নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

লেখক নই আমি। কোন চলচ্চিত্র দেখা মাত্র মনের কথা গুলি লিখে ফেলি আর কি।

রাজিন

আমি অসাধারণ মায়ায় আবৃত সাধারণ একজন মানুষ

রাজিন › বিস্তারিত পোস্টঃ

রাজিন রিভিউ: Jagga Jasoos

১৬ ই জুলাই, ২০১৭ দুপুর ১২:১২


হিন্দী মুভির গোয়েন্দা কাহিনী? হইসে কাম! মানলাম এক শার্লক হোমসকে অনেকেই নকল করে। কিন্তু এখন পর্যন্ত হিন্দীতে কোন ভালো গোয়েন্দা মুভি হয়েছে বলে মনে পড়ে না। ট্রেলার দেখে তো মনে হলো পুরাই কার্টুন! কোনভাবেই বউকে এই কার্টুন দেখাতে রাজী করাতে পারলাম না। থিয়েটারে আমার মত আরও ৩ গর্দভ ছিল। তবে ১ ঘন্টার মধ্যেই একজন ভাগসে।
মানলাম মুভিটি তেমন ভালো নয় এবং বোরিং। তবে রণবীর কাপুরের অভিনয় এবং সুন্দর দৃশ্যায়নের জন্য পুরো মুভিটি খুব একটা খারাপ লাগেনি। এছাড়া এটি কোন গতানুগতিক হিন্দী মুভি নয়। মুভিটি একটি মিউজিকাল এডভেঞ্চার। বেশ অন্যরকমের।
কাহিনী জানা যাক। উত্তর পূর্ব ভারতের ছোট্ট একটি শহরের এক তরূণ গোয়েন্দা জাগ্গা (রণবীর কাপুর)। পুরো শহরে ভালোই সম্মান। সমস্যা হলো সে তোতলা, কথা বলতে পারে না। সুতরাং কথা বলতেই গানের আশ্রয় নিতে হয়। প্রতি বছর তার বাবা (শ্বাশ্বত চট্টোপাধ্যায়) তার জন্মদিনে একটি ভিডিও টেপ পাঠায়। হঠাৎ এক বছর টেপ এলো না। কয়েকদিন পর খবরের কাগজে তার বাবার মৃত্যু সংবাদ। জাগ্গা ছুটে যায় কোলকাতায়। জানতে চায় কীভাবে মারা গেল তার বাবা। পুলিশের কথা শুনে সে বুঝতে পারে যে তার বাবা মরে নি। বেঁচে আছে। কিন্তু কোথায় তিনি?
মুভিটির কাহিনীর উপস্থাপনে “টিনটিন” এর বেশ প্রভাব দেখা যায়। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো স্পিলবার্গের কার্টুন “টিনটিন” মুভিতে যেটা পায়নি, সেটার কিছুটা এই মুভিতে পেয়েছি। মুভিতে রঙের ব্যবহার অসাধারণ মানের। প্রত্যেকটি দৃশ্য পুরাই ঝকঝকে। যদিও মুভিটি একটি এডভেঞ্চার কাহিনী নিয়ে, তবে কেন্দ্রবিন্দুতে আছে জাগ্গা এবং তার বাবার সম্পর্ক। জাগ্গার বাবাকে নিয়ে কিছু দৃশ্য চোখে পানি এনে দেয়।
মুভিটি মিউজিক্যাল হওয়ার কারণে সংগীত ভালো হওয়া ছিল অতি আবশ্যক। গানগুলি অসাধারণ না হলেও বেশ ভালোই। “খানা খাকে” গানটা পুরাই মাথার ভেতর ঢুকে গেছে। প্রীতম লোকটাকে চোর ডাকতে ডাকতে হয়রান হয়ে গেছি। তবুও লোকটি কিন্তু ভালোই মিউজিক দিয়েই যাচ্ছে। দিনদিন উন্নতি হচ্ছে। আসলেই কি সব চুরি? মুভিটিতে সর্বমোট ২৯টি গান আছে। মিউজিকাল হওয়ার কারণে প্রতি ডায়লগে গান। এটা না মানতে চাইলে মুভিটি ভুলেও দেখার দরকার নেই।
অভিনয়ের কথায় আসা যাক। রণবীর কাপুরের অভিনয়ের প্রশংসা সবাই করে। তবে “এ দিল হ্যায় মুশকিল” দেখার পর মনে হয়েছিল রণবীর মনে হয় ছ্যাকা খাওয়া প্রেমিক ছাড়া অন্য কোন অভিনয় করতে চায় না। এই মুভিতে একেবারে নতুনভাবে নিজেকে উপস্থাপন করেছে। ফাটাফাটি অভিনয়।
