![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি অসাধারণ মায়ায় আবৃত সাধারণ একজন মানুষ
শৈশবকালে টিভি খুললেই মারামারি টাইপ এক মঞ্চনাটক দেখতে বেশ মজাই লাগতো। নাটক শুরুর আগে বড় বড় হরফে নাম আসতো “WWE”! এটা বলে একটা খেলা! নাম আবার কুস্তি! অলিম্পিকে কুস্তি হচ্ছে শুনে সাথে সাথে টিভি খুললাম। দেখলাম, এইটা আবার কী? কই আন্ডারটেকার? কই রক? ধুর দেখুম না।
সেই আসল কুস্তি নিয়ে আমির খানের নতুন মুভি দঙ্গল। তাও আবার একই বছরে কুস্তি নিয়ে সালমান খানের হিট মুভি আসছে। পুরাই ডুববে। দঙ্গল নিয়ে যা আমি ভেবেছিলাম, ঠিক একই কথা সমাজ ভেবেছিল যখন গীতা এবং ববিতা নামক দুটি বাচ্চা মেয়ে কুস্তির ময়দানে নেমেছিল। সবার মুখে কুলুপ আঁটিয়ে তারা বর্তমানের কিংবদন্তী। ঠিক একই রকমভাবে দঙ্গল মুভিটি শুধু ভালো নয়, নিঃসন্দেহে সর্বকালের অন্যতম সেরা মুভি।
কাহিনী জানার তেমন কিছু নেই। সত্য কাহিনী। হরিয়ানার বিখ্যাত কুস্তিগীর মহাবীর সিং ফোগাত ( আমির খান) এর স্বপ্ন ছিল বিশ্বের দরবারে দেশের জন্য মেডাল জিতবে। দারিদ্রতা কাছে হার মেনে নিলেও স্বপ্ন ছিল তার ছেলে এই স্বপ্নপূরণ করবে। পর পর চারবার কন্যা সন্তান হবার পর নিজের স্বপ্নকে ধামাচাপা দেওয়ারই সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু কুস্তি কী শুধু ছেলেরাই পারে? শুরু হয় মেয়েদের নিয়ে নতুন স্বপ্ন দেখা। কিন্তু সবকিছু কী এতই সোজা? সমাজ কী বলবে? “মেয়েরা তো রান্না-বান্না আর বাচ্চা পালা ছাড়া কিছুই পারে না।“- এ ধরনের মানসিকতা নিয়ে থাকা সমাজের বিরুদ্ধে তার লড়াই : “দঙ্গল”।
মুভিটির ভালোদিক বলতে গেলে কোন জায়গা থেকে শুরু করবো , এটা ভাবতেই অনেকক্ষণ লাগবে। বলা উচিত এটা কোন মুভি না। মনে হয় যেন কেউ কোন অভিনয় করছেনা। চোখের সামনে একজন মানুষ ও তার মেয়েদের মাথা উঁচু করবার ঘটনা ঘটে যাচ্ছে। সব কিছুই আসল। কুস্তির মার-প্যাঁচ, ঘাম , মাটি, অশ্রু, আবেগ, হাসির শব্দ, গ্রামের পরচর্চা – কোন কিছুতেই যেন বিন্দুমাত্র মিথ্যা নেই। আমি বিরাট কোন মুভি বোদ্ধা নই। সেকারণে আমি এরকম মুভি কখনই দেখি নাই। এটার কৃতিত্ব অবশ্যই নির্দেশক নিতেশ তিওয়ারির কাছে যায়। এছাড়া সাথে তো আছেনই এক জাদুকরী প্রযোজক আমির খান।
প্রসংশা শুধুমাত্র নির্মাণশৈলীতেই থেমে থাকবে না। কাহিনীতে আছে টান টান উত্তেজনা এবং দৃশ্যে দৃশ্যে হাসির খোরাক। মানতেই হবে মুভি শেষ হবার পর এক অন্যরকম অনুভূতি কাজ করছিল।
অভিনয় আমির খান যে ভালো করছেনে এটা বলার কোন দরকার নাই। তার ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা নৈপুণ্য। শালা মুভি করলেই পুরা বোমা ফাটায়! মানতেই হবে আমির খানের যুগে বেঁচে আছি এটা একটি গর্বের বিষয়।
এছাড়া অভিনয় কে বা ভালো করে নাই? গীতা ফোগাত চরিত্রে ফাতিমা সানা শেখ যে আছাড় দেয়াটাই না দেখাইলো! আমি তো হাত থেকে কলম পড়ে গেলেই উঠাতে আলসেমি লাগে। আর গীতার কৈশোর চরিত্রের অভিনেত্রী জাইরা ওয়াসিম, ১৫ বছর বয়স হয়ে যে বাঘের মতো লড়াই করে, কী আর বলবো। এছাড়া সানিয়া মালহোত্রা, সুহানী ভাটনাগার, সাক্ষী তানওয়ার, গিরিশ কুলকারনী সবাই দারুন করেছেন।
একটি মুভি অনেক সময় বিবৃত বা Narrate করা হয়। হিন্দী মুভিতে অনেক সময় একাজটি করে থাকেন অমিতাভ বচ্চন, ওম পুরী, পীযুশ মিশ্র এর মত নামীদামী অভিনেতারা। এই মুভিটি বিবৃত করছেন গীতা-ববিতার চাচাতো ভাই চরিত্রের অভিনেতা অপারশক্তি খুরানা। পুরাই ফাটায় ফেলসে। পুরা মুভিটিতে একদম অন্যরকম রোমাঞ্চ এনে দিয়েছেন।
