নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

রাজু আহমেদ । এক গ্রাম্য বালক । অনেকটা বোকা প্রকৃতির । দুঃখ ছুঁয়ে দেখতে পারি নি ,তবে জীবনের সকল ক্ষেত্রে অনুভব করেছি । সবাইকে প্রচন্ড ভালবাসি কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে প্রকাশ করতে পারি না । বাবা এবং মাকে নিয়েই আমার ছোট্ট একটা পৃথিবী ।

সত্যকা

সত্যকা › বিস্তারিত পোস্টঃ

ইতিহাসের নৃশংসতম গণহত্যা ও কিছুকথা

০৫ ই জুন, ২০১৩ রাত ১২:২৬

রাজু আহমেদ





আজ কয়েকদিন হলো বাঙালিসহ গোটাবিশ্বের সকল ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের সাথে আমার হদয়ও খুব ভারাক্রান্ত।কেনইবা ভারাক্রান্ত হবে না।বাংলাদেশের মুসলমান জনগোষ্ঠীর এক বড় অংশ আলেমদের উপর চালানো হয়েছে ইতিহাসের নৃশংসতম গণহত্যা।না শুধু গণহত্যা বললে বুঝি খুবই কম বলা হবে। গণহত্যার চেয়ে আরো ক্ষমতাবান শব্দ আপতত আমার সংগ্রহে নাই।গোটাবিশ্বের মুসলিম পন্ডিতগণ মত দিয়েছেন বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরবর্তী পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী কতৃর্ক পরিচালিত ২৫ শে মার্চ ১৯৭১ ঈসায়ী সালের কালোরাত্রির পর বাংলাদেশে এটাই সবচেয়ে বড় গণহত্যা।কিন্তু আমার মনে হয় ২৫শে মার্চ এর সেই ভয়ংকর রাতের গণহত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞের চেয়েও গত ৫ও৬ই মে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার বাণিজ্যিক শহর মতিঝিলের শাপলাচত্বরে গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের মোড়কে স্বৈরতান্ত্রিক মহাজোট সরকারের আদেশে বাংলাদেশ পুলিশ,বিজিবি এবং যৌথ বাহিনী দ্বারা পরিচালিত এ গণহত্যা সভ্য বিশ্বইতিহাসে শুধু ২৫ শে মার্চ রাত্রিকেই নয় বরং কোন কোন ক্ষেত্রে বিশ্বের সকল প্রকার গণহত্যাকে হার মানিয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন হলো সরকার কাদের বিরুদ্ধে চালালো এই বর্বরতম হত্যাযজ্ঞ?দোষ কি ছিল তাদের?অন্যপক্ষে কারা এই হেফাজতে ইসলাম?কি দাবি ছিল তাদের?তাদের দাবি গুলো যৌক্তিক ছিল কি?

শেষের প্রশ্নগুলো দিয়ে শুরু করি :

কারা এই হেফাজতে ইসলাম:বাংলাদেশের শিক্ষাঙ্গনের এক আদর্শ বিদ্যাপীঠ দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম হাটহাজারী মাদরাসার মহাপরিচালক শতবর্ষী আলেম শাইখুল হাদীস আল্লামা আহমদ শফী সাহেবের নেতৃত্বে দলবদ্ধ একদল তাওহীদি জনতা,যাদের কোন রাজনৈতিক স্বার্থ নাই।যে দলের সকল সদস্যই রাজনৈতিক দলের উধের্বর একদল সরলমনা ধর্ম বিশ্বাসী মুসলমান।যারা আল্লাহ ও তার রাসুলের ‍বানী প্রচার করার জন্য নিবেদিত প্রাণ।যারা বাতিলের বিরুদ্ধে সত্যকে প্রতিষ্ঠা করতে চায়।যারা সর্বাবস্থায় দুনিয়াবী জীবনের উপর আখেরাতের জীবনকে প্রধান্য দেয়।তাদের স্বপ্ন ইসলামের ঝান্ডা বাংলাদেশের প্রত্যেক স্হানে সমুন্নত হোক।মুসলমানরা আবার তাদের ভূলে যাওয়া ইতিহাস এবং সংস্কৃতির আবরণে নিজেদের আবদ্ধ করুক।

