নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

লেখক নই আমি। কোন চলচ্চিত্র দেখা মাত্র মনের কথা গুলি লিখে ফেলি আর কি।

রাজিন

আমি অসাধারণ মায়ায় আবৃত সাধারণ একজন মানুষ

রাজিন › বিস্তারিত পোস্টঃ

রাজিন রিভিউ: Mohenjo Daro

১৫ ই আগস্ট, ২০১৬ সকাল ৯:৩৩


মুভির দুনিয়া খুবই নিষ্ঠুর। কারো মাথায় দুর্দান্ত এক মুভির চিন্তা এলেও সেটি বাস্তবায়ন করা বিরাট কষ্টসাধ্য হয়ে উঠতে পারে। বুঝলাম বাস্তবায়ন করা কঠিন কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রে যদি বাস্তবায়নের তেমন কোন চেষ্টা দেখা না যায় তাহলে ব্যাপারটা হজম করাও কঠিন। ঠিক সেরকমই এক মুভি “মোহেনজো দারো”। হেন করবো, তেন করবো করতে গিয়ে কিছুই করতে পারেননি বিখ্যাত নির্মাতা আশুতোষ গোয়ারিকার।

কাহিনী জানা যাক। মুভিটির পটভূমি খ্রীস্টপূর্ব ২০১৬! তারিখ দেখেই চোখে ভেসে ওঠে এক গঞ্জিকাসেবী পরিচালক দর্শকদের দিকে তাকায় বলতেসে “দেখসোস? আমি কত বস?”।
সারমান (হৃতিক রোশান) নামক এক নীলচাষির স্বপ্ন বিরাট শহর মোহেনজো-দারো তে যাওয়া। অবশেষে সেই আশাপূরণ হয়। হৃতিক খুবই সাধাসাধি একটি ছেলে। শহরের রাজপুত্র অন্য মেয়েদের দিকে নজর দিলে তার মনে কষ্ট লাগে। এই দিকে রাজপুত্রের হবু-বউয়ের লগে টাংকিবাজি করতে তার কোনই অসুবিধা নাই। এছাড়া চুটায় ব্যবসাও চলছে। যদিও বেশিরভাগ সময় তাকে শহরের অলি-গলিতে খালি ঘুরাঘুরি করতেই দেখা যায়। কিছু বুঝতে না পারলেই প্রশ্ন করে। এদিকে শহরের পুলিশের একমাত্র কাজ হৃতিকের প্রশ্নের উত্তর দেয়া। উত্তর দিতে দিতে হৃতিককে বলতেই ভুলে যায় :”বাপধন! কতদিন ধরে গোসল করো নাই?”
মুভির নায়িকার ( পুজা হেগড়ে) একমাত্র কাজ হলো ফাক-ফোকড় ওয়ালা জামা পরিধান করে পুরা শহরে ক্যাটওয়াক করে বেড়ানো। চুটায় প্রেম করার পর শেষে বলে :”আমার তো বিয়ে ঠিক হয়ে আছে, ভাই!!”। হৃতিকের ‘ভাই’ শব্দ শুনে জসিমের মত মনে খুব কষ্ট হয়। অবশেষে বিয়ের দিন নায়িকাকে নিয়ে পালাতে চেষ্টা করে। তারপর আলিঝালি লিয়াকত আলি –মার্কা কাহিনী চলতেই থাকে।

মুভিটির ভালো দিক নিয়ে কিছু বলি। মুভিটি সিন্ধু উপত্যাকার হরপ্পা সভ্যতা নিয়ে সর্বপ্রথম মুভি। দুর্ভাগ্যজনকভাবে এই সভ্যতার নিয়ে বেশি কিছু জানা যায়নি। আশুতোষ গোয়ারিকার চেষ্টা করেছেন এই মহান সভ্যতা সম্পর্কে সবাইকে জানাতে। মুভিতে সেট ডিজাইন বেশ ভালো হয়েছে। এছাড়া বাণিজ্য মেলায় মেসপটেমিয়া, কাজাকিস্তান, মিশর থেকে আনা বিভিন্ন পণ্য দেখানো হয় যেটা বেশ রোমাঞ্চকর লাগে। এমন এক সময়ের কাহিনী যেখানে লোহার ব্যবহার নেই, ঘোড়া কেউ চোখে দেখেনি, স্বর্ণ একটি হলুদ পাথর ছাড়া কিছুই না- এসব ব্যপার বেশ মজাই লেগেছে। এছাড়া মুভিতে মোহেনজো দারো ধ্বংসের মূল কাহিনী কিছুটা ফারাক্কা বাধের সমস্যার সাথে সম্পৃক্ত।

মুভিতে ঐতিহাসিক ভুলগুলি নিয়ে কিছু বলছিনা। কারণ মুভিটি হরপ্পা সভ্যতা নিয়ে সবচেয়ে বড় বিশেষজ্ঞ ড: কেনোয়ারের তত্ত্বাবধানে নির্মিত হয়েছে। যদিও বিশেষজ্ঞকে হোটেলের রুমেই আটকায় রাখা হয়েছে বলে মনে হয়।
মুভিটির সবচেয়ে খারাপদিক হলো মুভির চিত্রনাট্য। পুরোপুরি প্রাণহীন এবং বোরিং। এমন কোন দৃশ্য নেই যেটা মনে দাগ কাটে। বেশিরভাগ সংলাপ শুদ্ধ হিন্দী হবার কারণে বোঝা কঠিন। এছাড়া বুঝলেও মনে হয় না বুঝলেই ভালো হতো। কাহিনী ভুয়া এবং সামঞ্জস্যহীন। মনে হচ্ছিল নির্মাতার যখন যেটা মনে হচ্ছে সেটাই দৃশ্যে রুপান্তরিত করে ফেলছে।

