নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
২০১৩ ইং সালের ১৭ ই নভেম্বর বাংলাদেশের রাজনীতির আকাশে অনেকটা ব্যতিক্রমী দিন হিসেবে লিপিবদ্ধ হল । বি এন পির সাবেক সিনিয়র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক, জিয়া পরিবারের অন্যতম যোগ্য উত্তরসূরী তারেক জিয়ার বিরুদ্ধে দীর্ঘ দিন ধরে চলতে থাকা বাংলাদেশ দূর্ণীতি দমন কমিশন কর্তৃক আনীত বিদেশে অর্থ পাচার দূর্ণীতি মামলার রায় প্রকাশিত হল । দীর্ঘ পাঁচ বছরেরও কিছু বেশি সময় ধরে চলতে থাকা মামলাকে কেন্দ্র করে চমকপ্রদ নানা নাটকীয়তা , জল্পনা-কল্পনা, উত্তেজনা ছড়ানো সময় শেষে আদালত আজ মধ্যদুপুরে রায় প্রদান করল । রায় – তারেক জিয়ার বেকসুর খালাস ! বাঙালি জাতির একপক্ষ আশাহত হলেও চমককৃতের সংখ্যাই বেশী । দীর্ঘ দিনের জল্পনা কল্পনা থেকে এ রায় একেবারই ব্যাতিক্রম । তারেক জিয়ার পরিবার , শুভাকাঙ্খীরা এমনকি তারেখ জিয়া নিজেও বোধ করি এ রায় শুনে বিস্মিত হয়েছেন । অনেকেB রায়ের ব্যাপারে তাৎক্ষনিক প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে রায়ের পক্ষে বলবেন নাকি বিপক্ষে বলবেন তার সিদ্ধান্ত নিতে পারছিলেন না । অবশ্য এ না পারার পিছনে অনেকগুলো যৌক্তিক কারন ছিল । ২০০৮ সালের পর থেকে বাংলাদেশের বিচারালয়ে যতগুলো মামলার নিষ্পত্তি হয়েছে তার প্রত্যেকটিতে কোন অদৃশ্য শক্তির প্রভাব পড়েছে । কথিত আন্তর্জাতিক ট্রাইবুন্যালে যুদ্ধাপরাধের মামলার রায় , সাম্প্রতিক সময়ের বিডিয়ার বিদ্রোহের রায় ছাড়াও রাজনৈতিক মামলাসমূহের রায়গুলোই এর জ্বলন্ত প্রমান । হাতে মোক্ষম সুযোগ থাকার পরেও আজ কেন আদালত এবং তাকে পরিচালনাকারী অদৃশ্য শক্তি তাদের নাগালে থাকা সুযোগের সদ্বব্যহার করল না । আজকের লেখা লিখতে গিয়ে ভয় হচ্ছে , আমি রাষ্ট্রদ্রোহীতার অভিযোগে অভিযুক্ত হই নাকি ? এরি সাথে সংশয়ের মধ্যে আছি কারন আমার আশ্রয় স্থল আমাকে তাড়িয়ে দেয় নাকি ? এতসব আশঙ্কার পরেও আমি আমার লক্ষ্য থেকে ফিরব না , অতীতেও ফিরি নি , ভবিষ্যতেও বিপরীত কিছু হবে না । তারেক জিয়ার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছিল , দুদক এবং আওয়ামী সরকার দলীয় আইনজীবিরা মহামান্য আদালতের দরবারে সেটা প্রমাণ করতে না পারায় আদালত স-সম্মানে তারেক রহমানকে খালাশ দিতে বাধ্য হয়েছে । এখন প্রশ্ন হল – আসলেই কি স্বাক্ষ্য প্রমানের অভাবে আদালত তারেক জিয়ার উপর আনীত অভিযোগের সত্যতা না পাওয়ায় তাকে মুক্তি দিল নাকি এর অন্তরালে অন্যকোন উদ্দেশ্য রয়েছে । আমার মত সল্পবুদ্ধির অনেকেই তারেক জিয়ার মুক্তির পিছনে অনেক ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাবেন । তারেক জিয়ার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের মূল দৃশ্যপটে আসলে দেখা যাবে এই মামলায় তিনি একা আসামী নন । তার সাথে আছেন তারেক জিয়ার বন্ধু পরিচিত চ্যানেল ওয়ানের মালিক গিয়াস উদ্দিন আল-মামুন । (২০০১-২০০৬) বি এন পির শাসনামলে মামুন প্রতাপশালী ছিলেন একথা অনায়াসে বলা চলে । তবে তারেক জিয়া