হেফাজতে ইসলামের দাবিসমূহ:গত ৬ই এপ্রিল ঢাকামূখী ঐতিহাসিক লং-মার্চ এ উপস্থিত হয়ে তারা সরকারের কাছে ১৩ দফা দাবি পেশ করেন।যার প্রথমটি ছিল সংবিধাণে রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতিতে সর্বশক্তিমান আল্লাহর ওপর অবিচল আস্থা ও বিশ্বাস পুনঃস্থাপন করতে হবে এবং শেষেরটি ছিল বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়গুলোর ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন ও সতক©দৃষ্টি রাখতে হবে।

হেফাজতে ইসলামের দাবি গুলো কি ‍যৌক্তিক:বাংলাদেশের শতকরা ৯০ ভাগ মুসলমান অর্থাৎ ১৪ কোটি মুসলমানের একজন গর্বিত সদস্য হিসেবে এ দাবিগুলো আমার প্রাণের দাবি।কিছু মুসলমান বলে যে এ দাবিগুলো মানলে দেশ মধ্যযুগে ফিরে যাবে।আমাদের দেশটা যদি মধ্যযুগে ফিরে যায় সেটা আমদের জন্য সৌভাগ্য।কেননা মধ্যযুগ মুসলমাদের জন্য স্বর্নযুগ।কিন্তু যারা ঐ যুগে ফিরে যেতে ভয় পায় তারা মুখোশধারী মুসলমান।মুখোশের পিছনে তাদের রয়েছে বিধর্মী প্রিয়তা।কেননা মধ্যযুগটা খ্রিষ্টানদের জন্য অন্ধকারের যুগ।তাহলে কি বুঝব না তারা খ্রিষ্টানমদের এদেশীয় দোসর।

হেফাজতে ইসলামের বিরুদ্ধে গণহত্যা চালানোর কারন:অত্যন্ত শান্তিপূর্ণ ভাবে আন্দোলনরত,এবাদতরত ও ঘুমন্ত আলেমদের প্রতি গভীররাতে চালানো বর্বরতম গণহত্যার পিছনে কথিত বিজয়ী সরকারের এক সূদুঢ়প্রসারী ষড়যন্ত্র।রাষ্ট্রবিঞ্জানীদের মতে রাষ্ট্রের সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো সার্বভৌমত্ব।কিন্তু বাংলাদেশের বর্তমান অবস্হায় বুঝা যায়,সার্বভৌমত্ব শক্তির খুব অভাব।বাংলাদেশের সরকারপ্রধান মুখে মদিনা সনদের আলোকে দেশ পরিচালিত করার কথা বললেও আসলে তিনি দেশ পরিচালনা করেন মুসলমানদের পরিচিত শত্রু হিন্দু সাম্রাজ্যবাদী আগ্রসনী ভারত সনদ দিয়ে।ভারত সনদ কখনোই চায়না বাংলাদেশের প্রকৃত মুসলমানদের হাতে ক্ষমতা থাকুক।আর সে জন্যেই সরকার দল প্রভূ ভারত মাতার কুলাঙ্গার সন্তানদের পরামর্শ এ নিরীহ নিরস্ত্র আলেমদের হত্যা করে।

