| নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
রাজীব নুর
আমি একজন ভাল মানুষ বলেই নিজেকে দাবী করি। কারো দ্বিমত থাকলে সেটা তার সমস্যা।
আমি কখনো রাস্তায় দাঁড়িয়ে সিদ্ধ ডিম খাইনি।
অনেক এলাকাতেই রাস্তায় সিদ্ধ ডিম বিক্রি করে। আমার ইচ্ছা হয়- একদিন রাস্তায় দাঁড়িয়ে ডিম সিদ্ধ খাই। বহু লোক রাস্তায় দাঁড়িয়ে প্রতিদিন সিদ্ধ ডিম খায়। আমি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে মানুষের ডিম খাওয়া দেখি। বড় ভালো লাগে। হাঁসের ডিমের দাম ২৫ টাকা। দেশী মূরগীর ডিম ৩০ টাকা। ফার্মের মূরগীর ডিম ২০ টাকা করে পিছ। আজকাল সিদ্ধ ডিম মাঝখান দিয়ে কেটে পেয়াজ, মরিচ ধনিয়াপাতা আর সরিষার তেল দেওয়া ভর্তা দিয়ে দেওয়া হয়। এটার চাহিদা অনেক বেশি। একসময় সিদ্ধ ডিম মাঝখান দিয়ে কেটা শুধু লবন দিয়ে দেওয়া হতো। ধনিয়াপাতা দেওয়ায় সিদ্ধ ডিমের স্বাদ মনে হয় বেড়েছে। লোকজন আগ্রহ নিয়ে খাচ্ছে। সব সময় ডিমের দোকানের সামনে ভিড়।
সেদিন আমি সুরভি আর ফারাজা মিরপুর গিয়েছিলাম।
ভরসন্ধ্যা বেলা। সুরভি রাস্তায় ডিম দেখিয়ে বলল, খাবো। চার রাস্তায় মোড়ে দাঁড়িয়ে সুরভি সিদ্ধ ডিম খেলো। হাঁসের ডিম। বিক্রেতা ডিম দুই টুকরা করে এক চামচ ধনিয়া পাতা ভর্তা দিলো। ফারাজাকে বললাম, তুমি সিদ্ধ ডিম খাবে? ফারাজা বলল, নো নেভার। সুরভি আরেকবার ধরেপাতা ভর্তা চেয়ে নিলো ডিম বিক্রেতার কাছ থেকে। রাস্তায় দাঁড়িয়ে আমি সিদ্ধ ডিম খেতে পারিব না। কেউ দেখে ফেললে! ছবি তুলে ফেলবে। তারপর বলে বেড়াবে বিখ্যাত রাজীব নূর রাস্তায় দাঁড়িয়ে সিদ্ধ ডিম খায়! আমার মনে আছে, একবার পাবনা থেকে ঢাকা ফেরার পথে ফেরীতে একলোক সিদ্ধ ডিম বিক্রি করছিলো। তখন রাত প্রায় দুইটা। লোকজন আগ্রহ নিয়ে ডিম সিদ্ধ খাচ্ছে। শীতকালে ডিম সিদ্ধ মনে হয় বেশি মজা। আমার কাছে সিদ্ধ ডিমের চেয়ে চা বেশি ভালো লাগে।
একবার আমি আর সুরভি বরিশাল গিয়েছিলাম।
লঞ্চে করে। বিশাল লঞ্চ। লঞ্চের নাম 'কীর্তনখোলা'। বরিশালের বিখ্যাত নদী কীর্তনখোলা। শীতের সময় ছিলো। গভীর রাতে লঞ্চ চলছে। শীতের বাতাস তীরের মতোন এসে গায়ে বিঁধে। তখন আমাদের অল্প বয়স। সংসারে বাচ্চা-কাচ্চা নাই। আমরা কেবিনে না বিশ্রাম নিয়ে লঞ্চের ছাদে বসে গল্প করছি। তুমুল বাতাস! দারুন লাগছে। লঞ্চের ছাদে ডিম বিক্রেতা এলো। সিদ্ধ ডিম। সুরভি ঘরের বাইরে যে খাবারই দেখে, সে খাবে। খাবেই। অবশ্য শীতের রাতে গরম গরম সিদ্ধ ডিম খারাপ না। ডিম থেকে ধোঁয়া বের হয়। একটু লবন আর গোল মরিচের গুড়া। সেই স্বাদ। সুরভি যখন আমাদের বাসাত নতুন এলো। আমরা প্রথম প্রথম সারারাত জেগে গল্প করতাম। হঠাত সুরভিকে অবাক করে দিয়ে আমি চার পাঁচ গরম সিদ্ধ ডিম নিয়ে আসতাম। ডিমের উপর ছড়িয়ে দিতাম লবন। গোল মরিচ।
