নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

রাজু আহমেদ । এক গ্রাম্য বালক । অনেকটা বোকা প্রকৃতির । দুঃখ ছুঁয়ে দেখতে পারি নি ,তবে জীবনের সকল ক্ষেত্রে অনুভব করেছি । সবাইকে প্রচন্ড ভালবাসি কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে প্রকাশ করতে পারি না । বাবা এবং মাকে নিয়েই আমার ছোট্ট একটা পৃথিবী ।

সত্যকা

সত্যকা › বিস্তারিত পোস্টঃ

শীতার্তদের কষ্টলাঘবে আমাদের উদারতা দরকার

১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:১৩

শীতের চাদরে ছেয়ে গেছে গোটাদেশ । তবে শীতের মৌসুমের সম্পূর্ন তেজ এখনও উপস্থিত হয় নি । শীতের এ মৌসুমে কোন শৈত্যপ্রবাহের মুখোমুখি আমাদের এখনও হতে হয় নি । ভূমির অনুপাতে সবুজ বনায়ন তুলনামূলকভাবে অনেক কম থাকার কারনে শীত এবং গ্রীষ্মের স্বাভাবিক তাপমাত্রা বজায় থাকে না । যার কারনে শীতের মওসুমে অত্যাধিক শীত এবং গরমের মওসুমে মাত্রাতিরিক্ত গরমের মুখোমুখি হতে হয় । এরপরেও অনেকের কাছে গরমের মওসুম প্রিয় আবার কারও কাছে শীতের মওসুম প্রিয় । স্বাভাবিক দৃষ্টিতে গরম বেশী পড়লে গরীব দেশের মানুষের ততোটা কষ্ট পায় না । কেননা গরম থেকে নিভৃতি পাওয়ার জন্য প্রাকৃতিক অনেকগুলো মাধ্যম সকল পরিবেশে বিদ্যমান থাকে । গরীব দেশের মানুষকে প্রচন্ড শীতে বেশী কষ্ট দেয় ।



বাংলাদেশকে তৃতীয় বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে পরিগণিত করা হলেও পোশ্ক-পরিচ্ছেদ ব্যবহারের বিলাসিতার দিক থেকে , এ দেশের মানুষ বিশ্বের দরবারে গরীব হিসেবেই পরিচিত । অন্যান্য উন্নতশীল দেশের মানুষ আমাদের তৈরি করা পোশাক পরিধান করলেও আমরা ঠিকমত সময়োপযোগী পোশাক পরিধান করতে সামর্থবান হই না । বিশেষ করে বাংলাদেশের এক-তৃতীয়াংশ মানুষ শীতের জন্য উপযোগী পোশাক পরিধান করার মত সামর্থবান নয় । শীতকালে বাংলাদেশ মূলত দুই অংশে ভাগ হয়ে যায় । দক্ষিনাঞ্চলের জেলাগুলোর চাইতে উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোতে তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি শীতের প্রাদুর্ভাব লক্ষ্য করা যায় ।



বাংলাদেশের সংবিধানের নাগরিকরের মৌলিক অধিকারের যে সকল কথা লিপিবদ্ধ আছে তার মধ্যে অন্যতম বাসস্থান । তবে বাংলাদেশ এখনও সকল নাগরিকের বাসস্থান নিশ্চিত করতে পারে নি । যার কারনে লক্ষাধিক মানুষকে খোলা আকাশের নিচে রাত্রিযাপন করতে হয় । গরমকালে এটা কিছুটা আরামদায়ক হলেও শীতকালে খোলা আকাশের নিচে রাত্রিযাপন করা আসলেই অমানবিক । এ শ্রেনীর মানুষের বিকল্প কোন পথ না থাকার কারনে , “যেখানে রাত সেখানেই কাত” ভিত্তিক জীবনযাপন করতে হয় ।



যে সকল মানুষ শীতে কষ্ট পান তাদের কষ্ট লাগব করা সামর্থবানদের জন্য নৈতিক দায়িত্ব ও কর্তব্য । তবে ব্যক্তিগতভাবে এটা অনেকটা অসাধ্য । যৌথ প্রয়াসের মাধ্যমে শীতার্তের কষ্ট লাঘব করা কোন কঠিন ব্যাপার নয় । মাত্র কয়েকজন মানুষের আন্তরিক উদ্যোগ এবং সকলের দায়িত্বমূলক অংশগ্রহন এ কাজকে সহজ করে তুলতে পারে । উদ্যোগী মানুষের আগেই তৈরি হয়ে আছে । জন-সেবার মানষিকতা নিয়ে অনেক মানুষ বিভিন্ন সেবামূলক সংস্থা , দান সংস্থা খুলে বসে আছেন । আমাদের সাধ্যানুযায়ী কয়েকটি টাকাই গৃহহীনদের এই শীতে শীত কষ্ট থেকে মুক্তি দিতে পারে ।