আলেমদের অপরাধ:পৃথিবীর ইতিহাসে কোন জালেম শাসক কখনো তাদের বিরুদ্ধে কোন প্রজাকে সামান্যতম কথাবলারও কোন সুযোগ দেয়নি।ইতিহাস ভঙ্গ করে এ সরকার তাদের বিরুদ্ধে কথা বলতে কেমন করে দেয়।তাইতো সরকারের ক্ষমতা অপব্যবহার করে থামিয়ে দেওয়া হল বর্তমান বাঙ্গালী জাতির বিবেক,সত্যের প্রচারক,ন্যায়-নীতির পক্ষে অটল এক নির্ভীক কলম সৈনিক,বহুল প্রচারিত,অত্যন্ত জনপ্রিয় আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের কলম এবং তাকে জেলে পুরে দেওয়া হল|বন্ধ করে দেওয়া হল সত্য সন্ধানী মানুষের হৃদয়ের স্পন্দন আমার দেশ পত্রিকা।যেটার মধ্যে নিহিত ছিল বাকশালীর বিরুদ্ধে কথা বলার ক্ষমতা।পথে বসতে হল হাজারও পরিবারকে যাদের আয়ের একমাত্র উৎস ছিল আমার দেশ পত্রিকায় কর্মসংস্থান|গণহত্যার প্রত্যক্ষ স্বাক্ষী জাতির আয়না দিগন্ত টেলিভিশনকে গণহত্যার রাত্রেই বন্ধ করে দেওয়া হল।ইসলামের নামে নাম থাকার অপরাধে বন্ধ করে দেওয়া হল ইসলামিক টেলিভিশনের সম্প্রচার।আর এই অন্যায়ের ‍বিরুদ্ধে কথা বলার জন্য অমানবিক হামলা চালানো হয় নিরাপরাধ আলেমদের ওপর।

কত লোকের প্রান গেল এই হামলায় : ৫ও৬ই মের হামলায় কত লোকের

প্রান গেল তার নির্দিষ্ট কোন হিসাব এখনো দেওয়া সম্ভব নয়।তবে লাশ যা পাওয়া গেছে তার সংখ্যা ২৯ টি।কিন্তু যাদের লাশ পাওয়া যায়নি তাদের সংখ্যা কোন হিসেবেই দুই সহস্রাধিক এর নিচে নামে নি।প্রত্যক্ষ দর্শীদের স্বাক্ষ্য এবং বিভিন্ন গনমাধ্যম এর জ্বলন্ত প্রমান।আল জাজিরা,সি এন এন এর মত বহুল প্রচলিত সংবাদ সংস্থা তাদের ওয়েব পেইজ এবং খবরে দেখিয়েছে নিহত মানুষের সংখ্যা হয়ত কোনদিনও জানবে না বাংলাদেশর মানুষ।আমিও চাই না জানুক।এত মানুষকে হত্যার খবর কোনদিনও মানবতাবাদী মানব সন্তান মেনে নিতে পারবে না।কিন্তু একটা কথা অস্বীকার করার কোন উপায় নাই-সত্যের ঢোল বাতাসে নড়ে।

সরকার পক্ষের দাবি:২০০৮ সালের নির্বাচনে নির্বাচিত তৎকালীন অত্যন্ত জনপ্রিয় সরকার রাতের হামলা চালিয়ে দাবি করেছে একজন মানুষও নিহত হয়নি।কোন ধরনের মরনাস্ত্রও ব্যবহার করা হয়নি।আলহামদুলিল্লাহ।একজন মানুষও যদি নিহত না হত!যদিবা মরনাস্ত্র ব্যবহার করা না হত!কতই না ভাল হত।কিন্তু দিনের আলোতে যদি ২৯ জনকে মারা হয় তবে রাতের আধাঁরে কি একজনও মরে নি,পাঠকের বিবেকের কাছে প্রশ্ন রাখলাম?আমার কিছু জিজ্গাসা তাদের কাছে যারা বলে ৬ই মে রাতের ঘটনায় কোন লোক মারা যায়নি :

১–শাপলাচত্বরে ৬ই মে রাতে অবস্থানকারী প্রায় ৫ লক্ষাধিক অকুতভয় সৈনিককে কোন যাদুমন্ত্রের বলে মাত্র ১০ মিনিটের অভিযানে উচেছদ করা সম্ভব হলো?

২-সন্ধ্যারাত্র থেকেই কেন শাপলাচত্বর এবং আশপাশের এলাকার বিদ্যুত এমনকি রাস্তার ল্যাম্পপোষ্ট গুলোও বন্ধ করে দেওয়া হল?

৩–কেন রাত ৮টার দিকে সাংবাদিকদের শাপলাচত্বর ত্যাগ করার জন্য বলা হল?