সবার অভিনয় চরম খারাপ হয়েছে। হৃতিক রোশান মাঝে মাঝে কোই মিল গ্যায়ার রোহিত, আবার কখনও যোধা-আকবরের আকবর, আবার কখনো অগ্নিপথের বিজয়। কোনই নতুনত্ব নেই। চান্স পাইলেই খালি মুখ কাপাইতে শুরু করে। নায়িকা তো অভিনয় পারেই না আবার তাকে কিছুটা স্কিন-শো এর জন্যই ব্যবহার করা হয়েছে যেটা দুঃখজনক। ভিলেন চরিত্রে কবীর বেদীর অভিনয় যাত্রাপালা থেকে নকল করা বলে মনে হয়েছে।

স্পেশাল এফেক্ট পুরাই হাস্যকর। এছাড়া কস্টিউম ডিজাইন, মেকআপ একেবারেই পছন্দ হয় নাই। মুভির গ্লাডিয়েটর যুদ্ধের সময় চিন্তা করছিলাম:”হায়রে কপাল! এইটা কী হচ্ছে?”। এছাড়ার মুভির সমাপ্তির সময় মনে হচ্ছিল:”মর তোরা। আই ডোন্ট কেয়ার!”

এই মুভি বানাতে ৩ বছর সময় লেগেছে। আরো একবছর যদি চিত্রনাট্যের উন্নতির কাজে ব্যয় হতো তবে হয়তো একটি ভালো মুভি পেতাম। সব মিলিয়ে খুবই হতাশাজনক একটি মুভি।

রেটিং – ১.০ / ৫.০

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৫ ই আগস্ট, ২০১৬ সকাল ৯:৪৬

শাম্মী নূর-এ-আলম রাজু বলেছেন: মুভিটা দেখার ইচ্ছা ছিল কিন্তু রিভিউ পড়ে মনে হচ্ছে সময় নষ্ট করা ঠিক হবে না। ধন‍্যবাদ আপনাকে।

১৫ ই আগস্ট, ২০১৬ দুপুর ১২:২২

রাজিন বলেছেন: ধন্যবাদ

২| ১৫ ই আগস্ট, ২০১৬ সকাল ৯:৪৮

চাঁদগাজী বলেছেন:



এখনো সিলেট দেখার সুযোগ পাইনি, কোথাকার মহেনজোদারো!

৩| ১৫ ই আগস্ট, ২০১৬ সকাল ১০:০৫

সব জান্তা বলেছেন: ফাউল একটা মুভি

৪| ১৫ ই আগস্ট, ২০১৬ সকাল ১০:০৮

গোধুলী বেলা বলেছেন: দারুন রিভেউ। আর মুভি ভিউ করার ইচ্ছাও রইল না।

৫| ১৫ ই আগস্ট, ২০১৬ সকাল ১০:১৫

খোলা মনের কথা বলেছেন: মুভির রিভিউ কই দিলেন ভাই??? সবই তো পঁচা কাপড় কাচা সাবানের সাফাই গাইলেন। একদম গন্ধ ছুটাই দিছেন :P :P :P পরপর ১০ ১২ বার দেখে ফেলেন এক সময় দেখবেন ভাল লেগে গেছে। মুড অফ করে মুভি দেখলে হবে??? ;) ;)

৬| ১৫ ই আগস্ট, ২০১৬ দুপুর ১২:১৯

ইকরাম উল হক বলেছেন: চান্স পাইলেই খালি মুখ কাপাইতে শুরু করে। =p~ =p~ =p~ =p~

৭| ১৫ ই আগস্ট, ২০১৬ দুপুর ১:১২

সুমন কর বলেছেন: রিভিউ তো মজা করেই লিখেছেন। মুভিটি দেখার ইচ্ছে ছিল, এখন মনে হচ্ছে বাদ কিংবা পরে ফাউল সময়ে দেখে নেবো....

ধন্যবাদ।

৮| ১৫ ই আগস্ট, ২০১৬ বিকাল ৫:৫১

প্রণব দেবনাথ বলেছেন: এরকম একটা পাতি গল্পের জন্য এত বড় সেট!!! ফালতু ফালতু দেখতে গেলাম। সিনেমার প্রথম ১০ মিনিট দেখলেই বোঝা যায় শেষে কি হবে।

৯| ১৫ ই আগস্ট, ২০১৬ রাত ৯:৪৬

আখেনাটেন বলেছেন: বলিউডকে এখনও অনেক পথ পাড়ি দিতে হবে...চিন্তা-চেতনা-মননে...

১০| ১৬ ই আগস্ট, ২০১৬ রাত ১২:১৭

অশ্রুকারিগর বলেছেন: আমি ইতিহাসনির্ভর মুভির দর্শক। নাম দেখে আর ট্রেইলার দেখেও ভাবছিলাম এটা দেখমু। এখন সিদ্ধান্ত নিয়ে দোটানায় পড়ে গেলাম।

১১| ১৬ ই আগস্ট, ২০১৬ রাত ১:২০

মাদিহা মৌ বলেছেন: মুভি খুব কম দেখি।

হৃত্বিক+ইতিহাস একসাথে বলে মুভিটা দেখার ইচ্ছে ছিল। সেটা এখন মাঠে মারা গেল।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.