জাগ্গার বাবা “ব্যাডলাক বাগচী” চরিত্রে দারুন করেছেন শ্বাশ্বত চট্টোপাধ্যায়। এছাড়া সৌরভ শুকলা, সায়ানি গুপ্তা এবং রজতাভ দত্তকে বেশ ভাল লেগেছে।
ভালো লাগে নি ক্যাটরিনা কাইফকে। তার চেহারা তে এখন বয়সের ছাপ। সেটা না হয় বাদ দিলাম। ক্যাটরিনার “শ্রুতি সেনগুপ্ত” চরিত্রটি বেশ মজাদার। কিন্তু ক্যাটরিনা পুরাই যা তা করেছে। ভালো একজন অভিনেত্রী দরকার ছিল। এছাড়া জাগ্গার সাথে তার সেরকম প্রেম টাইপ সম্পর্ক নেই। রণবীর কাপুরের গার্লফ্রেন্ডকে এই চরিত্র দেবার কোন মানেই হয় না। দিলেও এত বাজে অভিনয় আশা করি নাই। এতগুলি বছরের কিছুই অভিনয় শিখলো না? এছাড়া শুটিং চলাকালীন রণবীর-ক্যাটরিনার ঝগড়ার কারণেই মুভির নির্মাণে বিরাট ব্যাঘাত ঘটে।
মুভিটির প্রথম ভাগ বেশ ভালো হলেও দ্বিতীয় ভাগ অহেতুক টেনেছে। শেষের দিকে কাহিনীর কোন আগামাথা নাই। মুভিটি আরও ৩০-৪০ মিনিট ছোট করা যেত। নির্মাতা অনুরাগ বসু বাঙালি হওয়ার কারণে মুভিতে বাংলা মুভির ছায়া পাওয়া যায়। অনেক দৃশ্যেই সত্যজিত রায়ের মুভির কথা মনে পড়ে। এসব করতে গিয়ে আসল মুভিটিই হারিয়ে যায়।
সবমিলিয়ে মুভিটির নির্মাণ অন্যরকম হওয়ার কারণে অনুরাগ বসু প্রশংসার দাবীদার। এছাড়া রণবীর কাপুর এক অন্য মাত্রার চরিত্রকে বাস্তবরুপ দান করেছেন। তবুও মুভিটি নিশ্চিত ফ্লপ হবে। অতিরিক্ত বড় বাজেট ছাড়াও দোষটি অবশ্যই মার্কেটিংকে দিতে হবে। কখনই মুভিটি নিয়ে তেমন শোরগোল পাওয়া যায়নি। কোন জায়গাতেই বলা হয়নি মুভিটি “ভারতের টিনটিন” কে দেখানো হয়েছে। ট্রেলারে সবসময়ই বোঝানে হয়েছে এটি একটি কার্টুন। আমার কেন জানি মনে হয় যে মুভিটি টিভি সম্প্রচারের সময় কিছুটা খ্যাতি পাবে।
যত যাই হোক। জাগ্গা চরিত্রটি আমার এখন বেশ প্রিয় হয়ে গিয়েছে। রণবীরের জাগ্গা নিয়ে সামনে কোন মুভি হলে অবশ্যই দেখবো।
রেটিং – ৩.৫ / ৫.০

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই জুলাই, ২০১৭ দুপুর ১২:২৯

মোস্তফা সোহেল বলেছেন: অনেক দিন পরে রাজিন রিভিউ হল!

২| ১৬ ই জুলাই, ২০১৭ দুপুর ১২:৫৩

দীপঙ্কর বেরা বলেছেন: দেখতে হবে

৩| ১৬ ই জুলাই, ২০১৭ দুপুর ১:২০

জাহিদ অনিক বলেছেন: গতকাল এক ঘন্টার মত দেখেছিলাম । টানে নি ।
তবে আপনার রাজিন রিভিউ ভাল লেগেছে ।

৪| ১৬ ই জুলাই, ২০১৭ রাত ৯:৫৩

সুমন কর বলেছেন: হুম, রিভিউ ভালো লিখেছেন।

তবে, দেখবো না।

৫| ১৭ ই জুলাই, ২০১৭ ভোর ৬:৩৫

সোহানী বলেছেন: এই ক্যাটরিনারে কেন যেন একেবারেই পছন্দ না.... যাই হোক রনবীর বলে দেখবো.............

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.