেলাম। মনে হচ্ছিলো বিছানায় যাওয়া মাত্র ঘুমিয়ে যাবো। হায় হায়! বিছানায় গেলাম ঘুম আসে না। দেড়টা বেজে গেছে। আমি এপাশ-ওপাশ করছি। ঘর অন্ধকার। ফুল স্প্রীডে ফ্যান ছেড়ে দিয়েছি। কমফোটার গায়ে দিয়েছি। আরামদায়ক অবস্থা। কিন্তু ঘুম নেই। এবার শীতের নতুন আলুতে স্বাদ নেই। নতুন আলু খেতে কি মজা লাগার কথা! অথচ খেতে কেমন মিষ্টি-মিষ্টি লাগে। আগে নতুন আলুর জন্য অপেক্ষা করতাম। খেতে দারুন লাগতো। এমনকি নতুন আলু দিয়ে আমাদের বাসায় আলুর দম বানাতো। খেতে কি স্বাদ লাগতো। ঘুম নেই। অযথাই আলুর কথা ভাবছি। আলুর কথা অবচেতন মনেই ভাবছি। এরকম তো হয় না। বালিশে মাথা রাখা মাত্র সুন্দর ঘুম এসে যায় আমার। আজ কি হলো। আমি ভাবছি শীতের নতুন আলুর কথা। আজিব!
ঘরে সুন্দর একটা গন্ধ!
অনেকটা বেলী ফুলের ঘ্রানের মতো। গন্ধ কোথা থেকে আসবে? দরজা জানালা সব লাগানো। আমার মনে হলো- কেউ একজন আমার পায়ের কাছে এসে বসলো। আমি ঘটনা বুঝে ফেললাম। জ্বিন এসেছে আমার কাছে। এবং এটা ভালো জ্বিন। কারন খারাপ জ্বিন হলে সুন্দর গন্ধ পেতাম না। যাইহোক, জ্বীন আমার কাছে কি চায়? জিং জং করতে চায়? এখন আমার জিং জং করার কোনো ইচ্ছা নাই। আমার এখন ঘুম দরকার। ভোরে উঠতে হবে। জ্বীন বলল, স্যার আসসালামু আলাইকুম। আমি বললাম, ওয়ালাইকুম আসসালাম। জ্বীন বলল, আমি এসেছি আপনার খেদমত করতে। বলেই জ্বীন আমার গায়ে হাত রাখলো। কেউ আমার গায়ে হাত দিলে আমার ভালো লাগে না। আমি যথেষ্ট বিরক্ত হই। আমার ইচ্ছা করলো জ্বীনকে একটা লাথথি দেই। পরমুহুর্তেই নিজেকে সামলে নিলাম। জ্বীনকে লাথথি দিলে আমার নিশ্চয়ই গুনাহ হবে। রোজ হাশরের ময়দানে জ্বীনদের বিচার হবে।
কোনো কথা নেই, বার্তা নেই- জ্বীন আমার পাশে শুয়ে পড়লো।
অন্ধকারে আমি জ্বীনকে দেখতে পারছি না। জ্বীন তো আমার মান সম্মান শেষ করে দিবে! যেহেতু ঘুম আসছে না, তাই কিছুক্ষন জ্বীনের সাথে গল্প করা যেতে পারে। আমি কথা শুরু করার আগেই জ্বীন বলল, স্যার আমি ফযরের আযান পর্যন্ত থাকিব। আমি বললাম, থাকো। তুমি কি চা বানাতে পারো? জ্বীন বলল, স্যার এটা কেমন কথা! আমি আপনার বাসায় এসেছি। আমি আপনার মেহমান। আপনি আমাকে চা নাস্তা অফার করবেন। অথচ আমাকে চা তৈরি করতে বলছেন? আমি বললাম, তুমি অতি সাধারন জ্বীন। আর আমি হচ্ছি 'মানুষ'। সৃষ্টির সেরা জীব। আল্লাহ পাক তো তোমাদের সেরা ঘোষনা করেন নাই। তোমরা আল্লাহর অতি সাধারন কর্মী। আর আমরা বিরাট কারিগর। দেখো না পৃথিবীটাকে কত সুন্দর করে সাজিয়েছি! তোমাদের জ্বীনদের মধ্যে এরিস্টটল নেই, আইনস্টাইন নেই। মাদার তেরেসা নেই। তোমরা বড় দুঃখী।
©somewhere in net ltd.
১|
২৪ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৩৫
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: পড়লাম।