আসল কুস্তি খেলাটি যে এরকম রোমাঞ্চকর হতে পারে আমার জানা ছিল না। গীতা একেকটি পয়েন্ট নিচ্ছিল আর আমি লাফায় উঠছিলাম। মুভিটিতে ইচ্ছা করলে স্লো-মোশান ব্যবহার করে খেলার কিছু অংশ দেখাতে পারতো। কিন্তু সেটা না করে পুরা খেলা কমেন্ট্রিসহ দেখানো হয়েছে যেটা খুবই উপভোগ করেছি। বুঝতেই পারছেন যে অভিনেত্রীরা কতটাই পরিশ্রম করে কুস্তি শিখেছেন। হয়তো ভাবতে পারেন এরা অন্যরকম মেয়ে। বেশিরভাগ মেয়েরাই তো ঢঙ্গী হয়। তারা এই সব কুস্তি পারতো না। কিন্তু অবাক করা ব্যাপার হচ্ছে গীতার কৈশোর চরিত্রের অভিনেত্রী জাইরা ওয়াসিম সেরকমই একটি লুতুপুতু সুন্দরী মেয়ে। শুরুতে সবাই ভাবসিল একে দিয়ে হবে না। নড়াচড়াই করতে পারে না, এইটা আর কী কুস্তি করবে? কিন্তু ৬-৭ মাসের পর শুটিং এর সময় এই মাইয়া পুরাই আগুন লাগায় দিসে।
মুভিটির খারাপ দিক তেমন কিছুই নেই। বলতেই যদি হয় সেটা হলো শেষের দিকে কিছু দৃশ্য যেগুলি দেখে মনে হয়েছিল “ ধুর, এইগুলাতো হিন্দী মুভিতে হয়!”। ভুলেই গিয়েছিলাম যে, হিন্দী মুভি দেখছি।
মুভিটির অসাধারণ দৃশ্যগুলি চোখের সামনে এখনও ভাসছে। মেয়েদের চুল কেটে দেয়া, মেয়েদের পা টিপে দেয়া, মেয়ের কান্নামাখা ফোন, ... কোনটা ছেড়ে কোনটা বলবো?
“সুলতান” এর সাথে তুলনা চলে আসলেও, বিশ্বাস করুন, এমুভির সাথে কোন কিছুরই তুলনা হয় না।
সবমিলিয়ে, প্রসংশা করতে শুরু করলে একসময় বিশেষণ খুঁজে পাওয়া যাবেনা।
রেটিং – ৫.০ / ৫.০
৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ৯:৫৪
রাজিন বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ।
২| ২৫ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ সকাল ১০:১৫
সোহানী বলেছেন: লোভ লাগায়ে দিলেন.... এখনতো দেখতেই হবে.... রিভিউ +++++++
৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ৯:৫৪
রাজিন বলেছেন: ধন্যবাদ।
৩| ২৫ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ সকাল ১০:৪৬
ধ্রুবক আলো বলেছেন: প্রসংশা করতে শুরু করলে একসময় বিশেষণ খুঁজে পাওয়া যাবেনা।
আমির খান Best of the Best,
৪| ২৫ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ সকাল ১১:৩৮
আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: মুভিটি দেখার ইচ্ছা আছে।
৫| ২৫ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ১০:৩১
বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: sorry to say. আপনার রিভিউ গুলো ভালোই হয়। তবে এই মুভি তে আপনি কোথায় টান টান উত্তেজনা খুঁজে পেলেন আমার বোধগম্য হলো না। খেলোয়াড়দের বায়োপিকগুলো এখন অনেকটা একঘেঁয়ে হয়ে গিয়েছে আমার কাছে। সবাই স্ট্রাগল করে প্রথম দিকে। শেষে বিজয়ী হয়। ভাগ মিলখা ভাগ, মেরি কম, ধোনি, সুলতান - এর পর এই ছবিটা আমার কাছে ভালো লাগেনি। বিশেষ করে আমির খানকে এখনই মধ্যবয়স্ক পিতার চরিত্রে দেখতে ভালো লাগেনি। হয়তো বা আমার রুচি অন্যরকম। ধন্যবাদ...
৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ৯:৫৫
রাজিন বলেছেন: মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
৬| ২৭ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ২:৪৬
কামরুল ইসলাম রুবেল বলেছেন: কি কন, কৈ পাইলেন, টরেন্টে আছে? টরেন্টের আইজকাল যা দুরাবস্থা। টর ছাড়া ঢুকাই যায়না। তা একটু পরিস্কার করেন না, কৈ পামু?
©somewhere in net ltd.
১|
২৫ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ সকাল ৭:৫৫
মনিরুজ্জামান শুভ্র বলেছেন: অসাধারণ একটি মুভি।। ১০ বার দেখলেও মন ভরবে না। আমির খানের মুভি মানেই অন্যরকম।। অনেক ধন্যবাদ লেখককে।।