যে একেবারে সাধু-সন্নাসীগোছের ব্যক্তি ছিলেন একথা বলা যায় না । মামুন যেখানেই যে সকল অন্যায় কাজ করেছে তার সম্মূখ দৃশ্যে তারেক জিয়ার নাম ব্যবহার করে বন্ধুত্বের পুরোপুরি ফায়দাকে কাজে লাগিয়েছেন । বন্ধুত্বের সম্পর্ক বজায় রাখতে গিয়ে তারেক জিয়াও দৃষ্টন্তমূলক কোন পদক্ষেপ গ্রহন করেন নি । অর্থের মোহ কাকে না অন্ধ বানায় ? হয়ত তারেক জিয়াকেও অর্থের মোহে মোহিত করে ফেলেছিল । তাদের দুই বন্ধুর মধ্যে একেবারেই যোগ-সাজোশ ছিল না একথা বলা যায় না । অর্থ পাচারের মামলায় প্রধান আসামী নির্দোষ এবং দ্বিতীয় আসামীর সাত বছরের সশ্রম কারাদন্ড সাথে ৪০ কোটি টাকা জরিমানা এটা মেনে নেয়া আসলেই কষ্টকর । তবে তারেক জিয়া বিবেকের আদালতে একেবারে নির্দোষ না হলেও সরকার এবং তাদের মিডিয়া যে ভয়াবহ বাড়াবাড়ি করেছে তাতে সন্দেহের অভাব নেই । বর্তমান প্রেক্ষাপটে তারেক জিয়ার দন্ড হলেও অবাক হওয়ার মত কিছু থাকত না । বরংচ সাজা না হওয়াই অবাক করার মত কান্ড । সরকারী দল বিরোধী দলকে যেভাবে দমন করে চলছে তাতে সরকারী দলের সবচেয়ে বড় বাধা এ দেশের আগামীর ভাবী প্রধানমন্ত্রীকে হাতের নাগালে পেয়েও সরকার কেন যে তাকে কঠোর কোন দন্ড না দিয়ে ছেড়ে দিবে তা অনেকের মত আমারও বিশ্বাস হচ্ছে না । চারদিকে কেবলি ধূয়োধ্বনি , সরকারী মদদপৃষ্ঠের আদালত কেন এমন সিদ্ধান্ত নিল ? আমার কথাটা আমার কাছেই বিশ্বাসযোগ্য হত না , যদি প্রধানমন্ত্রী তনয় জয়ের বিরুদ্ধে লাভানিল দূর্নীতি , আমেরিকায় অর্থ পাচারের অভিযোগ না উঠত । আওয়ামী সরকার দলীয় সকল নেতারাই উর্বর মস্তিষ্কের অধিকারী । হয়ত তাদের মহৎ হওয়ার খায়েশ জেগেছে । সরকারের খেলার পুতুল এ দেশের নাম সর্বস্ব স্বাধীন বিচার বিভাগ তারেক জিয়াকে খালাশ দিয়ে আবারও জাতিকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিতে চেয়েছে “ শেখ হাসিনা এবং খালেদা জিয়ার পরিবার সকল আইনের উর্ধ্বে । (২০০৮-২০১৩) এই সময়টাতে সরকারী দল বিরোধী দলের উপর যে অন্যায় , অত্যাচার ,জুলূম-নির্যাতন ,নিপীড়ন চালিয়েছে তা বি এন পি একটি রায়ের কল্যানেই ভূলে যেতে পারবে ? প্রধানমন্ত্রী অত্যন্ত কৌশলী ,বুদ্ধিমান এবং দূরদর্শী এতে সন্দেহ নাই তবে একটি রায়ের মাধ্যমেই সন্তানকে রক্ষা করতে পারবেন ? এ দেশে ন্যায় বিচার কামনা করা ঘোরতর অন্যায় তা সময় চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে । আজকে রায়ের পরে আদালত প্রাঙ্গনে সরকার পক্ষের আইনজীবিদের অনেক লম্ফ-জম্ফ প্রত্যক্ষন করলাম । তাদের দাবী তারা যথেষ্ট উপযুক্ত তথ্য দেয়ার পরেও ন্যায় বিচার বঞ্চিত হয়েছেন । সামান্য অংশের দাবি সামান্য সত্য হলেও আপনারা ভূলে যেতে পারেন না , ২০০৮ সালের পর আদালেতের প্রত্যেকটা সিদ্ধান্ত এ দেশের নীতিবান প্রত্যেকটা আইনজীবিকে আপনাদের মত কষ্ট দিয়েছিল । এদেশের প্রত্যেকটি আদর্শিত মানুষ বিবেকের কাছে বারবার প্রশ্ন করেও এ অন্যায়ের সন্তোষজনক কোন সমাধান পায় নি । অথচ আপনারা মাত্র একটি রায়েই এতটা মারমূখী ভূমিকায় অবতরণ করলে চলে ?
©somewhere in net ltd.