![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজে পড়ি, নতুন লিখছি, বাংলা বানান ভুলে ভরা হতে পারে, কিন্তু বাংলাদেশের জন্য ভালোবাসার কমতি নেই। ভালবাসি এই মাটি, মানুষ, আর এই জীবন সংগ্রা
নামটা বেশ জটিল দিয়ে ফেললাম মনে হয়, সমস্যা নাই, এটা প্রস্তাবিত, ফাইনাল না। কাজের বিনিময়ে খাদ্য (কাবিখা) বা FFW বেশিরভাগ উন্নয়নশীল দেশের সোশ্যাল সিকিউরিটির অন্যতম আকর্ষন। গতবছর আমাদের দেশের বাজেটের ১,৩১৭ কোটি টাকা (0.৫ %) শুধুমাত্র কাবিখার জন্য বরাদ্য ছিল। খাদ্যের বিনিময়ে খাদ্য (খাবিখা) বা FFF বলে কিছু কিন্তু নেই , এটাই প্রথম। কিন্তু এই প্রজেক্ট আপাতত অমানুষদের ( অর্থাৎ জিব-জন্তু ) জন্য শুধু । যাদের তেমন বিবেকবোধ নেই।
খেয়াল করে দেখলাম, আমি এক কাপ চা খাইলে, ২৫+ পিপড়ার খাবারের সংস্থান হয় , আমার চা এর প্যাকেটে ৮০ টা টিব্যগ , ফলে দিনে দুইবার চা খাইলে ৪0 দিনে নুন্যতম , (৫০ X ৪০ ) = ২,০০০ টা পিঁপড়ার খাবারের সংস্থান হবে বলে আশা করা যায় (ধরে নিলাম প্রতিদিন নতুন পিঁপড়া আসবে) । মাত্র ৮ রিঙ্গিত লাগে এক প্যাকেট চা কিনতে। মালয়েশিয়াতে সাধারণত দুবেলা খাবার খাইতে ১০ রিঙ্গিত লাগে। ফলে ২০০০ পিঁপড়ার জন্য এটা তেমন কোন খরচ না।
শুধু খাবারছাড়াও , এই প্রজেক্টের অন্য উপকারিতা আছে
# পিঁপড়া মেয়ে হলে এই সুগার নিউট্রিশন ইফেক্ট তার বাচ্চার জন্য ফলদায়ক হবে বলে আশা করা যায়।
# মার্জিনালাইজড পিঁপড়া (মহিলা বা বয়স্ক কর্মী) তার রানীর কাছেও বাহবা পেতে পারে খাদ্য সংগ্রহে সফল হবার কারনে
# পিঁপড়ার সুগার ফল করবে না, নিত্যদিন তার সুষম সুগারের ব্যবস্থা হবে
# যখন জানবে খাবার টেবিলেই পাওয়া যাবে, তখন তাদের আর আমার ল্যপ্টোপের কিবোর্ড এর ভেতর লুকিয়ে থাকা লাগবে না । এতে আমার ও উপকার হবে। ফলে প্রোগ্রামটা রেসিপ্রকাল।
# কাল এবং লাল পিঁপড়া একত্রে খাইতে পারবে , ফলে পিঁপড়া নিয়ে মানুষের বিভ্রান্তি আর বৈষম্য দুর হবে ( ছোটকালে প্রচলন ছিল যে, কাল পিঁপড়া মুসলমান , আর লালগুলা হিন্দু )
এর জন্য শুধু দুইটা কাজ দরকার ঃ
১, আমাকে নিয়মিত চা খাইতে হবে
২, চা খাওয়ার সময় কিছু উচ্ছিষ্ট খানিক লম্বা সময় ধরে ফেলে রাখতে হবে (চিনি, চা ইত্যাদি), যাতে উল্লেখ যোগ্য সংখ্যার পিঁপড়া খেতে পারে