আমার কন্যা ফারাজা ডিমের কুসুম খায় না।
তাকে সিদ্ধ ডিম দিলে, সে শুধু ডিমের সাদা অংশটুকু খায়। কুসুম খায় না। আজিব! কিন্তু ডিম ভাজি করলে ডিম ভাজি খায়। কিন্তু সিদ্ধ ডিমের কুসুম খাবে না। একবার বন্ধুবান্ধব সবাই মিলে বান্দরবন গিয়েছি। রাস্তায় বাস নষ্ট হয়ে যায়। এজন্য আমরা হোটেলে দেরীতে এসে পৌছাই। হোটেলে কোনো খাবার নেই। অথচ আমাদের অনেক ক্ষুধা লেগেছে। হোটেলের লোকটা বলল- ডিম সিদ্ধ খেলে খেতে পারেন। অনেক গুলো সিদ্ধ ডিম আছে। আমরা ক্ষুধা নিবারণের জন্য সিদ্ধ ডিম খেলাম। আমাদের বিয়ের পর সুরভি একদিন বলল, ফ্রিজে আর কিছু থাকুক বা না থাকুক। ডিম থাকেই। কেন? অনেক সময় ফ্রিজে মাছ মাংস শেষ হয়ে যায়। কিন্তু ডিম থাকে। এর কারণ কি? আমি সুরভিকে বললাম, ফ্রিজে ডিম না থাকলে আমার ভালো লাগে না।
আজ আমার হাতে কিছু সময় আছে।
আজ আমি রাস্তায় দাঁড়িয়ে সিদ্ধ ডিম খাবো। এমনকি এক গ্লাস দুধ। অনেকে জায়গায় দেখেছি গরম দুধ বিক্রি করে। আমি কখনও রাস্তায় দাঁড়িয়ে গরম দুধ খাইনি। আজ আমি রাস্তায় দাঁড়িয়ে দুধ ও ডিম খাবো। কেউ দেখে ফেললে, দেখুক। তাতে আমার কি? জানি আমার কিছু না। তাতে তার কি! ব্রুস লি'র একটায় সিনেমায় দেখেছিলাম। ব্রুস লি সকালে ঘুম থেকে উঠে একটা গ্লাসে সাত টা ডিম ভাঙ্গে। তারপর সাতটা ডিম খেয়ে নেয়। একদম কাচা। একটু লবনও দেয়নি। ওয়াক ওয়াক। ব্রুস লি'র আরেকটা মুভিতে দেখেছি, সে দুধের মধ্যের কাচা ডিম মিশিয়ে খেয়ে ফেলে। ওয়াক ওয়াক। দুধ এবং ডিম মানুষের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ন।
২|
২৭ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭
আহমেদ রুহুল আমিন বলেছেন: একনিঃশ্বাসে পড়লাম ‘ডিম’ কাহিনী ....। ভালো লেগেছে ।
৩|
২৭ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:৩১
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: আপনি বড়োলোক্স মানুষ । বাহিরে কেন ডিম খাবেন ? এসব নেকা নেকা কথা আপনার মুখে মানায় না ।
৪|
২৮ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:১৯
ডঃ এম এ আলী বলেছেন:
রাস্তায় দাঁড়িয়ে পারিবারিক সিদ্ধ ডিম খাওয়া কাহিনী দারুন হয়েছে।
এ বিষয়ে আমারো বেশ মঝার অভিজ্ঞতা আছে , তবে সে কথা এখানে বলতে গেলে লেখা অনেক লম্বা হয়ে যাবে তখন কেও বা হয়তবা
মন্তব্যের লাইন গুনতে লেগে যাবেন ।
তবে রাস্তায় দাড়িয়ে ডিম খাওয়ার অভিজ্ঞতা নেয়ার সময় আমি দাঁড়িয়ে থেকে নীচের কথাগুলি ভেবেছি ।