২০০৭ সালের সিডর পরবর্তী সময় বিভিন্ন স্কুল , কলেজ , বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা তাদের সাধ্যানুযায়ী টাকা-পয়সা , পোশাক এবং খাবার দিয়ে ক্ষতিগ্রস্থদের সাহায্য করেছেন । এক্ষেত্রে শুধু ছাত্ররাই নয় সর্বস্তরের মানুষ তাদের স্বীয় সাধ্যানুযায়ী দক্ষিনাঞ্চলের সিডর আক্রান্ত মানুষদেরকে সাহায্য করেছিল । যার কারনে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার পরেও সকল মানুষের সহায়তায় সে ধাক্কা সামলে নিতে ক্ষতিগ্রস্থদের বেশি সময় লাগে নি । সে সময়ের মত বাংলার মানুষ যদি আরেকবার জেগে ওঠে তবে এদেশের লক্ষ মানুষ শীতের ভয়াবহ কষ্ট থেকে মুক্তি পাবে ।



১৬ কোটি মানুষের বাংলাদেশে মাত্র কয়েক লাক্ষ মানুষ শীতে কষ্ট পান । শীতে কষ্ট পাওয়া মানুষদের কষ্ট লাঘবে কিছু মানুষ চেষ্টাও করে তবে তাদের চেষ্টা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল । সীমিত সংখকের চেষ্টার সাথে আমাদের সকলে প্রেরণা যুক্ত হলে অসম্ভব বলে কিছু থাকবে না ।



পয়সাওয়ালা যে সকল ধনী মানুষ শীতের মওসুমে বাসায় কিবা অফিসে এয়ার কুলারের মধ্যে কাটান তাদের শীতের কষ্ট ততোটা অনুভব করার কথা নয় । তবুও বিধাতা সৃষ্ট বিবেক , মানুষকে সকল কিছুর বিচার করার ক্ষমতা দিয়েছেনে । সে বিচার শক্তিকে কাজে লাগিয়ে প্রত্যাহিক যে সকল টাকা আমরা অহেতুক ব্যয় করি তার কিছু অংশ দিয়ে যদি একজন মানুষের কষ্ট লাঘব করতে পারি তবে তার চেয়ে প্রশান্তির কিছু ধরনীর বুকে থাকার কথা নয় । কেউ যদি শীতে কষ্ট পাওয়া মানুষের কষ্ট উপলব্ধি করতে ব্যর্থ হন তবে একদিন শীতের পোশাক ত্যাগ করে অথবা এয়ার কুলার বন্ধ করে কাটিয়ে দেখুন কেমন লাগে ।



যে সকল ছাত্র-ছাত্রীদের একটার বেশি বা প্রয়োজনের বেশি শীতের পোশাক আছে তারা তোমাদের নাগালের মধ্যের একজন শীতে কষ্ট পাওয়া মানুষকে একটি দান করে দেখ । তার মুখ থেকে যে হাসি বের হবে সে হাসি কি কোটি টাকার বিনিময়ে তুমি দেখতে পেতে ? সমাজে অনেকেই আছেন যাদের প্রত্যাহ নাস্তা-বাবদ শত শত টাকা খরচ হয় । দশ দিন একটু কম পরিমানে নাস্তা খেয়ে , কিছু টাকা বাঁচিয়ে একজন শীতে কষ্ট পাওয়া মানুষকে শীত নিবারণের ব্যবস্থা করে দিন । এর বিনিময়ে হয়ত সে আপনাকে কিছুই দিতে পারবে না , তবে তার মন থেকে আপনার জন্য আশীর্বাদ চলে আসতে বাধ্য ।



আমারা যে যার অবস্থান থেকে এগিয়ে আসি । শপথ করি-অন্তত এ বছর বাংলাদেশের কোন মানুষকে শীতে কষ্ট পেতে দেবনা । তার জন্য যত কষ্ট , যত ত্যাগ আমাকে করতে হয় তা সবই ভোগ করব । প্রত্যেকেই যে যার অবস্থান থেকে প্রচার চালাই । মহল্লায় মহল্লায় কমিটি গঠন করি । শীতে কষ্ট পাওয়া মানুষদের তালিকা করে সে অনুযায়ী সাহায্য উত্তোলন করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন করি । নতুন কোন কাজ শুরু করতে গেলে সমাজ তাতে বাধার সৃষ্টি করবেই তবে বাহবা দিতেও বেশি সময় নিবে না । সুতরাং ত্যাগ সহ্য করার মধ্যেই ঐশ্বর‌্য বিদ্যমান , ভোগের মধ্যে কোন সুখ নাই ।



লেখক : রাজু আহমেদ । শিক্ষার্থী , কলামিষ্ট ও প্রাবন্ধিক ।

সরকারী বি এম কলেজ, বরিশাল ।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:৪৫

মশিকুর বলেছেন:
শীতার্তদের জন্য আমদের সকলের কিছু না কিছু করা উচিৎ।

+

২| ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:৪৫

সত্যকা বলেছেন: এখন থেকেই কিছু করার জন্য নেমে পড়ি

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.