বিবিসির একটা খবরে দেখলাম, প্রতি বছর আমেরিকার উৎপাদিত ৪০% খাবার কখনো খাওয়াই হয়না, আর ইউরোপে ১০০ মিলিয়ন টন খাবার শুধু ফেলে দেয়া। বিশ্বের ফুড ওয়েস্ট , সকল ধরনের ওয়েস্টের তিন ভাগের এক ভাগ (৩৩%), যার আর্থিক পরিমাণ ৭৫০ বিলিয়ন ডলার । যেটা ৫৭,৬৭৬০৮৭৫,০০,০০০ টাকার সমান। যা দিয়ে ৯ বিলিয়ন মানুষকে ভালভাবে খাওয়ানো সম্ভব।
দুর্ভাগ্য যে, এত খাদ্য থাকার পরও আজ পৃথিবীতে ১০০ কোটি লোক ক্ষুধার্থ দিন কাটায়। এই চরম কন্ট্রাডিকশনের কারনে প্রজেক্ট টা আপাতত অমানুষ (পশু পাখি ) দের দিয়ে শুরু করা যায়। আমার পাশে পিঁপড়া বেশি বলে আমি পিঁপড়া দিয়ে শুরু করলাম, আপনার পাশে বিড়াল, কুকুর , হাস মুরগি যা কিছু আছে, তাই দিয়ে শুরু করুন । এরা আপনার উচ্ছিষ্ট খাবে, কারন এদের যেঁ বিবেক নেই ।
বিটীভির "ইত্যাদি" অনুষ্ঠানে দেখেছিলাম যে দেশে একবার পানির সংকট চলছে, ফলে একজন গোসল করছে , আর সেই পানি দিয়ে আরেকজন ঘর মুছতেছে। একঢিলে দুই পাখি । সেভাবে, মানুষদের সাথে এই প্রজেক্ট নিয়ে কাজ করা যেত, কিন্তু দুই ধরনের সমস্যা আছে , ডিমান্ড সাইড প্রব্লেম (ক্ষুধার্ত গোষ্ঠী) , আর সাপ্লাই সাইড প্রব্লেম (খাবার নষ্টকারী গোষ্ঠী)।
ডিমান্ড সাইড প্রব্লেম হল মানুষের বিবেক। চাহিদা থাকলেও, খুব গরিব মানুষও বিপদে না পড়লে কারো উচ্ছিষ্ট খাইতে চাই না। চাইলে অনেক উপকার হত । ফুড ফর ফুড চালানো যেত। সাপ্লাই সাইড সমস্যা হল, যে খাবারগুলা নষ্ট হইতেছে (যেটা দিয়ে এই প্রজক্ট চালানো যেত), তা সংরক্ষণ করার ব্যবস্থা আপাতত খুব মজবুত না। এই দুটা সমস্যা সমাধান করা খুব জরুরী । নাইলে খুব কঠিন জবাবদিহিতার সম্মুখীন হতে হবে এক দিন ।
লেখাটা সেট্যায়ার হলেও , প্রজেক্ট টা কিন্তু ফেলনা না । স্ট্যাটাস এর চেয়ে, আইডিয়া টা সেভ করে রাখাই মুল উদ্দেশ্য । মজার ব্যাপার হল, যখন আইডিয়া টা নিয়ে ভাবতেছি, তখন অমর্ত সেন আর ড্রেজের বইয়ের খুব গুরুত্বপুর্ন একটা যায়গা পড়তেছিলাম ঃ তাদের মতে ,
" Leaving poor people to their own devices is neither socially just , nor smart public policy"
বাংলাদেশের ৩৭ মিলিয়ন ( ৩৭০ লক্ষ) ফুড ইন্সিকিউর মানুষের (UNWFP এর হিসাব) দায়িত্ব সরকার কেই নিতে হবে গরিব মানুষ চাইলেও অনেক সময় পারেনা। আমরা যারা একটু স্বচ্ছল তারা পারতে দেইনা হয়তো । তাই আমাদের দায়িত্বটা কম না ।
©somewhere in net ltd.