ঢাকার মতো ভয়াবহ বায়ু দূষিত নগরীতে ফুটপাতে সিদ্ধ ডিম বিক্রয় একটি গুরুত্বপূর্ণ জীবিকা ও একই সাথে জনস্বাস্থ্যের সঙ্গে জড়িত বিষয়। এই ছোট স্ট্রিট বিজনেস বহু দরিদ্র মানুষের আয়ের উৎস ,তাই এটিকে স্বাস্থ্যসম্মত, নিরাপদ ও টেকসই করার বিষয়টিও ভেবেছি। সিদ্ধ ডিম বিক্রেতা ও ক্রেতাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্য নির্দেশনা এবং এই ক্ষুদ্র ব্যবসাকে আরও সফল ও টেকসই করার বিষয়ে আমার ভাবনা সমুহ
বেশ প্রাসঙ্গিক এই পোস্টে মন্তব্য লেখার ঘরে একটু আলোচনা গেলাম । পরের বার রাস্তায় দাঁড়িয়ে ডিম খাওয়ার সময় সংস্লিস্টদের সাথে আলোচনা করতে পারেন ।
স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিষয়ে সচেতনতা সৃজনের লক্ষ্যে তাদের সাথে নীচের বিষয়গুলি আলোচনা করা যেতে পারে :-
ডিম সিদ্ধ করার পাত্র, পানি ও হাত পরিষ্কার রাখার বিষয়ে সচেতন থাকার কথা
ঢাকনাযুক্ত পাত্রে সিদ্ধ ডিম রাখলে ধুলো ও দূষিত বাতাসের প্রভাব কমে
হাত মোছার জন্য নোংরা কাপড় ব্যবহার না করে পরিষ্কার কাপড় বা টিস্যু ব্যবহার করতে বলা
খাদ্য নিরাপত্তা বজায় রাখার জন্যএকই পানি বারবার ব্যবহার না করে পরিষ্কার পানি ব্যবহার করতে বলা,
আংশিক সিদ্ধ ডিম বিক্রি না করে ডিম সম্পূর্ণ ভাবে সিদ্ধ করার জন্য বলা যেতে পারে ,
প্রতিবার ডিম হাত দিয়ে ধরার আগে হাত ধোয়া/মোছার অভ্যাস করার বিষয়ে সচেতন করা
পরিবেশ স্বাস্থ্য বিবেচনায় যানবাহনের ধোঁয়ার কাছে না দাঁড়িয়ে তুলনামূলক পরিষ্কার জায়গায়
বিক্রি করার চেষ্টা করতে বলা,খোলা জায়গায় খাবার না রেখে ঢাকনা ব্যবহার করতে বলা।
ক্রেতাদের জন্যও করনীয় বিষয় হবে:-
খোলা ধুলো ময়লা লাগা ডিম না কিনে ঢাকা রাখা ডিম কিনতে সচেষ্ট হওয়া
যেসব বিক্রেতা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা রক্ষা করে, তাদের কাছ থেকে সিদ্ধ ডিম কিনা
রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে না খেয়ে একটু আড়ালে বা নিরাপদ স্থানে গিয়ে ডিম খাওয়ার চেষ্টা করা
শিশু, গর্ভবতী নারী ও অসুস্থদের জন্য রাস্তার খাবার যথা সম্ভব সীমিত রাখাই ভালো
খুবই স্বল্প পুঁজতে এই ক্ষুদ্র পথ ব্যবসাকে টেকসই ও সফল করার উপায় ও তা বাস্তবায়নের জন্য
আপনার মত গুণী ব্লগারদের মাধ্যমে সামু সহ সকল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গনসচেতনা
সৃষ্টি করে সকলকে নিন্মোক্ত বিষয়াবলি অনুসরণ ও বাস্তবায়নে উদ্যোগী করার প্রয়াস নেয়া প্রয়োজন।
রাস্তায় দাঁড়িয়ে সিদ্ধ ডিম ব্যবসাটিকে একটি স্বাস্থ্যসম্মত ব্র্যান্ডিং তৈরি করার জন্য
ডিম বিক্রতার পরিষ্কার পোশাক, ছোট স্টল , ছাতা বা কভার ব্যবহার করাতে পারলে গ্রাহকের আস্থা বাড়বে।
