নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

রাজু আহমেদ । এক গ্রাম্য বালক । অনেকটা বোকা প্রকৃতির । দুঃখ ছুঁয়ে দেখতে পারি নি ,তবে জীবনের সকল ক্ষেত্রে অনুভব করেছি । সবাইকে প্রচন্ড ভালবাসি কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে প্রকাশ করতে পারি না । বাবা এবং মাকে নিয়েই আমার ছোট্ট একটা পৃথিবী ।

সত্যকা

সত্যকা › বিস্তারিত পোস্টঃ

মধ্যবিত্তের সূখ-দুঃখ

২৯ শে নভেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:২১



পড়ন্ত বিকেল । দুপুরের দিবাকরের সে তেজ আর নেই । মাঠভর্তি ছেলে পুলের কানফাটানো চিৎকার চেচাঁমেচিতে আকাশ বাতাস স্তম্বিত হয়ে আছে । অরুন ডুবতে আর বেশিক্ষন বাকী নেই । ছোট-মাঝারী ছেলেরা বদ্ধ খাঁচায় আবদ্ধ হওয়ার আগ মূহুর্তটাকে বেশ ভালভাবে কাজে লাগাতে ব্যস্ত । রাজের সে দিকে কোন খেয়াল নেই । তার কাছে সব কিছুই যেন অসহ্য লাগছে । গ্রামের সবচেয়ে ডানপিঠে ছেলেটার প্রিয় ল্যাপটপ প্রায় বিশদিন যাবত নষ্ট । এ যেন রাজের ল্যাপটপ নষ্ট হয়নি হয়েছে রাজের বিশেষ কোন অঙ্গ । কোন অবস্থায় সে স্বাভাবিক হতে পারছে না । কম্পিটার ইঞ্জিনিয়ার বলেছে ল্যাপটপের মূল পার্টস হার্ডডিস্ক নষ্ট হয়ে গিয়েছে । হার্ডডিস্ক বদলাতে হবে । সবমিলিয়ে পাঁচ হাজার টাকার মত লাগবে । রাজ জানে এ টাকাটা তার পরিবারের কাছে কিছুই না আবার অনেক কিছু । রাজের বাবা অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক । সন্তানদের সকল যৌক্তিক দাবী তিনি কোন প্রশ্ন ছাড়াই পূরণ করেন । দূরদর্শী এ মানুষটার কাছে সমস্ত পৃথিবীর মূল্যের চেয়ে তার সন্তানের সূখের মূল্য অনেক বেশী । রাজ তার বাবার কাছে বললেই টাকাটা পেয়ে যাবে সেটা শতভাগ নিশ্চিত । কিন্তু রাজ ব্যতিক্রম , সে তার বাবার কাছে এ টাকাটা চাইবে না । সে তার বাবার আর্থিক অবস্থা সম্পর্কে জানে । তার বাবার পেনশান বাবদ প্রতি মাসে প্রাপ্ত চার হাজার ছয়শত টাকা থেকে রাজ প্রতি মাসে চার হাজার টাকা তার শিক্ষা খরচ বাবদ নিয়ে আসে । গত মাসে এবং তার আগের মাসে আরও বেশী এনেছে কারন সে সময়টাতে রাজের ফরম ফিলাপ এবং অনেকগুলো বই কিনতে হয়েছিল । তাইতো রাজের ল্যাপটপের সমস্যার কথা তার বাবাকে জানাতেই চায়নি । রাজের দৃঢ় বিশ্বাস ছিল অন্য উপায়ে রাজ তার সমস্যার সমাধান করতে পারবে । কিন্তু অনেক ভেবে চিন্তে রাজ সে পথ পরিহার করল । আশেপাশের দৃশ্য রাজকে সে ব্যাপারে সামনে এগুতে উৎসাহিত করল না । আর কোন উপায় না পেয়ে অবশেষে ল্যাপটপ নষ্ট হওয়ার প্রায় পনের দিন পর রাজ তার মায়ের মাধ্যমে বাবাকে অবহিত করল । রাজের বাবা রাজকে প্রচুর ভালবাসলেও রাজের কোন দাবীর কথা কখনো তার বাবাকে রাজ সরাসরি জানায়ন নি । এক্ষেত্রে সকল সময়েই মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করত তার মাকে । রাজের বাবার আদরের সাথে শাষনও মিশ্রিত ছিল । কোন অন্যায় বা বেয়াদবী তিনি কখনো সহ্য করেন নি । অপরাধের তুলনায় প্রয়োজনে শাস্তি বেশি দিয়েছেন যাতে তার ছেলে এরুপ কাজ করতে কখনো সাহস না পায় । কিন্তু মার কাছে রাজ সম্পূর্ন ব্যতিক্রম । জীবনে কোনদিন মায়ের কাছে রাজ শাস্তি পেয়েছে সেটা রাজের বিশ বছরের স্মৃতি স্মরণ করতে পারে না । মাকে জ্বালাতনের কোন মাত্রাই সে বাদ রাখে নি তবুও মা যেন মাই । কোন অপরাধের বিচার হওয়ার আগেই মায়ের কাছে সম্পূর্ন নিরাপরাধী ছিলাম । সেই মা রাজের সমস্যার কথা বাবাকে বললো । রাজের বাবা কিছুক্ষন চুপ থেকে কোন বাক্যব্যয় না করে বলল ঠিক আছে রাজের পরীক্ষা শেষ হলেই ওটা সারিয়ে নিবে । রাজ জানত তার বাবার কষ্ট হবে তবুও না বলবে না । সন্তানের জন্য এরা যেন জীবনও দিতে পারে । এইতো বাবা । এদের ঋণ কেমন করে শোধ করবে রাজ সেটাই এখন ভাবা ।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.