নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

লেখক নই আমি। কোন চলচ্চিত্র দেখা মাত্র মনের কথা গুলি লিখে ফেলি আর কি।

রাজিন

আমি অসাধারণ মায়ায় আবৃত সাধারণ একজন মানুষ

রাজিন › বিস্তারিত পোস্টঃ

রাজিন রিভিউ: Dunkirk

২৪ শে জুলাই, ২০১৭ সকাল ৮:২৪


ক্রিস্টোফার নোলানের মুভি। আর কিছু কি বলার দরকার আছে? একজন নির্মাতা একের পর এক অসাধারণ মুভি দিয়েই যাচ্ছে কিন্তু থামার কোন লক্ষণ নেই। কীভাবে পারে ম্যান? পুনরায় ক্রিস্টোফার নোলানের আরেকটি অসাধারণ মুভি “ডানকার্ক” দেখে নিজেকে ভাগ্যবান মনে করছি।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হলো ডানকার্ক । ব্যাপারটা বোঝানোর জন্য একটি কল্পিত উদাহরণ দিচ্ছি। ধরুন কোন দুষ্ট দেশ মায়ানমার দখলের জন্য আক্রমণ করলো। মায়ানমারের স্বাধীনতা রক্ষায় এগিয়ে এল বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। কিন্তু বিপক্ষ শক্তি বাংলাদেশ-মায়ানমার বাহিনীকে পরাজিত করলো। বাংলাদেশ বাহিনী ধীরে ধীরে পিছাতে শুরু করলো এবং থেমে গেল বঙ্গোপসাগের তীরের “আনাউক মিয়িনলুত”তে, যেটি থেকে সেন্ট মার্টিন দ্বীপ দেখা যায়। কিন্তু টেকনাফ পৌছাতে অল্প পথ পার হতে হলেও সেটি বঙ্গোপসাগর। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কে বাঁচাতে একটি একটি করে জাহাজ আসছে কিন্তু এতগুলি সৈন্য পার করানো সম্ভব হচ্ছে না। এদিকে শত্রুপক্ষ এগিয়ে আসছে। বাংলাদেশের সেনা মৃত্যুর প্রহর গুনছে কিন্তু কত কাছেই না তাদের দেশ। ঠিক একই ঘটনা ঘটেছিল ফ্রান্সের ডানকার্ক নামক বীচে যেখান থেকে ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিলেই ইংল্যান্ড। কিন্তু উপর থেকে নাৎসি বাহিনীর বিমান হামলায় বাঁচার আশা একেবারেই ক্ষীণ।

পুরা মুভিটি দেখেছি দুহাত গালের উপর রেখে। চোখের পলকও পড়েনি। কীভাবে বানালো এই দৃশ্য? পুরাই চিন্তার বাইরে। যুদ্ধের মুভির কিছু ফরমুলা থাকে। যেমন বোমা পড়লে ধুম করে একটি আগুনের শিখা দেখা দিবে। হাতে ধরার ক্যামেরার ব্যবহার থাকবে। কোন সৈন্য আহত হয়ে চিৎকার করবে। সব শেষে কোন বীর সেনা একাই শত্রুদের কুপোকাত করবে কিংবা কোন সেনা কর্মকর্তা কোন দেশাত্মবোধক বক্তৃতা দিয়ে সকলের লোম খাড়া করে দিবে। এগুলির একটাও নেই। কারণ মুভিটিতে যুদ্ধের চেয়ে মানুষের বেঁচে থাকার ইচ্ছাকেই দেখানো হয়েছে। মুভিটি আসলে তিনটি মুভির মিশ্রণ: মাটি, পানি ও বায়ু। তিন জায়গা থেকে যুদ্ধের ভয়াবহতাকে দেখানো হয়েছে। একেকটি বিমান উড়ে যাচ্ছে, নৌ জাহাজ ডুবে যাচ্ছে, গোলাগুলি সবই যেন বাস্তব। এই জিনিস শুধুমাত্র ক্রিস্টোফার নোলান দ্বারাই সম্ভব।

মুভির দৃশ্যায়নের বাস্তবতা ফোটাতে হানস জিমারের সংগীতের জবাব নেই। আবহ সংগীত এতটা অসাধারণ না হলে দৃশ্যগুলি এতটা সুন্দর হতো না।
অভিনয় সবারই দারুন হয়েছে। মানুষ বিপদে পড়লে দেশপ্রেম ভাবে না। শুধু ভাবে নিজের জীবন নিয়ে। সেটার অভিনয় দারুনভাবে করেছেন ফিয়ন হোয়াইটহেড। এছাড়া অসাধারণ অভিনয় করেছেন টম হার্ডি, কেনেথ ব্রানা এবং এনুরিন বার্নার্ড।

মোমবাতির আগুনের সাথে যদি সূর্যের আগুনের তাপের তুলনা পুরাই হাস্যকর। তবুও প্রশ্ন থাকে যে সূর্যের তাপ অন্যান্য নক্ষত্রের তুলনায় কেমন? সেরকমই তুলনা করা হয় নোলানের মুভিগুলি নিয়ে। নিঃসন্দেহে যুদ্ধ নিয়ে মুভি হিসেবে এই মুভির তুলনা নেই। তবুও যুদ্ধ মুভির ফরমুলা না মানার কারণে অনেকেই খুশি নন। কিন্তু সব মুভি যদি একই হয় তবু নতুনত্ব কোথায় থাকবে? যুদ্ধ নিয়ে মুভি সংক্রান্ত আমার জ্ঞান সীমিত। তবুও ডানকার্ক দেখার পর সেভিং প্রাইভেট রায়ান, হ্যাকস রিজের দৃশ্যগুলিকে মঞ্চ নাটক মনে হয়।

তবুও ডানকার্ক নোলানের অন্যান্য মুভির তুলনায় তেমন বিনোদনমূলক নয়। তিনটি ছোট মুভির মধ্যে মাটি বাদে পানি এবং বায়ুর দৃশ্যগুলি অসাধারণ হলেও বেশ বোরিং। সবচেয়ে বড় ব্যাপার হলো মুভিটি থেকে ডানকার্কের যুদ্ধের আবহ টা পাওয়া গেছে কিন্তু ডানকার্কের ঘটনাটি সম্পর্কে তেমন কিছু জানতে পারিনি। অনেকের নিকট প্রধান অভিযোগ হলো মুভিতে কোন চরিত্রের পূর্বকাহিনী দেখানো হয়নি। এটিকে খারাপ দিক হিসবে আমি মানতে নারাজ। কেন শুধু মাত্র একটি সৈন্যের কাহিনী দেখানো হবে? দেখালেও মূল যুদ্ধের দৃশ্যগুলি খাপছাড়া মনে হতো।

ইন্টারস্টেলার মুভিটি নিয়ে অনেকে কটাক্ষ করলেও মুভিটি যতই দিন গেছে ততই ভালো লেগেছে। আমার বিশ্বাস ডানকার্কের ব্যাপারটাও এরকমই হবে। সবার প্রত্যাশা এটি পূরণ না করলেও দিন দিন মুভিটির সম্মান বাড়বে। সব মিলিয়ে দারুন একটি মুভি।

রেটিং – ৪.0 /৫.০

মন্তব্য ২ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৪ শে জুলাই, ২০১৭ সকাল ৯:১৫

নাবিক সিনবাদ বলেছেন: আপনার লেখা রিভিউগুলো সব সময়-ই ভালো লাগে, আজো ভালো লাগলো।।

২| ২৪ শে জুলাই, ২০১৭ বিকাল ৫:৩৮

আখেনাটেন বলেছেন: ভালো।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.