পরিষ্কার ডিমনিরাপদ খাবার এমন লেখা রাখা যেতে পারে।
ছোট বিনিয়োগে টিকসই উন্নয়ন এ লক্ষটিকে সামনে রেখে
ঢাকনাযুক্ত স্টিল বা অ্যালুমিনিয়ামের পাত্র ব্যবহারে উতসাহিত করা
একটি ছোট গ্লাস বক্স/ফাইবার কভার ব্যবহার করলে ধুলো কম লাগবে
হ্যান্ডগ্লাভস ও টিস্যু রাখার জন্য প্ররোচিত করা।
সিদ্ধ ডিম পণ্যের বৈচিত্র্য আনার জন্য শুধু সিদ্ধ ডিম নয়, লবণ, মরিচ, লেবু, অল্প সালাদ
স্বল্পমূল্যে অতিরিক্ত অপশন দেওয়া যেতে পারে।
মূল্য সাশ্রয়ী কিন্তু ন্যায্য দাম রাখলে গ্রাহক বারবার ফিরে আসবে। কারণ সব ক্রেতাই জানেন
তারা রাস্তায় দাঁড়িয়ে যে ডিমটি ২০/৩০ টাকায় কিনছেন তা অসিদ্ধ অবস্থায় বাজারে প্রতিটি
১২/১৫ টাকায় বিক্রয় হয় । তারা ক্রেতাগন সিদ্ধ ডিম বেচার পুরা প্রসেস তথা কাঁচা ডিম থেকে শুরু
করে সিদ্ধ করার খরচ , মসলার দাম , রাস্তার বাবাজিদের মাসুল( বিভিন্ন পদের চাদাবাজি) ইত্যাদি
বিবেচনায় না নিয়ে ভাবতে পারে বিক্রেতা সিদ্ধ ডিমটির জন্য অনেক বেশি দাম নিচ্ছে ।
এই স্বল্প পুঁজিতে লাভজনক এই সিদ্ধ ডিম ব্যবসাটিকে সমাজ ও স্থানীয় প্রশাসন বিবিধ ধরনের
সহায়তা করতেন পারে যথা সিটি কর্পোরেশন চাইলে নির্দিষ্ট “স্বাস্থ্যসম্মত স্ট্রিট ফুড জোন” করতে পারে
প্রশিক্ষণ, স্বাস্থ্য সচেতনতা ও ক্ষুদ্র ঋণ সহায়তা পেলে এই ব্যবসা আরও সংগঠিত হতে পারে।
মুল কথা হল ফুটপাতে সিদ্ধ ডিম বিক্রি শুধু একটি ক্ষুদ্র ব্যবসা নয় এটি হাজার হাজার দরিদ্র মানুষের
জীবিকার অবলম্বন। সামান্য সচেতনতা, স্বাস্থ্যবিধি, পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা ও সংগঠিত উদ্যোগ গ্রহণ করলে
এই ব্যবসাটি একদিকে যেমন হবে নিরাপদ খাবারের উৎস, অন্যদিকে জীবনধারণের জন্য একটি মর্যাদাপূর্ণ
ও টেকসই ব্যবসা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে পারবে।
মুল্যবান এই পোস্টের সুবাধে স্ট্রিট বিজনেস হিসাবে এই সিদ্ধ ডিম বিক্রয় কর্মটির বিষয়ে একটি ক্ষুদ্র
আলোচনার সুযোগ তৈরী করে দেয়ার জন্য ধন্যবাদ । অনুরোধ রইল পরে যখন আবার এ ধরনের জনগুরুত্বপুর্ণ
বিষয়ে আজকের ডায়েরী মত কোন লেখা লিখবেন তখন উপরে বলা কথাগুলির আলোকে একটি গঠনমুলক
আলোচনা করবেন যাতে বিনোদনের সাথে সকলেই যথাযথভাবে উপকৃত হয় ।
শুভেচ্ছা রইল
©somewhere in net ltd.
১|
২৭ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৪
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: অনেকেই এভাবে রাস্তায় দাঁড়িয়ে ডিম খায়।
কারণ বাসায় ডিম খেলে সবাইকে নিয়ে খেতে হবে ।
সেই ক্ষেত্রে অনেক গুলো ডিম লাগবে। খরচ ও হবে অনেক বেশি।
তার চেয়ে একা একা লুকিয়ে খাওয়াটাই ভালো।