৪–কিসের ছিল এমন ছাপ যার জন্য ভোরের আলো ফোটার আগেই জলকামান ব্যবহার করে সেখানকার রাস্তাগুলো পরিস্কার করা হল?

৫–কি ছিল এমন কারণ যার জন্য তাদের উচ্ছেদ করতে আর মাত্র কয়েকঘন্টা অপেক্ষা করে দিনের আলো পর্যন্ত সময় নেয়া গেল না?

এ হামলার জন্য কারা বা কে দায়ী:অনেকেই এ হামলার জন্য হাল সময়ের সবচেয়ে আলোচিত ব্যক্তিত্ব জনাব স্বররাষ্ট্র মন্ত্রী মহোদয়ের দিকে আঙুল উচু করেন।আমি তাদের সাথে একমত নই।কেননা কোন পরিবারের কর্তা যদি ভাল হয় তবে পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা ভালো হতে বাধ্য।সেহেতু সদস্যদের আচরনের দ্বারাই কর্তার আচরনের সাধুত্ব-অসাধুত্ব পরিমাপ করা যায়।

হেফাজতে ইসলামের আন্দোলনের পরিণতি:আমি ছোটবেলায় যখন বাইসাইকেল চালানো শিখি তখন মোটেই শিখতে পারছিলাম না।তখন আমাকে যে শিখাচ্ছিল সে বলল সাইকেল চালানো শেখার প্রথম শত© হচ্ছে রক্ত জড়াতে হবে।আমিও কেমনে জানি পরে গিয়ে বেশ রক্ত জড়ালাম।এর পরের প্রচেষ্টাই আমি সাইকেল চালাতে শিখে গেলাম।ইতিহাস স¦vক্ষ্যদেয় প্রত্যেকটি আন্দোলন রক্তের ভিত্তি উপর প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।রক্তের পরিমান আন্দোলনের আকারের উপর নিভ©র করে।হেফাজতে ইসলামও রক্ত দিয়েছে। তাদের রক্তের পরিমান অনেক বেশি।অতএব বিজয়ের আর বেশি দিন বাকি থাকার কথা নয়।একটু অপেক্ষাই শুধু বিজয়ের বার্তা শোনানোর জন্য যথেষ্ট।

স্বজন হারাদের পরিবারের প্রতি:আমিও একটি পরিবারের সন্তান।আপনাদের মত স্বজন হারানোর ব্যাথা অতটা অনুভব করতে না পারলেও কিছুটা অনুভব করতে পারি।আল্লাহর নামে ধৈর্য্য¨ ধারন করুন।আল্লাহর নামে ধৈর্যের ফল কোন কালেই বৃথা যায়নি।ক্ষনিকের দুনিয়ায় হয়তোবা একটু কষ্ট হবে কিন্তy প্রকৃত আবাস স্হলে আপনারা বীর শহীদদের বংশধর।সত্যি¨কারের মুকুট তো আপনাদের প্রাপ্য।আপনাদের স¦vন্তনা দেয়ার ভাষা আমার জানা নেই ঠিক কিন্তy দু-দিনের আগে পরের বিদায় ক্ষনে আপনার সন্তান,ভাই অথবা স্বজন না হয় একটু ।আগেই বিদায় নিল।শুধু এটুকু ভাবুন বাংলাদেশের ১৪ কোটি মুসলমানের মধ্য থেকে আল্লাহ আপনার কলিজার টুকরাকে তার দ্বীন রক্ষার মহান কাজে কবুল করেছেন।একি কম সৌভাগ্যের কথা?

প্রস্তাব:পৃথিবীর সকল স্থান ও স্থাপনা বিভিন্ন ঐতিহাসিক ঘটনা বা দূঘটনার প্রেক্ষাপটে নামকরন করা হয়েছে।আবার একটি কারনের তাৎপর্যের চাইতে পরবর্তী কারন বেশি পরিচিত হওয়ার কারনে নাম পরিবর্তনের ইতিহাসও কম নয়। বাংলাদেশের গনমানুষের প্রানের দাবী শাপলাচত্বরের নাম পরিবর্তন করে শহীদ চত্বর করা হোক।

E-Mail:raju69mathbaria@mail.

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.